১১. ঢাকায় বড় ফুপুর ফ্ল্যাটটা

ঢাকায় বড় ফুপুর ফ্ল্যাটটা বড় রাস্তার উপরে, ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় রাস্তা দিয়ে বাস, গাড়ি, টেম্পো যাচ্ছে এবং আসছে। অন্যতিতুনি প্রায় পুরো সময়টাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাস, গাড়ি, টেম্পো আর মানুষ দেখল। রাস্তার দুই পাশে ফুটপাথ, বেশিরভাগই নানা ধরনের হকাররা দখল করে রেখেছে, যেটুকু ফাঁকা আছে সেখান দিয়ে পিলপিল করে মানুষ যাচ্ছে-আসছে। প্রত্যেকটা মানুষেরই নিজের একটা জীবন আছে এবং সবাই নিজের মতো কিছু একটা ভাবতে ভাবতে যাচ্ছে-আসছে, সেটা অন্য-তিতুনি খুবই মনোযোগ দিয়ে দেখল। সন্ধ্যেবেলা যখন একটা একটা করে বাতি জ্বলে উঠল, নিয়ন আলো দিয়ে রাস্তার দুই পাশ আলো ঝলমল করতে লাগল, সেটাও অন্য-তিতুনি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখল। তাকে এ রকম গভীর মনোযোগ দিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে

একসময় মিলু জিজ্ঞেস করল, “তিতুনি আপু, তুমি কী দেখো?”

অন্য-তিতুনি বলল, “মানুষ দেখি।”

“তুমি আগে মানুষ দেখো নাই?”

অন্য-তিতুনি ফিক করে হেসে ফেলল, বলল, “দেখব না কেন? দেখেছি। কিন্তু এই উপর থেকে পিলপিল করে হাজার হাজার মানুষ হেঁটে যাচ্ছে দেখতে খুব ভালো লাগে।”

মিলু কিছুক্ষণ এই খুব ভালোলাগার দৃশ্যটা দেখার চেষ্টা করল কিন্তু কিছুক্ষণেই তার ধৈর্য ফুরিয়ে গেল। মানুষদের দেখার কী আছে। কে জানে?

.

সন্ধ্যেবেলা আম্মু বড় ফুপুকে নিয়ে একটু কেনাকাটা করতে বের হলেন। আম্মু যখনই ঢাকা আসেন তখনই একটু কেনাকাটা করে নিয়ে যান। অন্য-তিতুনিকে শুধুমাত্র জিজ্ঞেস করার জন্যে বললেন, “তিতুনি যাবি আমাদের সাথে?”

অন্য-তিতুনি সাথে সাথে রাজি হয়ে গেল। আম্মু বেশ অবাক হলেন, কারণ তিতুনি কখনোই ঢাকা শহরে ভিড় ঠেলে দোকানপাটে যেতে চায় না। মিলু ঠিক তার উল্টো, সে সবসময়ই বাইরে যেতে চায়, তাই সেও তাদের সাথে রওনা হলো। বড় ফুপু আর আম্মুর সাথে অন্য-তিতুনি আর মিলু বের হয়ে যাবার সাথে সাথে নাদুর ঘরে নাদু, দিলু আর টোটন মিলে একটা মিটিং শুরু করে দেয়। মিটিং না বলে এটাকে অবশ্যি ষড়যন্ত্র বলাই ভালো, কারণ মিটিংয়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে কেমন করে তিতুনিকে একটা সত্যিকারের শিক্ষা দেওয়া যায়, যেন সে সারা জীবনের জন্যে সাইজ হয়ে যায়। নাদু বলল, “টোটন, তোমার বোন মানুষটা খুবই ডেঞ্জারাস।”

টোটন মাথা নাড়ল, বলল, “আমি জানি।”

“আমি তার প্লেটে এক খাবলা লবণ দিয়েছি, সে নিশ্চয়ই হাত দিয়ে সেটা ধরে তোমার প্লেটে দিয়ে দিয়েছে।”

টোটন মাথা নাড়ল। নাদু বলল, “তা না হলে এর পর থেকে শুধু আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসে কেন?”

দিলু মাথা নাড়ল, সায় দিয়ে বলল, “হাসে কেন?”

নাদু বলল, “আমাকে বলে বোকা।”

দিলু বলল, “আমাকে বলে নাদুসনুদুস মোটাসোটা গোলগাল ফুটবল।”

টোটন বলল, “তোমাদের সাথে মাত্র একদিন থেকেছে, এর মাঝে তিতুনি কত কী বলে ফেলেছে। আমার সাথে সারাক্ষণ থাকে, চিন্তা করে দেখো আমার কী অবস্থা।”

নাদু বলল, “কাজেই তাকে ঠিকভাবে সাইজ করা দরকার।”

দিলু বলল, “চুলের মাঝে চিউয়িংগাম লাগিয়ে দেই?”

