১২৯তম অধ্যায়
পিতৃ-ঋণমুক্তির উপায়—সত্যধর্ম্ম প্রশংসা
যুধিষ্ঠির কহিলেন, “পিতামহ! আমি আপনার বাক্যামৃত পান। করিয়া কোনক্রমে তৃপ্তিলাভে সমর্থ হইতেছি না, আমি যত আপনার বাক্য শ্রবণ করিতেছি, ততই আমার শুশ্রূষা পরিবর্দ্ধিত হইতেছে। আত্মজ্ঞানী যেমন সমাধিসুখে যারপরনাই সন্তুষ্ট হয়, তদ্রূপ আমি আপনার ধৰ্ম্মোপদেশ-শ্রবণে পরম পরিতুষ্ট হইতেছি; অতএব আপনি পুনরায় ধর্ম্মকথা কীৰ্ত্তন করুন।”
ভীষ্ম কহিলেন, “মহারাজ। যম-গৌতম-সংবাদ নামে এক পুরাতন ইতিহাস আছে, উহাতে গৌতম যমরাজকে যাহা কহিয়াছিলেন, তাহা কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। পারিপাত্র নামক পৰ্ব্বতে মহর্ষি গৌতমের আশ্রম ছিল। তিনি ষষ্টি সহস্র বর্ষ ঐ আশ্রমে তপানুষ্ঠান করিয়াছিলেন। একদা লোকপাল যম মহর্ষি গৌতমের সেই আশ্রমে সমুপস্থিত হইয়া তাঁহাকে উগ্রতর তপানুষ্ঠানে নিরত দেখিয়া যারপরনাই সন্তুষ্ট হইলেন। মহর্ষি গৌতম যমকে সমাগত সন্দর্শন করিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে তাঁহার সম্মুখে উপবিষ্ট রহিলেন। তখন যম তাঁহাকে যথোচিত সম্মান করিয়া কহিলেন, মহর্ষে! এক্ষণে আমাকে কি করিতে হইবে?’ গৌতম কহিলেন, ‘প্রভো! কি কাৰ্য্য করিলে পিতা-মাতার ঋণ হইতে বিমুক্ত হওয়া যায় এবং কিরূপেই বা অতি পবিত্র দুর্ল্লভ লোক লাভ করা যাইতে পারে, কীৰ্ত্তন করুন।’
“যম কহিলেন, ‘মহর্ষে। সতত সত্যধর্ম্ম তপস্যা ও পবিত্রতা অবলম্বনপূর্ব্বক পিতামাতার পূজা করিলে তাঁহাদের ঋণ হইতে মুক্ত হওয়া যায় এবং ভূরিদক্ষিণ অশ্বমেধাদি যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিলেই অনায়াসে অতি আশ্চৰ্য্য পবিত্র লোকসমুদয় লাভ হইয়া থাকে।”