১২. সিম্বা যে এককথায় রাজি

সিম্বা যে এককথায় রাজি হয়ে যাবে কে জানত! মেজরের প্রশ্ন শুনে বলল, গ্রেট। আমি অনেকদিন আটলান্টিক সিটিতে যাইনি। চলো, মজা করে আসা যাক।

অর্জুন জিজ্ঞেস করল, তোমার কোনও কাজ ছিল না?

ছিল। একটা টেলিফোন করে দিতে হবে। কাজটা খুব জরুরি নয়।

এখানে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্ক করলে মেশিনে পয়সা ফেলতে হয়। মেশিনের কাঁটা বলে দেয় কতক্ষণ গাড়ি দ্বিতীয়বার পয়সা না ফেলে রাখা যাবে। ব্যবস্থাটা বেশ ভাল। তবে ফুটপাথের পাশে সর্বত্র গাড়ি রাখা যাবে না। দমকল যেখান থেকে জলের কানেকশন নেয় অথবা প্রতিবন্ধীদের জন্যে যে পার্কিং চিহ্ন রয়েছে সেখানে সুস্থ লোকের গাড়ি রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই দ্বিতীয় জিনিসটা গতবারেও দেখেছিল, এবারেও চোখে পড়ছে। আমেরিকায় প্রতিবন্ধীদের জন্যে যে সুযোগসুবিধে রয়েছে তা সারা পৃথিবীর অনুকরণ করা উচিত। একটা রেস্টুরেন্টও শুধু সিঁড়ি বানিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে পারে না। তাদের প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার সহজে ওঠার জন্যে মসৃণ ঢালু প্যাসেজ তৈরি করে রাখতে হবে। বাসে ট্রেনে তো বটেই, পার্কিং লটে প্রতিবন্ধীদের জন্যে আলাদা পার্কিং-এর ব্যবস্থা আছে। সুস্থ মানুষ গাড়ি রাখার জায়গা খুঁজে না পেলেও সেই বরাদ্দ জায়গায় গাড়ি রাখার কথা ভাবতেও পারে না।

সিম্বা গাড়ি চালাতে-চালাতে বলল, আমার বাবা জানতে পারলে খুব রেগে যাবেন। উনি কিছুতেই খুশি নন। এই যে আমি একা গাড়ি চালিয়ে শহরে ঘুরি, এটাও ওঁর অপছন্দ। উনি যাদের শত্রু বলে মনে করেন তারা নাকি আমারও ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু কেন? আমার সঙ্গে তো তাদের শত্রুতা নেই।

মেজর বললেন, জস্তুজানোয়াররা এই ভদ্রতাটা মেনে চলে খুবই, কিন্তু মানুষ বড় ভয়ানক জীব। তারা সন্তানকে মেরে বাপকে শাস্তি দিতে চায়। কিন্তু মিস্টার আলাদা যদি পছন্দ না করেন তা হলে তোমার আটলান্টিক সিটিতে যাওয়া উচিত নয়।

ওঃ নো! আমার বয়স আঠারো অনেকদিন আগে হয়ে গিয়েছে। বাবার কথা শুনলে আমাকে বেডরুমের দরজা বন্ধ করে দিন কাটাতে হয়। আমি ওটা করতে পারব না। সত্যি কথা বলছি, এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে ভয়ও দেখায়নি। সিম্বা বলল।

