কতদূরে সতী-আগে, শিরে দিয়া করযুগে,
প্রণমি পড়িল দেবরাজ।
স্তব করে সুরপতি, অষ্টাঙ্গ লোটায়ে ক্ষিতি,
সহ যত অমর-সমাজ।।
তুমি লক্ষ্মী সরস্বতী, রতি সতী অরুন্ধতী,
পার্ব্বতী সাবিত্রী বেদমাতা।
তুমি অধঃ ক্ষিতি স্বর্গ, তুমি দাত্রী চতুর্ব্বর্গ,
সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়-বিধাতা।।
অনাদিপুরুষ প্রিয়া, কেজানে তোমার ক্রিয়া,
মায়াতে মনুষ্য-দেহধারী।
তুমি বিধাতার ধাতা, সবাকার অন্নদাতা,
আমি তোমা কি বর্ণিতে পারি।।
বেদপতি বহু খেদে, না পাইল চারিবেদে,
আগমে না পায় পঞ্চানন।
তুমি মোরে দিলা সর্ব্ব, তেঁই মোর হৈল গর্ব্ব,
না চিনিনু তোমার চরণে।।
করহ এবার কৃপা, তুমি দেবী বুদ্ধিরূপা,
সুমতি কুমতি প্রদায়িনী।
তুমি শূন্য জল স্থল, পৃথিবী পর্ব্বতানল,
সর্ব্ব গৃহে জননী-রূপিণী।।
শরণ লইনু পদে, ক্ষমা কর অপরাধে,
অজ্ঞান দুর্ম্মতি কর দূর।
সম্পদে হইয়া মত্ত, না জানিনু তব তত্ত্ব,
না চিনিনু আপন ঠাকুর।।
এত বলি সুরপতি, পুনঃ লুটি পড়ে ক্ষিতি,
ধূলায় ধূসর কেশপাশ।
কিরীট কুণ্ডল হার, ছত্রদণ্ড অলঙ্কার,
ধূলি লোটে এ মলিন বাস।।
ধূলিতে লুণ্ঠিত তনু, নয়নে পূরিল রেণ,
দেখিতে না পায় পুরন্দর।
দেখি চিত্তে দিল ক্ষমা, আজ্ঞা কৈল সত্যভামা,
ইন্দ্রেরে উঠাও খগেশ্বর।।
মন্দাকিনী-জল দিয়া, চক্ষু ধৌত কর গিয়া,
নির্ম্মল হইবে চক্ষু তবে।
শুনিয়া সতীর বাণী, লৈয়া মন্দাকিনী-পানি,
স্নান করাইলেন বাসবে।।
নয়ন নির্ম্মল হৈয়া, ঐরাবতে আরোহিয়া,
ইন্দ্র গেল হইয়া বিদায়।
লৈয়া পুষ্প পারিজাত, নারদে করিয়া সাথ,
দ্বারকা গেলেন যদুরায়।।
মহাভারতের কথা, শ্রবণে বিনাশে ব্যথা,
অধর্ম্ম কলুষ ক্লেশ নাশ।
কমলাকান্তের সুত, সুজনের প্রীতিযুত,
বিরচিল কাশীরাম দাস।।