সাজিছে যতেক বীর বাজিছে বাজনা।
অন্তরীক্ষে অমরগণের হয় থানা।।
আইল গন্ধর্ব্ব যক্ষ কিন্নর চারণ।
আসিলেন বিধাতা মরালে আরোহণ।।
ঐরাবত-আরোহণে আইল পুরন্দর।
মকর-বাহনে এল জলের ঈশ্বর।।
বৃষভ-বাহনে আইলেন পশুপতি।
কেশরী-বাহনেতে আইলেন পার্ব্বতী।।
বসিলেন দেবগণ সবে সারি সারি।
গন্ধর্ব্বেতে গীত গায় নাচে বিদ্যাধরী।।
দৃষ্টি দিয়া পার্ব্বতী বসেন এক দিকে।
ক্রোধ করি মহাদেবে কহেন সম্মুখে।।
তুমিত ভাঙ্গড় সদা বেড়াও শ্মশানে।
কোন্ গুণে পূজে তোমা লঙ্কার রাবণে।।
ধনে প্রাণে মজিল লঙ্কার অধিকারী।
কেমনে আছহ স্থির বুঝিতে না পারি।।
আপনার মাথা কাট আপনার করে।
দুঃখ নাহি হয় কেন সেবকের তরে।।
আর কোন্ সেবক লইবে তব ছায়া।
রাবণ সেবকে তব নাহি কিছু দয়া।।
এত যদি বলিলেন ক্রোধে ভগবতী।
পার্ব্বতীর বচনে কুপিলা পশুপতি।।
বামাজাতি তোমার তিলেক নাহি শঙ্কা।
আপনি রাখহ গিয়া স্বর্ণপুরী লঙ্কা।।
তপস্যা করিল দশ হাজার বৎসর।
অমর হইতে নাহি পাইলেক বর।।
এখন মরণপথ চিন্তিল রাবণ।
ত্রিভুবনে হেন কর্ম্ম করে কোন্ জন।।
স্বয়ং বিষ্ণু জন্মিলেন দশরথ-ঘরে।
আপনি দিলেন পৃষ্ঠ অলঙ্ঘ্য সাগরে।।
দ্বারে রাম রাবণের জীবন সংশয়।
বল দেখি, রাবণের কিসে রক্ষা হয়।।
মানুষ হইয়া রাম বিষ্ণু-অধিষ্ঠান।
শ্রীরামের হাতে কেন পাবে পরিত্রাণ।।
মিথ্যা অনুযোগ মোরে না কর পার্ব্বতী।
রাবণে রাখিতে নাহি আমার শকতি।।
বিধাতার নির্ব্বন্ধ যে না নারি ঘুচাইতে।
আপনি যে আছি আমি আপনার মতে।।
শঙ্কর শঙ্করী দুই জনেতে কোন্দল।
বিমুখ হইয়া হাসে দেবতা সকল।।
ধূর্জ্জটির কোপ দেখি হাসে দেবগণ।
আজি কালি রাবণের হইবে মরণ।।
রাবণ মরিবে সর্ব্ব দেবতার হাস।
দেব-দেবীর কোন্দল রচিল কৃত্তিবাস।।