তিনি হাত বাড়িয়ে মাথার কাছে চৌকো ধরনের সুইচ টিপলেন। সঙ্গে সঙ্গে পি পি করে দুবার শব্দ হল। একটি লাল আলো জ্বলে উঠল। তিনি মূল কম্পিউটার সিডিসির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। এখন এই ঘরে কী হবে না হবে তা তিনি ছাড়া কেউ জানবে না। তবু নিশ্চিত হবার জন্যে তিনি পরপর তিনবার বললেন, সিডিসি, তুমি কি আছ?
জাবাব পাওয়া গেল না। এই ঘরটি এখন তার নিজের। কেউ এখন আর তাঁর দিকে তাকিয়ে নেই। নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার চমৎকার আনন্দ তিনি খানিকক্ষণ উপভোগ করলেন। এ রকম তিনি মাঝে মাঝে করেন। নিজেকে আলাদা করে কিছু সময় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। ব্যক্তিগত কাজটি হচ্ছে তাঁর নিজের চিন্তাভাবনা গুছিয়ে লেখা। খুব গুছিয়ে অবশ্য তিনি লিখতে পারেন না। লেখালেখির কাজটা ভালো আসে না। পরের অংশ আগে চলে আসে। আগের অংশ মাঝখানে কোনো এক জায়গায় ঢুকে যায়। অবশ্যি তাতে কিছু যায় আসে না। ডায়েরি লেখাটা অর্থহীন। এটা কেউ পড়বে না। পড়ার প্রয়োজনও নেই। নিজের লেখা নিজের জন্যেই। অন্য কারো জান্যে নয়। কোনো কারণে যদি তাঁর মৃত্যু ঘটে সে সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই তা নয়) তাহলে নির্দেশ দেয়া আছে তার শরীর এবং তার ব্যক্তিগত প্রতিটি জিনিস নষ্ট করে ফেলা হবে। তিনি চান না। তাঁর এই লেখা অন্য কারো হাতে পড়ুক। তবুও যদি কোনো কারণে অন্য কারো হাতে পড়ে, তাহলেও সে কিছু বুঝবে না। তিনি সাংকেতিক একটি ভাষা ব্যবহার করেছেন। অতি দুরূহ। সেই সাংকেতিক ভাষার রহস্য উদ্ধার করা কারো পক্ষে সম্ভব হবে না বলেই তিনি মনে করেন। অনেক পরিশ্রমে এই সাংকেতিক ভাষা তিনি তৈরি করেছেন।
তিনি ড্রয়ার থেকে ডায়েরি বের করলেন। হাজার পৃষ্ঠার বিশাল একটি খাতা। গুটি গুটি সাংকেতিক চিহ্নে তা প্ৰায় ভরিয়ে ফেলেছেন। তিনি প্ৰথম দিককার পাতা ওল্টালেন–
৭৮৬৫(ক) সোমবার
শেষ পর্যন্ত সমস্ত ব্যাপারটার সহজ সমাধান হল।
আমরা চল্লিশ জনের সবাই নতুন ওষুধটি ব্যবহার করতে রাজি হয়েছি। অমরত্বের আকাজক্ষায় নয়, নতুন রি-এজেন্টটির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্যে। যদিও আমরা নিশ্চিত জানি এটা কাজ করবে। অনেক রকম পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে। পশুদের মধ্যে বানর, বিড়াল, শূকরের ওপর পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা করা হয়েছে। সরীসৃপের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে। ইদুর তো আছেই। আমরা জানি এটা কাজ করবে, তবু আমাদের মধ্যে কেউ কেউ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত। এমনও তো হতে পারে, ওষুধটি ব্যবহারের একশ বছর পর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। বিচিত্র কিছুই নয়। তবু আমরা রাজি হলাম। বৈজ্ঞানিক কারণেই হলাম। আমাদের দলটি বেশ বড়ো। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার ব্যবস্থা নেবার মতো জ্ঞান আমাদের এই দলের আছে। আমরা নিজেদের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছি। পুরো ল্যাবরেটারি ভূগর্ভে। ওপরে ত্রিশ ফিটের মতো গ্রানাইট পাথর। আমরা আগামী একশ বছরের জন্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সর্বাধুনিক কম্পিউটার সিডিসি স্থাপন করা হয়েছে, যার ক্ষমতা কল্পনাতীত। সে প্রতিটি জিনিস লক্ষ করবে। একদল কমী রোবট এবং দশ জন বিজ্ঞানী রোবট আমাদের আছে। Q23 এবং Q24 জাতীয় রোবটও আছে বেশ কয়েকটি। আমরা এদের ওপর অনেকখানি নির্ভর করছি। রোবটিকস বিদ্যার উন্নতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ওদের জন্যে পৃথক গবেষণাগার আছে, যা তারা নিজেদের উন্নয়নের জন্যে নিজেরাই ব্যবহার করবে। জ্বালানির জন্যে আমাদের দুটি আণবিক রিএক্টর আছে। একটিই যথেষ্ট, অন্যটি আছে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে।
