১৬. লিডিয়া তিষার কাছে এসে

লিডিয়া তিষার কাছে এসে তার মুখে লাগানো ধূসর রঙের ডাক্ট টেপটা এক টান দিয়ে খুলে ফেলল, তারপর কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, “তুমি তাহলে সেই মেয়ে।”

তিষা কোনো উত্তর দিল না। সেই মেয়ে বলতে কোন মেয়ে বোঝানো হচ্ছে সে জানে না। লিডিয়া তার চোখের দিকে তাকিয়ে ক্লান্ত গলায় বলল, “তোমার জন্যে আমাদের খুব যন্ত্রণা হল। তুমি নির্বোধ একটা মেয়ে আর তোমার ছোট একটা নির্বুদ্ধিতার জন্যে আমাদের কতো ঝামেলা। তুমি একা হলে তবু একটা কথা ছিল, তোমার সাথে এখন যোগ দিয়েছে এই প্রতিবন্ধী।”

লিডিয়া তখন জনের কাছে গিয়ে তার মুখে লাগানো ডাক্ট টেপটাও টান দিয়ে খুলে ফেলল। জন সাথে সাথে তার বুক ভরে একবার নিঃশ্বাস নেয়। তাকে দেখে মনে হয় সে অনেকক্ষণ থেকে এই সময়টার জন্যে অপেক্ষা করে আছে। লিডিয়া কিছুক্ষণ তাদের দিকে তাকিয়ে রইল, তারপর টেবিলের কোথায় জানি চাপ দিয়ে নিচু গলায় ইন্টারকমে কাউকে বলল, “এদের সরিয়ে নিয়ে যাও।”

তিষা জিজ্ঞেস করল, “আমাদেরকে এখানে কেন এনেছ?”

“তোমরা দুই নির্বোধ যে নির্বুদ্ধিতা করেছিলে সেগুলো শুদ্ধ করার জন্যে।”

“তুমি বার বার বলছ আমরা নির্বুদ্ধিতা করেছি, কিন্তু সেটি কী বলছ না।”

“যদি নির্বোধ না হতে তাহলে বুঝে যেতে। নির্বোধ বলে বুঝতে পারছ না।”

তিষা বলল, “কিন্তু তুমি একজনকে জোর করে ধরে আনতে পার না। এটা বেআইনী।”

লিডিয়া কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তিষার দিকে তাকিয়ে আছে, সেই ভয়ংকর দৃষ্টি দেখে তিষার বুক কেঁপে উঠল। এটি মানুষের নয় এটি যেন একটি অশরীরি প্রেতাত্মার দৃষ্টি।

তিষা ভয় পাওয়া গলায় বলল, “আমাদেরকে এখন কী করবে?”

“সময় হলেই দেখবে।”

ঠিক তখন দরজা খুলে দুজন মানুষ এসে ঢুকল, তাদের পাহাড়ের মতো শরীর, তারা তিষা আর জনকে ধরে প্রায় শূন্যে তুলে ফেলল। তিষা সেই অবস্থায় জিজ্ঞেস করল, “মিশকা কোথায়? আমার মিশকা?”

কেউ তার প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রয়োজন মনে করল না।

.

তিষা আর জনকে যে ঘরটাতে আটকে রেখেছে সেই ঘরটা খুব সুন্দর, পাশে একটা ছোট ছিমছাম বাথরুম। বাথরুমে পরিষ্কার তোয়ালে, সাবান, টুথ ব্রাশ। ঘরের কোণায় ছোট একটা ফ্রীজ সেখানে কোল্ড ড্রিংকস, স্যান্ডউইচ এবং কিছু ফলমূল। ঘরের দুই পাশে দুটো সোফা, সোফার উপর ভাঁজ করে রাখা কম্বল। সোফায় বসে থাকা যায় ইচ্ছে করলে শুয়ে থাকা যায়।

