পুরাতন নবাবী আমলের বাড়ি।
বাড়িটার গঠন-কৌশলের মধ্যেও সেই নবাব আমলের স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন পাওয়া যায় যেন। বহুদিনের সংস্কারের অভাবে বাড়িটা জীৰ্ণ হয়ে গেলেও, এর যা কাঠামো তাতে মনে হয় আরো ৬০-৭০ বৎসর অনায়াসেই এমনি দাঁড়িয়ে থাকবে। প্রায় চোদ্দ কাঠা জায়গার উপরে বাড়িটা। সামনে ও পিছনে যে জায়গা আছে তাও প্রায় বিঘাঘানেক তো হবেই। বাড়িটা দোতলা এবং সর্বসমেত তিনটি মহলে ভাগ করা যায়।
নবাব আমলে অধিকারী বংশ ধন, প্রতাপ, শৌর্য ও পদমর্যাদায় যখন জমজমাটি ছিল, এই রত্নমঞ্জিল হয়ত মানুষজনের কোলাহলে তখন গমগম করত।
এখানো রত্নমঞ্জিলের বহিরাংশে জীর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ হাতীশালা ঘোড়াশালা, নাটমন্দির, পাইক-পেয়াদাদের মহল একদা সেই অতীত শৌর্যেরই সাক্ষ্য দেয়।
বাইরের মহলেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল বিনয়।
চারিদিকে জঙ্গল ও আগাছা। প্রকাণ্ড নাটমন্দিরটার প্রশস্ত চত্বরের চারিদিকে সুউচ্চ বড় বড় থাম, শীর্ষে শীর্ষে কারুকার্য। সুউচ্চ খিলানের মাথায় কবুতর বাসা বেঁধেছে, নির্বিবাদে বংশবৃদ্ধি করছে।
মধ্যাহ্নশেষের নিস্তব্ধ নির্জনতায় কবুতরের কুজন চলেছে। মেঝেতে ধরেছে দীর্ঘ সর্পিল ফাটল।
শীতের সূর্য প্রায় অস্তগমনোন্মুখ। শেষ আলোর স্নান রশ্মি গম্বুজ-শীর্ষে শীর্ষে অস্ত পরশটুকু বুলিয়ে যাচ্ছে।
নাটমন্দিরের পাশ দিয়ে একটু সরু পায়ে-চলা পথ, দু’পাশে আগাছা জন্মে পথটাকে প্রায়। ঢেকে দেবার যোগাড় করেছে। সেই পথ ধরে বিনয় আরো পিছনে এগিয়ে যায়।
পথটা এসে শেষ হয়েছে একটা দিঘীর সামনে।
প্রশস্ত বাঁধানো রানা। কিন্তু তাতেও ফাটল ধরেছে, জন্মেছে আগাছা।
অতীতের ধ্বংসে জীর্ণ অবশেষ। ক্লান্ত বিনয় দিঘীর ভগ্ন রানার উপরেই বসে পড়ল।
দিঘীর চারপাশে অজস্র গাছপালা হুমড়ি খেয়ে যেন দিঘীর বুকের ওপরে পড়েছে, দিঘীর কালো জলে তারই ছায়া স্তুপ বেঁধে আছে।
দিঘীর নোংরা জল দেখলেই বোঝা যায় বহুদিন এদিকে মানুষের হাতের স্পর্শ পড়েনি অবহেলিত পরিত্যক্ত।
সর্বত্ৰ যেন অযত্ন ও অবহেলা।
অন্যমনস্কভাবে বিনয় কতক্ষণ ভগ্ন রানার উপরে বসে ছিল মনে নেই, হঠাৎ একটা অস্পষ্ট খসি খসি শব্দে চমকে পাশে তাকাল।
রানার ওপরে বিনয় যেখানে বসে ছিল তার প্রায় হাত দশেক তফাতে দিঘীর ঢালু পাড় ও ঘন জঙ্গলের সামনে প্রদোষের স্নান আলোয় দাঁড়িয়ে দীর্ঘকায় এক পুরুষ।
মাথায় বঁকড়া বঁকড়া চুল, মুখভর্তি দাড়ি-পরিধানে ধুতি, গায়ে একটা ধূসর রঙের চাদর।
বড় বড় দুটো চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি বিনয়ের প্রতি স্থিরনিবদ্ধ। চক্ষু তো নয়, যেন। অন্তর্ভেদীদুটো জ্বলন্ত পাথর।
লোকটার সঙ্গে চোখাচৌখি হতেই চক্ষের পলকে লোকটা পিছনের ঘন জঙ্গলের মধ্যে মিলিয়ে গেল। একটা দুঃস্বপ্ন যেন মিলিয়ে গেল।
বিনয় প্রথমটায় আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। ব্যাপারটা সত্যি না তার দেখবারও ভুল বুঝে উঠতে পারেনি। কিন্তু লোকটা পশ্চাতের ঘন জঙ্গলের মধ্যে চকিতে অন্তৰ্হিত হলেও তখনও সেখানকার গাছপালাগুলো দুলছিল।
গাছপালাগুলোর মধ্যে একটা আলোড়ন জাগিয়ে যে লোকটা অন্তৰ্হিত হয়েছে ক্ষণপূর্বে, দোদুল্যমান গাছপালাগুলোই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। স্বপ্ন নয়, দেখারও ভুল নয়।
