মুনি বলে, শুন কথা কহিতে বিস্তর।
এইমত পঞ্চ ভাই সঙ্গে দামোদর।।
শূরসেন নামে বন যমুনার তটে।
উপনীত সর্ব্বজন তাহার নিকটে।।
জল স্থল দেখি সব বিচিত্র কানন।
বিশ্রাম করিতে বসিলেন সর্ব্বজন।।
শ্রীকৃষ্ণ কহেন, রাজা কর অবধান।
বনমধ্যে নাহি আর হেন রম্যস্থান।।
জল স্থল যথাযোগ্য বহু মৃগ পাখী।
ইহাতে আশ্রম কর পরম কৌতুকী।।
নাহিক ইহার চতুর্দ্দিকে রাজচয়।
সুখে থাক হৈয়া হেথা অন্তর নির্ভয়।।
কলিঙ্গ তৈলঙ্গ অঙ্গ বঙ্গ গুজরাট।
কম্বোজ কর্ণাট মদ্র বিভঙ্গ বিরাট।।
অযোধ্যা পাঞ্চাল কাশী কনখল দেশ।
সিদ্ধসেন কাশী ভোজ কাশ্মীর বিশেষ।।
ইত্যাদি অনেক রাজ্য নিকটে আছয়।
কদাচিৎ নাহি ইথে কৌরবের ভয়।।
ইতিমধ্যে বাস কর যেই কোন দেশে।
এই বর্ষ অজ্ঞাতেতে রহ গুপ্তবেশে।।
তদন্তরে রাজ্যে গিয়া হইবে নৃপতি।
আমারে বিদায় কর যাই দ্বারাবতী।।
বিশেষ হইল তব অজ্ঞাত সময়।
এখন জনতা বেশী করা ভাল নয়।।
ধর্ম্ম বলিলেন, কৃষ্ণ কি কহিব আর।
তোমারে একান্ত লাগে পাণ্ডবের ভার।।
সহায় সম্পত্তি সখা বন্ধু মিত্র ভাই।
তোমা বিনা পাণ্ডবের আর কেহ নাই।।
পুনঃ পুনঃ রাখিয়াছ বিষম সঙ্কটে।
অজ্ঞাতে রাখহ কৃষ্ণ দুষ্টের কপটে।।
গোবিন্দ কহেন, রাজা না করিহ ভয়।
যথা তুমি, তথা আমি জানিহ নিশ্চয়।।
যখন যে কার্য্য তব হবে উপস্থিত।
জ্ঞাতমাত্র আসি আমি করিব বিহিত।।
এত বলি যান কৃষ্ণ দ্বারকা নগর।
শ্রীকৃষ্ণ বিচ্ছেদে সবে দুঃখিত অন্তর।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।।