১৫. রহস্যের মীমাংসা

রহস্যের মীমাংসা

ঝুমনকে ডেকে শঙ্কর কিছু লুচি ও তরকারী করবার জন্য আদেশ দিতেই কিরীটী বাধা দিলে, আরে ক্ষেপেছিস শঙ্কর, এই রাত্রে মিথ্যে কেন ও বেচারীকে কষ্ট দিবি! তার চাইতে বল্ এক কাপ গরম গরম চা বানিয়ে দিক। আর তার সঙ্গে ঘরে যদি কেক বিসকি কিছু থাকে তবে তাই দু-চারটে দে, তাতেই হয়ে যাবে।

ঘরে কেক ছিল। ঝুমন একটা প্লেটে করে কয়েকটা plum cake ও এক কাপ চা এনে কিরীটীর সামনে টিপয়ে নামিয়ে রাখতে রাখতে বললে, দিই না সাহেব কয়েকটা লুচি ভেজে, কতক্ষণ বা লাগবে!

কিরীটী হাসতে হাসতে বললে, ওরে না না। তুই শুতে হ্যাঁ। এতেই আমার হবে, কাল যদি এখানে থাকি তো বেশ করে পেট ভরে খাওয়াস।

ঝুমন চলে গেল।

কিরীটী জামার পকেট থেকে চুবোট বের করে তাতে অগ্নিসংযোগ করে মৃদু টান দিতে লাগল।…

কিছুক্ষণ ধূমপান করবার পর প্রায়-ঠাণ্ডা চায়ের কাপটা তুলে নিতে নিতে বললে, cold tea with a Burma cigar, is a joy for ever.

সকলে একসঙ্গে হেসে উঠল কিরীটীর নিজস্ব কবিতা শুনে।

কিন্তু আমার শরীর যে ঘুমে ভেঙে আসছে শঙ্কর, শীঘ্র কোথায় শুতে দিবি বল? কিরীটী শঙ্করের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল।

শঙ্কর নিজের ঘরেরই এক পাশে একটা ক্যাম্প খাটে কিরীটীর শোয়ার বন্দোবস্ত করে দিল।

কিরীটী শয্যার উপরে গা এলিয়ে দিয়ে লেপটা টেনে নিল।

.

পরের দিন সকালে শঙ্কর ঘুম ভেঙে উঠে বসেছে।

এমন সময় একজন সাঁওতাল কুলি ছুটতে ছুটতে এসে হাজির। বাবু, হুজুর মালিক এসেছেন গো–

মালিক? কখন এলেন তিনি?

কাল রাতে বাবু।

কে কাল রাতে এসেছেন শঙ্কর?

চমকে ফিরে তাকিয়ে দেখি খোলা দরজার ওপরে দাঁড়িয়ে কিরীটী।

খনির মালিক সুধাময়বাবু কাল রাত্রে এসেছেন।

যা, তাড়াতাড়ি মনিবের সঙ্গে একবার মোলাকাত করে আয়।

হ্যাঁ, যাই।

হাত মুখ ধুয়ে শঙ্কর তখুনি মনিবের সঙ্গে দেখা করতে ছুটল।

খনির অল্প দূরে মাঠের মধ্যে একটা বাংলো প্যাটার্নের বাড়ি। খনির দুজন অংশীদার হনুমানপ্রসাদ ঝুনঝুনওয়ালা আর সুধাময় চৌধুরী। অংশীদারের মধ্যে কেউ কখনো এলে ঐ বাংলো বাড়িতেই ওঠেন। অন্য সময় বাংলো তালা-চাবি দেওয়াই থাকে।

শঙ্কর যখন এসে বাংলো বাড়িতে প্রবেশ করল, সুধাময়বাবু তখন ঘুম ভেঙে উঠে বসে ধূমায়িত চায়ের সঙ্গে গরম গরম লুচির সদ্ব্যবহার করছেন।

ভৃত্যকে দিয়ে সংবাদ পাঠাতেই শঙ্করের ভিতরে ডাক এল। বহুমূল্য আসবাবপত্রে সাজানো কখানি গৃহস্বামীর রুচির পরিচয় দেয়।

একটা বেতের চেয়ারে বসে সুধাময়বাবু প্রাতরাশ খাচ্ছিলেন।

শঙ্কর ঘরে ঢুকে হাত তুলে নমস্কার জানাল, নমস্কার স্যার।

নমস্কার। বসুন। আপনিই এখানকার নতুন ম্যানেজার শঙ্কর সেন?

