বয়সে রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাণিজ্যিক সফর থেকে ফিরে আসার পর বিবি খাদিজা লক্ষ্য করলেন,অতীতের চেয়ে এবার তাঁর অনেক বেশি লাভ হয়েছে। এছাড়া তিনি ভৃত্য মায়ছারার কাছে আল্লাহর রসূলের উন্নত চরিত্র, সততা, ন্যায়পরয়ণতা ইত্যাদি ভূরসী প্রশংসা শুনলেন। এসব শুনে মনে মনে তিনি আল্লাহর রসূলকে ভালোবাসে ফেললেন। এর আগে বড় বড় সর্দার এবং নেতৃস্থানীয় লোক বিবি খাদিজাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু কোন প্রস্তাবই তিনি গ্রহণ করেননি। মনের গোপন ইচ্ছার কথা বিবি খাদিজা তাঁর বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহর কাছে ব্যক্ত করলেন। নাফিসা গিয়ে রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে কথা বললেন। রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাযি হলেন এবং তাঁর চাচাদের সাথে পরামর্শ করলেন। তাঁর চাচারা খাদিজার চাচার সাথে আলোচনা করলেন এবং বিয়ের পয়গাম পাঠালেন। এরপর বিয়ে হয়ে গেলো। এ বিয়েতে বনি হাশেম এবং মুযার গোত্রের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সিরিয়া থেকে বাণিজ্যিক সফর শেষ করে ফিরে আসা দুই মাস পর এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বয়সে রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিয়ের মোহরানা হিসাবে বিশটি উট দিয়েছিলেন। বিবি খাদিজার বয়স ছিলো চল্লিশ বছর। তিনি বিবেক বুদ্ধি, সৌন্দর্য, বংশমর্যাদায় ছিলেন সেকালায় ছিলো শ্রেষ্ঠ নারী। বিবি খাদিজার সাথে রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এটা প্রথম বিবাহ। তিনি বেঁচে থাকা অবস্থায় রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি।
ইবরাহীম ব্যতীত রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সকল সন্তান ছিলেন বিবি খাদিজার গর্ভজাত। সর্বপ্রথম কাসেম জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণে রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হতো আবুল কাসেম বা কাসেমের পিতা। কাসেমের পর যয়নব, রোকাইয়া, উম্মে কুলসুম, ফাতেমা এবং আবদুল্লাহ জন্ম গ্রহণ করেন। আবদুল্লাহর উপাধি ছিলো তাইয়েব এবং তাহের। পুত্র সন্তান সকলেই শৈশবে ইন্তিকাল করেন। কন্যারা ইসলামের যুগ পেয়েছিলেন। তাঁরা সকলেই ইসলাম গ্রহণ এবং হিজরতের গৌরব অর্জন করেন। হযরত ফাতেমা (রা) ছাড়া অন্য সকলেই রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায়ই ইন্তুইকাল করেন। হযরত ফাতেমা (রা) তাঁর আব্বা রসূলুল্লাহ (স) এর ইন্তিকালের ছয় মাস পর ইন্তিকাল করেন।