ভার্মার মুখ দেখে মনে হল, জীবনে তিনি এ-রকম অবাক কখনও হননি। চোখ দুটো একেবারে স্থির হয়ে গেছে। ফিসফিস করে তিনি বললেন, এ কী ব্যাপার? মিঃ রায়চৌধুরী কোথায় গেলেন?
রানা বললেন, ষ্ট্রেঞ্জ। ভেরি ষ্ট্রেঞ্জ! এই তো আমাদের পেছনেই ছিলেন, খানিকটা আগেই দেখতে পাচ্ছিলাম! কোনও কারণে উনি কি গম্বুজে ফিরে গেলেন?
ভার্মা বললেন, তা কী করে হবে? এত তাড়াতাড়ি উনি কী করে ফিরে যাবেন? উনি কি দৌড়তে পারেন? তাছাড়া আমাদের না বলে যাবেনই বা কেন?
ভার্মা এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন বরফের ওপর পড়ে থাকা ক্রাচটার দিকে।
রানা বললেন, উনি ক্রাচ ছাড়া হাঁটবেনই বা কী করে? ওখানে রক্তই বা পড়ে আছে কেন? কিছুই বুঝতে পারছি না যে!
সন্তুও এত অবাক হয়ে গেছে যে, কোনও কথা বলতে পারছে না। বিশেষত রক্ত দেখে তার বুকটা কাঁপছে।
মিংমা। হঠাৎ খুব জোরে চিৎকার করে উঠল, আংকল সাব! আংকল সাব।
জায়গাটা এমনই নিস্তব্ধ যে, মিংমার চিৎকারে যেন এই স্তব্ধতা ফেটে একেবারে ঝনঝন করতে লাগল। বহু দূরে প্রতিধ্বনি, যেন তিনদিক থেকে মিংমাকে ভেংচিয়ে কেউ বলতে লাগল, আংকল সাব, আংকল সাব!
মিংমা আরও দুবার ডাকতেই রানা বললেন, থাক, আর চিৎকার করতে হবে না। মিঃ রায়চৌধুরী কী আমাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলবেন নাকি?
ভার্মা বললেন, ইয়েতি অদৃশ্য হতে পারে, এ-কথা আমিও শুনেছি। কোনও ইয়েতি এসে যদি মিঃ রায়চৌধুরীকে ধরে নিয়ে যায়-
রানা বললেন, ইয়েটি? আপনিও ইয়েটিতে বিশ্বাস করেন?
ভার্মা বললেন, তা ছাড়া আর কী ব্যাখ্যা হতে পারে বলুন? এই জন্যই আমি তখন মিঃ রায়চৌধুরীকে বলেছিলাম, মাত্র এই কজন লোক নিয়ে এখন কালাপাথরের দিকে যাবার দরকার নেই।
মিংমা। এই সময় বরফের ওপর শুয়ে পড়ে গিরগিটির মতো আস্তে আস্তে এগোতে লাগল কাকাবাবুর ক্রাচটার দিকে।
ভার্মা বললেন, ও কী? ও-রকম করছে কেন?
রানা বললেন, ও দেখতে চাইছে, ওখানে কোনও ক্রিভাস আছে কিনা। একমাত্র চোরা কোনও ক্রিভাসের মধ্যে পা দিয়ে মিঃ রায়চৌধুরী নীচে ড়ুবে যেতে পারেন।
ভার্মা যেন নিজের অজান্তেই ভয় পেয়ে কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন। তারপর বললেন, আমরাও তো ঐখান দিয়েই এসেছি।
রানা বললেন, অনেক সময় ছোট-ছোট ক্রিভাস থাকে, ঠিক সেটার ওপর পা দিলেই বিপদ! মিংমা ঠিক কাজই করেছে, শুয়ে থাকলে হঠাৎ তলিয়ে যাবার ভয় থাকে না।
সন্তু বলল, রক্ত! ওখানে রক্ত কী করে আসবে? বরফের ওপর পড়ে গেলে তো বেশি জোর লাগে না? রক্তও বেরোবে না।
ভার্মা বললেন, ঠিক বলেছ। সন্তু, রক্ত কী করে এল?