বিনয় একবার ভাবলে এগিয়ে গিয়ে জায়গাটা অনুসন্ধান করে দেখে কিন্তু ঠিক সাহস হলো না, কারণ চারিদিকে তখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে।
একাকী এই অচেনা জায়গায় ঐ রকম একটা লোককে অনুসরণ করাটা মনে হল ঠিক বিবেচনার কাজ হবে না। বরং কাল সকালে কোন এক সময় দিনের আলোয় এসে ঐ জায়গাটা ভাল করে অনুসন্ধান করে দেখা যেতে পারে। এখন ফিরে যাওয়াই সমীচীন হবে।
বিদায় যে পথে এসেছিল সেই পথেই ফিরে চলল।
কিন্তু চকিতে দেখা ক্ষণপূর্বের সেই দাঁড়িগোফ-ভরা মুখখানা কেবলই মনের মধ্যে এসে উঁকি দিতে লাগল বারংবার যেন।
কে লোকটা?
এই নির্জন জঙ্গলাকীর্ণ দিঘীর ধারে কে লোকটা।
বিনয়কে দেখে হঠাৎ অমন করে অদৃশ্য হলই বা কেন? বিনয়কে হয় সে লক্ষ্য করছিল। আড়ালে থেকে, হঠাৎ চোখচোখি হয়ে গিয়েছে।
বিনয় পথ চলে। কিন্তু তার মনের মধ্যে অহেতুক একটা অসোয়াপ্তি তাকে যেন পীড়ন করতে থাকে।
মাঝের মহলের দোতলায় খান-দুই ঘর ওদের থাকবার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া হয়েছিল। এবং মাঝের মহলে যেতে হলে ‘কেয়ারটেকার’ মনোহরের এলাকা পার হয়ে যেতে হয়।
সিঁড়ির কাছেই মনোহরের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল বিনয়ের। মনোহর গোটা দুই হ্যারিকেন জ্বেলে উপর উঠছিলো।
বিনয়কে দেখে মনোহর প্রশ্ন করে, এই যে দাদাবাবু! কোথায় ছিলেন এতক্ষণ? বড়বাবু আপনাকে খুঁজছিলেন!
বড়বাবু, দিদিমণি এঁরা সব কোথায় মনোহর?
উপরের দালনে বসে চা খাচ্ছেন।
বিনয় মনোহরের আগে-আগেই অন্ধকারে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে গেল।
প্রকাণ্ড টানা বারান্দার একাংশে ছোট একটি বেতের টেবিলের দু’পাশে বসে সুজাতা ও বামদেব চা পান করছিলেন।
পাশেই আর একটা চেয়ার বোধ হয় বিনয়ের জন্যই খালি পড়ে ছিল। টেবিলের পাশেই একটা স্ট্যাণ্ডের উপরে একটি প্রজ্বলিত টেবিলল্যাম্প। জায়গাটায় একটা অস্পষ্ট আলোছায়া।
বিনয়ের পদশব্দে বামদেব ও সুজাতা দুজনেই এককসঙ্গে ফিরে তাকায়।
এই যে বিনয়, সারাদিন কোথায় ছিলে?
বিনয় খালি চেয়ারটার ওপরে গা ঢেলে দিয়ে বসতে বসতে বললে, আপনার রত্নমঞ্জিল সারভে করছিলাম মেসোমশাই।
সুজাতা কোন কথা না বলে ততক্ষণে বিনয়ের জন্য চায়ের কাপে চা ঢেলে চামচটা দিয়ে চিনি ও দুধ মেশাচ্ছিল। সে কেবল আড়চোখে বিনয়ের মুখের দিকে তাকাল।
বামদেব চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললেন, এখানকার বনজঙ্গলে শুনছি। নানা বিষধর সাপ আছে বিনয়। একটু সাবধানে চলাফেরা করো। বরং একা একা না ঘোরাফেরা করে মানোহরকে সঙ্গে নিও। এখানকার সব কিছু ও জানে।
মনোহর দুইহাতে দুটো জ্বলন্ত লণ্ঠন নিয়ে ততক্ষণে উপরে উঠে এসেছে।
বামদেবের কথাগুলো তার কানেও প্রবেশ করেছিল। সে বললে, হ্যাঁ দাদাবাবু, এখানে সাপের ভারি উপদ্রব।
বিনয় তৈরী চায়ের কাপটা হাত বাড়িয়ে তুলে নিয়ে গরম চায়ে একটা চুমুক দিয়ে আরামসূচক একটা শব্দ করে বললে, সাপের ভয় থাকুক। আর যাই থাকুক মেসোমশাই—
আপনার রত্নমঞ্জিলের উপরে কিন্তু ভারি একটা মায়া পড়ে গিয়েছে আমার।
বামদেব হাসতে হাসতে বললেন, কেন হে, এই পুরনো ভাঙা বাড়ির মধ্যে এমন কি পেলে?
