গণ মানে কী—শব্দার্থ বিচার
তাহলে, নিজেদের সাময়িক ধ্যানধারণা ও আশা-আকাঙ্খাকে সচেতন ভাবে সমালোচনা করেই গণ-এর তাৎপর্য অন্বেষণে অগ্রসর হতে হবে।
গণ প্রসঙ্গে প্রাচীন পুঁথিপত্রে নানা রকম শব্দ ব্যবহার হয়েছে। প্রথমে সেগুলির অর্থ-বিচার করা দরকার।
মহামহোপাধ্যায় পি. ভি. কানে(১০৬) বলছেন, কাত্যায়নের মতে গণ, শ্রেণী, ব্রাত, পূগ, সংঘ ও পাষণ্ড এই ক’টি শব্দ একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে—অর্থটা হলো সমূহ বা বর্গ। মহামহোপাধ্যায় কাত্যায়ন থেকে উদ্ধৃত করছেন : গণাঃ পাষণ্ডপুগাশ্চ ব্রাতাশ্চ শ্রেণয়স্তথা, সমূহাখ্যাশ্চ যে চান্যে বর্গাখ্যাস্তে বৃহস্পতিঃ। এবং, মহামহোপাধ্যায়(১০৭) বলছেন, এই শব্দগুলি বৈদিক সাহিত্যেও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়, কিন্তু সেখানে এগুলি শুধু সাধারণভাবে সমূহবাচক (a group),–তার চেয়ে আর কোনো বিশিষ্ট অর্থ এগুলির নেই।
পাণিনিও(১০৮) পূগ, গণ, সংঘ এবং ব্রাত শব্দ নিয়ে আলোচনা করেছেন, তাঁর ভাষ্যকারেরা এই শব্দগুলিকে আরো বিস্তারিতিভাবে ব্যাখ্যা করবার চেষ্টা করছেন।
পাণিনি : ব্রাতেন জীবতি।
মহাভাষ্য : নানাজাতীয় অনিয়তবৃত্তয় উৎসেধজীবিনঃ সঙ্ঘধা ব্রাতাঃ। তেষাং কর্ম ব্রাতং। তেন ব্রাতকর্মণা জীবতীতি ব্রাতীনঃ।
কাশিকা : নানাজাতীয় অনিয়তবৃত্তয়োহর্থকামপ্রধানাঃ সঙ্ঘধাঃ পূগাঃ।
এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ব্রাত প্রভৃতি শব্দের অর্থে মূল ঝোঁকটা সমূহত্বের (যৌথ-জীবনের) উপরই। তবুও ভাষ্যকারদের কয়েকটি কথার শব্দার্থ সম্বন্ধে খুঁটিয়ে ভাবা দরকার। যেহেতু সমূহ-জীবনের পর্যায়ে জাতিভেদ দেখা দেওয়া সমাজ-বিজ্ঞান অনুসারে স্বাভাবিক ঘটনা নয় (কেননা, জাতিভেদ প্রধাণতই ভেদের কথা, আর তাই সমূহার্থের সম্পূর্ণ বিপরীত), সেইহেতু ভাষ্যকারদের ‘নানাজাতীয়’ শব্দকে সাধারণভাবে ‘নানা প্রকার’ অর্থে গ্রহণ করাই উচিত নয় কি? এই মানের সঙ্গেই ‘অনিয়ত বৃত্তি’ শব্দাদিরঅ সঙ্গতি থাকা সম্ভব—কেননা, জাতিভেদের একটি লক্ষণই হলো বৃত্তি বা জীবিকা স্থিরনিশ্চিত বা নিয়ত হয়ে যাওয়া। তাছাড়া, ব্রাতকর্ম বলতেও পুরো দলের কাজকর্ম বোঝানোই সম্ভব—ব্রাতের মধ্যে যদি জাতিভেদ সত্যিই থাকে তাহলে ব্রাতকর্ম বলে একটি শব্দ ব্যবহার করা স্বাভাবিক নয়। এই কারণেই, মহামহোপাধ্যায় কানের(১০৯) ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। তিনি বলছেন : Vratas are groups formed by ‘men of various castes’ with no fixed means of livelihood but subsisting by the might (or strength) of their bodies (by bodily labour of various kinds)। আমাদের মন্তব্য বলো, গণ বা ব্রাত নামের ওই যৌথ-জীবনের ধ্বংসস্তূপের উপরই উত্তরযুগের জাতিভেদের ইমারত গড়ে ওঠা সম্ভবপর।