আজ্ঞে।

বেশ, বেশ।

শঙ্কর একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল।

ওরে কে আছিস, ম্যানেজারবাবুকে চা দিয়ে হ্যাঁ। সুধাময়বাবু হাঁক দিলেন।

না, না। ব্যস্ত হবেন না। এই মাত্র বাড়ি থেকে চা খেয়ে বেরুচ্ছি।

তাতে আর কী Add a cup more, কোনো harm নেই।

শঙ্কর সুধাময়বাবুর দিকে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগল।

উঁচু লম্বা বলিষ্ঠ চেহারা। মাথার মাঝখানে সিঁথি। চোখা নাক। চোখ দুটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিন্তু বেশ লালচে। শিকারী বিড়ালের মত সদাচঞ্চল, অস্থির ও সজাগ। গায়ের রং আলুশ কাঠের মত কালো। ভদ্র বেশ না হলেও সাঁওতালদেরই একজন বলে ধরা যেতে পারে অনায়াসেই। গায়ে বাদামী রংয়ের দামী সার্জের গরম সুট।

ভৃত্য চা দিয়ে গেল। শঙ্কর চায়ের কাপটা টেনে নিল।

তারপর মিঃ সেন, আপনাদের কাজকর্ম চলছে কেমন?

মন্দ না। তবে পর পর এমনভাবে খুন হওয়ায় এখানকার কুলিকামিনদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া কাল রাত্রে আমাদের সরকার মশাই বিমলবাবু অদৃশ্য আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন।

কে নিহত হয়েছে?

বিমলবাবু।

The villain! Rightly served. I hated him most amongst my employees, but I am also determined to give up my shares. I am really fed-up with all this. ঝুনঝুনওয়ালাও আজই বিকেলের দিকে এসে পৌঁছচ্ছেন। শুনলাম তিনিও বেচে দেবেন তাঁর share।

মনিবকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে কাজকর্ম দেখে, শঙ্করের বাংলোয় ফিরতে ফিরতে বেলা দুটো বেজে গেল।

.

সন্ধ্যার ধূসর ছায়া ধরিত্রীর বুকে যেন রহস্যের যবনিকার মত নেমে এসেছে।

শঙ্করের ডাকবাংলোয় সকলে একত্রিত হয়েছে। খনির দুই অংশীদার সুধাময় চৌধুরী ও হনুমানপ্রসাদ ঝুনঝুনওয়ালা, সুব্রত, কিরীটী, দারোগাবাবু ছদ্মবেশে ও শঙ্কর নিজে। কিরীটী বলেছে আজ অপরাধী কে সকলের সামনে প্রকাশ করে বলবে এবং হাতে হাতে দারোগাবাবুর জিম্মায় দিয়ে দেবে। সুধাময়বাবু ও ঝুনঝুনওয়ালা দুজনেই বলেছেন, অপরাধীকে ধরিয়ে দিতে পারলে দুজনেই পাঁচ হাজার করে দশ হাজার টাকা কিরীটীকে পুরস্কার দেবেন।

কিরীটী বলতে লাগল : BeforeImention the name let me have my reward first of all with the promise that if I fail I will return the same.

