হায় কৃষ্ণ প্রাণধন, বন্ধুরূপে নারায়ণ,
করুণা সাগর অবতার।
পাণ্ডবের প্রাণধন, সব হৈল অকারণ,
তোমা বিনা দিবসে আঁধার।।
করুণা নিদান হরি, বৃষ্ণিকুলে অবতরি,
দুষ্ট নাশি শিষ্টের পালন।
হলধর সহ লীলা, করিলে অনেক খেলা,
দেবকার্য্য করিলে সাধন।।
ধরণীর ভার হরি, ধর্ম্মের স্থাপন করি,
বসুমতী করিলে তোষণ।
অনাথ পাণ্ডবগণে, কৃপা কৈলে নিজগুণে,
বন্ধুরূপে করিলে পালন।।
আমি সখা প্রিয়তম, সারথ্য করিলে মম,
নাম হৈল অর্জ্জুন-সারথি।
ওহে প্রভু কৃপাসিন্ধু, পাণ্ডবগণের বন্ধ,
দ্বারকা-নিবাসী যদুপতি।।
পূর্ব্বে যে কহিলে তুমি এক আত্মা তুমি আমি,
কৃষ্ণ ধনঞ্জয়ে নাহি ভেদ।
পাণ্ডুপুত্র পঞ্চজনে, ভেদ নাহি মম সনে,
অজ শিব জানে চারি বেদ।।
নিজ চন্দ্রানন বাণী, বিস্মরিলে যদুমণি,
ভ্রাতৃগণে না কর স্মরণ।
চারি বেদে গায় তোমা, গুণের নাহিক সীমা,
কৃপাসিন্ধু ভক্তের জীবন।।
অনাথ দুর্ব্বল জনে, তুমি নাথ অনুক্ষণে,
বিষম সঙ্কটে কর পার।
যেই জন ভক্ত হয়, চরণে শরণ লয়ষ
তিন লোকে সম নয় তার।।
মোরা সব অল্পমতি, না করিনু ভক্তি স্তুতি,
না ভজিনু তোমার চরণ।
তোমা হেন ধন পেয়ে, পাপ চক্ষে নাহি চেয়ে,
বন্ধুরূপে কৈনু সম্ভাষণ।।
কৃপায় আপন গুণে, আমা ভাই পঞ্চজনে,
সঙ্কটে রাখিলে বারে বার।
অনাথ পাণ্ডবগণে, কি করিবে তোমা বিনে,
বন্ধুরূপে কে রাখিবে আর।।
রাজ্য ধন বন্ধু জায়া, ত্যজিয়া সকল মায়া,
নিজস্থানে করিলে গমন।
এমত করিবে যদি, মো সবারে গুণনিধি,
না কহিলে কিসের কারণ।।
মুষলপর্ব্বের কথা, বিচিত্র ভারত গাথা,
সর্ব্বদুঃখ শ্রবণে বিনাশ।
কমলাকান্তের সুত, হেতু সুজনের প্রীত,
বিরচিল কাশীরাম দাস।।