উপাখ্যান ও প্ৰহেলিকা
এই সব সূক্তে ক্ৰমাগত কিছু প্ৰহেলিকাধর্মী অংশ পাওয়া যায় এখনো যাদের প্রকৃত অর্থ সম্পূর্ণ স্পষ্ট নয়। অনেক গবেষক অবশ্য এদের সম্পর্কে সূক্ষ্ম ও সযত্ন বিশ্লেষণ প্ৰস্তুত করেছেন, টীকা রচনা করেছেন। এটাই বিশেষ বিস্ময়জনক যে সাধারণভাবে ধর্মীয় কাব্য বলে পরিচিত বৈদিক সংহিতায় এ জাতীয় প্ৰহেলিকা সন্নিবিষ্ট, এমনকি সংরক্ষিত হয়েছিল। অনুমান করা যেতে পারে যে, সত্রের মতো দীর্ঘকালব্যাপী যজ্ঞ (যেখানে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে প্রথম ভাগে অনুষ্ঠিত যজ্ঞক্রিয়াগুলির বিপরীতক্রমে পুনরাবৃত্ত হত) যখন একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে ক্লান্তিকর ও একঘেয়ে হতে পড়ত, পুরোহিতরা তখন সেই একঘেয়েমির অবসাদ দূর করার জন্য হয়ত এই সমস্ত প্ৰহেলিকা ও নানা উপাখ্যান (যেমন পারিপ্লব ইত্যাদি) বিবৃত করতেন। হয়তো বা বৈদিক জনসাধারণের মগ্ন স্মৃতিতে এইসব প্ৰহেলিকার কোনো গৃঢ় বা অতীন্দ্ৰিয় তাৎপর্য প্রোথিত ছিল ; কিন্তু পরবর্তীকালে তা সময়ের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়! আদিম মানুষের কাছে সৃষ্টির মতো রহস্যোদীপক আর কিছুই ছিল না ; তাই সৃষ্টিবিষয়ক একটি সূক্তের মধ্যে যে আলোচ্য প্ৰহেলিকাগুলি সংরক্ষিত হয়েছিল, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কখনো কখনো প্ৰহেলিকার আপাত কিছু সমাধান দেওয়া হয়েছে ; কিন্তু আমাদের মনে হয় যে, প্রকৃত উত্তর অদীক্ষিতদের কাছ থেকে প্ৰত্যাহত রয়ে গেছে।