দুপুরে বেশ গরম ছিল, বিকেলে কিছুক্ষণ বৃষ্টি হল। বিন্দু ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘরের জানলা খোলা, বৃষ্টির ছাঁট এসে গায়ে লাগতেই বিন্দুর ঘুম ভেঙে গেল। উঠে এসে সে জানলা বন্ধ করল না। দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে লাগল। বাইরের বৃষ্টি। তার জামা ভিজে যাচ্ছে, কিন্তু এখানে তো বারণ করার কেউ নেই। মা কিংবা দিদি দেখতে পেলে তাকে বকুনি দিত। তাদের বাড়ি এখান থেকে কত দূরে? ওরা বিলুকে ধরে আনার পর বিল্টু একবারও কাদেনি। শুধু রাত্তিরবেলা তার খুব মন কেমন করে। রাতে সে মায়ের পাশে শুয়ে ঘুমোয়। মা তার চুলে বিলি কেটে দেন। এখানে এসে তার ছবি আঁকতেও ইচ্ছে করে। কিন্তু কাগজ নেই, রং-পেনসিল নেই, আঁকবে কী দিয়ে? একটা গোরুর বাছুর যখন দুধ খায়, সেই ছবিটা আঁকলে বেশ হত। বিল্টু তার একটা আঙুল দিয়ে হাওয়ার মধ্যে ছবিটা আঁকার চেষ্টা করে। হাওয়ার ছবি আর তো কেউ দেখতে পাবে না, বিল্টু নিজে শুধু দ্যাখে। এখানে একটা বইও নেই। আবোল তাবোল-এর সব কবিতা তার মুখস্ত। সেইগুলোই সে মনে মনে বলে বারবার।
ঘর থেকে সে বেরিয়ে এল বারান্দায়। বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। তবু কুয়োর ধারে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে আছে শিবু সর্দার। বসে বসেই ঘুমে ঢুলছে।
বিল্টু চেঁচিয়ে বলল, ও শিবুদাদা, তালাটা খুলে দাও!
শিবু শুনলই না!
বিন্দু আবার ডাকল, ও শিবুদাদা, শিবুদাদা। আমি আর তোমায় লটপট সিংহ বলব না। প্যাক প্যাক বলব না।
শিবুর ঘুমটা ভেঙে গিয়েছে, তবু সে সাড়া দিচ্ছে না। পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এল একজন লোক। এর নাম তিলকরাম। শিবু আর তিলকরাম, এই দুজনই এখানে থাকে সব সময়। এরা দুজন পাহারা দেয় বিকে। শিবু দিনের বেলা, আর তিলকরাম রাতে। তিলকরামের ক্ষমতা বেশি, তাকে শিবু ভয় পায়। তিলকরাম মাঝে মাঝে শিবুর মাথায় চাটি মারলেও সে কিছু বলে না! মাঝে মাঝে রাতের দিকে আসে অন্য লোকেরা।
তিলকরাম হেঁকে বলল, এ শিব্দু, শিব্দু! তালা খোল দে।
শিবু অমনি ধড়মড় করে ছুটে এসে তালা খুলে দিল।
তিলকরাম তার কাঁধে একটা চাপড় মেরে বলল, চায় কা টাইম হো গয়া। আর এ খোকাকে দুধ পিলাতে হবে না? দুধের বর্তন কঁহা?
শিবু দৌড়ে গিয়ে এক কোণের রান্নাঘর থেকে একটা বড় ঘটি নিয়ে এল।
তিলকরাম বলল, চলো খোকা, মেরা সাথ চলো।
বিল্টু বলল, আমি যদি এক দৌড়ে পালিয়ে যাই?
তিলকরাম মাথা নেড়ে বলল, না, তুমি পালাবে না। তুমি যদি পালাও, তবে হামাদের নোকরি চলে যাবে। মেরেও ফেলতে পারে।
বিল্টু জিজ্ঞেস করল, কে মারবে?