মহাভাষ্য ও কাশিকার উদ্ধৃত অংশ দুটির উপর নির্ভর করে আমরা এখানে লোকায়তিক ধ্যানধারণা-সংক্রান্ত আমাদের মূল যুক্তিরও পুনরুল্লেখ করতে চাই। কাশিকায় ‘অর্থকামপ্রধানাঃ’ বলে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে—এখানে যেন লোকায়তিকদের পুরুষার্থের কথাই ব্রাতজীবীদের বিশেষণ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। আমাদের যুক্তি হলো, ব্রাত ব্রা প্রাগ-বিভক্ত যৌথজীবনে যে-হেতু কর্মজীবনের সঙ্গে মানব-চেতনার বিচ্ছেদ হয়নি সেই হেতুই অধ্যাত্মবাদ বা ভাববাদের আবির্ভাবও সম্ভব নয়—তাই, সে-স্তরের চেতনাকে আধুনিক অর্থে বস্তুবাদীদর্শন বলা অসঙ্গত হলেও তা লোকায়তিক চেতনাই—ওই লোকায়তিক চেতনা যতো মুক, অব্যক্ত ও অচেতন হোক না কেন। এই প্রসংগে ব্যাকরণ-সাহিত্যে ব্যবহৃত ওই উৎসেধজীবী শব্দটির তাৎপর্যও চিত্তাকর্ষক। মহামহোপাধ্যা কানে উৎসেধজীবী বলতে শারীরিক শ্রমজীবীই বোঝাতে চায় এবং আধুনিক টীকাকারও বলছেন, ‘শারীরিক শ্রমেন (ন তু বুদ্ধি বৈভবেন) জীবন্তি তে ব্রাতা’(১১০)।
তাহলে, ব্যাকরণ-সাহিত্যের দিক থেকেও প্রাগ-বিভক্ত যৌথ-জীবন ও তার সঙ্গে শারীরিক শ্রম এবং অতএব অর্থকামপ্রধান (লোকায়তিক) চেতনার যোগাযোগের ইঙ্গিত পাওয়া যায় কি?
কিন্তু গণ, ব্রাত প্রভৃতি শব্দে যে ওই প্রাগ-বিভক্ত যৌথ-সমাজই বোঝানো হয়েছে সে-আলোচনায় ফেরা যাক।
ম্যাকডোন্যাল(১১১), উইলসন(১১২), মনিয়ার-উইলিয়ামস(১১৩) প্রমুখ আধুনিক বিদ্বানেরাও গণ শব্দটির এই সমূহবাচকত্বের তাৎপর্য অনুসরণ করে ইংরেজী প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করছেন : ‘community, corporation, association,’ ইত্যাদি। মনিয়ার উইলিয়ামস তো সরাসরি ‘tribe’ শব্দটিই ব্যবহার করেছেন। এবং এ-জাতীয় অর্থনির্ণয়ের নমুনা ভারতীয় অভিধানেও দুর্লভ নয়। তাই, জে. এফ. ফ্লিট(১১৪) সিদ্ধান্ত করেছিলেন :
…the word ‘gana’ is given in Indian lexicons, with many other terms as primarily a synonym of samuha or samgha, of which the radical and leading idea is that of a ‘gathering together, a collection’.