এই ঘরে এনে তাদের হাতের বাঁধন খুলে দিয়েছে। মধ্যবয়স্ক যে মানুষটি তাদের ধরে এনেছে সে নিজেকে প্রফেশনাল বলে দাবী করেছিল, কথাটি নিশ্চয়ই সত্যি। তাদেরকে ধরে রীতিমত প্লেনে উড়িয়ে অন্য স্টেটে নিয়ে এসেছে কোথাও বিন্দুমাত্র ঝামেলা হয়নি। যাদের আকাশে ওড়ার জন্যে নিজেদের প্লেন থাকে নিজেদের রানওয়ে থাকে তাদেরকে মনে হয় গুরুত্ব দিয়েই নেয়া উচিৎ। তিষা আর জন এখন তাদেরকে খুব গুরুত্ব দিয়ে নিচ্ছে।

ভয়ে এবং আতংকে তিষার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে, সেই তুলনায় জন মনে হল বেশ শান্ত। সে ফ্রীজ খুলে একটা স্যান্ডউইচ বের করে খেয়ে ফেলল। শুধু যে খেল তা নয়, বেশ তৃপ্তি করে খেল এবং খাওয়া শেষ করে তিষাকে বলল, “খেয়ে দেখতে পার। বেশ ভালো স্যান্ডউইচ।”

তিষা স্যান্ডউইচের ধারে কাছে গেল না, ভয় পাওয়া গলায় বলল, “আমাদের কী হবে?”

জন বলল, “এখন কী করবে জানি না কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিশ্চয়ই মেরে ফেলবে।”

তিষা আতংকিত হয়ে বলল, “মেরে ফেলবে? মেরে ফেলবে কেন? আমরা কী করেছি।”

“আমরা মনে হয় ওদের বিলিওন বিলিওন ডলারের ব্যবসার অনেক ক্ষতি করেছি।”

“কখন ব্যবসার ক্ষতি করেছি?”

“ঐ যে তুমি ভিডিওটা আপলোড করে দিলে তখন। ওটা আপলোড করা ঠিক হয়নি।”

“আমি বুঝতে পারিনি–আমি ভেবেছিলাম–”

“এখন চিন্তা করে লাভ নেই।”

তিষা অবুঝের মতো বলল, “সেইজন্যে আমাদের মেরে ফেলবে?”

তার কথা শেষ হবার আগেই ঘরের দরজাটা খুলে যায়। দরজায় প্রায় যমদূতের মতো দুজন মানুষ তাদের হাতে দুটো স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, তারা রাইফেলটি তাদের দিকে তাক করে গুলী করতে শুরু করে। বাঁচার আদিম প্রবৃত্তির কারণে দুজনেই চিৎকার করে মাথা নিচু করে মেঝেতে শুয়ে পড়ল এবং তাদের মাথার উপর দিয়ে বুলেটগুলো ছুটে যেতে থাকে, সেগুলো পিছনের দেওয়ালে আঘাত করতে থাকে। তারা দুজন মাথা নিচু করে ঘাপটি মেরে পড়ে রইল এবং বেশ কিছুক্ষণ তাদের মাথার উপর দিয়ে বুলেটগুলো ছুটে গেল। স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের প্রচণ্ড আওয়াজ তাদের কানে তালা লেগে যায়। ঘর ধূলো বালিতে অন্ধকার হয়ে যায়।

যমদূতের মতো মানুষগুলো যে-ভাবে হঠাৎ করে গুলী শুরু করেছিল, ঠিক সেরকম হঠাৎ করে গুলী থামিয়ে, দরজা বন্ধ করে চলে গেল।

প্রথমে জন তারপর তিষা উঠে দাঁড়ায়। তিষা ভয়ে থর থর করে কাপঁছে, ফিস ফিস করে বলল, “কী হয়েছে? কী হয়েছে এখানে?”

জন বলল, “আমাদেরকে মারতে চায়নি। শুধু ভয় দেখিয়েছে।”

“কেন? ভয় দেখাবে কেন?”

