১৯৫তম অধ্যায়
যযাতির দান-প্ৰশংসা
মার্কণ্ডেয় কহিলেন, “হে রাজন! নহুষাত্মজ রাজা যযাতির বৃত্তান্ত শ্রবণ করুন। রাজা যযাতি পৌরজনপরিবৃত হইয়া রাজ্যমধ্যে অবস্থিতি করিতেছেন, এমত সময় এক ব্ৰাহ্মণ গুরুদক্ষিণার নিমিত্ত তাঁহার নিকট আগমনপূর্ব্বক কহিলেন, ‘রাজন! আমি পূর্ব্বকৃত প্রতিজ্ঞা-হেতু গুরুদক্ষিণা ভিক্ষা করিতে আসিয়াছি।” রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভগবন! আপনি কি প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, আজ্ঞা করুন।” ব্ৰাহ্মণ কহিলেন, “হে পার্থিব! লোকে যাচকের প্রতি অত্যন্ত বিদ্বেষ প্ৰদৰ্শন করিয়া থাকে; এ নিমিত্ত আপনাকে জিজ্ঞাসা করি, আপনি কি প্ৰসন্নমনে আমাকে অভিলষিত অর্থ প্ৰদান করিবেন?”
“রাজা কহিলেন, “হে দানার্হ! বিদ্বেষের কথা দূরে থাকুক, আমি দান করিয়া পুনরায় তাহার কীর্ত্তন করি না, কিন্তু অগ্ৰে প্রার্থনা না করিলে অযাচ্য অর্থপ্রদানে অঙ্গীকার করি না। স্ত্রী, পুত্ৰ ও আপন দেহ পৰ্য্যন্ত যাহা কিছু প্ৰাপ্যবস্তু আছে, তৎসমুদয় আপনাকে প্রদান করিয়া আমি কৃতাৰ্থম্মান্য ও পরম সুখী হইতে পারি, কিন্তু অপ্ৰাপ্য অর্থ প্ৰদান করিতে কদাচি সম্মত হই না। হে ব্ৰহ্মন! আপনার মন যাচকের প্রতি কখনই কুপিত হয় না, আমি যাচমান ব্রাহ্মণকে পরম প্রিয়পাত্র জ্ঞান করিয়া থাকি, প্রদত্ত অর্থের নিমিত্ত আমি কদাপি শোকার্ত্ত হই না। অতএব এক্ষণে আমি আপনাকে সহস্ৰ ধেনু দান করিতেছি, গ্রহণ করুন।” রাজা এই কথা বলিয়া ব্ৰাহ্মণকে সহস্ৰ গো-দান করিলে তিনিও তৎক্ষণাৎ তাহা প্রতিগ্রহ করিলেন।”