১৬৫. চৈত্ররথ পর্বাধ্যায়, দ্রৌপদী ও ধৃষ্টদ্যুম্নের উৎপত্তিকথা
পঞ্চষষ্ট্যধিক শততম অধ্যায়।
জনমেজয় কহিলেন, হে ব্ৰহ্মন্! নরশ্রেষ্ঠ পাণ্ডবেরা বকরাক্ষসকে সংহার করিয়া পরে কি করিলেন, বলুন, শুনিতে আমার নিতান্ত অভিলাষ জন্মিয়াছে।
বৈশম্পায়ন কহিলেন,-মহারাজ! তাহার এইরূপে বরাক্ষসের প্রাণনাশ করিয়া বেদপাঠ করত সেই ব্রাহ্মণের অবাসে বাস করিতে লাগিলেন। এইরূপে কিয়দ্দিবস অতীত হইলে একদা এক ব্রাহ্মণ আশ্রয়লি, হইয়া ঐ ব্রাহ্মণের ভবনে প্রবেশ করিলেন। আতিথেয় ব্রাহ্মণ অভ্যাগত অতিথির যথোচিত সংকার করিয়া তাহাকে বিশ্রামার্থ আশ্রয় প্রদান করিলেন। পাণ্ডবেরা জননীসমভিব্যাহারে পরম শ্রদ্ধা ও সাতিশয় ভক্তিসহকারে ঐ ব্রাহ্মণের পরিচর্যা করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মণ তাঁহাদিগের সেবায় অতিশয় প্রীত ও প্রসন্ন হইয়া প্রসঙ্গক্রমে অতি বিচিত্র পবিত্র কথার উত্থাপন ও নানা দেশ, নগরী, তীর্থস্থান, নদী, অনেকানেক রাজার উপাখ্যান ও বহুবিধ অত্যাচৰ্য ব্যাপার সমুদায় কীর্তন করিলেন। এই সমস্ত কথা সমাপন হইলে পাঞ্চালদেশে অতি অদ্ভুত দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর ব্যাপার, ধৃষ্টদ্যুম্ন ও শিখণ্ডির উংপত্তি ও মহারাজ দ্রুপদের মহাযজ্ঞে অযোনিসম্ভবা দ্রৌপদীর জন্মবৃত্তান্ত শ্রবণ করাইলেন। পাণ্ডবেরা ব্রাহ্মণের মুখে এই বিস্ময়কর ব্যাপার শ্রবণ করিয়া একান্ত কৌতূহলাক্ৰান্তচিত্তে কহিলেন, হে মহাশয়! যজ্ঞবেদীস্থিত জ্বলন্ত জ্বলনমধ্য হইতে কিরূপে দ্রুপদপুত্র ধৃষ্টদ্যুম্ন ও দ্রৌপদী সম্ভুত হইলেন, মহাধনুর্ধর দ্রোণ হইতেই বা কি প্রকারে দ্রুপদ ধনুৰ্বেদ শিক্ষা করেন, আর তাহাদিগের তাদৃশ সখ্যতাবই বা কি কারণে বিচ্ছিন্ন হইল, মহাশয়। অনুগ্ৰহ করিয়া এই সমস্ত আদ্যোপান্ত কীর্তন করুন। ব্রাহ্মণ তাঁহাদিগের এইরূপ প্রেরণাপরতন্ত্র হইয়া অতি বিচিত্র দ্রৌপদীসম্ভব পবিত্ৰ বৃত্তান্ত কহিতে লাগিলেন।