যোগের প্রথম সোপান যম।
যম আয়ত্ত করিতে পাঁচটি বিষয়ের প্রয়োজনঃ
- ১. কায়মনোবাক্যে কাহাকেও হিংসা না করা।
- ২. কায়মনোবাক্যে সত্য কথা বলা।
- ৩. কায়মনোবাক্যে লোভ না করা।
- ৪. কায়মনোবাক্যে পরম পবিত্রতা রক্ষা করা।
- ৫. কায়মনোবাক্যে অপাপবিদ্ধতা।
পবিত্রতা শ্রেষ্ঠ শক্তি। ইহার সম্মুখে সব-কিছু নিস্তেজ। তারপর ‘আসন’ বা সাধকের বসিবার ভঙ্গী। আসন দৃঢ় হওয়া চাই, এবং শির পঞ্জর এবং দেহ ঋজু ও সরলরেখায় অবস্থিত হইবে। মনে মনে চিন্তা কর—তোমার আসন দৃঢ়, কোন কিছু তোমাকে টলাইতে পারিবে না। অতঃপর চিন্তা কর—মাথা হইতে পা পর্যন্ত একটু একটু করিয়া তোমার সমগ্র দেহ বিশুদ্ধ হইতেছে। চিন্তা কর—শরীর স্ফটিকের ন্যায় স্বচ্ছ, জীবন-সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার জন্য ইহা একটি নিখুঁত শক্ত ভেলা।
ঈশ্বরের নিকট, জগতের সকল মহাপুরুষ, ত্রাণকর্তা এবং পবিত্রাত্মাদের নিকট প্রার্থনা কর, তাঁহারা যেন তোমায় সাহায্য করেন। তারপর আধ ঘণ্টা প্রাণায়াম অর্থাৎ পূরক, কুম্ভক ও রেচক অভ্যাস কর ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সহিত মনে মনে ‘ওঁ’ শব্দ উচ্চারণ কর। এই আধ্যাত্মিক শব্দের অদ্ভুত শক্তি আছে।
যোগের অন্যান্য স্তরঃ (১) প্রত্যাহার অর্থাৎ সকল বাহ্য বিষয় হইতে ইন্দ্রিয়গুলি সংযত করিয়া সম্পূর্ণরূপে মানসিক ধারণার দিকে পরিচালিত করা; (২) ধারণা অর্থাৎ অবিচল একাগ্রতা; (৩) ধ্যান অর্থাৎ প্রগাঢ় চিন্তা; (৪) সমাধি অর্থাৎ (শুদ্ধ ধ্যান) রূপবিবর্জিত ধ্যান। ইহা যোগের সর্বোচ্চ এবং শেষ স্তর। পরমাত্মায় সকল চিন্তাভাবনার নিরোধের নাম ‘সমাধি’—যে অবস্থায় উপলব্ধি হয়, ‘আমি ও আমার পিতা এক।’
একবারে একটি কাজ কর, এবং উহা করিবার সময় অপর সকল কাজ পরিত্যাগ করিয়া উহাতেই সমগ্র মন অর্পণ কর।