ভারতীয় অভিধান অন্যান্য কয়েকটি শব্দের সঙ্গে গণ শব্দটিকে সমূহ বা সঙ্ঘের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত করা হয়েছে এবং তার প্রধান ও চূড়ান্ত অর্থ হলো একত্রিত হওয়া, যুথবদ্ধতা।
এবং, এই নজির থেকেই শ্রীযুক্ত ফ্লিট সরাসরি সিদ্ধান্ত করেন যে, গণ বলতে প্রাচীনেরা ‘tribe’-ই বুঝতেন(১১৫)। যদিও অবশ্য অন্যান্য বহু আধুনিক বিদ্বানের মতোই শ্রীযুক্ত ফ্লিটও ওই ‘tribe’ শব্দটির প্রকৃত অর্থ কী তা আলোচনা করেননি(১১৬)। তিনি যদি মর্গানের গবেষণা অনুসরণ করে সে-কথার আলোচনা করতে রাজী হতেন তাহলে তাঁকেও আদিম-সাম্যসমাজের প্রসঙ্গ তুলতে হতো। আমরা একটু পরে সে-প্রসঙ্গে প্রত্যাবর্তন করবো। তার আগে দেখা দরকার শ্রীযুক্ত ফ্লিট-এর এই ব্যাখ্যা কী ভাবে খণ্ডন করবার চেষ্টা করা হয়েছে এবং ওই চেষ্টা সত্যিই স্বীকারযোগ্য কি না।
রয়েল এসিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায়(১১৭) পাতার পর পাতা জুড়ে এ-বিষয়ে শ্রীযুক্ত জে. এফ. ফ্লিটের সঙ্গে শ্রীযুক্ত এফ. ডাব্লিউ. টমাসের সুদীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিলো। বিতর্কের কারণ ছিলো দুটি শিলালিপির পাঠোদ্ধার—শিলালিপি দুটি আনুমানিক পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দীর এবং দুটি লিপিতেই ‘গণ’ শব্দের উল্লেখ দেখা গিয়েছিলো। শ্রীযুক্ত ফ্লিট এই গণ শব্দকে সরাসরি ‘ট্রাইব’ অর্থে গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এ-তর্জমায় শ্রীযুক্ত টমাসের ঘোরতর আপত্তি ছিলো। তাঁর ধারণায়, গণ শব্দ সাধাণতভাবে ট্রাইব না বুঝিয়ে ট্রাইব-সমাজের শাসক-গোষ্ঠীটুকুকেই (‘governing body of the tribe’) বোঝায়। যদিও অবশ্য মর্গানের গবেষণা অনুসরণ করলে পর দেখতে পাওয়া যায়, ট্রাইব-সমাজ সম্বন্ধে আমরা সাধারণভাবে যে-জ্ঞান পাই তার সঙ্গে শ্রীযুক্ত টমাস কল্পিত এই প্রভেদের সঙ্গতি নেই।
এ-বিতর্ক শুধুমাত্র ওই পাশ্চাত্য বিদ্বানদের মধ্যেই আবদ্ধ ছিলো না। শ্রীযুক্ত ফ্লিট নজির দিয়েছিলেন স্যর ভাণ্ডারকরের রচনার, শ্রীযুক্ত টমাসকে সমর্থন জানালেন অধ্যাপক জয়সওয়াল(১১৮)।
এখানে আমরা বিশেষ করে অধ্যাপক জয়সওয়ালের যুক্তিরই আলোচনা করতে চাই। তার কারণ, আধুনিক ঐতিহাসিকদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে জোর দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, প্রাচীন সাহিত্যে গণ বলতে ট্রাইবের বদলে সাধারণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই বুঝিয়েছিলো—এবং, এই মতবাদ আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ন বিরুদ্ধ। আমরা বলতে চাই, গণ বলতে প্রাগ-বিভক্ত, অতএব প্রাক-রাষ্ট্র, সমাজ-সংগঠনকে বুঝতে হবে। তাছাড়া, ফ্লিট-বনাম-টমাসের বিতর্কে তথ্য প্রভৃতির ভিত্তি সামান্যই ছিলো; অপরপক্ষে অধ্যাপক জয়সওয়াল আত্মপক্ষ সমর্থনে প্রাচীন সাহিত্য থেকে বহু তত্য উদ্ধৃত করেছেন। সেগুলিকে নতুন করে বিচার করলে শুধুই যে অধ্যাপক জয়সওয়ালের সিদ্ধান্ত বিচার করা হবে তাই নয়, আমাদের পক্ষে তথ্য-ভিত্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছবার কাজও অনেক সহজসাধ্য হবে।
ব্যাকরন-সাহিত্যে গণ এবং সঙ্ঘ বলে দুটি শব্দই যে একার্থবাচক, এ-কথা অধ্যাপক জয়সওয়ালও অস্বীকার করেন না। এ-বিষয়ে আমরা ইতিপূর্বেই কাত্যায়নের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছি—গণ, পূগ, পাষণ্ড, ব্রাত প্রভৃতি সমস্ত শব্দই সমূহ-বাচক। এবং অধ্যাপক জয়সওয়াল নিজেই বলছেন, পাণিনি গণ এবং সঙ্ঘ বলে দুটি শব্দকে একই অর্থে গ্রহণ করেছেন(১১৯) :
Panini, dealing with the formation of the word ‘Samgha’ in III. 3. 86 (সঙ্ঘাদ্ধৌ গণ-প্রশংসয়োঃ) says that the word ‘Sangha’ (as against the regular ‘Samghata’ derived from III, 3. 76) is in the meaning of ‘gana’.