আজ সেই বিশেষ রাত। আমাদের সবার শরীরে সত্ত্বর মিলিগ্রাম করে হরমোন ব্লকিং রিএজেন্ট ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথম কিছুক্ষণ ঝিমুনির মতো হল। এটা হবেই। এই রিএজেন্ট, রক্তে শর্করা হঠাৎ খানিকটা কমিয়ে দেয়, সেই সঙ্গে হরমোন এড্রোলিনের একটা কৃত্রিম ঘাটতি সৃষ্টি করে। ঝিমুনির ভাব স্থায়ী হল না, তবে পানির তৃষ্ণা হতে লাগল। মনে হল মাথা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে। কানের কাছে বিবি শব্দ হচ্ছে। আমরা নিজেদের মধ্যে হাসি-তামাশা করতে লাগলাম। তবে আমরা সবাই বেশ ভয় পেয়েছি। অমরত্বের শুরুটা খুব সুখের নয়।
৭৮৭৭(প) শনিবার
আমরা পঞ্চাশ বছর পার করে দিয়েছি।
সেই উপলক্ষে আজ একটা উৎসব হল। ওষুধটি কাজ করছে এবং খুব ভালোভাবেই করছে। আমাদের কারো চেহারায় বা কর্মক্ষমতায় বয়সের ছোয়া নেই। আমরা চিরযুবক এবং চিরযুবতীর দল। তবে ক্ষুদ্র একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমরা লক্ষ করেছি। এই ওষুধ বংশ বৃদ্ধির ধারা রুদ্ধ করে দিয়েছে। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর সম্পূজীকরণ পদ্ধতি পুরোপুরি নষ্ট। কোনো শুক্রাণুই ডিম্বাণুকে সম্পৃক্ত করতে পারছে না। প্রকৃতির এই আশ্চর্য নিয়মে আমরা অভিভূত। যেই মুহুর্তে প্রকৃতি দেখছে, একদল মানুষ মৃত্যুকে জয় করছে, সেই মুহুর্তে সে তাদের বংশবৃদ্ধি রোধ করে দিয়েছে। অপূর্ব সময় কাটান আমাদের কিছুটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে এখনো আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। অমরত্বের ব্যাপারটি প্রচার হয় নি। হলে বড় রকমের ঝামেলা হবে। সবাই অমর হতে চাইবে। তা বড়ো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। এই বিষয়ে আমাদের ঘন ঘন কাউন্সিল মিটিং হচ্ছে। পৃথিবীর মানুষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। তারা নিশ্চয়ই কিছু সন্দেহ করছে। এদের চাপ অগ্রাহ্য করা বেশ কঠিন। এই নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।
আমরা মোটামুটি সুখী। রোবটিকস-এ দারুণ উন্নতি হচ্ছে। রিবো-ত্রি সার্কিটে টেনার জংশন দূর করার পদ্ধতিতে বের হয়েছে। পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এটা পেরেছেন। কিনা আমরা জানি না। না পারলে তারা অনেক দূর পিছিয়ে পড়বেন। আমরা এগিয়ে যাব। অনেক দূর যাব।
৭৯০২ (ল)
আমরা এক শ কুড়ি বছর পার করে দিয়েছি। বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ হল। পৃথিবীতে মানবসংখ্যা অত্যন্ত সীমিত। বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের পর সব কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে। ভয়াবহ অবস্থা। পৃথিবীর বাইরের রেডিয়েশন লেভেল অত্যন্ত উঁচু। তবু কিছু কিছু অংশ রক্ষা পেয়েছে। সেখানকার মানবসমাজকে আমরা ঢেলে সাজাবার ব্যবস্থা করেছি। যাতে ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে এ জাতীয় দুর্ঘটনা আর না ঘটে।
