লাল চুলের মেয়েটি টেবিলে কাচের জারে তরলের মাঝে ড়ুবিয়ে রাখা থলথলে মস্তিষ্কটির দিকে একধরনের বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে রইল তারপর খুট করে সুইচটাতে চাপ দিয়ে মাইক্রোফোন অন করে বলল, এই, তুমি কী জেগে আছ?
স্পিকারে একটা ক্ষীণ শব্দ শোনা গেল, জেগে আছি।
আমার হয়েছে মুশকিল, কাচের জারে তোমাকে-তার মানে এই থলথলে মস্তিষ্কটা দেখতেই কেমন জানি গা ঘিনঘিন করে, আবার একটু কথা না বললে ভালোও লাগে না।
তোমার কাছে আমার অনুরোধ তুমি আমাকে ধ্বংস করে দাও! আমার এই অস্তিত্ব যে কী ভয়ংকর তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।
লাল চুলের মেয়েটি খিলখিল করে হেসে বলল, কে বলেছে কল্পনা করতে পারি না। অবশ্যই পারি! কল্পনা করতে পারি বলেই তো তোমাকে বাঁচিয়ে রাখছি। তুমি হচ্ছ আমার সবচেয়ে বড় বিনোদন।
স্পিকার থেকে কাতর একটি কণ্ঠস্বর ভেসে ওঠে, দোহাই তোমার! দোহাই আমাকে আর কষ্ট দিও না। আমাকে শেষ করে দাও।
বাজে কথা বলো না, তার চাইতে আমি তোমাকে কী বলতে এসেছি সেটা শোনো! আর কিছুক্ষণের মাঝেই পুরো নেটওয়ার্কটি আমরা দখল করে নেব। সাথে সাথে আমরা বের হব–সারাজীবন যেটা করতে পারিনি তখন সেটা করতে পারব–প্রকাশ্যে আমরা অস্ত্র নিয়ে বের হব। সবচেয়ে প্রথম কী করব তোমাকে তো বলেছি, বলেছি না?
লাল চুলের মেয়েটি হাসতে হাসতে বলল, বলে থাকলেও আবার বলি। আনন্দের কথা অনেকবার শোনা যায়! মেয়েটি হাসি থামিয়ে বলল, সবার আগে হত্যা করব তোমাদের থুথুড়ে বুড়ো হতভাগা থুলকে! তার বাসভবন এরই মাঝে ঘিরে ফেলা হয়েছে। গ্রিন সিগনেল পেলেই আমরা অস্ত্র হাতে ঢুকে যাব!
স্পিকার থেকে হাহাকারের মতো শব্দ ভেসে আসে, না! না!
হ্যাঁ। হ্যাঁ। আমাদের সবার হাতে থাকবে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। তোমার খুলি কেটে আমি তোমাকে বের করে এনেছিলাম বলে আমাকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। থুলকে প্রথম গুলিটি করার সুযোগ দেয়া হবে আমাকে! বুঝেছ? আমাকে!
একটা অসহায় যন্ত্রণার শব্দ শোনা গেল। লাল চুলের মেয়েটি সেই যন্ত্রণার শব্দটি উপভোগ করতে করতে বলল, পুরো ব্যাপারটা খুব গোপনীয়। কেউ কারো কাছে সেটা বলতে পারছে না। শুধু আমি তোমাকে বলতে পারছি! মেয়েটি আবার খিলখিল করে হেসে ওঠে।
হাসির শব্দটি যে একটি অসহায় মস্তিষ্কের নিউরনে দীর্ঘসময় বিচ্ছুরিত হতে থাকল সেই কথাটি কেউ জানতে পারল না।