অর্থাৎ, পাণিনি সঙ্ঘ শব্দের নিষ্পত্তি আলোচনা করতে গিয়ে বলছেন (সঙ্ঘদ্ধৌ গণ-প্রশংসয়োঃ—৩, ৩, ৮৬) সঙ্ঘ বলতে গণ বোঝায়—হন্ ধাতু জাত সঙ্ঘাত নয়।
অধ্যাপক জয়সওয়াল এ-বিষয়ে বৌদ্ধ পুঁথিরও নিদর্শন তুলছেন—সেখানেও গণ ও সঙ্ঘ শব্দ একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে(১২০)। সঙ্ঘ ও গণ-এর এই একার্থবাচকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, কৌটিল্যের সঙ্ঘবৃত্ত আলোচনা করবার সময় আমরা স্পষ্টই দেখতে পাবো, যে-সঙ্ঘগুলিকে ভাঙবার জন্যে তিনি নির্লজ্জতম পদ্ধতির নির্দেশ দিতেও কুণ্ঠিত হচ্ছে না সেগুলি ট্রাইব্যাল-সংগঠন ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। অথচ, বিস্ময়ের কথা হলো, গণ ও সঙ্ঘের মধ্যে এই অভেদ প্রদর্শন করবার পরই অধ্যাপক জয়সওয়াল বলছেন(১২১) :
The term ‘gana’ signified the form of Government. Samgha on the other hand signified the State.
অর্থাৎ, গণ বলতে বুঝিয়েছিলো সরকারের রূপ; অপরপক্ষে সঙ্ঘ বলতে বুঝিয়েছিলো রাষ্ট্র।
এবং, সঙ্ঘ বা গণ বলতে ট্রাইব বোঝবার বিরুদ্ধে তিনি যুক্তি দিচ্ছেন(১২২) :
Panini, we have seen, equates ‘Gana’ with ‘Samgha’. No one would say that the word ‘samgha’ can in any way be connected with tribe there. Again, new ‘ganas’ were founded. Would that mean that ‘new’ tribe were founded? Such a meaning would hardly deserve consideration.
