এতেক শুনিয়া ধর্ম্ম কন মুনি প্রতি।
কহ তপোধন জয়-বিজয় ভারতী।।
শুনিবারে চিত্তে জাগে অতি কৌতূহল।
পুণ্যকথা কহি শান্ত কর দুঃখানল।।
নৃপ-বাক্যে মুনি কহে, কহি শুন ধর্ম্ম।
ভারত শ্রবণ সম নাহি আর কর্ম্ম।।
ধর্ম্মী তুমি, তাই চাহ শুনিতে পুণ্য কথা।
তেঁই শুনাব তোমারে পুণ্যশ্লোক গাথা।।
জয়-বিজয়ের তৃতীয় জন্ম কথন।
সংক্ষেপে কহি শুন হইয়া এক মন।।
সেবক উদ্ধার হেতু প্রভুর এ কর্ম্ম।
হেনমতে দুই ভাগে লয়ে দোঁহে জন্ম।।
জন্মিল বিজয় জয় ভূমে পুনর্ব্বার।
দন্তবক্র শিশুপাল নাম দোঁহাকার।।
পূর্ণব্রহ্ম যদুকুলে হয়ে অবতার।
তব যজ্ঞে শিশুপালে করেন উদ্ধার।।
তিন অবতারে কৃষ্ণ দেব ভগবান।
ভক্তজনে করিলেন ভবে পরিত্রাণ।।
রামের এতেক দুঃখ ধরিয়া শরীর।
কি দুঃখ তোমার বনে রাজা যুধিষ্ঠির।।
সীতার দুঃখের কথা শুনিলে শ্রবণে।
দ্রৌপদীর দুঃখ তার নহে একগুণে।।
সবার দুঃখের কথা করিয়া শ্রবণ।
সীতাদুঃখে দ্রৌপদীর বিদরিল মন।।
মুনি বলে শুন রাজা, দুঃখ হৈল অন্ত।
অল্পিদেন নষ্ট হবে কৌরব দুরন্ত।।
বিশেষ দ্রৌপদী এই সাবিত্রী সমান।
যে জন উভয় কুল কৈল পরিত্রাণ।।
নানা সুখ ত্যজিলেক স্বামীর কারণে।
তথাপি না ত্যজিলেক স্বামী সত্যবানে।।
ক্ষত্রকুলে তার তুল্য নহে কোন জন।
দ্রৌপদীতে দেখি যেন তাঁহার লক্ষণ।।
সতী সাধ্বী পতিব্রতা লক্ষ্মী-অবতার।
অক্ষেতে দাসত্ব মুক্ত কৈল সবাকার।।
এতেক ব্রাক্ষণ যার ভুঞ্জে অপ্রমাদে।
কদাচ না হবে দুঃখ ইহার প্রসাদে।।
পশ্চাতে জানিবে রাজা নয়নে দেখিবে।
কহিনু ভবিষ্য কথা নিশ্চয় ফলিবে।।
ভ্ক্ত জয় বিজয়ের তিন জন্ম কথা।
তিন অবতারে শ্রীহরির কার্য্য গাথা।।
সবিশেষে মুনিবর কন নৃপভাগে।
সবিত্রী কথা শুনিবারে কৌতুক জাগে।।
ব্যাস বিরচিত মহাভারত আধারে।
যাহা নাই, নাই তাহা, বিশ্বের মাঝারে।।