তুই অতি দুরাচারী, হরিরি পরের নারী,
পরলোকে নাহি তোর ভয়।
দশরথ মহারাজা, দেবলোকে করে পূজা,
শ্রীরাম যে তাঁহার তনয়।।
যাঁহার দুর্জ্জয় বাণ, ভয়ে বিশ্ব কম্পমান,
হেন রাম লঙ্কার ভিতর।
দেবরাজ করে পূজা, হেলে মারে বালি রাজা,
তাঁর সনে তোর মনান্তর।।
সুগ্রীবের বল যত, তাহা বা কহিব কত,
সে সকল হইবি বিদিত।
তোরে এক লাথি মারি, কাঁপাইব লঙ্কাপুরী,
কি করিবে তোর ইন্দ্রজিৎ।।
শুন রাজা লঙ্কেশ্বর, আমার বচন ধর,
আইলাম দিতে সমাচার।
শ্রীরাম সাগর পার, নাহিক নিস্তার আর,
নিকটে যে তোর যমদ্বার।।
রাজা হয়ে পরদার, হরিলি রে দুরাচার,
বোধমাত্র নাহি তোর ঘটে।
কেবল ব্রহ্মার বরে, জিনিলি রে পুরন্দরে,
রামনামে তোর বল টুটে।।
রাখয়ে আপন প্রাণ, কর সীতা প্রতিদান,
ভজ গিয়া রামের চরণ।
ঘাটি মাগ তাঁর ঠাঁই, ইহা ভিন্ন গতি নাই,
তবে তার রহিবে জীবন।।
তোরা জাতি নিশাচর, না চিনিস্ আত্মপর,
তোর ভাই রামে কৈল মিত।
শ্রীরামের অঙ্গীকার, করিবেন এইবার,
বিভীষণে লঙ্কায় পূজিত।।
শুনিয়া অঙ্গদ-বাণী, সবে করে কাণাকাণি,
এ লঙ্কার নাহিক নিস্তার।
কোপে উঠে লঙ্কেশ্বর, বলে রাজা ধর ধর,
দেখি অঙ্গদের অহঙ্কার।।
দেখি সব সেনাপতি, মনে যুক্তি করে ইতি,
আমাদের রক্ষা নাহি আর।
রামপদ করি আশ, সরস্বতী পরকাশ,
কৃত্তিবাস নাচাড়ি সুসার।।