তিলকরাম বলল, বড়াবাবু। রাত মে যো আতা হ্যায়।
বিল্টু বলল, তুমি তাকে মারতে পারো না?
তিলকরাম বলল, আরেব্বাস! বড়াবাবুর বহুত পাওয়ার!
উঠোন পেরিয়ে ওরা হাঁটতে হাঁটতে গেল দেওয়ালের ভাঙা অংশটার দিকে।
একজন দুধওলা সেখানে একটা ধবধবে সাদা রঙের গোরুর দুধ দুইছে।
তিলকরাম ঘটিটা এগিয়ে দিয়ে বলল, ভরতি কর দেও!
বিল্টু আগে কখনও এমন সামনে থেকে গোরুর দুধ দোয়া দেখেনি। চ্যাঁ চোঁ শব্দ হচ্ছে, গোরুটা শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে। অবাক হয়ে দেখছে বিল্টু। একটুক্ষণের মধ্যেই ঘটিটা ভরে গেল।
তিলকরাম ঘটিটা হাতে নিয়ে বলল, আজ বড়াবাবু আ সকতা। চলো খোকা।
বিল্টু বলল, তোমাকে কতবার বলেছি, আমার নাম খোকা নয়। নীলধ্বজা বিন্দুও বলতে পারো।
তিলকরাম বলল, বন্টু? ঠিক হ্যায়?
বিল্টু বলল, বন্টুনয় বিন্দু। তুমি যদি আমায় বন্টু বলল, তা হলে আমিও তোমার নাম বলব, তেলাপোকা, আরশোলা!
তিলকরাম বলল, হামি তব তুমাকে বলব, পেরেক!
বিল্টু বলল, আমি তোমাকে বলব বকচ্ছপ! কিংবা হাঁসজারু? বলেই হেসে ফেলল বিন্দু।
তিলকরামও হাসল। তারপর বলল, তুমাকে হঁহা পর কিতনা দিন রাখনে হোগা তা কৌন জানে! তুমহার কোষ্টো হচ্ছে না?
বিল্টু বলল, না তো!
তিলকরাম বলল, বহুত লেড়কা দেখা, লেকিন তোমার মতন অউর নেহি দেখা।
বিল্টু বলল, তিলকদাদা, আমাকে জঙ্গলে বেড়াতে নিয়ে যাবে?
তিলকরাম বলল, আজ রাতে বড়াবাবু আনেসে কাল সকালে লৌট যাবে। অউর দো-তিনদিন নেহি আয়েগা। তব তুমাকে জঙ্গলমে নিয়ে যাব। ঠিক হ্যায়?
উঠোনে এসে সে শিবু সর্দারকে দুধের ঘটিটা দিয়ে বলল, খোকাকো দুধ পিলা দেও। ম্যায় গ্রামসে ঘুমকে আতা হ্যায়।
শিবু বলল, থোড়া ঠাহর যাও। এ লড়কা ইধার উধার কঁহা ভাগে গা। দুধ গরম করতে সে ঢুকে গেল রান্নাঘরে।
বিল্টু তিলকরামকে বলল, তুমি আবার আমাকে খোকা বললে? তা হলে আমি দুধ খাব না।
তিলকরাম বলল, আচ্ছা, আচ্ছা, তুমহার নাম বল্টু।
বিল্টু ধমক দিয়ে বলল, আবার বন্টু বলছ? তুমি একটা আরশোলা। তুমি গ্রামে যাবে, গ্রাম কত দূরে?
তিলকরাম বলল, ছে-সাত মাইল হোবে।
বিল্টু জিজ্ঞেস করল, তুমি হেঁটে হেঁটে যাবে?
তিলকরাম বলল, নেহি। সাইকেল হ্যায়। তুরন্ত ঘুমকে আনা হ্যায়।
বিল্টু জিজ্ঞেস করল, তুরন্ত মানে কী?
