০৮. পাথরে হেলান দিয়ে

পাথরে হেলান দিয়ে বসে আছে রিশান, তার ডান পাশে সানি গুটিসুটি মেরে বসেছে। তার হাতে এখন কোনো অস্ত্র নেই, সে শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করেছে যে রিশান সত্যিই একজন মানুষ এবং সে সম্ভবত সানিকে সত্যি সাহায্য করতে চায়। তাদের সামনে খানিকটা ফাঁকা জায়গায় দুটি হলোগ্রাফিক ছবিএকটিতে মহাকাশযান থেকে হান এবং বিটি; অন্যটিতে এই গ্রহে মানুষের এককালীন বসতি থেকে লি–রয়, নিডিয়া এবং স্কুন।

বাইরে ঝড়ের বেগ খুব বেড়েছে এবং মাঝে মাঝেই ছোটখাটো বিস্ফোরণের শব্দ হচ্ছে, তার মাঝে সবাই কোনোভাবে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। লি–রয় বলল, রিশান তুমি সত্যিই কোনোরকম সাহায্য চাও না? ইচ্ছে করলে আমরা মহাকাশযান থেকে একটা বিশেষ স্কাউটশিপের ব্যবস্থা করতে পারি–

কোনো প্রয়োজন নেই। রিশান মাথা নেড়ে বলল, আমার এখানকার গাইড সানি বলেছে এই ঝড় এক সময়ে থেমে যাবে তখন হেঁটে চলে যেতে পারব। তাছাড়া এখন বৃষ্টির মতো এসিড পড়ছে, কোনো স্কাউটশিপ পাঠানো মনে হয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

মহাকাশযান থেকে বিটি বলল, কখন যে তোমরা ভালোয় ভালোয় ফিরে আসবে এবং কখন যে আমরা এই পোড় গ্রহ থেকে বের হতে পারব কে জানে!

লি–রয় হেসে বলল, অধৈর্য হোয়ো না বিটি! প্রথমে আমরা এই গ্রহটাকে যেটুকু বিপজ্জনক ভেবেছিলাম এখন আর সেরকম বিপজ্জনক মনে হচ্ছে না।

কারণটা কী?

গত কয়েক ঘণ্টা নিডিয়া এই গ্রহের প্রাণী সম্পর্কে সত্যিকারের খানিকটা গবেষণা করেছে। সেটা করার পর মনে হচ্ছে অবস্থা খুব খারাপ নয়। লি–রয় নিডিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, নিডিয়া তুমি বলবে?

বলছি। নিডিয়া হাতের ছোট ক্রিস্টাল ডিস্কটাতে চোখ বুলিয়ে বলল, মানুষ এই গ্রহের হিসেবে প্রায় চল্লিশ বছর আগে এই গ্রহে বসতি করেছে। গ্রহটি বসতি স্থাপনের উপযোগী নয় তবু মানুষ এখানে বসতি করেছিল। কারণ এই গ্রহে এক ধরনের প্রাণের বিকাশ হয়েছিল। পৃথিবীর তুলনায় এই প্রাণ অত্যন্ত তুচ্ছ–এককোষী নিম্নস্তরের প্রাণ, বড়জোর এক ধরনের জীবাণুর মতো, কিন্তু একটি প্রাণ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন এই নিম্নস্তরের প্রাণ নিয়ে গবেষণা করেছে, তার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং এক সময়ে আবিষ্কার করেছে এটি সম্পর্কে আর জানার কিছু বাকি নেই। তখন তারা পৃথিবীতে ফিরে যাবার প্রস্তুতি নিল, কিন্তু তাদের খুব দুর্ভাগ্য–ঠিক তখন তাদের একটা দুর্ঘটনা ঘটে, একজন বিজ্ঞানী এই এককোষী জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে কিছু করার আগেই মারা গেল।

এই গ্রহের এই মন খারাপ করা পরিবেশে সেটা তাদের জন্যে খুব বড় এটা আঘাতের মতো ছিল এবং কয়েকজন বিজ্ঞানী দাবি করেছে তারা মাঝে মাঝে তাদের মৃত সহকর্মীকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে

রিশান বাধা দিয়ে বলল, কী বললে তুমি? তাদের মৃত সহকর্মীকে দেখেছে?

