নকুলের প্রতি, কহেন ভূপতি,
শুনহ আমার বাণী।
ভাই দুই জন, জলের কারণ,
গেল কোথা নাহি জানি।।
কর অন্বেষণ, গহন কানন,
জল আন শীঘ্রগতি।
দারুণ তৃষ্ণায়, প্রাণ ফাটি যায়,
শুন ভাই মহামতি।।
রাজ আজ্ঞা শুনি, চলিল তখনি,
মাদ্রীর তনয় ধীর।
মহা-সত্ত্বোদয়, নির্ভয় হৃদয়,
মনে মনে ভাবে বীর।।
দেখিতে সুন্দর, সেই ত কানন,
পশু পক্ষী আদি কত।।
দেখিয়া কানন, আনন্দিত মন,
চলিল সত্বরে ধীর।
কতক্ষণ পরে, মায়া সরোবরে,
আসিল নকুল বীর।।
দেখি সরোবর, হরিষ অন্তর,
বিহরে কত বিহঙ্গ।
দেখে লাখে লাখ, হংষ চক্রবাক,
বিরাজে রমণী সঙ্গ।।
নকুল হেরিয়া, ব্যাকুল হইয়া,
চলে সরোবর তীর।
কহে এ সময়, ধর্ম্ম মহাশয়,
শুন হে নকুল বীর।।
প্রশ্নোত্তর দাও, তবে জল খাও,
নহে যাবে যমপুরে।
তৃষ্ণায় আকুল, হইয়া নকুল,
সে কথা অগ্রাহ্য করে।।
জলপান তরে, চলিল সত্বরে,
সেই মায়া সরোবরে।
বিধির ঘটন, কে করে খণ্ডন,
পরশন মাত্র মরে।।
হেথা রাজা বসি, হইল হতাশী,
বিলম্ব দেখিয়া অতি।
দুঃখযুক্ত মন, চিত্ত উচাটন,
অত্যন্ত উদ্বিগ্ন মতি।।
অরণ্যের কথা, সুখ মোক্ষদাতা,
রচিলেন মুনি ব্যাস।
পাঁচালী প্রবন্ধে, মনোহর ছন্দে,
বিরচিল কাশীদাস।।