হঠাৎ বাঁ দিকের একজিট নিতে বললেন মেজর। ওরা এতক্ষণ হাইওয়ে দিয়ে চলছিল। এখানকার হাইওয়েগুলো একেবারে নিয়মে বাঁধা। ড্রাইভার কতটা স্পিডে গাড়ি চালাবে সেটা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সেটা না মানলে মোটা ফাইন দিতে হবে। হাইওয়ে ধরে এগোলে কোন-কোন জায়গা পড়বে তা রাস্তার ওপরে হোর্ডিং-এ লেখা আছে। এ ছাড়া সামনের রাস্তায় গাড়ির ভিড় জমে গেছে কিনা তাও জানিয়ে দেওয়া হয় ইলেকট্রনিক বোর্ডের মারফত। এ ছাড়া চা খাবার অথবা হোটেলের সন্ধান দেওয়া বোর্ড প্রায়ই চোখে পড়ে। আর তার গায়ে একজিট সাইন। ওই পথে তুমি হাইওয়ে থেকে বেরিয়ে যেতে পারো। মজার কথা, হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় দুপাশে বাড়ি আছে বলে টেরই পাওয়া যায় না। এই যে সিম্বা একজিট দিয়ে খানিকটা ভেতরে ঢুকল, অমনই একটা শহর দেখতে পেল ওরা।

গাড়ি থামাতে বলে মেজর অর্জুনকে বলল, চলো আমার সঙ্গে। আর সিম্বা, ওখানে বুথ আছে, তোমার টেলিফোনের কাজটা সেরে নিতে পারো।

সিম্বা মাথা নাড়ল।

দরজা খুলে ভেতরে পা দিতেই একজন সাদা আমেরিকান কাউন্টারের ওপাশ থেকে চেঁচিয়ে উঠল, গুড মর্নিং! অনেকদিন পরে দেখা হল!

মেজর কাঁধ ঝাঁকালেন, গুড মর্নিং মিস্টার টমসন। আমার হাতে সময় খুব কম। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি পুরো আমেরিকায় আপনিই এই উপকারটা করতে পারেন।

ব্যাপারটা কী?

মেজর অর্জুনকে বললেন, লকেটটা দাও।

অর্জুনের মনে পড়ল। সে লকেট খুলে কাউন্টারের ওপর রাখল। টমসন সেটা তুলে বলল, বাঃ। বেশ ভাল। মেটালটা কী? পাথর? পাথর বলে মনে হচ্ছে না। এত হালকা হবে না। কী ব্যাপার?

মেজর বললেন, এটা কী জিনিস আমারও জানা নেই। আপনি এর ড়ুপ্লিকেট বানিয়ে দিন।

কিন্তু এটা কী জিনিস না জানলে হুবহু হবে কী করে? অবশ্য এর রঙের এফেক্ট গালা দিয়ে আনা যায়।

তাই আনুন। আর একটা কথা, আপনার ফ্যাক্টরিতে কোনও আফ্রিকার মানুষ কি কাজ করে? মেজর জিজ্ঞেস করলেন।

না, কেন?

তা হলে ঠিক আছে।

কিন্তু সার, আপনি ছাঁচ তৈরি করার সময় দেবেন তো! একটাই লকেট যখন হবে তখন মোম ব্যবহার করলেই চলবে। অন্তত এক ঘণ্টা সময় দিন।

টমসন বোতাম টিপল, আর শ্যা, পঞ্চাশ ডলার দিতে হবে এর জন্যে।

মেজর রাজি হয়ে অর্জুনকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন। দূর থেকে দেখা গেল সুদৃশ্য টেলিফোন বাক্সের পাশে দাঁড়িয়ে সিম্বা কথা বলে যাচ্ছে। মেজর চাপা গলায় বললেন, আজকাল আমার সব ব্যাপারেই সন্দেহ হয়।

কীরকম?

এই যে মেয়েটা টেলিফোনে কার সঙ্গে কথা বলছে কে জানে?

