১৬৪তম অধ্যায়
বিভিন্ন রাজগণের যুদ্ধসাহায্যসূচনা
“ ‘হে দুৰ্য্যোধন! কাম্বোজদেশীয় একরথ সুদক্ষিণ তোমার কাৰ্য্যসংসাধনাৰ্থ শক্রগণের সহিত যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হইবেন। তখন কৌরবগণ রণস্থলে দেবরাজ ইন্দ্রের ন্যায় তাহার পরাক্রম প্রত্যক্ষ করিবেন। তাঁহার রথসমূহে শলভশ্রেণীর ন্যায় কাম্বোজদেশীয় অতিবেগবান বীরগণ অবস্থান করিয়া থাকেন। মাহিষ্মতীর অধিবাসী নীলবর্ণবর্ম্মধারী মহারাজ নীল তোমারই রথী; তিনি রথসমূহসমভিব্যাহারে শত্ৰুগণের সহিত যুদ্ধ করিবেন। সহদেবের সহিত তাঁহার শত্রুভাব বদ্ধমূল হইয়া আছে; অতএব এক্ষণে তিনি তোমার কাৰ্য্যসংসাধনাৰ্থ সমধিক যত্নবান হইবেন। যেমন ক্রীড়ানিরত যুথপতি মাতঙ্গযুগল যুথমধ্যে সঞ্চরণ করিয়া থাকে তদ্রুপ মহাবল পরাক্রান্ত অবন্তিদেশীয় বিন্দ ও অনুবিন্দ যুদ্ধার্থী হইয়া সমরভূমিতে বিচরণ করিয়া গদা, প্রাস, অসি, নারাচ ও তোমরদ্বারা তোমার শত্রুসৈন্যগণকে বিনষ্ট করিবেন। ত্রিগর্তেরা পঞ্চভ্রাতা বিরাটনগরে পাণ্ডবগণের সহিত শত্রুতা করিয়াছিলেন, যেমন মকরগণ তরঙ্গমালাসঙ্কুল ভাগীরথীকে বিক্ষোভিত করিয়া থাকে, তদ্রূপ তাহারাও পাণ্ডবদিগের সৈন্যগণকে বিচলিত করিবেন। সেই পঞ্চরথীর মধ্যে সত্যরথই প্রধান। ভীমার্জ্জুন দিগ্বিজয়প্রসঙ্গে তাঁহাদিগের যেসমস্ত অপ্রিয় অনুষ্ঠান করিয়াছিল, এক্ষণে তাঁহারা তাহা স্মরণ করিয়া সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইবেন এবং পাণ্ডবগণের সহায় মহারথপ্রধান ক্ষত্ৰিয়ধুরন্ধর মহাবীরদিগকে বিনাশ করিবেন।
“ ‘তরুণবয়স্ক [যুবা] সুকুমার তোমার আত্মজ লক্ষ্মণ ও দুঃশাসনের পুত্ৰ মহৎকর্মের অনুষ্ঠান করিবে; ইহারা সংগ্রামে অপরাঙ্মুখ [অপশ্চাৎপদ—অনিবৃত্ত] যুদ্ধবিশারদ, অতিবেগবান, সকলের প্রণেতা [চালক] ও রহী। একরথ রাজা দণ্ডধার [তন্নামক নৃপতি] স্বীয় সৈন্যগণকর্ত্তৃক সুরক্ষিত হইয়া যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইবেন। অযোধ্যাধিপতি [* দুৰ্য্যোধনাদি বৃহদ্বলের বন্ধু অতএব বন্ধুসন্তোষার্থ বৃহদ্বল যুদ্ধ করিবেন] মহাবলপরাক্রান্ত রথী মহারাজ বৃহদ্বল স্বীয় বন্ধুগণকে সন্তুষ্ট করিয়া তোমার হিতের নিমিত্ত যুদ্ধ করিবেন [*]। যিনি মহর্ষি গৌতম শরদ্বানের ঔরসে শরস্তম্বে অজেয় কার্ত্তিকেয়ের ন্যায় সমুৎপন্ন হইয়াছেন, সেই কৃপ তোমার প্রিয়ানুষ্ঠানপরতন্ত্র [মনোমত কার্য্যসাধনে একান্ত নিযুক্ত] হইয়া জীবনাশা পরিত্যাগপূর্ব্বক বিপক্ষগণকে বিনষ্ট করিতে প্ৰবৃত্ত হইবেন এবং হুতাশনের ন্যায় বিবিধায়ুধধারী [নানাপ্রকার অস্ত্রশস্ত্ৰধারী] বহুল বল দগ্ধ করিয়া সমরে সঞ্চরণ করবেন।” ”