নাদু মাথা নাড়ল, বলল, “না। এই সব করলে আম্মু বকুনি দিবে। আম্মু-আব্বু যেন সন্দেহ না করে।”

“তাহলে কী করব?”

“এমন একটা কাজ করব যেটা দিয়ে সারা জীবন তিতুনিকে লজ্জা দেয়া যায়।”

টোটনের চোখ চকচক করে উঠল, “কী কাজ?”

“আগেরবার এটা করেছিলাম মিতুলের উপর। এখন তাকে আর কেউ মিতুলি ডাকে না। সবাই ডাকে হিসুনি।”

“হিসুনি?”

“হ্যা”, নাদুর মুখে হাসি ফুটে ওঠে। “মিতুল হচ্ছে আমার চাচাতো বোন। মাত্র ছয়-সাত বছর বয়স কিন্তু হেব্বি যন্ত্রণা। সারাক্ষণ কথা বলে, এক সেকেন্ড মুখ বন্ধ করে না। ধমক দিলে শুনে না, উল্টা ধমক দেয়। তখন ঠিক করলাম তাকে সাইজ করতে হবে। কি করলাম জানো?”

টোটন আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী?”

নাদু হাসি হাসি মুখে বলল, “জন্মের মতো সাইজ করে দিলাম। কি দিয়ে করলাম জানো?”

“কী দিয়ে?”

“এক গ্লাস পানি।”

টোটন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “এক গ্লাস পানি?”

“হ্যাঁ। মিতুল যখন ঘুমিয়েছে বিছানায় তার নিচে এক গ্লাস পানি ঢেলে দিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে সে বেকুব হয়ে গেল-ভাবল সে বিছানায় হিসু করে দিয়েছে।”

নাদুর বুদ্ধি দেখে টোটন চমৎকৃত হয়ে গেল। নাদু দুলে দুলে হাসতে হাসতে বলল, “মিতুল সকালে ঘুম থেকে উঠে লজ্জায় টমেটোর মতো লাল হয়ে গেল। কারো সামনে মুখ দেখাতে পারে না। আমরা কি ছাড়ি নাকি? টিটকারি করতে করতে মিতুলের বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দিলাম। তাকে নিয়ে একটা কবিতা বানালাম–

মিতুল মিতুল হিসুনি
এমন কাম আর করবানি?

তারপর তার পিছে পিছে এই কবিতা বলতে লাগলাম। মিতুল কেন্দেকেটে একাকার। তার নামই হয়ে গেল হিসুনি। হিস্যু থেকে হিসুনি। সেই যে আমাদের বাসা থেকে গিয়েছে আর কোনোদিন আসে নাই।”

টোটন আনন্দে হাততালি দিয়ে বলল, “তোমার কী বুদ্ধি! ফ্যান্টাস্টিক।” তারপর বলল, “আমরা তিতুনির উপরেও এটা করতে পারি না?”

নাদু বলল, “একশ’ বার।”

উত্তেজনায় টোটনের চোখ চকচক করতে থাকে, “তিতুনির বেলা কাজটা আরো সোজা হবে। গাধাটা যখন ঘুমায় মড়ার মতো ঘুমায়। কিছু টের পাবে না।”

নাদু গম্ভীর হয়ে বলল, “একেবারে ঠাণ্ডা পানি না নিয়ে পানিটা একটু গরম করে নিতে হবে, শরীরের সমান টেম্পারেচার, তাহলে পানি ঢালার সময়ে টের পাবে না।”

টোটন নাদুর কথায় একেবার মুগ্ধ হয়ে গেল, আবার বলল, “তোমার কী বুদ্ধি নাদু!”

দিলু মাথা নাড়ল, বলল, “হ্যাঁ। ভাইয়ার মাথায় অনেক বুদ্ধি।”

“বুদ্ধির তোমরা কী দেখেছ। আরো দেখবে।”

দিলু বলল, “আমরা তিতুনিকে নিয়ে কবিতা বানাব না?”

নাদু বলল, “কবিতা তো বানাতেই হবে। কবিতা ছাড়া কী আর এই প্রজেক্ট শেষ হয় নাকি?”

টোটন চকচকে চোখে বলল, “তিতুনিকে নিয়ে কবিতা বানানো আরো সোজা হবে-আমরা বলতে পারি

“তিতুনি রে তিতুনি
তুই হলি হিসুনি–”

নাদু বলল, “কিংবা–

হিস্যু হিস্যু হিসুনি
তিতা তিতা তিতুনি।”

দিলু আনন্দে হাততালি দিয়ে দাঁত বের করে হাসতে লাগল। অনেক দিন এ রকম মজা হয়নি।

.