ওর সঙ্গে যার কাজ ছিল তাকে জানিয়ে দিচ্ছে আজ যাবে না।

তার জন্যে এতক্ষণ কথা বলতে হয় না। ধরো, ও কাউকে জানাচ্ছে যে আমাদের নিয়ে আটলান্টিক সিটিতে যাচ্ছে গ্যাব্রিয়েলার সঙ্গে দেখা করতে। খবরটা যাকে দিচ্ছে সে হয়তো গ্যাব্রিয়েলার খোঁজে আছে। অতএব সে পেছন-পেছন গিয়ে হাজির হবে।

আপনি ভুলে যাচ্ছেন যারা গ্যাব্রিয়েলার সন্ধানে আছে তারা ওর বাবার শত্রু। ও নিশ্চয়ই তাদের সাহায্য করবে না।

সেটা অবশ্য ঠিক। হয়তো ও ওর বাবাকে বলছে।

মিস্টার আলাদা নিশ্চয়ই সেখানে যেতে সাহস পাবেন না।

তাও ঠিক। কিন্তু ওঁর ফোন যদি ট্যাপ করে ওরা?

এখানে এসব হয়?

এদেশে কী হতে পারে আর হয় না তা আমি আজও বুঝতে পারলাম না। এরা প্রেসিডেন্টের শোয়ার ঘরের ছবিও তুলে আনতে পারে।

কথা বলতে বলতে ওরা গাড়ির কাছে পৌঁছেছিল। ওদের দেখে টেলিফোন রেখে দিয়ে সিম্বা এগিয়ে এল, আমার বান্ধবী খুব রেগে গেছে।

অর্জুন জিজ্ঞেস করল, কেন?

ওকে ফেলে আমি আপনাদের সঙ্গে আটলান্টিক সিটিতে যাচ্ছি।

আপনার বান্ধবী কী করেন?

ও ডক্টরেট করছে। জাপানের মেয়ে।

মেজর বললেন, বাঁচা গেল!

সিম্বা জানতে চাইল, কী বললেন?

মেজর ইংরেজিতে বললেন, তুমি নিশ্চয়ই আর কাউকে এ কথা বলোনি?

না। কেন?

আমরা চাই না এই যাওয়ার কথা পাঁচজনে জানুক। তোমার বন্ধু যেহেতু জাপানি তাই তাকে নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। আচ্ছা, এখন একটু কফি খাওয়া যাক। সামনেই ম্যাকডোনাল্ড, চলো, ওখানে যাই।

ঝকঝকে রেস্টুরেন্টে এখন একটুও ভিড় নেই। চমৎকার সাজানো কাউন্টারের পেছনে রঙিন বোর্ডে ছবির সঙ্গে খাবারের মেনু লেখা আছে। মেজর তিনটে কফি নিয়ে জানলার পাশের টেবিলে চলে এলেন। অর্জুন দেখল একটা সাদা মেয়ে দুপায়ে চাকা লাগিয়ে পাখির মতো উড়ে যাচ্ছে ফুটপাথ দিয়ে।

সিম্বা কফির গ্লাসে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা, আমি কি জোর করে আপনাদের সঙ্গে এসেছি?

মেজর কফিতে চুমুক দিতে গিয়ে তাকালেন, এ-কথা কেন?

কারণ আমি কথা বলতে খুব ভালবাসি। অথচ আপনারা প্রয়োজন না হলে কথা বলছেন না বলে আমাকে চুপ করে থাকতে হচ্ছে। আপনারা জ্যাকসন হাইটে আমাকে সঙ্গে যেতে বললেন না, এখানেও তাই। কেন জানি না, আমার মনে হচ্ছে আমি জোর করে আপনাদের সঙ্গে এসেছি অথবা আপনারা আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না।  সিম্বা কথাগুলো বলে ব্যাগ খুলল, আমি একটা সিগারেট খেতে পারি?।