মিংমা একটু-একটু করে এগিয়ে গিয়ে ক্রাচটাকে ধরে ফেলল। তারপর বরফের ওপর চাপড় মারতে লাগল জোরে জোরে। ওঁড়ো গুঁড়ো বরফ ছিটকাতে লাগল। সেই আঘাতে, কিন্তু স্পষ্ট বোঝা গেল সেখানকার বরফের মধ্যে কোনও গর্ত টর্ত নেই।
মিংমা আশেপাশের খানিকটা জায়গাও চাপড়ে দেখল ঐ এরকমভাবে, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে নিরাশ গলায় বলল, নেহিসাব!ইধার কিরভাস নহি?
রানা বললেন, আশ্চর্য! একটা মানুষ কি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে?
ভার্মা বললেন, ব্যাপারটা মোটেই আমার ভাল ঠেকছে না। আমাদের আর বেশিক্ষণ এখানে থাকা ঠিক নয়।
রানা বললেন, আমরা কি ফিরে যাব বলতে চান? মিঃ রায়চৌধুরীর খোঁজ না করেই? ইন্ডিয়া গভর্নমেন্টের বিশেষ রিকোয়েস্ট আছে, যাতে আমরা ওঁর নিরাপত্তার ভার নিই।
ভার্মা বললেন, আর কীভাবে খোঁজ করবেন? চারদিকে ধূ-ধূ করছে বরফ। এখানে কোনও মানুষের পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। আর মিঃ রায়চৌধুরীর মতন একজন খোঁড়া লোক দৌড়েও কোথাও চলে যেতে পারেন না। তাহলে তিনি গেলেন কোথায়?
রানা বললেন, সেটাই তো প্রশ্ন। তিনি গেলেন কোথায়? একটা না একটা ব্যাখ্যা এর নিশ্চয়ই আছে।
ভার্মা বললেন, দেখুন শেক্সপীয়ারের হ্যামলেটের সেই লাইনটা আমার মনে পড়ছে। দেয়ার আর মোর থিংস ইন হেভূন অ্যান্ড আর্থ, হোরিশিও, দ্যান আর ড্রেমট্ অব ইন ইওর ফিলসফি? আপনারা যা-ই বলুন, বাতাসে মাটিতে এখনও এমন রহস্য আছে, যা মানুষের অজানা!
রানা বললেন, সে কী, মিঃ ভার্মা! আপনি কি অলৌকিক ব্যাপারে বিশ্বাস করেন নাকি?
এ-কথার কোনও উত্তর না দিয়ে ভার্মা হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন বরফের ওপর। তারপর হাতজোড় করে কী যেন মন্ত্র পড়তে লাগলেন।
একটু বাদে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আমার ভীষণ শীত করছে। আমি আর এখানে থাকতে পারছিনা। চলুন, গম্বুজটার কাছে ফিরে যাই।
রানা কী-রকম যেন হতবুদ্ধি হয়ে গেলেন। আপন মনে বললেন, গম্বুজের কাছে ফিরে যাব? মিঃ রায়চৌধুরীর কী হবে?
ভার্মা বললেন, গম্বুজের কাছে ফিরে গিয়ে দেখা যাক। কোনও কারণে বা যে-কোনও উপায়ে উনি তো সেখানে যেতেও পারেন। হয়তো কোনও দরকারি জিনিস ফেলে এসেছিলেন।
রানা বললেন, গম্বুজটা কত দূরে! উনি অতদূরে ফিরে গেলেন, আর আমরা টেরও পেলাম না?
ভার্মা একটু বিরক্ত হয়ে বললেন, উনি আমাদের সামনে কোথাও যাননি, এ কথা তো ঠিক? ওঁকে খুঁজতে হলে আমাদের পেছনের দিকেই খুঁজতে হবে। আমার অসম্ভব শীত করছে। পা দুটো যেন জমে যাচ্ছে একেবারে। আর বেশিক্ষণ এখানে থাকলে আমিও মরে যাব?