আম্মু, আর বড় ফুপু মিলু আর অন্য-তিতুনিকে নিয়ে ফিরে এলেন ঘণ্টা দুয়েক পরে। মিলু একটা নূতন পুতুল কিনে এনেছে, সেটা নিয়ে তার উত্তেজনার শেষ নেই। ফুপাও প্রায় একই সময় অফিস থেকে ফিরলেন। ফুপা ব্যাংকে চাকরি করেন। এই সময়ে তার কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়, ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। বড় ফুপুর তুলনায় ফুপা একটু গম্ভীর। ছেলে-মেয়েরা মনে হয় তাকে একটু ভয়ই পায়। টোটনের খুব ইচ্ছা ছিল মোড়ের ফাস্ট ফুডের দোকান থেকে ফ্রায়েড চিকেন কিনে খাবে কিন্তু বড় ফুপু এত কিছু রান্না করেছেন যে সাহস করে সেটা আর বলতে পারল না। খাবার টেবিলে আব্বু আর ফুপা পলিটিক্স নিয়ে আলোচনা করতে থাকলেন, আম্মু আর বড় ফুপু পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে আলোচনা করতে থাকলেন, নাদু, দিলু আর টোটন কম্পিউটার গেম নিয়ে আলোচনা করতে করতে চোখের কোনা দিয়ে তিতুনিকে লক্ষ করতে লাগল। আজ রাতে এক গ্লাস পানি দিয়ে কী ম্যাজিক করে ফেলা হবে সেটা চিন্তা করেই তাদের মন আনন্দে ভরে যাচ্ছিল। মিলু তার ক্লাশের পাজি ছেলেদের নানা রকম কাজকর্মের বর্ণনা তিতুনিকে শুনিয়ে যাচ্ছিল। তিতুনি খুব মনোযোগ দিয়ে সেগুলো শোনার ভান করছিল, যদিও আসলে তার আলাদা করে কিছুই শোনার দরকার নেই, কার মনের ভেতর কী আছে সেগুলো সে খুব ভালো করে জানে।

খাওয়ার পর তিতুনিকে মিলুর সাথে তার নূতন কিনে আনা পুতুলটা নিয়ে খেলতে হলো। নাদু, দিলু আর টোটন নানা রকম ভয়ংকর কম্পিউটার গেম খেলে সময় কাটিয়ে দিল। রাত একটু গম্ভীর হওয়ার পর বড় ফুপু আর আম্মু সবাইকে ঘুমাতে পাঠিয়ে দিলেন। মিলুর ঘরে তার বিছানায় মিলুর সাথে তিতুনি। নাদুর ঘরে মেঝেতে তোষক পেতে আড়াআড়িভাবে নাদু, দিলু আর টোটনের শোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঠিক ঘুমানের আগে হঠাৎ নাদু আবিষ্কার করে তার খুবই পানির তৃষ্ণা পেয়েছে। পরপর দুই গ্লাস পানি খাবার পরও তৃষ্ণা যায় না, তিন নম্বর গ্লাস খাবার পর তার তৃষ্ণা মিটল। নাদুকে এভাবে পানি খেতে দেখে টোটনেরও তৃষ্ণা পেয়ে গেল আর টোটনকে পানি খেতে দেখে কেমন করে জানি দিলুরও তৃষ্ণা পেয়ে গেল। তিনজন যখন শুতে এসেছে তখন তিনজনেরই পানি খেয়ে একটু আঁইটাই অবস্থা। বিছানায় শুয়ে হাঁসফাঁস করতে করতে তারা একসময় ঘুমিয়ে গেল।

ঘুমানোর ঠিক আগে তিন গ্লাস পানি খাওয়ার কারণে গভীর রাতে তলপেটে প্রচণ্ড চাপ অনুভব করে নাদুর ঘুম ভেঙে যায়। অন্ধকার ঘরে তার পাশে দিলু এবং দিলুর পাশে টোটন মড়ার মতো ঘুমাচ্ছে। নাদু মশারি তুলে বের হয়ে এলো। আবছা অন্ধকারে বাথরুমে গিয়ে নাদু বাথরুমের বাতিটা জ্বালিয়ে কমোডের দিকে এগিয়ে গেল। হিস্যু করায় মনে হয় একধরনের আনন্দ আছে, বিশেষ করে যখন অনেক বেশি হিস্যুর দরকার পড়ে তখন মনে হয় আনন্দটাও অনেক বেশি। তলপেটের চাপ কমে আসার সাথে সাথে নাদুর একধরনের আরাম হতে থাকে। সে মনে হয় চোখ বন্ধ করে আরামের একধরনের শব্দও করে ফেলল। তখন হঠাৎ তার বিচিত্র একটা অনুভূতি হলো, তার মনে হলো তার শরীরের নিচে একধরনের কুসুম কুসুম গরমের প্রবাহ হচ্ছে এবং ঠিক তখন দ্বিতীয়বার নাদুর ঘুম ভেঙে গেল। নাদুর এক মুহূর্ত সময় লাগল বুঝতে যে এবারে সত্যি সত্যি ঘুম ভেঙেছে, এর আগেরটা ছিল ঘুম ভাঙার স্বপ্ন। নাদুর সারা শরীর দিয়ে আতঙ্কের একটা হিম শীতল প্রবাহ বয়ে যায়, সে চৌদ্দ বছরের একটা দামড়া ছেলে বিছানায় হিস্যু করে দিয়েছে! প্রচণ্ড আতঙ্কে সে পাথরের মতো জমে গেল, এটা কীভাবে সম্ভব? এখন কী হবে? সে তার পাশে তাকাল, দিলু ঘুমাচ্ছে। ঘুমাতে ঘুমাতে ছটফট করে কিছু একটা বলল, তারপর হঠাৎ উঠে বসে পড়ল। দিলু এদিক-সেদিক তাকায়, তারপর নাদুকে ধাক্কা দিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, “ভাইয়া।”