মেজর বললেন, খাও।

অর্জুন দেখল টেবিলে একটা চ্যাপটা টিনের অ্যাশট্রে আছে। সে শুনেছিল আমেরিকায় কেউ সিগারেট খায় না। সত্যি বলতে কি, সিগারেট খাচ্ছে এমন কাউকে চোখে পড়েনি তার। সে নিজে মাঝে-মাঝে সিগারেট খেলেও ঠিক করেছিল ইচ্ছে হলেও সিগারেট কিনবে না। কিন্তু সিম্বা এখানে স্বচ্ছন্দে সিগারেটে টান দিচ্ছে? ওর বয়স তো খুবই কম। সিম্বা সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়লে মেজর বললেন, দ্যাখো আমরাই তোমার কাছে লিফট চেয়েছিলাম। আটলান্টিক সিটিতে যেতে চাও কিনা সেটা আমরাই জিজ্ঞেস করেছিলাম। অতএব তুমি জোর করে সঙ্গে যাচ্ছ এমন ভাবার তো কোনও কারণ নেই। কী বলল অর্জুন?

নিশ্চয়ই। তা ছাড়া তুমি নিশ্চয়ই তোমার বাবার কাছে শুনেছ কেন আমি গ্যাব্রিয়েলার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। জিমকে যারা মেরেছে তারা ভয়ঙ্কর লোক। আমাদের সঙ্গে দেখলে তুমিও ওদের শত্রু হয়ে যেতে পারো। তাই তোমাকে দূরে রাখা ভাল।

এটা কীরকম কথা হল? গাড়িতে আমার সঙ্গে আপনারা যাচ্ছেন এটা তো ওরা দেখতেই পাবে, অবশ্য দেখতে যদি চায়। আসলে আমার বাবার ব্যবহারের জন্যে আপনারা আমাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে পারছেন না। ঠিক কি না? সিম্বা তাকাল।

অর্জুন হাসল, আমার জায়গায় থাকলে তোমার কী মনে হত?

সরাসরি বলতাম।

এবার মেজর বললেন, ঠিক আছে। সিম্বা, একটু তো মনে দ্বিধা ছিলই। কিন্তু তোমার কথা শোনার পর সেটা চলে গেছে।

বাবা বলেছে আপনার কাছে এমন একটা লকেট আছে যার দাম নাকি ডলার দিয়ে মাপা যায় না। আর সেই লকেটটা আফ্রিকানদের।

এদেশে আসার আগে ওই লকেটের কোনও মূল্য আমার কাছে ছিল না। ওটা আমার পরিচিত এক ভদ্রলোকের বাগানে গাছের নীচে পুঁতে রেখেছিল একজন বুজরুক। এখানে এসে শুনছি এটা খুব মূল্যবান। একদল আফ্রিকান এটা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ তারা এর মালিক নয়। বেশিরভাগ সরল আফ্রিকান যারা বাপঠাকুদার কাছে ওই লকেটের গল্প শুনে এসেছে তাদের কজা করতে এই লোকগুলো লকেটের দখল চাইছে। আর তোমার বাবা যেহেতু একজন সংগ্রাহক তাই তিনি আমাকে অজ্ঞান করে এটা পেতে চেয়েছিলেন।

লকেটটা কি আপনার সঙ্গে আছে?

হ্যাঁ। তবে এখানে দেখতে চেয়ো না। গাড়িতে বসে দেখতে পারো।

কেন? এখানে তো কোনও লোকজন নেই।

না। কাউন্টারে যে ছেলেটি অডার নিচ্ছে সে কালো ছেলে।

সিম্বা ঘাড় ঘুরিয়ে কাউন্টারের দিকে তাকাল, দুর। ওর বাবা মায়ের কেউ স্প্যানিশ নিশ্চয়ই। কোনওদিন আফ্রিকায় গিয়েছে বলে মনে হয় না।

হতে পারে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না।

এর পর মেজর অন্য প্রসঙ্গ তুললেন। ওঁর বিভিন্ন অভিযানের গল্প শুনলে সময় চমৎকার কেটে যায়। অর্জুনের সেসব শুনলেই মনে হয় ঘনাদা বা টেনিদার মুখে গল্প শুনছে। এমন সব উদ্ভট ঘটনা যে মেজর ঘটাতে পারেন বিশ্বাসই হয় না!