হ্যাঁ, কিন্তু সেটা মানসিক চাপ থেকে সৃষ্টি এক ধরনের দৃষ্টিবিভ্রম, নানা ধরনের অভিযানে এ রকম ব্যাপার ঘটেছে বলে শোনা গেছে। যাই হোক, বিজ্ঞানীরা যখন পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন

রিশান আবার বাধা দিয়ে বলল, কী রকম ছিল তাদের সহকর্মী? স্পষ্ট না অস্পষ্ট?

নিডিয়া একটু অবাক হয়ে রিশানের দিকে তাকিয়ে বলল, সেটা পরিষ্কারভাবে লিপিবদ্ধ নেই–যেটুকু আছে তাতে মনে হয় অস্পষ্ট ছায়ার মতো–

কতক্ষণ দেখেছে তারা?

খুব অল্প সময়। নিডিয়া ঘুরে রিশানের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি এই ব্যাপারটি নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছ কেন?

না, এমনি। বলে যাও যা বলছিলে।

হ্যাঁ, বিজ্ঞানীরা যখন ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন তারা আবিষ্কার করে তাদের মহাকাশযানটি কারা যেন নষ্ট করে গেছে। সেটি এমনভাবে নষ্ট করা হয়েছে যেটি শুধুমাত্র আরেকজন মানুষ করতে পারে প্রথমে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিল তাদের মাঝে কেউ একজন করেছে কিন্তু সেটি কিছুতেই বিশ্বাসযোগ্য একটা ব্যাপার নয়।

বিজ্ঞানীরা সেটা নিয়ে অনেক মাথা ঘামিয়েছে, শেষ পর্যন্ত তারা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছে যে এই গ্রহে নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী আছে। সেই প্রাণীকে তারা খুঁজে বের

করার অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু কিছুতেই খুঁজে পায় নি। এদিকে একজন একজন করে সবাই সেই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

রিশান বাধা দিয়ে বলল, না সবাই না। সানি বেঁচে আছে।

হ্যাঁ, সানি ছাড়া সবাই মারা গেছে। সানির ভিতরে নিশ্চয়ই সেই জীবাণুর প্রতিষেধক কিছু একটা রয়ে গেছে যেটা আর কারো নেই। বিজ্ঞানীরা সেটা জানত না–আমরা জানি।

লি–রয় বলল, এর মাঝে কিছু দুর্বোধ্য ব্যাপার রয়েছে। যেমন–এটা মোটামুটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে এখানে কোনো এক ধরনের বুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে কিন্তু কিছুতেই সেই প্রাণীকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। এই প্রাণী মানুষের মহাকাশযানকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে কিন্তু কখনো সোজাসুজি কোনো মানুষের ক্ষতি করে নি। এই গ্রহের মানুষেরা মারা গেছে এই জীবাণু দ্বারা–যেটার নাম নি। কাজেই বলা যায় আমাদের সেই বুদ্ধিমান প্রাণী থেকে নিজেদের রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই, আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে গ্রুনি থেকে। এই জীবাণু থেকে!

নিডিয়া বলল, সেটা খুব সহজ। আমরা যতক্ষণ এই গ্রহে থাকব, মহাকাশচারীর পোশাক পরে থাকতে হবে। এর ভিতরের পরিবেশ পুরোপুরি পরিশুদ্ধ। বাইরে থেকে কোনো জীবাণু এর ভিতরে আসতে পারবে না।

মহাকাশযান থেকে বিটি বলল, শুনে খুশি হলাম কিন্তু তবুও তোমাদের বেশিক্ষণ এই গ্রহে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। ঝড়টা কমে যাওয়ামাত্র এখানে চলে আস।

হ্যাঁ চলে আসব।

লি–রয় বলল, এই গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীগুলোর কাজকর্মগুলো যদি খুব ভালোভাবে লক্ষ করা যায় তাহলে একটা বিচিত্র জিনিস চোখে পড়ে।

রিশান জিজ্ঞেস করল, কী?

বুদ্ধিমান প্রাণীটির বুদ্ধিমত্তা ধীরে ধীরে বেড়েছে। প্রথমে সে ছোটখাটো কৌশল করেছে, যতই দিন যাচ্ছে তার কৌশল বেড়েছে। দেখে মনে হয় প্রায় মানুষের মতো–যেন আস্তে আস্তে শিখছে।

নিডিয়া বলল, এই গ্রহে দ্বিতীয় আরেকটা ব্যাপার রয়েছে। কোনো বিচিত্র গ্রহে যখন মহাকাশচারীরা নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে সবসময় তারা কিছু কিছু বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। অবাস্তব জিনিসপত্র দেখে–অপ্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা হয়–এর সবই এক ধরনের বিভ্রম। কিন্তু এই গ্রহে যারা ছিল তাদের অপ্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা তুলনামূলকভাবে বেশি। সত্যি কথা সেই অপ্রাকৃতিক ঘটনাগুলো পড়লে মনে হয় সত্যি সত্যি বুঝি সেগুলো ঘটেছে।

রিশান স্থির চোখে বলল, কী রকম ঘটনা?