সন্তু রানার মুখের দিকে চেয়ে বলল, আমি একটা কথা বলব?
রানা বললেন, কী? ভার্মা বললেন, চলো, গম্বুজের মধ্যে চলো, সেখানে বসে তোমার কথা শুনব।
সন্তু বলল, আমি একবার একটা ক্রিভাসের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম! ঐ মিংমা আমায় টেনে তুলেছিল।
মিংমা বলল, হাঁ সাব।
সন্তু বলল, আমি অনেকখানি ঢুকে গিয়েছিলাম বরফের মধ্যে। তারপর.একটা অদ্ভুত জিনিস মনে হয়েছিল। আমার পা কিসে যেন ঠেকে গেল। একটা শক্ত কিছুতে। আমার ধারণা, সেটা একটা লোহার পাত।
ভার্মা এবং রানা দুজনেই এক সঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন, কী?
সন্তু বলল, লোহার পাত।
ভার্মা ঠাট্টার হাসি হেসে বললেন, বরফের নীচে লোহার পাত? তোমার কি মাথা-টাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?
রানা আগ্রহ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কী করে বুঝলে লোহার পাত? পাথরও তো হতে পারে। বরফের খানিকটা নীচে তো পাথর থাকবেই!
সন্তু বলল, পায়ের তলায় পাথর ঠেকলে একরকম লাগে। আর লোহার পাতের মতন প্লেন কোনও জিনিস ঠেকলে অন্যরকম লাগে। আমার সেই অন্যরকম লেগেছিল।
ভার্মা বললেন, লোহার ঝনঝন শব্দ হয়েছিল?
সন্তু মাথা নিচু করে বলল, তা অবশ্য হয়নি। কিংবা হলেও আমি শু পাইনি। শুধু আমার অন্যরকম লেগেছিল।
রানা জিজ্ঞেস করল, সে জায়গাটা কোথায়?
সন্তু আঙুল তুলে বলল, সে জায়গাটা এখানে নয়। ঐ দিকে। সেখানে একটা কাঠির ওপর একটা লাল রুমাল বেঁধে রেখেছিল মিংমা। হয়তো খুঁজলে সে জায়গাটা বার করা যেতে পারে।
ভার্মা বললেন, আমরা শুধু এখানে সময় নষ্ট করছি। এদিকে হয়তো মিঃ রায়চৌধুরী কোনও কারণে আহত হয়ে গম্বুজে ফিরে গিয়ে বিশ্রাম করছেন। ধরা যাক, সন্তু যেখানে বরফে ড়ুবে গিয়েছিল, সেখানে বরফের নীচে একটা লোহার পাত পড়ে আছে। কেউ-না-কেউ হয়তো কখনও ফেলে গিয়েছিল। তার সঙ্গে এখানকার রহস্যটার সম্পর্ক কী? অ্যাঁ?
সন্তু বলল, কাকাবাবুর মুখে শুনেছি, কেইন শিপটন নামে একজন অভিযাত্রী এই রকম জায়গা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। কাকাবাবু তাঁর খোঁজেই এসেছেন। তারপর কাকাবাবুও সেই জায়গা থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এর মধ্যে কোনও যোগাযোগ থাকতে পারে না?
ভার্মা বললেন, এর মধ্যে আবার কেইন শিপটনের কথা এল কী করে? কে বলল, মিঃ রায়চৌধুরী কেইন শিপটনের খোঁজ করতে এখানে এসেছিলেন? কেইন শিপটন বিদেশি, তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন নেপালে। এ নিয়ে ভারত সরকার মাথা ঘামাবে কেন? তোমার কাকাবাবুইয়েতির রহস্য সম্বন্ধে গবেষণা করবেন বলে ভারত সরকারের সাহায্য চেয়েছিলেন। ইয়েতি সম্পর্কে আমার একটা থিয়োরি আছে, চলুন গম্বুজে ফিরে গিয়ে বলব!
