১৬৯তম অধ্যায়
শিখণ্ডিপ্রমুখ বীরগণের বিক্রম
“ হে দুৰ্য্যোধন! পাঞ্চালরাজতনয় শিখন্তী রথীপ্রধান; তিনি বহুল [অনেক] পাঞ্চাল ও প্রভদ্রক সেনাসমভিব্যাহারে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইয়া তোমার সেনাগণমধ্যে যশোবিস্তার ও পৌরুষ প্রদর্শনপূর্ব্বক রথসমূহদ্বারা মহৎকাৰ্য্যের অনুষ্ঠান করিবেন। দ্রোণশিষ্য মহারথ ধৃষ্টদ্যুম্ন পাণ্ডবগণের সেনানী; আমি তাঁহাকে অতিরথ বিবেচনা করিয়া থাকি। যেমন নিতান্ত ক্রুদ্ধ ভগবান ব্যোমকেশ প্রলয়কালে প্ৰজাগণকে বিনষ্ট করেন, তদ্রূপ তিনি যুদ্ধে শত্ৰুগণকে বিনষ্ট করিবেন। সমরপ্রিয় মনুষ্যেরা কহিয়া থাকেন, ইঁহার রথ ও সৈন্য বহুসংখ্যাপ্রিযুক্ত সাগরের ন্যায় শোভা পাইয়া থাকে। ইঁহার আত্মজ ক্ষত্রধর্ম্মপরায়ণ, বালকত্বপ্রযুক্ত সাতিশয় পরিশ্রমে সমর্থ নহেন; অতএব আমি তাঁহাকে অৰ্দ্ধরথ বলিয়া বিবেচনা করিয়া থাকি। মহারাজ শিশুপালের পুত্ৰ মহারথ ধৃষ্টকেতু পাণ্ডবগণের সম্বন্ধী [কুটুম্ব], এক্ষণে তাঁহারা পিতাপুত্রে পাণ্ডবদিগের মহৎকাৰ্য্যানুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইবেন। মহারাজ ক্ষত্রদেব পাণ্ডবদিগের এক প্রধানীরথী ও ক্ষত্ৰিয়ধর্ম্মপরায়ণ। জয়ন্ত, অমিততেজঃ ও মহারথ সত্যজিৎপ্রভৃতি মহাত্মা পাঞ্চলগণ ক্রুদ্ধ কুঞ্জরের [হস্তীর] ন্যায় যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইবেন। মহাবলপরাক্রান্ত অজ ও ভোজ পাণ্ডবগণের হিতসংসাধনাৰ্থ যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইয়া সামৰ্থ্য প্রদর্শন করিবেন। ইঁহারা লঘুহস্ত, চিত্ৰযোধী ও দৃঢ়বিক্রম। যুদ্ধদুর্ম্মদ কেকায়েরা পঞ্চভ্রাতা— কাশিক, নীল, সূৰ্য্যদত্ত, শঙ্খ ও মদিরাশ্ব—ইঁহারা সকলেই রথী, যুদ্ধলক্ষণযুক্ত ও সর্ব্বশাস্ত্রবেত্তা। মহারাজ বাৰ্দ্ধক্ষেমি মহারথ, নৃপতি চিত্রায়ুধ [উত্তম অস্ত্ৰবিৎ] রথিশ্রেষ্ঠ, তিনি যুদ্ধবিশারদ ও অর্জ্জুনের একান্ত ভক্ত ছিলেন। চেকিতান ও সত্যধূতি-ইঁহারা রাখী। ব্যাঘ্রদত্ত ও চন্দ্রসেনকে পাণ্ডবগণের প্রধানরথী বলিতে পারি। বাসুদেব বা ভীমসেন সম সেনাবিন্দু ও ক্রোধহস্তা বিক্রম প্রকাশ্যপূর্ব্বক তোমার সেনাগণের সহিত যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হইবেন। তুমি যেমন দ্রোণ, কৃপ ও আমাকে সমরশ্লাষী [সমরে প্রশংসার পাত্র] বিবেচনা করিয়া থাক, তদ্রুপ তাঁহাকেও বিবেচনা করিবে। মহারাজ কাণ্ব সাতিশয় ক্ষিপ্ৰহস্ত, প্ৰশংসনীয় ও একরথ। সমরপ্রিয় দ্রুপদনন্দন সত্যজিৎ মহাবলপরাক্রান্ত, যুবা ও অষ্টরথীর সমান, তিনি এক্ষণে মহাবীর ধৃষ্টদ্যুম্নের ন্যায় অতিরথ হইয়াছেন; এক্ষণে পাণ্ডবগণতুল্য যশোলাভ করিবেন, এই বাসনায় মহৎ কাৰ্য্যের অনুষ্ঠান করিবেন। পাণ্ডবগণের অনুরাগভাজন মহাবীৰ্য্য পাণ্ড্যরাজ মহারথ । শ্রেণিমান ও বসুদান—ইহারা উভয়েই অতিরথ।’ ”