এ প্রস্তাবের পর কোরায়াইশ নেতারা আবু তালেবের কাছে গিয়ে বললেন, হে আবু তালেব, আপনি আমাদের মধ্যে মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। আমরা আপনাকে বলেছিলাম যে, আপনার ভ্রাত্বস্পুত্রকে ফিরিয়ে রাখুন, কিন্ত আপনি রাখেননি। আপনি মনে রাখবেন, আমাদের পিতা-পিতামহকে গালাগাল দেয়া হবে এটা সহ্য করতে পারবোনা। আমাদের বুদ্ধি বিবেক বিচার বিবেচনাকে নির্বুদ্ধিতা বলা হবে এবং উপাস্যদের দোষ বের করা হবে, এটাও আমাদের সহ্য হবে না। আপনি তাঁকে বাধা দিন ও বিরত রাখুন। যদি এতে ব্যর্থ হন, তবে আপনার এবং আপনার ভ্রাতৃস্পুত্রের সাথে এমন লড়াই বাধিয়ে দিব যে, এতে বহু প্রাণহানি ঘটবে।
এ হুমকিতে আবু তালেব প্রভাবিত হলেন। তিনি রসুলুল্লাহ (সাঃ)কে ডেকে বললেন, ভাতিজা, তোমার কওমের লোকেরা আমার কাছে এসে এসব কথা বলে গেছে। কাজেই, তুমি এবার আমার এবং তোমার নিজের প্রতি দয়া করো। তুমি এ বিষয়ে আমার উপর এমন বোঝা চাপিও না, যা আমি বহন করতে পারব না।
এ কথা শুনে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বুঝতে পারলেন যে, এবার তাঁর চাচাও তাঁকে পরিত্যাগ করবে। তাঁকে সাহায্য করার ব্যাপারে তিনিও দুর্বল হয়ে পরেছেন। এ কারণে তিনি বললেন, ‘চাচাজান, আল্লাহর শপথ, যদি আমার ডান হাতে সুর্য্য এবং বাম হাতে চন্দ্র এনে দিয়ে কেউ বলে, এ কাজ ছেড়ে দাও, তবুও আমি তা ছাড়তে পারবোনা। হয়তো এ কাজের পূর্ণতা বিধান করে আমি একে বিজয়ী করবো অথবা এ কাজ করতে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যাবো। ‘
এ কথা বলে রসুলুল্লাহ (সাঃ) আবেগের আতিশয্যে কেঁদে ফেললেন, এরপর চলে যেতে লাগলেন। চাচা আবু তালেবের মন কেঁদে উঠল। তিনি বললেন, যাও ভাতিজা, তুমি যা চাও তাই করো। আল্লাহর শপথ আমি কোন অবস্থায় তোমাকে ছাড়তে পারবোনা।
“খোদার শপথ, তোমার কাছে যেতে ওরা পারবেনা দলে দলে’
যতদিন না দাফন হবো আমি মাটির তলে।
বলতে থাকো, তোমার কথা খোলাখুলি, করোনা আর কোন ভয়,
দু’চোখ তোমার শীতল হউক আর, খুশী হউক তোমার হৃদয়।”