“জানি না। মারতে চাইলে আমাদের গুলী করতে পারত। গুলী করেনি।”

দুইজন ঘরটার দিকে তাকায়। রাইফেলের গুলীতে ঘরটা লণ্ডভণ্ড হয়ে এনিম্যান গেছে। ঘরের ভেতর ধূলো, ধোঁয়া এবং বারুদের গন্ধ।

.

ঠিক তখন এই বিল্ডিংয়ের অন্য মাথায় লিডিয়া একটা কনফারেন্স রুমে বসেছে। টেবিলে বেশ কয়েকজন নানা বয়সী মানুষ নিঃশব্দে বসে আছে। তাদের মুখ পুরোপুরি ভাবলেশহীন, দেখে মনে হয় তাদের মুখে কখনো আনন্দ দুঃখ বেদনা বা কোনো কিছুরই ছাপ পড়ে না।

লিডিয়া তার চেয়ারে সোজা হয়ে বসে বলল, “আমি কোনোরকম ভূমিকা না করে সরাসরি শুরু করে দিই। আমাদের হাতে একেবারে সময় নেই।”

সবাই নিজ নিজ চেয়ারে সোজা হয়ে বসে নিরুত্তাপ দৃষ্টিতে লিডিয়ার দিকে তাকাল। লিডিয়া বলল, “বারো ঘন্টা আগে তিষা আহমেদ নামে পনেরো বছরের একটা মেয়ে আর জন উইটক্যাম্প নামে ষোল বছরের একটা ছেলে ইন্টারনেটে একটা ভিডিও আপলোড করেছে। ভিডিওর বিষয়বস্তু হচ্ছে এনিম্যানকে সাইন ল্যাংগুয়েজ শিখিয়ে দিলে সেটি সাইন ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে কথা বার্তা বলতে পারে। তারা তার উদাহরণ হিসেবে তাদের এনিম্যানকে সাইন ল্যাংগুয়েজ শিখিয়ে তার কাছ থেকে অনেক তথ্য বের করে এনেছে, যেগুলো আমাদের কর্পোরেশনের জন্যে ভয়ংকর বিপদজনক।

“ভিডিওটা আমরা খুব সাবধানে পর্যবেক্ষণ করছি। এখনো খুব বেশী মানুষ দেখেনি। কিন্তু যারাই দেখছে তারাই এটা অন্যকে দেখার জন্য উৎসাহিত করছে। কাজেই আমাদের হিসেবে আগামী ছত্রিশঘন্টার মাঝে এটা ভাইরাল হয়ে যাবে, বিয়াল্লিশ ঘন্টার মাঝে এটা জাতীয় পত্রিকায় আর আটচল্লিশ ঘন্টার মাঝে আন্তর্জাতিক খবরে চলে আসবে। এক কথায় আমরা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাব।”

লিডিয়া চুপ করে সবার দিকে তাকাল। সবাই ভাবলেশহীনভাবে যন্ত্রের মতো তার দিকে তাকিয়ে রইল। লিডিয়া বলল, “আমরা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাব কথাটার অর্থ বুঝতে পারছ? তার অর্থ এই প্রতিষ্ঠানের সবাই আইনী ঝামেলায় পড়ে যাবে। আমাদের বাকী জীবন জেলে কাটাতে হবে।

“আমাদের বেঁচে থাকার একটা উপায়। কোনো না কোনোভাবে পৃথিবীর মানুষকে বোঝাতে হবে যে এই টিনএজ ছেলেমেয়ের তৈরি ভিডিওটা ভূয়া এবং এই ছেলেমেয়ে দুটো আসলে গ্রহণযোগ্য চরিত্রের নয়। তারা অসৎ, অসামাজিক এবং ড্রাগ এডিক্ট।