তিলকরাম বলল, তুরন্ত মানে, ইয়ে হ্যায়, মানে তাড়াতাড়ি।
বিল্টু বলল, আমাকে নিয়ে চলো, প্লিজ নিয়ে চলো। আমি সাইকেলের পিছনে চাপব। প্লিজ।
তিলকরাম বলল, পাগল! পিলিজ ফিলিজ মাত বোলো।
শিবু একবাটি দুধ নিয়ে আসতেই সে বলল, লেকা কো ঠিক সে দেখভাল কর না।
সে চলে গেল উঠোন পেরিয়ে।
শিবু বলল, দুধ পি লেও।
বি দুদিকে মাথা নেড়ে বলল, না। দুধ খাব না।
শিবু জিজ্ঞেস করল, কিউ খাবে না? বড়াবাবু আকেই পুছে গা, বাচ্চা কেয়া-কেয়া খায়া অউর পিয়া।
বিল্টু বলল, ও কেন আমাকে সাইকেলে নিয়ে গেল না? আমি তোমাদের এখানে আর কিছু খাব না।
শিবু বলল, ইয়ে কেয়া তুমহারা মামাবাড়ি হ্যায়? খাও!
সে দুধের বাটিটা বিল্টুর মুখের কাছে আনতেই বিন্দু হাত দিয়ে সেটা সরিয়ে দিতে গেল। তখনই পিছন থেকে কে যেন বলল, দুধটা খেয়ে নে বিল্টু। আমাদের এখনই যেতে হবে।
বিল্টু চমকে পিছন ফিরে তাকাল। কাকাবাবু!
শিবু সর্দারও দারুণ অবাক হয়ে বলল, ইয়ে কৌন হ্যায়?
সে কুয়োর গায়ে হেলান দিয়ে রাখা বন্দুকটা ধরতে যেতেই কাকাবাবু বাঁ হাতের ক্রাচটা দিয়ে সেটাকে ঠেলে দিলেন দূরে। তার ডান হাতের রিভলভারটা শিবুর কপালের দিকে তাক করা। কাকাবাবু কয়েক পা এগিয়ে এসে শিবুর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন। মুখ না ফিরিয়েই জিজ্ঞেস করলেন, তুই ঠিক আছিস তো রে বিল্টু?
বিল্টু বলল, হ্যা-আঁ-আঁ। এবার কী হবে? ডিসুম ডিসুম?
কাকাবাবু বললেন, দ্যাখ না কী হয়! তিনি শিবুকে বললেন, ওহে, তুমি কিন্তু একদম নড়াচড়া করবে না। তা হলে তোমার বেশি বিপদ হবে। এখন হাঁ করো তো, বেশ বড় করে।
কাকাবাবু কোটের এক পকেট থেকে একটা কালো রঙের উলের বল বের করলেন। তার দুপাশে ফিতে বাধা। সেই উলের বলটা তিনি শিবু সর্দারের মুখে ঢোকাতে যেতেই সে কাকাবাবুর ডান হাতে প্রচণ্ড জোরে একটা লাথি কল। কাকাবাবুর ডান হাত থেকে ছিটকে পড়ে গেল রিভলভারটা!
সে সেটা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করার আগেই কাকাবাবু তার একটা ক্রাচ তার গলায় চেপে ধরে বললেন, ইসকা ভিতর মে একঠো ছুরি হ্যায়। খুব ধার। তুমি একটু নড়াচড়া করলেই তোমার গলাটা কুচ করে কেটে যাবে।
বিল্টু দৌড়ে গিয়ে রিভলভারটা ধরতে যেতেই কাকাবাবু বলে উঠলেন, অ্যাই ধরিস না, ধরিস না। বন্দুক-পিস্তল ধরার তোর এখনও বয়স হয়নি। তুই বরং এক কাজ কর। এই উলের বলটা ওর মুখে ভরে দে তো! ক্ৰাচটা সরিয়ে এনে কাকাবাবু বললেন, তুমি আমার হাতে লাথি মেরেছ। এবার আমি উলটে তোমাকে মারতে পারি? আমি নিজে থেকে কাউকেই আগে মারি না। এই ক্রাচের এক ঘায়ে তোমার মাথা ফাটিয়ে দিতে পারি। তুমি তাই চাও, না হাঁ করবে!