প্রথম শহর, দ্বিতীয় শহর ও তৃতীয় শহরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এক জন মানুষ তার সমগ্র জীবনের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন শহরে কাটাবে। ধারণাটা নেয়া হয়েছে ধর্মগ্রন্থ থেকে। ধর্মগ্রন্থে স্বর্গের একটি চিত্র থাকে, যাতে স্বৰ্গবাসের কামনায় মানুষ ইহজগতের দুঃখ-কষ্ট ভুলে থাকতে পারে। এখানেও সেই ব্যবস্থা। প্রথম শহরের লোকজনের কাছে দ্বিতীয় শহর হচ্ছে স্বর্গ। তেমনি দ্বিতীয় শহরের অধিবাসীদের স্বৰ্গ হচ্ছে তৃতীয় শহর। এসব স্বৰ্গবাসের আশায় তারা জীবন কাটিয়ে দেবে কঠোর নিয়মের মধ্যে। জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখাই আমরা সঠিক কাজ বলে মনে করছি। একদল অমর বিজ্ঞানীর হাতেই জ্ঞান-বিজ্ঞান থাকা উচিত। সাধারণ মানুষ তার ফল ভোগ করবে। জ্ঞান সবার জন্যে নয়। আমাদের কারো কারো মধ্যে সামান্য অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে সম্ভবত দীর্ঘদিন ভূগর্ভে থাকার এই ফল। চারজন আত্মহত্যা করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা সুখেই আছি বলা চলে। সাবই নতুন পৃথিবী তৈরিতে ব্যস্ত। প্রতিটি জিনিস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে হচ্ছে। রোবটরা পরিকল্পনা তৈরিতে আমাদের সাহায্য করছে। সমস্ত ব্যাপারটি পুরোপুরি চালু হতে আরো এক শবছর লেগে যাবে। সৌভাগ্যর বিষয়, সময় আমাদের কাছে কোনো সমস্যা নয়।
৮৪০২ (প)
চারশ বছর ধরে বেঁচে আছি।
বেঁচে থাকায়ও ক্লান্তি আছে।
আমরা ভূগৰ্ভ থেকে এখন আর বেরুতে পারছি না। বাইরের আবহাওয়া আমাদের সহ্য হচ্ছে না। একজন পরীক্ষামূলকভাবে বের হয়েছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর শরীরে অসহ্য জুলুনি হল। তাঁকে নিচে ফিরিয়ে আনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু হল। সম্ভবত ব্লকিং রিএজেন্ট নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা কেন ঘটছে আমরা বুঝতে পারছি না। গবেষণা চলছে, তবে কোনোরকম ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা চিন্তিত। বাকি জীবন কি ভূগর্ভেই কাটাতে হবে?
আমাদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে গেছে। আমাদের মধ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আত্মহত্যার সংখ্যা হয়তো আরো বাড়বে। নতুন পৃথিবীর নতুন সমাজব্যবস্থা চমৎকারভাবে কাজ করছে। নিয়ন্ত্রিত পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ সমান সুযোগ ও সুবিধা পাচ্ছে। জীবনের শেষ সময় মহা সুখে কাটাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ওরা আমাদের চেয়েও সুখী। মাঝে মাঝে কেন, এই মুহুর্তেই মনে হচ্ছে। তবে বেঁচে থাকাও কষ্টের। খুবই কষ্টের। এখন আমার কিছুই ভালো লাগে না। সংগীত অসহ্য বোধ হয়। মনে হয় অমর মানুষেদের জন্যে নতুন ধরনের কোনো সংগীত সৃষ্টি করতে হবে।
৯৯০২ (ফ)