“আমরা সেই কাজ শুরু করেছি। তোমরা সবাই জান আমরা পৃথিবীর চলচ্চিত্র জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রাফিক্স সফটওয়ার কিনেছি। একটা সময় ছিল যখন কোনো চলচ্চিত্র তৈরী করার জন্যে অভিনেতা অভিনেত্রীদের পুরা সময় অভিনয় করতে হতো। এখন তার প্রয়োজন হয় না, তোমরা নিশ্চয়ই ব্লক বাস্টার ছবি দি থার্ড আই দেখেছ সেখানে অভিনয় করেছে ক্যারেন মাহিলা আর রিচি কর্ডোনা। তোমরা সবাই জান ছবি তৈরী করার আগে ক্যারেন আর রিচির শরীরের সম্ভাব্য সকল অঙ্গভঙ্গীর ভিডিও করা হয়েছিল। তারপর গ্রাফিক্স সফটওয়ার সেই সম্ভাব্য সকল অঙ্গভঙ্গীকে ব্যবহার করে মূল ছবিটা তৈরী করেছে। ছবিটি দেখে কেউ বুঝতে পারে না যে আসলে এখানে ক্যারেন বা রিচি অভিনয় করেনি।

“আমরা এই সফটওয়ার ব্যবহার করে তিষা আর জনের একটা ভিডিও তৈরি করব। যেখানে দেখানো হবে তিষা আর জন তাদের এনিম্যানকে দিয়ে জোর করে একটিং করিয়ে এই ভিডিওটা তৈরী করেছে। শুধু তাই না আরো একটা ভিডিওতে দেখানো হবে যে তারা আসলে ড্রাগ এডিক্ট, তারা দুইজন ড্রাগ নেয়, নানা ধরনের অপকর্ম করে।”

কনফারেন্স টেবিলের অন্য পাশে বসে থাকা স্কুল মাস্টারের মতো দেখতে শুকনো খিটখিটে একজন মানুষ বলল, “আমরা স্ক্রিপটা তৈরী করেছি। এখন গ্রাফিক্সের কাজ শুরু করব। সে জন্যে আমার এই ছেলে মেয়ের ভিডিও গুলো দরকার।

লিডিয়া বলল, “ভিডিও নেয়া শুরু হয়েছে। তাদেরকে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়েছে সেখানে নানা ধরনের পরিস্থিতি তৈরী করে তাদের ভিডিও নেয়া হচ্ছে। তাদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে, অপমান করা হবে, যন্ত্রণা দেয়া হবে, আনন্দ দেয়া হবে–”

“আনন্দ? আনন্দ কেমন করে দেবে?”

“দুইভাবে। ড্রাগস দিয়ে এবং তাদের পোষা এনিম্যান দিয়ে। পোষা এনিম্যানটা তাদের কাছে রাখব, সেটাকে দেখলে তারা নিশ্চয়ই এক ধরনের আনন্দ পাবে।”

শুকনো খিটখিটে মানুষটা বলল, “ যাই হোক আমি ডিটেলসে যাচ্ছি না। আমার টিম রেডি। তুমি যত তাড়াতাড়ি আমাকে ভিডিও ফুটেজটা দেবে আমি তত তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করব।”

লিডিয়া মাথা নাড়ল, বলল, “আজ রাতের মাঝে তুমি পেয়ে যাবে।”

“আমি অন্য একটা শরীর ব্যবহার করে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তোমার ভিডিও ফুটেজ পেলে আসল শরীর বসিয়ে দেব।”

“চমৎকার।” লিডিয়া বলল, “মনে রেখো তোমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই শুধু আমরা এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পারি। এটা হচ্ছে। আমাদের অস্তিত্ত্বের প্রশ্ন।”

কেউ কোনো কথা বলল না। সবাই পাথরের মুখ করে লিডিয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।

.

ঘন্টা খানেক পর লিডিয়া সিস্টেম ম্যানেজারকে তার অফিসে ডেকে পাঠালো। সিস্টেম ম্যানেজার কমবয়সী একজন মেয়ে, লিডিয়ার ঘরে ঢুকে শংকিতভাবে দাঁড়িয়ে রইল। লিডিয়া জিজ্ঞেস করল, “তোমাকে যে দায়িত্বটি দিয়েছিলাম তার কী খবর?”