আছে মেসোমশাই আছে, আমার মন বলছে আছে, নচেৎ–
বল কি বলছিলে!
নচেৎ ঐ ঝানু গুজরাটী ব্যবসাদার এই ভাঙা বাড়িটা কিনবার জন্য অমন করে হন্যে হয়ে আপনার পেছনে ছুটে বেড়াত না।
কি জানি বাবা, আমার তো মনে হচ্ছে মিথ্যে এ-বাড়িটা নিয়ে একটা সোরগোল করা হচ্ছে। জবাব দেন। বামদেব।
বেশ তাই যদি হবে, তাহলে ঐ চিঠিটারই বা কি অর্থ বলুন আর আপনার কলকাতার বাড়িতে আমন চোরের উপদ্ৰবই বা কেন ইদানীং হচ্ছিল?
বামদেব বললেন, চোরের উপদ্রবের চাইতেও ঐ চিঠিটাই গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে। বেশী।
কিন্তু গণ্ডগোল কি কেবল ঐ বেনামা চিঠিটাই সৃষ্টি করেছে মেসোমশাই, আপনার পূর্বপুরুষের সেই সোনার কঙ্কন!
তুমি কি সত্যিই মনে কর বিনয়, এই রাতত্বমঞ্জিলের সঙ্গে ঐ সোনার কঙ্কনের কোন যোগাযোগ আছে?
বিনয় এবারে হাসতে হাসতে জবাব দেয়, আমি কেন কিরীটীবাবুও তো সেই রকম সন্দেহ করছেন!
সুজাতা এবারে আলোচনার মাঝখানে বাধা দিল, কি হয়েছে তোমাদের বাবা বল তো? কেবল রত্নমঞ্জিল আর সুবর্ণ কঙ্কন! ঐ কথা ছাড়া কি তোমাদের আর কথা নেই?
বিনয় বুঝতে পারে সুজাতা চটেছে। তা চটবারই তো কথা। এখানে এসে পৌঁছনো অবধি সে রত্নমঞ্জিল নিয়েই ব্যস্ত সারাক্ষণ।
দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর যখন বের হচ্ছিল সুজাতা সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল, কোথায় যােচ্ছ বিনয়, বলেছিল সুজাতা।
যেখানেই যাই না কেন, কালোজিরে যাচ্ছে না!
নাকুর সঙ্গে যাচ্ছে কে! যেতে হয় একা যাব।
তাই যেও।
যাবই তো। একশবার যাব। মুখ ঘুরিয়ে বলেছিল সুজাতা।
একা একা মজাসে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াব, কোথাও কালোজিরেকে সঙ্গে নেবো না। বলেই বিনয় এগিয়ে যায়।—চললুম।
বিনয় বুঝতে পারে সেই দ্বিপ্রহরের জের এখন ফের শুরু হবে।
টেবিলের একপাশে ঐদিনকার সংবাদপত্রটা ছিল, সেটা হাতে করে বামদেব ঘরে চলে গেলেন।
বিনয় আর সুজাতা বসে রইল।
অন্য সময় হলে বিনয় এই সুযোগে সুজাতার অভিমান ভাঙাবার জন্য তৎপর হত, কিন্তু আজ তার মন ঐ মুহুর্তে অন্য চিন্তায় আচ্ছন্ন ছিল।
সে ভাবছিল দিঘীর ধারে ঘনায়মান বিকেলে আবছায়ায় দেখা সেই অদ্ভুত দাড়িগোঁফাওলা লোকটার কথাই। লোকটা কে? হঠাৎ তার সঙ্গে চোখাচোখি হওয়ায় আমন করে পালিয়েই বা গেল কেন?
