১৭৪. পুরোহিত-প্রশস্তি
চতুঃসপ্তত্যধিকশততম অধ্যায়।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! অর্জুন পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে গন্ধর্বরাজ অঙ্গারপর্ণের এইরূপ কথা শুনিয়া পূর্ণচন্দ্রের ন্যায় শোভা পাইতে লাগিলেন এবং মহর্ষি বশিষ্ঠের তপোবল শ্রবণে একান্ত কুতূহলাক্রান্ত হইয়া জিজ্ঞাসিলেন, হে গন্ধর্বরাজ! তুমি যে মহর্ষি বশিষ্ঠের নাম উল্লেখ করিলে, যিনি আমার পূর্বপুরুষদিগের পুরোহিত ছিলেন, তিনি কে? সমুদয় বল, শুনিতে আমার নিতান্ত অভিলাষ হইয়াছে। গন্ধৰ্বরাজ কহিলেন, হে অর্জুন! বশিষ্ঠ ব্রহ্মার মানস পুত্র ও অরুন্ধতীর পতি। দুর্জয় কাম ও ক্রোধ পরাজিত হইয়া নিরন্তর তাঁহার চরণসেবা করে। তিনি বিশ্বামিত্রের অপরাধে জাতক্রোধ হইয়াও কুশিকবংশের উচ্ছেদ করেন নাই, পুত্রশত বিনাশ-দুঃখে একান্ত কাতর হইয়া সামর্থ্য থাকিতেও নিতান্ত অশক্তের ন্যায় তাহার সংহারার্থ কোনরূপ দারুণ কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করেন নাই এবং মৃত পুত্রদিগকে যমালয় হইতে পুনরায় আহরণ করিবার নিমিত্ত কৃতান্তকেও অতিক্রম করেন নাই; তাঁহার আশ্রয় লাভ করিয়া ইক্ষ্বাকুকুলোদ্ভব ভূপালেরা এই সসাগরা পৃথিবী অধিকার করিয়াছিলেন এবং তাহাকে পুরোহিতত্বে বরণ করিয়া বহুবিধ যজ্ঞানুষ্ঠান করিয়াছিলেন। প্রখ্যাতবংশদ্ভূত নৃপতিদিগের পৃথিবী জয় ও রাজ্যবৃদ্ধির নিমিত্ত পুরোহিত নিযুক্ত করা কর্তব্য। যিনি পৃথিবী জয় করিতে ইচ্ছা করেন, তিনি ব্রাহ্মণকে অগ্রসর করিবেন। অতএব হে পার্থ! তুমিও জিতেন্দ্রিয়, ধর্মকামার্থকো, গুণবান্ ও সুবিদ্বান্ পুরোহিত নিযুক্ত কর।