পুলকিত চিত, বিধান রচিত,
মূলমন্ত্র উচ্চারণে।
ক্রমে নীলোৎপল, সহস্রেক দল,
সঁপে শঙ্করী-চরণে।।
করিলেন ছল, বুঝিতে সকল,
দেবী হর-মনোহরা।
হরিলেন আর, এক পদ্ম তাঁর,
মহেশ্বরী পরাৎপরা।।
ক্রমে পদ্ম সব, দিলেন রাঘব,
রাম জগৎ-গোঁসাই।
শেষেতে বিয়োগ, হৈল অত্র যোগ,
এক পদ্ম মিলে নাই।।
হইয়া বিস্মিত, চিত্ত চমকিত,
সঙ্কল্প ভঙ্গেতে ভয়।
হনুমানে কন, ব্রহ্ম-সনাতন,
শুন পবন-তনয়।।
সঙ্কল্প করিয়া, বিধান রচিয়া,
শতাষ্ট আছে সংখ্যায়।
এক পদ্ম তায়, পাওয়া নাহি যায়,
ঠেকিলাম ঘোর দায়।।
যাহ পুনর্ব্বার, এক পদ্ম আর,
আন গিয়া বাছাধন।
হনুমান কয়, শুন মহাশয়,
শতাষ্ট আছে গণন।।
শুন হে গোঁসাই, আর পদ্ম নাই,
দেবীদহে বনমালী।
হেন লয় চিতে, তোমারে ছলিতে,
পঙ্কজ হরিলা কালী।।
আমায় বিস্ময়, অন্যথা না হয়,
দেখেছি গণনা-ক্রমে।
নিশ্চয় তারিণী, হরিলা নলিনী,
না ভুলিও প্রভু ভ্রমে।।
পবন-নন্দন, কহিল যখন,
শুনিয়া বিস্ময় রাম।
আঁখি ছল ছল, বহে অশ্রুজল,
কান্দেন ত্রিলোক-ধাম।।
বুঝিলাম সার, কপালে আমার,
আছে যে কত যন্ত্রণা।
কৃত্তিবাস গায়, এ হেতু আমায়,
অভয়ার বিড়ম্বনা।।