ইহা কহিলেন যদি ধর্ম্মের নন্দন।
কৃপাবেশে কহিলেন মহা তপোধন।।
শুন যুধিষ্ঠির ধর্ম্মসুত নৃপমণি।
পূর্ব্বের বৃত্তান্ত এই অপূর্ব্ব- কাহিনী।।
যবে সত্যযুগ আসি করিল প্রবেশ।
বৈকুণ্ঠে ছিলেন প্রভু দেব হৃষীকেশ।।
দ্বাররক্ষা হেতু ছিল উভয় কিঙ্কর।
জ্যেষ্ঠ জয়, বিজয় কনিষ্ঠ সহোদর।।
একদিন দেখ রাজা দৈবের ঘটনে।
ব্রাহ্মণ যাইতেছিল কৃষ্ণ সম্ভাষণে।।
বেত্র দিয়া দ্বারে তাঁরে রাখে দুই জনে।
তবে ক্রোধেতে ক্ষিপ্ত হইয়া অপমানে।।
দ্বিজবর অভিশাপ দিল দুই জনে।
জন্ম লহ দোঁহে মর্ত্ত্যে আমার বচনে।।
বজ্রতুল্য দ্বিজবাক্য শুনি দুই জন।
দুঃখেতে চলিল যথা প্রভু নারায়ণ।।
কহিল শাপের কথা করিয়া বিশেষ।
কহিলেন শুনি তবে দেব হৃষীকেশ।।
আমা হৈতে শতগুণে শ্রেষ্ঠ দ্বিজবর।
হইল তাঁহার মুখে অলঙ্ঘ্য উত্তর।।
কাহার শকতি তাহা করিবে হেলন।
অবশ্য জন্মিবে ক্ষিতিমধ্যে দুই জন।।
জন্ম লহ দোঁহে মর্ত্ত্যে আমার বচনে।।
বজ্রতুল্য দ্বিজবাক্য শুনি দুই জন।
দুঃখেতে চলিল যথা প্রভু নারায়ণ।।
কহিল শাপের কথা করিয়া বিশেষ।
কহিলেন শুনি তবে দেব হৃষীকেশ।।
আমা হৈতে শতগুণে শ্রেষ্ঠ দ্বিজবর।
হইল তাঁহার মুখে অলঙ্ঘ্য উত্তর।।
কাহার শকতি তাহা করিবে হেলন।
অবশ্য জন্মিবে ক্ষিতিমধ্যে দুই জন।।
শুনিয়া নিষ্ঠুর কথা ঈশ্বরের মুখে।
জিজ্ঞাসা করিল দোঁহে অতিশয় দুঃখে।।
কর্ম্মদোষ দ্বিজবাক্য লঙ্ঘন না যায়।
কিরূপে শাপান্ত হবে, জন্মিব কোথায়।।
আজ্ঞা করি শীঘ্র পাই যাহাতে তোমায়।
কতকাল থাকিব ছাড়িয়া তব পায়।।
গোবিন্দ বলেন জন্ম লহ মর্ত্ত্যলোকে।
মোর মিত্রভাবে জন্ম লহ গিয়া যদি।
ভ্রমণ করিবে সপ্ত জনম অবধি।।
শত্রুরূপে হিংসা যদি করহ আমার।
গর্ভের যন্ত্রণা মাত্র, তিন জন্ম সার।।
চিন্তা না করিহ কিছু আমার হিংসনে।
আমিও জন্মিব গিয়া ভক্তের কারণে।।
শত্রুরূপে হিংসা যদি লহ তিন বারে।
শাপান্ত করিব আমি তিন অবতারে।।
এতেক প্রভুর মুখে শুনিয়া উত্তর।
মর্ত্ত্যেতে জন্মিল দোঁহে দুঃখিত অন্তর।।
মহাভারতের কথা মহাকাব্য ভাণ্ড।
দ্বৈপায়ন ব্যাস রচিত অষ্টাদশ কাণ্ড।।