পাদ্রী বুহাইরা
নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বয়স যখন বারো বছর, মতান্তরে বারো বছর দুই মাস দশদিন হলো তখন আবু তালেব তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্য সিরিয়ায় রওয়ানা হলেন। বসরায় পৌছার পর এক জায়গায় তাঁবু স্থাপন করলেন। সেই সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী সেরা ছিলো। সেই শহরে জারজিস নামে একজন পাদ্রী ছিলেন। তিনি বুহাইয়া নামে পরিচিত ছিলেন। কাফেলা তাঁবু স্থাপনের পর বুহাইরা র্গীজা থেকে বের হয়ে কাফেলার লোকদের কাছে এলেন এবং তাদের মেহমানদারী করলেন। অথচ পাদ্রী বুহাইরা কখনো র্গীজা থেকে বের হতেন না। তিনি রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনে ফেললেন এবং তাঁর হাত ধরে বললেন, তিনি সাইয়েদুল আলামিন। আল্লাহ তায়ালা একে রহমাতুললিল আলামিন হিসাবে প্রেরণ করেছেন। আবু তালেব বুহাইরাকে জিজ্ঞসা করলেন, আপনি এটা কিভাবে বুঝলেন? তিনি বললেন? আপনারা এই এলাকায় আসার পর এই বালকের সম্মানে এখানকার সব গাছপালা এবং পাথর সেজদায় নত হয়েছে। এরা নবী ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করে না। তাছাড়া মোহরে নবুয়তের দ্বারা আমি তাঁকে চিনতে পেরেছি। তাঁর কাঁধের নীচে নরম হাড়ের পাশে একটি “সেব” ফুলের মতো মজুদ রয়েছে। আমরা তাঁর উল্লেখ আমরা আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থে দেখছি।
এরপর পাদ্রী বুহাইরা আবু তালেবকে বললেন, ওকে মক্কায় ফেরত পাঠিয়ে দিন। সিরিয়ায় নিবেন না। ইহুদীরা ওর ক্ষতি করতে পারে। এ পরামর্শ অনুযায়ী আবু তালেব কয়েকজন ভৃত্যের সঙ্গে প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রকে মক্কায় পাঠিয়ে দিলেন।
ফুজ্জারের যুদ্ধ
নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বয়স যখন পনের বছর, তখন ফুজ্জারের যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে একদিকে কোরায়শ এবং তাদের সাথে ছিলো বনু কেনানা অন্যদিকে ছিলো কয়সে আয়নাল। কোরায়শ এবং কেননার প্রধান ছিলো হারব ইবনে উমাইয়া। বয়স এবং বংশ মর্যাদার কারণে কোরায়শের কাছে সে সম্মানের পাত্র ছিলো। বনু কেনানাও তাকে সম্মান করতো। যুদ্ধের প্রথম প্রহরে কেনানার ওপর কয়েসের পাল্লা ভারি ছিলো। কিন্তু দুপুর হতে না হতেই কয়েসের ওপর কেনানার ওপর কয়েসের কেনানার পাল্লা ভারি গেলো। এই যুদ্ধে ফুজ্জারের যুদ্ধ বলা হয়। কারণ যেহেতু এতে হরম এবং হারাম মাস উভয়ের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছিলো। এই যুদ্ধ রসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও স্বয়ং করেছিলেন। তিনি তাঁর চাচাতে হাতে তীর তুলে দিতেন।