রানা সন্তুর দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কী বলতে চাইছিলে?
সন্তু বলল, যেখানে রক্ত পড়ে আছে, ঐ জায়গার বরফটা একটু খুঁড়ে দেখলে হয় না? যদি ওর নীচে কিছু থাকে? ক্রাচ ছাড়া কাকাবাবুর পক্ষে তো কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়?
ভার্মা বললেন, মিংমা তো দেখল যে ওখানকার বরফ শক্ত, তার নীচে তোমার কাকাবাবু যাবেন কী করে? মিছিমিছি বরফ খুঁড়ে লাভ নেই কোনও। চলুন, মিঃ রানা, গম্বুজের দিকে চলুন, আমি আর থাকতে পারছি না।
রানা গম্ভীরভাবে বললেন, আপনার যদি খুব শীত করে তাহলে আপনি গম্বুজের দিকে এগোন, মিঃ ভার্মা। এই ছেলেটি যখন বলছে, তখন বরফ খুঁড়েই দেখা যাক। মিঃ রায়চৌধুরীর জন্য সব রকমের চেষ্টা করতে আমরা বাধ্য।
ভার্মা বললেন, আকাশের অবস্থাটা একবার দেখুন।
সবাই ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখল সত্যিই আকাশের অবস্থা হঠাৎ আবার বদলে গেছে। কী সুন্দর ঝকঝকে রোদ ছিল কিছুক্ষণ আগেও। এখন কালো-কালো মেঘ উড়ে আসছে যেন কোথা থেকে। যে-কোনও সময় বৃষ্টি নামতে পারে। অথবা ঝড় ওঠাও আশ্চর্য কিছু নয়। ঝড়ের মধ্যে বাইরে এরকমভাবে থাকা বেশ বিপজ্জনক।
মিংমা তার কাঁধের ঝোলা থেকে একটা গাইতি বার করে বলল, আমি ঝটপট খুঁড়ে দেখছি, সাব। বেশি টাইম লাগবে না।
বলা মাত্রই সে ঝাপঝাপ কোপ মারতে লাগল বরফের মধ্যে। দারুণ মজবুত মিংমার শরীর, তার হাত চলল। একেবারে যন্ত্রের মতন। সন্তু তার খুব কাছে গিয়ে দাঁড়াল।
দেখতে-দেখতে মিংমা অনেকখানি গর্ত খুঁড়ে ফেলল। ভার্মা আর রানা এসে সেই গর্তের মধ্যে উঁকি দিলেন। দুজনেরই মুখে সন্দেহ। সত্যিই একজন মানুষ এতখানি শক্ত বরফের মধ্যে তলিয়ে যাবেন কী করে!
এক সময় মিংমার গাইতির ঠং করে শব্দ হল, আর সন্তু চমকে উঠল সঙ্গে-সঙ্গে।
মিংমা আরও দুতিনবার গাইতি চালিয়েই থেমে গেল। এত ঠাণ্ডার মধ্যেও পরিশ্রমে তার কপালে ঘাম জিমেছে। বাঁ হাত দিয়ে ঘাম মুছে সে সন্তুর দিকে তাকিয়েই করুণ গলায় বলল, লোহার পাত না আছে, সন্তু সাব। পাখির হ্যায়, পাখির
নিচু হয়ে সে এক টুকরো পাথর তুলে আনল।
ভার্মা বললেন, বলেছিলাম না, নিছক পণ্ডশ্ৰম!
রানা বললেন, তাই তো!
ভার্মা বললেন, আর দেরি করবেন না। ঝড় উঠবে, শিগগির চলুন!
রানা বললেন, হ্যাঁ, আর এখানে থাকার কোনও মানে হয় না। চলুন, যাওয়া যাক!
মিংমা সন্তুর হাত ধরে বলল, চলো সন্তু সাব!
