এমনি বাণের শিক্ষা, মুনিগণে কৈলে রক্ষা,
তাড়কা মারিলে এক বাণে।
সুবাহু রাক্ষস মারি, মুনি যজ্ঞ রক্ষা করি,
গেলা প্রভু জনক-ভবনে।।
শিবের ধনুক ভাঙ্গে, লোকে চমৎকার লাগে,
করেছিলে এ পাণি-গ্রহণ।
ভৃগুরামে জিনি পরে, গেলা প্রভু অযোধ্যারে,
জয় জয় সকল ভুবন।।
আমি স্ত্রী অভাগ্যবতী, হারালাম হেন পতি,
কান্দে সীতা মায়ামুণ্ড লৈয়া।
দৈব ঘটনা কারণে, এলে প্রভু তপোবনে,
কোথা গেলে আমারে ত্যজিয়া।।
পরে নিল রাজ্যখণ্ড, বিধি মোরে কৈল দণ্ড,
ভাগ্যে আমার দৈবের লিখন।
দারুণ কৈকেয়ী তাতে, বাদ সাধে বিধিমতে,
আমি হারালাম রাম-ধন।।
ত্যজিয়া রাজ্যের আশ, করিলে হে বনবাস,
পঞ্চবটী এলেম তিন জন।
সূর্পণখার নাক কান, কেটে কৈলে অপমান,
রাক্ষস বিপক্ষ তেকারণ।।
করিলে বিষম রণ, মারিলে খর দূষণ,
চৌদ্দ হাজার নিশাচর জিনি।
মারীচ রাক্ষসে মারি, পাঠাইলা যমপুরী,
হেন প্রভু লোটায় ধরণী।।
বালি-বানরেরে মারি, সুগ্রীবের মিত্র করি,
সাগর শুষিলে এক বাণে।
করিলে বিষম রণ, বধি কত শত জন,
কার বাণে হারাইলে প্রাণে।।
স্মরিতে সে সব কথা, অন্তরে লাগয়ে ব্যথা,
সহনে না যায় এই দুঃখ।
ধন জন রাজ্যপদ, কিছু নহে চিরপদ,
আর না দেখিব চাঁদমুখ।।
অনলে প্রবেশ করি, কলেবর পরিহরি,
আমার জীবনে নাহি কাম।
কৃত্তিবাসের এই বাণী, শুন শুন ঠাকুরাণী,
পাইবে আপন প্রভু রাম।।