আমরা এক-তৃতীয়াংশ হয়ে গেছি। এক ধরনের চাপা ভয় আমাদের সবার মধ্যে কাজ করছে। যদিও কেউ তা প্ৰকাশ করছে না। কাউন্সিল মিটিংগুলোর বেশিরভাগই ঠিকমতো হচ্ছে না। অর্থহীন কিছু আলোচনার পরপরই অধিবেশনের সমান্তি ঘোষণা করা হচ্ছে। সিডিসিকে এই ব্যাপারে খুব চিন্তিত মনে হল। তার চিন্তার কারণ অবশ্যই আছে। রোবট এবং চিন্তা করতে সক্ষম যাবতীয় কম্পিউটারদের দুটি সূত্র মেনে চলতে হয়। সূত্র দুটির প্রথমটি হচ্ছে— (ক) আমরা অমর মানুষদের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করব। (খ) মানবজাতিকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করব। এরা এই সূত্র দুটির কারণেই এত চিন্তিত। সিডিসি সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে বেশ কয়েকবার মেডিকেল বোর্ড তৈরি করেছে। সেইসব বোর্ড আমাদের শারীরিক সমস্ত ব্যাপার পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দীর্ঘ ঘুম আমাদের মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনতে পরবে। সেই ঘুম মৃত্যুর কাছাকাছি। দু বছর তিন বছর ধরে সুদীর্ঘ নিদ্রা।
ভালো লাগছে না, কিছু ভালো লাগছে না।
তিনি দ্রুত পাতা ওল্টাতে লাগলেন। যেন কোনো বিশেষ লেখা খুঁজছেন। তাঁর ভুরু কুঞ্চিত হতে থাকল। ইদানীং তিনি অল্পতেই ধৈৰ্য হারিয়ে ফেলেন, আজ তা হল না। শান্ত ভঙ্গিতেই পাতা ওল্টাচ্ছেন, যদিও তাঁর ভুরু কুঞ্চিত। যা খুঁজছিলেন পেয়ে গেলেন— একটি অংশ যা সাংকেতিক ভাষায় লেখা নয়। তারিখ দেয়া নেই সময় দেয়া নেই। তবে তার মানে আছে, একদিন খুব ভোর বেলায় হঠাৎ কি মনে করে যেন তিনি লিখলেন,
আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাদের সহ্য করতে পারছে না। এরকম মনে করার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ নেই। একদল যন্ত্র কেন আমাদের অপছন্দ করবে? তাছাড়া পছন্দ-অপছন্দ ব্যাপারটি যন্ত্রের থাকার কোনো কারণ নেই। রিবেত্ৰি সার্কিট ব্যবহার করা হলেও ওরা রোবট-এর বেশি কিছু নয়। যা বললাম তা কি ঠিক? সত্যি কি এরা রোবটের বেশি কিছু নয়? আমি এ ব্যাপারেও পুরোপুরি নিশ্চিত নই। মনে হচ্ছে কোনো গোপন রহস্য আছে। সেই রহস্য আমি ধরতে পারছি না।
তিনি সুইচ টিপলেন, লাল আলো নিভে গেল। তিনি ক্লান্ত গলায় ডাকলেন, সিডিসি।
বলুন শুনছি।
তুমি কেমন আছ?
আমি ভালোই আছি। আমার ভালো থাকা তো আর আপনাদের মতো নয়। আমি ভালো আছি আমার নিজের মতো।
রোবটিকস-এর গবেষণা কেমন চলছে?
ভালোই চলছে। বর্তমানে এমন এক ধরনের রোবট তৈরির চেষ্টা চলছে। যা হাসি, তামাশা, রসিকতা এইসব বুঝতে পারবে।
রসিকতা বুঝতে পারে এমন রোবটের দরকার কি?
মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্কের জন্যে এটা খুব দরকার।
তার মানে?
মানুষরা রসিকতা খুব পছন্দ করে। কথায় কথায় রসিকতা করে। ওদের রসিকতা আমরা কখনো বুঝতে পারি না।
তাতে কি তোমাদের কোনো ক্ষতি হচ্ছে?
কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। তবে তারা যখন কোনো রসিকতা করে এবং আমরা তা বুঝতে পারি না, তখন নিজেদের খুব ছোট মনে হয়।
তিনি চমকে উঠলেন। কী ভয়াবহ কথা! এটা তিনি কী শুনছেন? নিজেদের ছোট মনে হয়-এর মনে কী? এসব মানবিক ব্যাপার রোবট এবং কম্পিউটারের মধ্যে থাকবে কেন? রহস্যটা কি?
সিডিসি।
বলুন, শুনছি।
অরচ লীওন লোকটিকে এখানে নিয়ে এস।
আপনার এই ঘরে?
হ্যাঁ এই ঘরে।
কেন?
আনতে বলছি। এই কারণেই আনবে। প্রশ্ন করবে না।
সিডিসি বলল, আপনি ঠিক সুস্থ নন। আপনি বিশ্রাম করুন।
তোমাকে যা করতে বলছি কর।
বেশ, নিয়ে আসছি।
অমর মানুষেরা এখন কি করছেন?
ঘুমুচ্ছেন।
সবাই ঘুমুচ্ছেন?
হ্যাঁ, সবাই ঘুমুচ্ছেন। ওদের ঘুম ভাঙান যাবে না। দীর্ঘ ঘুম। শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে তাঁরা ক্লান্ত। তাদের ঘুম প্রয়োজন। খুবই প্রয়োজন।
আমি তাহলে একাই জেগে আছি?
জি। আপনি একাই আছেন।
খুব ভালো। তুমি অরচ লীওনকে এখানে আনার ব্যাবস্থা কর। তার সঙ্গে কথা বলব।