সন্তু খুব জোরে নীচের ঠোঁট কামড়ে ধরল। লোকজনের সামনে সে কখনও কাঁদতে চায় না। কিন্তু তার মনে হল তারা যেন কাকাবাবুকে এখানে অসহায় অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে। অথচ, ঝড়ের মধ্যে এখানে দাঁড়িয়ে থাকাও যাবে না।
ঝড় তখনই উঠল না বটে, কিন্তু আকাশটা ক্রমশ বেশি কালো হয়ে আসতে লাগল। ওরা সবাই মিলে ফিরে চলল গম্বুজের দিকে।
ভার্মা বললেন, ঝড় উঠলে আরও কী বিপদ হবে জানেন? হেলিকপটারটা ফিরতে পারবে না! তাহলে সারা রাত আমাদের ঐ ভুতুড়ে গম্বুজের মধ্যে থাকত হবে! ওরে বাপরে বাপ! এখানে সত্যিই ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটছে।
আর কেউ কোনও কথা বলল না। প্ৰায় চল্লিশ মিনিট হেঁটে ওরা এসে পৌঁছল। গম্বুজটার কাছে। মিংমা দৌড়ে গিয়ে গম্বুজটার ভেতরে ঢুকে পড়ল।
একটু পরেই গম্বুজের ওপরের জানলার কাছে দাঁড়িয়ে মিংমা বলল, নেহি সাব, আংকল সাব ইধার ভি নেহি হ্যায়।
রানা বললেন, যাঃ, শেষ আশাটাও গেল।
প্রায় তক্ষুনি ফট-ফট শব্দ পাওয়া গেল আকাশে। হেলিকপটারটা ফিরে আসছে। ভার্মা বললেন, বাঃ, চমৎকার! তা হলে রাত্রে এখানে থাকতে হবে না। চলুন, চলুন, আর দেরি করবেন না।
সন্তু বলল, আমরা এখান থেকে চলে যাব?
ভার্মা বললেন, হ্যাঁ। আমি চলে যেতে চাইছি বলে কি তোমরা আমাকে ভীতু ভাব? যে-শক্রিকে চোখে দেখা যায়, তার সঙ্গে লড়তে আমি কখনও ভয় পাইনি। কিন্তু অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াই করতে আমি জানি না। তোমার কাকাবাবু যে মিসিং, সে খবর ভারত সরকারকে এক্ষুনি জানাতে হবে। তারপর বড় সার্চ পার্টি এনে খুঁজতে হবে তাঁকে।
রানা চিন্তিতভাবে বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। এখানে আর থেকে কোনও লাভ নেই। ঝড় আসবার আগেই আমাদের ওড়া উচিত।
সন্তু হঠাৎ বলল, আমি যাব না?
ভার্মা বললেন, তুমি যাবে না?
সন্তু ওদের থেকে খানিকটা দূরে সরে গিয়ে গোঁয়ারের মতন বলল, আমি কিছুতেই যাব না! কিছুতেই না।
তারপর ওঁরা দুজনে অনেক করে বোঝাবার চেষ্টা করলেন সন্তুকে। সন্তু কিছুতেই রাজি নয়। সার্চ পার্টি তো আসবেই, ততদিন পর্যন্ত সন্তু এই গম্বুজের মধ্যে অপেক্ষা করবে!
ভার্মা বললেন, ছেলেটা পাগল হয়ে গেছে নাকি? একা এখানে থাকবে!
মিংমা বলল, আমি সন্তু সাবের সঙ্গে থাকতে পারি।
শেষ পর্যন্ত সেই ব্যবস্থাই হল। আর দেরি করার উপায় নেই বলে রানা আর ভার্মা উঠে পড়লেন হেলিকপটারে। ওদের বললেন, গম্বুজের লোহার দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিতে। কাল সকালেই আবার হেলিকপটারটা ফিরে আসবে।
প্রবল গর্জন করে আবার হেলিকপটারটা উঠে গেল ওপরে। গম্বুজের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইল সন্তু আর মিংমা।