ধর্ম (বেদাঙ্গসূত্র)
গৃহ্যসূত্রগুলি ভারতবর্ষের ধর্মীয় ইতিহাসের একটি অত্যন্ত কৌতুহলজনক ও তাৎপর্যপূর্ণ স্তরের প্রতিনিধিত্ব করছে। এই সাহিত্য বৌদ্ধযুগের পরবর্তী এমন একটি সময়ে রচিত যখন ব্রাহ্মণ্য ধর্মের ভিত্তি কঠোরতম আঘাতে পতনোম্মুখ। অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্ৰাম তাকে একদিক দিযে উন্মেষশীল দর্শন প্ৰস্থানগুলির সঙ্গে একটি আপোসে উপনীত হতে বাধ্য করেছিল—উপনিষদগুলিতে তার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে দিয়ে অবৈদিক অনুষ্ঠান, বিশ্বাস, প্রত্নকথা, আচারবিধি প্ৰভৃতির অস্তিত্বকে স্বীকার করতে তা বাধ্য হয়েছিল এবং অব্যাহত ও ব্যাপক আর্যীকরণের মাধ্যমে এই স্বীকৃতি একটি বিশেষ চরিত্র অর্জন করল। এই প্রক্রিয়া বহুমন্ত্রের অসংগতির মধ্যে আভাসিত হয় যাদের সঙ্গে আলোচ্য অনুষ্ঠানের কোনো সম্ভাব্য সম্পর্ক নেই। এই ধর্মমতের মধ্যে প্রতিমা, মন্দির, পবিত্র অরণ্য, ব্ৰতকথা এবং অন্যান্য পৌরাণিক উপাদান অনুপ্রবিষ্ট হয়েছিল; এইসব পৌরাণিক উপাদানকে আর্যরূপ দান করার একটি অন্তিম প্রচেষ্টার দ্বারা ব্ৰাহ্মণ্য ধর্মের আয়ুষ্কাল প্রসারিত করার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়। বৈদিক ও অবৈদিক গাৰ্হস্থ্য অনুষ্ঠান সংমিশ্রিত হেয় একটি চরিত্রের গাৰ্হস্থ্য ধর্ম উদ্ভূত হয়ে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের সঙ্গে সংযোজিত হয়েছিল; গৃহ্যসূত্রগুলি এই আচার পদ্ধতিকে বিধিবদ্ধ করে তাদের সম্রাম ও নিষ্ঠার গুণে অন্বিত করতে চেয়েছিল।