অর্থাৎ, আমরা দেখেছি, পাণিনি গণ এবং সঙ্ঘকে এক করেছেন। সেখানে সঙ্ঘ যে ট্রাইব-এর সঙ্গে কোনোভাবে সংযুক্ত, এ-কথা কেউই বলবেন না। তাছাড়া নতুন গণ প্রতিষ্ঠিত হতো। তার মানে কি এই হবে যে, নতুন ট্রাইব প্রতিষ্ঠিত হতো? এ-ধরনের মতবাদ আলোচনার যোগ্যই নয়।
কিন্তু কেন? বরং রাষ্ট্রের বেলায় শাসক-শাসিতের মধ্যে প্রভেদ আছে বলেই এবং গণ বা সঙ্ঘ একান্তভাবে সমুহার্থক বলেই, গণ বলতে রাষ্ট্র মনে করা কষ্টকল্পনার পরিচায়ক। অপরপক্ষে, নতুন গণ প্রতিষ্ঠিত হবার কথা এতোটুকুও অসম্ভব নয়(১২৩)। বস্তুত, গণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক জয়সওয়ালই আরো যে-সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা থেকে গণকে ট্রাইব মনে করাই খুব স্বাভাবিক হয়। যেমন, বৌদ্ধ-পুঁথি(১২৪) থেকে তিনি গণ-বন্ধন বলে শব্দ তুলছেন, জৈন-পুঁথি(১২৫) থেকে সচিত-সমূহ বলে আর একটি কথা তুলছেন। প্রথম শব্দটির অর্থ ‘group-bond’ এবং দ্বিতীয়টির অর্থ ‘group-consciousness’ হওয়াই সবচেয়ে স্বাভাবিক। এবং রাষ্ট্র-ব্যবস্থার বর্ণনায় এ-জাতীয় বিশেষণ প্রাসঙ্গিক না হওয়াই সম্ভবপর।
প্রাচীন ব্যাকরণ-সাহিত্যেই এই জাতীয় মানবগোষ্ঠীর যে-সব নাম পাওয়া যায় তা থেকেও ট্রাইব অর্থই অনুমান করা স্বাভাবিক মনে হয়। কয়েকটি নামের নমুনে(১২৬) : লৌহিত-ধ্বজাঃ, লৌহধ্বজাঃ, কৌঞ্জায়ন্যঃ, ব্রাধ্নায়ন্যঃ, কৌণ্ডীবৃষঃ, বার্কেণ্য, ঔলপয়ঃ (ভোঁদড় থেকে), ক্রোষ্টুকীয়ঃ (শিয়াল থেকে), শিবি, ইত্যাদি।
এই নামগুলির উৎসে টোটেম-বিশ্বাস অনুমান করা কষ্টকর নয় এবং তার তাৎপর্য আর যাই হোক রাষ্ট্র হতে পারে না। অবশ্যই, তর্ক করে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র-ব্যবস্থা গড়ে ওঠবার পরও টোটেমিক নাম টিকে থাকা সম্ভব। কিন্তু সুখের বিষয়, ব্যাকরণ-সাহিত্যে উল্লেখিত এই নামগুলির বেলায় সে-তর্কের অবকাশ সত্যিই নেই। কেননা, প্রাচীন সাহিত্যে শুধু এই নামগুলিই টিকে নেই,–ওই নামের মানবগোষ্ঠীর বর্ণনাও পাওয়া যায়। এবং সে-বর্ণনার মধ্যে প্রাগ-রাষ্ট্র ট্রাইব-সমাজের ছবিই স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
এই বর্ণনা পাবার জন্যে ব্যাকরণ-সাহিত্য থেকে মহাভারতের দিকে এগোনো দরকার।
—————————-
১০৬. P. V. Kane HD 2:66.
১০৭. Ibid 2:67.
১০৮. পাণিনি ৫.২.২১ ও ৫.২.৫২।
১০৯. P. V. Kane op. cit. 2:67.
১১০. প্রভাখ্যটীকা ৩০৭।
১১১. A. A. Macdonnel SED—‘Gana’.
১১২. H. H. Wilson SED—‘Gana’
১১৩. M. Monier-Williams SED 343.
১১৪. J. F. Fleet in JRAS-1915, 138.
১১৫. Ibid.
১১৬. cf. G. Thomson SAGS 97.
১১৭. JRAS 1914:413-4, 745-7; 1915:138-40, 533-5, 802-4.
১১৮. K. P. Jayaswal HP 1:29 cf. F. W. Thomas JRAS-1915, 534. R. G. Bhandarkar in IA-1912, 161 cf. J. F. Fleet JRAS 1914 : 745f. cf. R. G. Bhandarkar VS 104.
১১৯. K. P. Jayaswal HP 1:27-8.
১২০. Ibid 1:28.
১২১. Ibid 1:28.
১২২. Ibid 1:29.
১২৩. H. L. Morgan AS 105.
১২৪. Jataka 1:422 cf. K. P. Jayaswal op. cit. 1:30.
১২৫. K. P. Jayaswal op. cit. 1:31-2.
১২৬. Ibid 1:35.