মারাত্মক রকমের হুমকি সত্বেও কোরাইশরা যখন দেখলো যে, রসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন তারা বুঝতে পারলো যে, আবু তালেব তাঁর ভ্রাতৃস্পুত্রকে পরিত্যাগ করতে পারবে না। বরং প্রয়োজনে তিনি কোরাইশদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন এবং শত্রুতার জন্যও প্রস্তুত আছেন। এ রপু চিন্তা করে কোরাইশ নেতারা ওলিদ ইবনে মুগিরার পুত্র আম্মারাকে সঙ্গে নিয়ে আবু তালেবের কাছে হাজির হয়ে বললো, হে আবু তালেব আম্মারাকে নিয়ে এলাম। আম্মারা কোরাইশ বংশের সুদর্শন যুবক, আপনি ওকে গ্রহণ করুন। সে আপনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। সে আপনার হবে আর আপনি আপনার ভাতিজা মোহাম্মদকে আমাদের হাতে তুলে দিন, যে আপনার পিতা-পিতামহের দ্বীনের বিরোধিতা করছে, আপনার জাতিকে ছিন্নভিন্ন করছে এবং তাদের বুদ্ধিমত্তাকে নির্বুদ্ধিতা বলে অভিহিত করছে। আমরা তাকে হত্যা করবো। ব্যস, এটা একজন লোকের পরিবর্তে একজন লোকের হিসাব হবে।
আবু তালেব বললেন, ‘ কি চমতকার সওদা করতে তোমরা আমার কাছে এসেছো। নিজেদের পুত্রকে তোমরা আমার কাছে নিয়ে এসেছো, আমি তাকে পানাহার করাবো, লালন-পালন করবো, আর আমি নিজের পুত্রকে তোমাদের হাতে তুলে দিব, তোমরা তাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে। আল্লাহর কসম এটা হতে পারে না’।
এ কথা শুনে নওফেল ইবনে মাতয়ামের পুত্র আদী বললেন, খোদার কসম, হে আবু তালেব, তোমার সাথে তোমার কওম ইনসাফের কথা বলছে এবং তুমি কল্যাণকর অবস্থা থেকে দুরে সরে থাকতে চাইছো। কিন্ত আমি লক্ষ্য করেছি যে, তুমি তাদের কোন কথাই গ্রহণ করতে চাচ্ছো না।
জবাবে আবু তালেব বললেন, খোদার শপথ, তোমরা আমার সাথে ইনসাফের কথা বলোনি, বরং তোমরাও আমার সঙ্গ ছেড়ে আমার বিরুদ্ধে লোকদের সাহায্য করতে উদ্যত হচ্ছো। ঠিক আছে, যা ইচ্ছে করো।
সীরাতের বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করেও উল্লেখিত উভয় কথোপকথনের সময় জানা যায়না, কিন্ত সাক্ষ্য প্রমাণ এবং ইঙ্গিত ইশারা থেমে মনে হয়, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বেশী নয়। উভয় কথোপকথন ষষ্ঠ হিজরীর মাঝামঝি কোন এক সময়ে হয়েছিল।