এবার শিবু সর্দার হাঁ করতেই বিল্টু তার মুখে বলটা ভরে দিল। তারপর হাসতে লাগল হি হি করে।
কাকাবাবু বললেন, এবার ফিতে দুটো ওর মাথার পিছন দিকে নিয়ে গিয়ে বেঁধে ফেল খুব টাইট করে।
বাঁধতে বাঁধতে বিল্টু বকুনি দিয়ে বলল, অ্যাই, মাথা নাড়াচ্ছ কেন? গাট্টা খাবে!
কাকাবাবু সঙ্গের একটা ঝোলা ব্যাগ থেকে একটা লম্বা দড়ি বের করে বললেন, এবার ভালয়-ভালয় হাতদুটো সামনে এগিয়ে দাও তো! এখনও কিন্তু আমি তোমাকে মারিনি।
শিবু সর্দার হাতদুটো এগিয়ে দিল। কাকাবাবু শক্ত করে বেঁধে ফেললেন। আর-একটা দড়ি দিয়ে বাঁধলেন পা দুটো। তারপর রুমাল দিয়ে হাত মুছে বললেন, ব্যস, ওকে নিয়ে আর চিন্তা নেই। রিভলভারটা পকেটে ভরে নিয়ে কাকাবাবু জিজ্ঞেস করলেন, হারে বিন্দু, একটা লোক তো সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেল। এখন ভিতরে আর কেউ আছে?
বিল্টু বলল, না তো। আর কেউ থাকে না।
কাকাবাবু বললেন, তবে তো ভালই হল! তা হলে চল, আমরা বাড়ি যাই।
বিল্টু বলল, বাড়ি যাব? আমরা এই জঙ্গলে বেড়াতে যাব না?
কাকাবাবু হেসে ফেললেন। বিল্টুর কাধে চাপড় মেরে বললেন, এখন কি বেড়াতে যাওয়ার সময় রে! তোর মা-বাবা কত চিন্তা করছেন।
শিবু সর্দার মুখ দিয়ে গোঁ-গোঁ শব্দ করছে।
কাকাবাবু বললেন, তুমি এইভাবেই থাকো। তোমার লোকজন এসে বাঁধন খুলে দেবে। চল রে বিল্টু!
ক্রাচ বগলে নিয়ে হাঁটতে লাগলেন কাকাবাবু। তার আগে আগে বিন্দু চলল লাফাতে লাফাতে।
সে জিজ্ঞেস করল, কাকাবাবু, তুমি এই জায়গাটা কী করে চিনলে?
কাকাবাবু বললেন, গন্ধ শুঁকে এঁকে চলে এলাম। তোকে এখানে খেতেটেতে দিয়েছে তো ঠিকমতো?
বিল্টু বলল, শুধু দুধ আর দুধ! আমার ভাল্লাগে না।
কাকাবাবু বললেন, শুধু দুধ? আর কিছু দেয়নি?
বিল্টু বলল, রুটি, আর কিছু না।
কাকাবাবু বললেন, আমি দুপুর থেকে এখানে লুকিয়ে আছি। ভিতরে কজন লোক আছে, তা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। তারপর ভাবলাম, রাত হওয়ার আগেই একটা কিছু করতে হবে। বেশ সহজেই কাজটা মিটে গেল, কী বল!
বিল্টু এক জায়গায় থেমে গিয়ে বলল, কাকাবাবু, দ্যাখো দ্যাখো, কী সুন্দর একটা প্রজাপতি!
কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, খুব সুন্দর। কিন্তু আমাদের তো আর দেরি করলে চলবে না। বেশি অন্ধকার হওয়ার আগেই বড় রাস্তায় পড়তে হবে।
বিল্টু জিজ্ঞেস করল, বড় রাস্তায় কী আছে?