সুধাময়বাবু ও ঝুনঝুনওয়ালা দুজনেই হাসতে হাসতে পাঁচ হাজার করে দশ হাজার টাকার দুখানা চেক লিখে দিলেন, এই নিন।

তাহলে আপনারা সকলে শুনুন।

এই খনি অভিশপ্ত নয়, ভূতের আস্তানাও নয়; প্রচুর লাভের খনি। এবং আজ পর্যন্ত। এই খনিতে যতগুলো খুন হয়েছে তার জন্যে সর্বাংশে দায়ী খনির অন্যতম অংশীদার স্বয়ং সুধাময় চৌধুরী।…

ঘরের মধ্যে বজ্ৰত হলেও বোধ হয় এতটা কেউ চমকে উঠত না।

প্রবল ব্যঙ্গমিশ্রিত স্বরে সুধাময়বাবু প্রচণ্ড হাসির তুফান তুলে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর এক হাত প্যান্টের পকেটে। সহসা পিস্তলের গর্জন শোনা গেল।

গুড়ুম!

উঃ! একটা বেদনার্ত চিৎকার করে সুধাময়বাবু একপাশে টলে পড়লেন এক হাত দিয়ে ডানদিকের পাঁজরা চেপে ধরে, অন্য হাত থেকে একটা রিভলবার ছিটকে পড়ল।

শয়তান! কুকুর! তোকে কুকুরের মতই গুলি করতে বাধ্য হলাম—দারোগা সাহেব গর্জন করে উঠল, না হলে তুই-ই হয়ত এখনি আমায় গুলি করতিস। জীবনে হয়ত আজ এই প্রথম সত্যিকারের গুলি করতে বাধ্য হলাম, কিন্তু তার জন্য আমার এতটুকু অনুশোচনা হচ্ছে না। যে নৃশংস এতগুলো খুন পর পর করতে পারে তার একমাত্র শাস্তিই পাগলা কুকুরের মত গুলি খেয়ে মরা।

উঃ কিরীটীবাবু, আপনার কথাই ঠিক। অতি লোভ সত্যিই শেষ পর্যন্ত আমার মৃত্যুর কারণ হল। হ্যাঁ, স্বীকার করছি আমি—আমিই সব খুন করেছি। উঃ!

ধীরে ধীরে হতভাগ্য সুধাময় চৌধুরীর প্রাণবায়ু বাতাসে মিশে গেল।

সহসা যেন নাটকের যবনিকাপাত ঘটল।

ঘরের সব কটি প্রাণীই স্তব্ধ।

কারও মুখে কোনো কথা নেই।

কিরীটী এতক্ষণে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসল, এবারে আমি আমার বক্তব্য সব সংক্ষেপে শেষ করব। কেননা আজকের রাত্রের Bus-ই আমায় ধরতে হবে। একটা কথা সর্বাগ্রে আপনাদের কাছে খুলে না বললে আমার এই ব্যাপারে explanation-টা সহজবোধ্য হবে না। বর্তমানে এই যে এখানকার কলিয়ারীটা দেখছেন, পঞ্চাশ বছর আগে এই কলিয়ারীর পাশের ঐ একটা কলিয়ারী হঠাৎ একদিন দ্বিপ্রহরে কোনো অজ্ঞাত কারণবশত ধসে যায় এরূপ কিংবদন্তী আছে। তারপর থেকেই এখানকার আশেপাশের লোকেরা এ জায়গাটা সম্পর্কে নানাপ্রকার মনগড়া বিভীষিকার কথা তুলে এটাকে অভিশপ্ত করে তোল। এমনি করে দীর্ঘ চল্লিশটা বছর কেটে যায়।

কেউ এর পাশে ঘেঁষে না।

এমন সময় কলিয়ারী শুরু করবার ইচ্ছায় মিঃ ঝুনঝুনওয়ালা ও সুধাময় চৌধুরী এদিকে ঘুরতে ঘুরতে এই অভিশপ্ত ফিল্ডটার সন্ধান পান এবং অচিরে এটার লিজ নেন নব্বই বছরের জন্য খুব সামান্য টাকায়।