নাদু জিজ্ঞেস করল, “কী হয়েছে?”

“আমি-আমি–”, বলে ফাঁস ফাস করে কাঁদতে শুরু করে।

“আমি কী?”

দিলু বলল, “আমি বিছানা হিস্যু করে দিয়েছি।”

“তুইও? নাদু দিলুর কথা শুনে বিরক্ত না হয়ে কেমন যেন খুশি হয়ে উঠল।

দিলু কাঁদতে কাঁদতে বলল, “তোমার জন্যে।”

“আমার জন্যে?”

“হ্যাঁ। আমি স্বপ্ন দেখলাম, তুমি আমাকে ধরে বাথরুমে নিয়ে বললে, কর হিস্যু কর আর আমি হিস্যু করে দিয়েছি।”

নাদু বলল, “কাঁদিস না। আমারও বিছানায় হিস্যু হয়ে গেছে।”

দিলু মুহূর্তে কাদা বন্ধ করে বলল, “তোমারও?”

নাদু বলল, “হ্যাঁ। আমারও।”

গভীর রাতে দুই ভাইয়ের কথা শুনে টোটনেরও ঘুম ভেঙে গেছে। সে কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, “আমারও।”

তখন তিনজন বিছানায় বসে অন্ধকারে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে থাকে। এটা কী হলো? সকালে তারা বাসার সবার সামনে মুখ দেখাবে কেমন করে? যেদিন তারা তিনজন মিলে ঠিক করেছে তিতুনিকে একটা শিক্ষা দেবে সেদিন উল্টো তাদের তিনজনের একটা উল্টো শিক্ষা হয়ে গেল? এর থেকে বড় হৃদয়বিদারক ঘটনা আর কী হতে পারে? এ রকম কাকতালীয় ঘটনা কি আগে কখনো ঘটেছে? ভবিষ্যতে কখনো ঘটবে? তিতুনি যখন সকালবেলা এটা আবিষ্কার করবে তখন আত্মহত্যা করা ছাড়া তাদের আর কি কোনো গতি আছে?”

.

ভোরবেলা ব্যাপারটা নিয়ে বাসায় ছোটখাটো একটা উত্তেজনা হলো, তিনজন শুনল মিলু ছুটে গিয়ে তিতুনিকে খবরটা দিচ্ছে।

“তিতুনি আপু কি হয়েছে জানো?”

“কী হয়েছে?”

“ভাইয়া, ছোট ভাইয়া আর টোটন ভাইয়া একসাথে বিছানায় পিশাব করে দিয়েছে। গন্ধে ঘরে যাওয়া যায় না।”

তিনজনই এই সময়ে তিতুনির গলা থেকে একটা আনন্দধ্বনি শোনার অপেক্ষা করছিল, কিন্তু সেটা শুনল না, উল্টো শুনল তিতুনি বলছে, “শ-স-স-স! মিলু এটা নিয়ে কোনো কথা বলো না। ইচ্ছে করে তা করেনি–হঠাৎ হয়ে গেছে, তারা তো বড় হয়ে গেছে, কিছু একটা নিশ্চয়ই কারণ আছে। হয়তো ঘুমানোর আগে বেশি পানি খেয়েছিল। তাদের কোনো দোষ নাই।”

“দোষ নাই?”

“না। ভান করো তুমি কিছু জানো না। আমি কিছু জানি না। মানুষকে কখনো লজ্জা দিতে হয় না।”

মিলু খুবই অনিচ্ছার সাথে বলল, “ঠিক আছে।”

নাদু, দিলু আর টোটন ঘরে বসে একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকায়। একজন যদি আরেকজনকে লজ্জাই না দিবে তাহলে কী দেবে? কী বলে তিতুনি?