কাকাবাবু বললেন, ওখান দিয়ে অনেক গাড়ি যায়। আমরা একটা গাড়িতে উঠে পড়ব।
দেওয়ালের ভাঙা জায়গাটা দিয়ে ওরা বাইরে বেরিয়ে এল।
কিছুটা যেতেই দেখা গেল, জঙ্গলের দিক থেকে আসছে একজন দুধওলা। তার মাথায় শুকনো গাছের ডালের বোঝা।
সে ওদের দেখতে পেয়েই চেঁচিয়ে উঠল, অ্যাই, তুম লোগ কাঁহা যাতা হ্যায়? এই লেড়কা, রোকো, রোকো!
বিল্টু বলল, এই রে!
কাকাবাবু বললেন, একজন মোটে? ঠিক আছে, ম্যানেজ হয়ে যাবে।
দুধওলাটি মাথার কাঠের বোঝাটা মাটিতে ফেলে দিল। তারপর একটা ডাল তুলে ছুড়ে মারল কাকাবাবুর দিকে।
কাকাবাবু সঙ্গে সঙ্গে একটা ক্রাচ তুলে সেটাকে আটকালেন। লোকটি আরও একটি ডাল ছুড়লে সেটিও আটকালেন কাকাবাবু।
বিল্টু হাততালি দিয়ে বলল, কী মজা! কী মজা! ওই যে কাকাবাবু, আবার!
ঠিক যেন ক্রিকেট খেলা। কাকাবাবুর হাতে ব্যাটের বদলে ক্ৰাচ। আর লোকটি বলের বদলে গাছের ডাল ছুড়ছে। কয়েকবার আটকানোর পর কাকাবাবুর মনে হল, তার ক্রাচ ভেঙে যেতে পারে। এই খেলা বেশিক্ষণ চালানো যাবে না।
লোকটিকে ভয় দেখানোর জন্য তিনি কোটের পকেট থেকে রিভলভারটা বের করতে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তার ঘাড়ে ঠেকল একটা ঠান্ডা নল। একজন গম্ভীর গলায় বলল, রায়চৌধুরী, তোমার খেলা শেষ। একটুও নড়বে না। নড়লেই অটোমেটিক রাইফেলের গুলিতে তোমার মাথার ঘিলু বেরিয়ে যাবে।
কাকাবাবু মাথা না নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বিল্টু, আমার পিছন দিকে কজন লোক রে?
বিল্টু বলল, দুজন।
কাকাবাবু আবার জিজ্ঞেস করলেন, দুজনের হাতেই বন্দুক আছে?
বিল্টু বলল, হ্যাঁ আছে। লম্বা লম্বা।
কাকাবাবু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, তা হলে তো ধরা দিতেই হয়। বলো, এবার কী করতে হবে।
কালো চশমা আর টুপি পরা একজন লোক কাকাবাবুর পকেট থেকে রিভলভারটা বের করে নিল। তারপর তার রাইফেলের বাঁট দিয়ে খুব জোরে মারল কাকাবাবুর পেটে। কাকাবাবু অনেক কষ্ট সহ্য করতে পারেন। কিন্তু পেটের ওই আঘাতে তিনি উঃ করে উঠলেন।
বিল্টু চেঁচিয়ে উঠল, অ্যাই, অ্যাই, দুষ্টু লোক, তোমরা কাকাবাবুকে মারছ কেন?
কালো চশমা পরা লোকটা অন্য লোকটাকে বলল, বাচ্চাটার মুখ চেপে ধর, শক্ত করে ধরে রাখ। সে আবার মারতে লাগল কাকাবাবুর পেটে।
কয়েকবার আঘাতের পর কাকাবাবু আর সহ্য করতে পারলেন না। অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।
কালো চশমা পরা লোকটা মুখ বেঁকিয়ে বলল, আজ এই রায়চৌধুরীর সব লীলাখেলা শেষ। ওর মুন্ডুটা কেটে জলে ফেলে দেব আর বডিটা খাবে জঙ্গলের শিয়ালে।
কাকাবাবুর একটা পা ধরে ছ্যাচড়াতে ছ্যাচড়াতে সে নিয়ে চলল উঠোনটার দিকে।