কিন্তু কাজ আরম্ভ করতে আরও বছর চারেক কেটে যায়।

তারপর কাজ শুরু হল।

কাজ বেশ এগুচ্ছে এবং ফিল্ড থেকে প্রচুর কয়লা উঠছে।

এই সময় শয়তান সুধাময়ের মনে কু-মতলব জাগল। তিনি মনে মনে বদ্ধপরিকর হলেন ঝুনঝুনওয়ালাকে ফাঁকি দিতে। কিন্তু কেমন করে ঝুনঝুনওয়ালাকে সরানো যায় সেই চিন্তা করতে লাগলেন।

একদিন খনির কাজ পরিদর্শন করতে এসে সামান্য অজুহাতে খনির সরকার বিকাশবাবু ও ম্যানেজারের অ্যাসিস্টেন্ট সত্যকিংকরবাবুকে বরখাস্ত করে নিজের লোক বিমলবাবু ও চন্দনসিংকে নিযুক্ত করে গেলেন।

চন্দনসিং ও বিমলবাবু ছিল সুধাময়ের ডান ও বাঁ হাত, অপকর্মের প্রধান সঙ্গী বা সহায়ক। বিমলবাবু ও চন্দনসিং সুধাময়বাবুকে সকল সংবাদ সরবরাহ করত ও খনিটা ভৌতিক এই কিংবদন্তীকে আরও সুদৃঢ় করবার জন্য প্রোপাগাণ্ডা চালাত দিবারাত্র নানা ভাবে।

সুধাময়বাবুর রং ছিল ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। নিজে বহুকাল সাঁওতাল পরগণায় ঘুরে ঘুরে সাঁওতালদের সামাজিক রীতিনীতি আচার-ব্যবহার ও কথাবার্তাও পুরোপুরি ভাবেই আয়ত্ত করেছিলেন, এবং যাতে করে তিনি অনায়াসেই সাঁওতাল কুলিদের মধ্যে তাদের একজন সেজে দিব্যি খোসমেজাজে একের পর এক খুন করে চলেছিলেন। অথচ কেউ কোনোদিন সন্দেহ করবার অবকাশ পায়নি।

সুব্রতকে পাঠিয়ে দিয়েই আমি গোপনে পরের দিন সকালেই পাগলের ছদ্মবেশে এখানে চলে আসি এবং চারিদিকে নজর রেখে ব্যাপারটা বোঝবার চেষ্টা করি।

আমার কেন যেন মনে হয়, যে খুন করেছে এইভাবে পর পর ম্যানেজারদের, সে এখানে সর্বদা উপস্থিত থাকে। কিন্তু কি ভাবে সে এখানে থাকতে পারে? কর্মচারীদের মধ্যে একজন হয়ে থাকা তার পক্ষে সম্ভব নয়, কেননা তাতে চট করে ধরা পড়বার সম্ভাবনা খুব বেশী। তবে কেমন করে সে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে? অথচ এ কথা যখন অবধারিত, এখানে সর্বদা উপস্থিত না থাকলে চারিদিকে দেখেশুনে তার পক্ষে মানুষ খুন করা সম্ভব হয় না, তখন নিশ্চয়ই কুলিদের মধ্যেই তাদের একজন হয়ে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে।

সঙ্গে সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিই।

এবং এখানে আসবার দিন রাত্রে যখন কুলিদের মধ্যে একজন খুন হল, সে-সময় আমি কুলিদের ধাওড়ার মধ্যেই কুলি সেজে উপস্থিত ছিলাম; কুলিটাকে খুন করে সুধাময় কুলির ছদ্মবেশে যখন পালায় তখন আমি অন্ধকারে অনুসরণ করে তার ঘরটা দেখে আসি।

বিমলবাবু ও চন্দনসিংয়ের সাহায্যে নজন কুলিকে রাতারাতি ধানবাদে কাজের অছিলায় হাঁটাপথে রেল লাইন ধরে প্রচুর টাকা ঘুষ দিয়ে বিদায় করে মাত্র একজন কুলি নিয়ে বিমলবাবুর সাহায্যে রামলোচনের জামার পকেট থেকে চাবি চুরি করে, খনির মধ্যে নেমে ডিনামাইট দিয়ে পিলার ধসিয়ে ১৩নং কাঁথি ভাঙা হয় তাও আমার নজর এড়ায় না। সুব্রত, তুমি রুমালে বাঁধা পলতে ও ডিনামাইট পেয়েছ!