ছট্টলাল বহরমপুরে পরের দিনই এসে পৌঁছয়। যে কাজের ভার নিয়ে সে বহরমপুরে এসেছে সে-সব কাজে চিরদিনই সে পোক্ত। কারণ গত দশ বছর ধরে ঐ ধরনের কাজের দ্বারাই সে জীবিকানির্বাহ করে আসছে।
প্রথম একটা দিন ছট্টুলাল রত্নমঞ্জিলের আশেপাশে ঘুরে ঘুরে বেড়াল। কিন্তু বাইরে থেকে রত্নমঞ্জিল সম্পর্কে কোন ধারণা করা সম্ভবপর হল না তার পক্ষে।
চট্ করে রত্নমঞ্জিলের মধ্যে ঢুকতেও সাহস হয় না।
দূর থেকে রত্নমঞ্জিলের ‘কেয়ারটেকার’ মনোহরের যণ্ডাগুণ্ডা চেহারা দেখেই বুঝতে পারে, লোকটা বিশেষ সুবিধের হবে না।
ছট্টুলাল তার আস্তানা নিয়েছিল স্টেশনের কাছে একটা হোটেল।
দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যার দিকে ঘুরতে ঘুরতে ছট্টুলাল রত্নমঞ্জিলের পশ্চাৎদিকে গিয়ে হাজির হল।
অন্ধকারে বাড়িটা একটাকালো ছায়ার স্তুপ যেন।
আচমকা কঁধের ওপরে কার মৃদু স্পর্শ পেয়ে চমকে ফিরে তাকাল ছট্টু।
আবছা আলোছায়ায় দীর্ঘকায় একটা মূর্তি ঠিক তার পশ্চাতে দাঁড়িয়ে।
লোকটার মুখভর্তি দাড়িগোঁফ।
কে তুই, এখানে কি চাস? গম্ভীর চাপাকণ্ঠে লোকটা প্রশ্ন করে।
লোকটার আচমকা আবির্ভাবে প্রথমে ছট্টু একটু হকচকিয়েই গিয়েছিল, কিন্তু মুহুর্তেই নিজেকে সে সামলে নেয়।
রুক্ষকণ্ঠে প্রতিবাদ জানায়, তোর তাতে দরকার? তুই কে শুনি?
সহসা লোকটা তার ডান হাতের লৌহকঠিন বাঁকানো শীর্ণ আঙুলগুলো দিয়ে ছট্টুর কাঁধটা একটু টিপে দিতেই নিজের অজ্ঞাতেই ছট্টু একটা যন্ত্রণা-কাতর শব্দ করে ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে আর তার বাকি থাকে না লোকটা দেহে প্রচুর শক্তি রাখে।
সোজা কথায় জবাব না দিস তো গলা টিপে শেষ করে দেবো।
এবার আর ছট্টু প্রতিবাদ জানাবার চেষ্ঠা করে না।
শক্ত ঠাঁই। এখানে চালাকি চলবে না বুঝতে পেরেছিল সে।
বল কাল থেকে এখানে কি মতলবে ঘোরাফেরা করছিস?
কি আবার মতলব! এমনিই দেখছিলাম বাড়িটা।
এমনি দেখছিলে চাদু! বেটা চালাকি করবার জয়গা পাওনি?
সত্যি বলছি দোস্ত—
এই থাম। দোস্ত! চোদ্দ পুরুষের দোস্ত আমার—খিঁচিয়ে ওঠে লোকটা।
শীর্ণ লোহার মত বাঁকানো ডান হাতের আঙুলগুলো দিয়ে লোকটা ছট্টুর ডান হাতের কজিটা চেপে ধরে, চল আমার সঙ্গে। সত্যি কথা বলবি তো ছেড়ে দেব–নইলে ছাড়ছি না।
টানতে টানতে অন্ধকারে বনজঙ্গলের মধ্যে দিয়ে লোকটা ছট্টুকে নিয়ে চলে। এতটুকু প্রতিবাদ করবারও সাহস পায় না ছট্টু! আট-দশ মিনিট প্রায় অন্ধকারে বনজঙ্গলের মধ্যে দিয়ে টানতে টানতে একটা ঘরের বদ্ধ দরজার সামনে এসে থামল।
দাঁড়া, পালাবার চেষ্টা করছিস কি মরবি!
ঘরের দরজায় তালা দেওয়া ছিল। লোকটা কোমর থেকে চাবি বের করে দরজার তালাটা খুললে।
ছট্টু এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে তখন।
ঘন অন্ধকার বনজঙ্গল, বিশেষ করে অপরিচিত জায়গা, ছুটে পালাবারও উপায় নেই।
ডান হাতের কজিটা ব্যথায় টনটন করছে। ঘরের এক কোণে একটা প্রদীপ জ্বলছে। লোকটা এবারে ফিরে দাঁড়িয়ে বললে, ভিতরে আয়।
অজগরের চোখের সামনে বন্য জন্তুর যে অবস্থা হয়, ছট্টুরও সেই অবস্থা। সুড়সুড়ি করে একান্ত বাধের মত এক পা এক পা করে ছট্টু ঘরের মধ্যে গিয়ে ঢুকল।
বোস।