“কাজ চলছে। যতই ডাটা আসছে ততই ভবিষ্যৎবাণী ভালো হচ্ছে।”

“আমাকে দেখাতে পারবে?”

“হ্যাঁ, অবশ্যই পারব।”

মেয়েটি লিডিয়ার টেবিলে বড় মনিটরটিতে লগ ইন করল কিছু গোপন পাসওয়ার্ড দিয়ে সে সরে দাঁড়াল, বলল, “বাম দিকে আসল মানুষ দুজন। ডানদিকে তাদের ভবিষ্যৎবাণী।”

লিডিয়া তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে দুটো ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে। বামদিকের ছবিতে তিষা সোফায় বসে আছে, কাছাকাছি আরেকটি সোফায় হেলান দিয়ে জন মেঝেতে বসে আছে। ডান দিকের ছবিটিও প্রায় একই রকম শুধু জন সোফায় হেলান না দিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে মেঝেতে বসে আছে। সুপার কম্পিউটারের সবচেয়ে চমকপ্রদ যে প্রোগ্রামটি ব্যবহার করা হচ্ছে এটি সেই সফটওয়ারের আউটপুট। একজন মানুষ সম্পর্কে তার সব তথ্য দিয়ে দেয়ার পর সেই মানুষটি কখন কী করবে সেটি এই সফটওয়ার প্রায় নিখুঁত ভাবে বলে দিতে পারে।

বাম দিকের ছবিতে দেখা গেল জন উঠে দাঁড়িয়ে ঘরে পায়চারী শুরু করেছে। ডানদিকেও দেখা গেল জন উঠে ঘরে পায়চারী করছে। সফটওয়ারটি নিখুঁতভাবে সেটি বলে দিতে পেরেছে।

লিডিয়া সম্ভষ্টির ভঙ্গী করে বলল, “তুমি কতোক্ষণ পর্যন্ত ভবিষ্যত্বাণী করতে পারবে?”

“এক ঘন্টা প্রায় নিখুঁত হয়। তারপর ধীরে ধীরে ছোটখাটো বিচ্যুতি দেখা দিতে পারে।”

“আমরা কী বিষয়টা পরীক্ষা করতে পারি।”

“কীভাবে পরীক্ষা করতে চাও?”

লিডিয়া বলল, “যদি আমরা এই দুজনের ঘরের দরজা খুলে তাদেরকে ছেড়ে দিই তাহলে তারা কখন কোথায় থাকবে সেটা কী ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবে?”

“পারার কথা।”

“কখন কোথায় যাবে, কী করবে সেটা বলতে পারবে?”

“পরের এক ঘন্টা নিখুঁতভাবে পারব। যদি এই ছেলে মেয়ের আরো কিছু ডাটা থাকে তাহলে আরো নিখুঁতভাবে পারার কথা।”

“চমৎকার।” লিডিয়া বলল, “তুমি এখন যেতে পার।”

মেয়েটি চলে যাবার পর লিডিয়া কিছুক্ষণ মনিটরটির দিকে তাকিয়ে রইল তারপর কী বোর্ডটি নিজের কাছে টেনে নিয়ে সেখানে নিজের নামটি টাইপ করে। লিডিয়া তার নিজের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণীটি দেখতে চায়।

লিডিয়া দেখল আটচল্লিশ ঘন্টার মাথায় একজন মানুষ তার মাথায়। গুলী করছে। মানুষটির চেহারা এখনো স্পষ্ট নয়। ধীরে ধীরে হয়তো স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

লিডিয়া হিংস্র মুখে কী বোর্ডটি ছুঁড়ে দিয়ে হিস হিস করে বলল, “না! এটা হতে পারে না। এটা হতে পারবে না।”