পরের দিন সকলে জানল দশজন লোক মারা গেছে। যদিও মারা গেল একজন মাত্র। এটা শুধু কুলিদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করবার জন্য সাজিয়ে করা হয়েছিল।

ম্যানেজারদের মারা হয় চারিদিকে সকলের মনে একটা ভয়াবহ আতঙ্ক জাগাবার জন্য, যাতে করে খনির কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং খনির কাজ বন্ধ হয়ে গেলে নিজে শেয়ার ছেড়ে দেবার ভান দেখিয়ে ঝুনঝুনওয়ালাকে দিয়ে তার শেয়ারও বিক্রি করিয়ে বেনামীতে সমগ্র খনিটা কিনে নিলেই কাজ হাসিল হয়ে যায়।

সব কিছু প্রায় হয়ে এল, সুধাময় ঝুনঝুনওয়ালার সঙ্গে চিঠিপত্র লিখে যখন সব ঠিক করে ফেললে, তখন তার অপকর্মের সহায়ক বিমলবাবু ও চন্দনসিংকে সরাবার মতলব করল।

গতকাল বিমলকে মারলেও চন্দনসিং নাগালের বাইরে পালিয়ে গেল। কেননা প্রভুর মনোগত ইচ্ছাটা সে আগেই টের পেয়েছিল। Metallic nails পরে তাতে বিষ মাখিয়ে হাতের আঙুলে পরে, তার সাহায্যে গলা টিপে সুধাময় কাজ হাসিল করত। Strangle করবার সময় সেই metallic nails গলার মাংসে বসে গিয়ে বিষের ক্রিয়ায় মৃত্যু ঘটাত। এখন কথা হচ্ছে, শার্দুলের ডাক যেটা শোনা যেত সেটা আর কিছুই নয় সুধাময় নিজেই মুখ দিয়ে বাঘের হুবহু অনুকরণ করতে পারত। তোমরা হয়ত শুনে থাকবে এক-একজন অবিকল পশুপক্ষীর ডাক মুখ দিয়ে অনুকরণ করতে পারে। এটা একটা মানুষকে ভয় দেখাবার ফন্দি। তাছাড়া খুব উঁচু হিলওয়ালা একপ্রকার কাঠের জুতো পরে গায়ে একটা ধূসরবর্ণের ওড়না চাপিয়ে সুধাময় মাঠের মধ্যে দিয়ে দ্রুতবেগে চলত। একে সে একটু বেশিরকম লম্বা ছিল, তার ওপরে কাঠের জুতো পরাতে তাকে বেশ অস্বাভাবিক রকম বলে মনে হত। কাঠের জুতো ব্যবহার করবার মধ্যে আর একটা মতলব তার ছিল; পায়ের ছাপ পড়ত না। সুব্রতকে মারবার জন্য একটা সাঁওতাল কুলিকে সুধাময়বাবুই engage করেছিলেন; কুলিটা বিষাক্ত তীর ছুঁড়ল, কিন্তু unsuccessfull হল। কিন্তু সুব্রতকে তীর ছোঁড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সুধাময়ও লোকটাকে গুলি করে মারে। আমি সেই সময় ওদের পেছনেfollow করতে করতে উপস্থিত ছিলাম বলে সব ব্যাপারটা নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি। এই হল এখানকার খনির মৃত্যুরহস্য।

কিরীটী চুপ করল।

আমাদের গল্পও এইখানেই শেষ হল।