অগস্ত্য মুনি কর্ত্তৃক রাক্ষগণের জন্ম-বৃত্তান্ত বর্ণন
শ্রীরাম বলেন মুনি তুমি অন্তর্য্যামী।
সংসারের বিবরণ সব জান তুমি।।
রাবণের জন্মকথা কহ দেখি শুনি।
পরম আনন্দে তবে হয় মহামুনি।।
ব্রহ্ম অংশে জন্মে রাবণ সর্ব্বলোক জানে।
রাক্ষস হইল তবে কিসের কারণে।।
মুনি বলে রঘুনাথ শুন সাবধানে।
রাক্ষসের জন্মকথা কহি তবে স্থানে।।
যেমতে জন্মিল রাবণ শুন রঘুমণি।
সৃষ্টিকর্ত্তা ব্রহ্মা আগে সৃজিলেন প্রাণী।।
প্রাণীগণ বলে ব্রহ্মা করি নিবেদন।
কোন্ কার্য্যে আমা সবে করিলে সৃজন।।
ব্রহ্মা বলে যত প্রাণী করিব উৎপত্তি।
তোমরা করিবে রক্ষা প্রাণের শকতি।।
যে যে প্রাণী সৃজন করিব এ সংসারে।
তোমরা প্রধান হয়ে পালিবে সবারে।।
প্রাণীগণ বলে ব্রহ্মা সে বড় দুষ্কর।
না চাহি প্রভুত্ব মোরা সবার উপর।।
ব্রহ্মা শাপ দিল বেটা হও রে রাক্ষস।
হেতি নামে রাক্ষস সে হইল কর্কশ।।
বিদ্যুৎকেশরী নামে ব্রহ্মার কুমারী।
তারে বিভা করিল রাক্ষস দুরাচারী।।
মন্দর পর্ব্বতে দুইজনে কেলি করে।
জন্মিল সন্তান এক কত দিন পরে।।
পর্ব্বতের উপরেতে ফেলিয়া সন্তানে।
মনের আনন্দে কেলি করে দুইজনে।।
পিতা মাতার স্নেহ নাই সন্তান উপর।
কাতর হইয়া শিশু কান্দিল বিস্তর।।
অশ্রুজলে শ্রমজলে কলেবর ভাসে।
ক্ষুধাতে আকুল প্রাণ ঘন বহে শ্বাসে।।
বৃষভবাহনে যান পার্ব্বতী শঙ্কর।
শূন্য হৈতে দেখিতে পাইল গঙ্গাধর।।
শিব বলে পার্ব্বতী দেখহ অতি দূরে।
একাকী কান্দিছে শিশু পর্ব্বত উপরে।।
মহেশের দয়া হৈল সন্তান উপর।
প্রসন্ন হইয়া শিব তারে দিলা বর।।
শিব বলে শুন ওহে অনাথ সন্তান।
মম বরে পিতৃতুল্য হও বলবান।।
সর্ব্বশাস্ত্রে বিজ্ঞ হও সর্ব্বাঙ্গ সুন্দর।
আজ্ঞামাত্র হৈল শিশু বাপের সোসর।।
বিদ্যুৎকেশরী-পুত্র সুকেশ নাম ধরে।
মহাবলবান্ হৈল ধূর্জ্জটির বরে।।