ঠিক এক ঘণ্টা বাদে ওরা ম্যাকডোনাল্ড থেকে বেরিয়ে দোকানটার দিকে এগোল। সিম্বা বলল, তোমরা একটু অপেক্ষা করবে? আমি টয়লেটে যাব।

মেজর বললেন, তা হলে তুমি গাড়ির কাছে চলে এসো, আমরা ওই দোকানটা থেকে ঘুরে আসছি।

সিম্বা চলে যেতে মেজর বললেন, বাঁচা গেল! লকেটের ব্যাপারটা তৃতীয় কারও না জানাই ভাল। ওকে অবিশ্বাস না করেও বলছি।

 

মিনিটপাঁচেক অপেক্ষা করতে হল। টমসন দুটো লকেট কাউন্টারের ওপর রেখে বললেন, দ্যাখো, কাজ দ্যাখো। আর কেউ এমন কপি করতে পারবে না।

অর্জুন দেখল নতুনটা অবিকল আগেরটার মতো। শুধু একটু বেশি চকচকে। সে দুটো লকেট হাতে তুলেই পার্থক্যটা বুঝতে পারল। নতুনটা বেশি হালকা। কথাটা বলতেই টমসন মাখা মাড়লেন, ইস্পসিবল। ওটা এক ধরনের পাথর। ওই পাথর আমি কোথায় পাব? ওজনের পার্থক্য তো হবেই। কিন্তু হাতে না নিলে কেউ ওই তুফাতটা বুঝতে পারবে কি?

অর্জুনের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও মেজর পঞ্চাশ ডলার পেমেন্ট করলেন। অর্জুন লক্ষ করল টমসন এর জন্যে কোনও রসিদ দিল না। এদেশে এটা চলে? মেজর বললেন, টমসনের লকেটটা তুমি গলায় পরে নাও।

ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে অর্জুন আসল লকেটটাকে পকেটে ঢোকাল।

গাড়ির দিকে যাওয়ার সময় মেজর বললেন, ওটা পকেটে রাখা বোধ হয় ঠিক হবে না। গাড়িতে উঠে তোমার মোজার মধ্যে ঢুকিয়ে রেখো।

মোজার মধ্যে?

আপাতত ওটাই নিরাপদ জায়গা।

সিম্বা স্টিয়ারিং-এর সামনে বসে ছিল। এবার মেজর সামনে বসলেন। পেছনের সিটে বসে অর্জুন গলা থেকে লকেটটাকে খুলে সিম্বাকে দিল, সাবধানে দ্যাখো। কেউ যেন টের না পায়।

সিম্বার চোখ বড় হয়ে গেল, আঃ। ফ্যান্টাস্টিক। এর দাম অনেক।

তোমার মনে কোনও প্রতিক্রিয়া হচ্ছে না?

না তো। আমি তো ওসব গল্প শুনিনি। লকেটটা আমি পরতে পারি?

না। ওটা ঠিক হবে না।

প্লিজ। আটলান্টিক সিটিতে পৌঁছবার আগেই ফিরিয়ে দেব।

অর্জুন কিছু বলল না। গাড়ি চলতে শুরু করলে সে পকেট থেকে আসল লকেট বের করে সন্তর্পণে ডান পায়ের মোজার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখল। একজিট দিয়ে হাইওয়েতে পৌঁছতেই কাণ্ডটা ঘটল। পেছন থেকে একটা গাড়ি এমন জোরে ছুটে এল যে, সিম্বা কোনওমতে বাঁ দিকে সরে না গেলে ভয়ঙ্কর অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত। ব্রেক কষে গাড়ি থামিয়ে সিম্বা বলল, মাই গড! লোকটা কি পাগল? আর একটু হলে…! তারপর বুক থেকে লকেটটা বের করে বলল, এটা আমাদের বাঁচিয়ে দিল বোধ হয়, তাই না?