নিডিয়া ইতস্তত করে বলল, আমি এখন ঠিক সেগুলো বর্ণনা করতে চাই না, মনের মাঝে এক ধরনের চাপের সৃষ্টি করতে পারে।

তবুও শুনি।

যেমন একজন বিজ্ঞানীর অভিজ্ঞতা লেখা আছে, সে এই গ্রহে একা একা হাঁটছিল। হঠাৎ–নিডিয়া কথা বলতে গিয়ে থেমে যায়।

হঠাৎ কী?

হঠাৎ সে ঘুটঘুটে অন্ধকারে আবছা আবছা দেখতে পায় তার দিকে কী যেন এগিয়ে আসছে, কাছাকাছি এলে দেখতে পেল একটা হাত

হাত?

হ্যাঁ, কনুই পর্যন্ত একটা হাত–তাকে নাকি জাপটে ধরার চেষ্টা করছিল, সেই বিজ্ঞানী ভয়ঙ্কর ভয় পেয়ে ছুটে কোনোভাবে পালিয়ে এসেছে। কয়েকদিন পর সে মারা গেল। নিডিয়া নিশ্বাস ফেলে বলল, খুব মন খারাপ করা গল্প।

হা। রিশান মাথা নেড়ে বলল, ঠিকই বলেছ

খানিকক্ষণ সবাই চুপ করে থাকে। নিডিয়া আবার কী একটা বলার চেষ্টা করছিল, ঠিক তখন ষুন বলল, এতক্ষণ নিডিয়া যেটা বলেছে তার সাথে পৃথিবীর নির্দেশের কিন্তু কোনো মতবিরোধ নেই।

বিশান সোজা হয়ে বলল, কী বলতে চাইছ তুমি?

আমি বলছি যে পৃথিবী থেকে আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে গ্রহটিকে জীবাণুমুক্ত করতে। এই জীবাণু বুদ্ধিমান প্রাণী নয়, কাজেই একে ধ্বংস করতে আমাদের কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়

রিশান বাধা দিয়ে বলল, কিন্তু যে–কোনো জীবিত প্রাণী অন্য জীবিত প্রাণীর ওপর নির্ভর করে। পৃথিবীতে গাছপালার কোনো বুদ্ধি নেই, এখন আমরা যদি সব গাছ ধ্বংস করে দিই তাহলে পৃথিবীতে কি অন্যান্য বুদ্ধিমান প্রাণী বেঁচে থাকতে পারবে?

ষুন একটু রেগে উঠে বলল, গাছ আর জীবাণু এক ব্যাপার নয়। তাছাড়া এই ব্যাপারে আমাদের মাথা ঘামানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এখানকার সমস্ত তথ্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের সেই সিদ্ধান্ত মানতে হবে। যদি আমাদের ভালো নাও লাগে মানতে হবে। তারা হয়তো কিছু একটা জানে যেটা আমরা জানি না।

সেটা কী?

ষুন মাথা নাড়ল, আমি জানি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি তাদের সিদ্ধান্ত মানুষের মঙ্গলের জন্যে আমাদের সেটা মানতেই হবে। এই গ্রহ ছেড়ে যাবার আগে আমাদের গ্রুনি জীবাণুকে ধ্বংস করে যেতে হবে।

রিশান লি–রয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি কী বল লি–রয়?

লি–রয় একটু ইতস্তত করে বলল, ফুন সত্যি কথাই বলেছে রিশান। ব্যাপারটা আমরা আরো ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখব, কিন্তু মনে হয় ফিরে যাবার আগে আমাদের গ্রুনি জীবাণুকে ধ্বংস করে যেতে হবে। তুমি যদি কোনোভাবে প্রমাণ করতে পার এখানকার অদৃশ্য ভূতুড়ে বুদ্ধিমান প্রাণী কোনোভাবে গুনির ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে তাহলে অবিশ্যি ভিন্ন কথা।

মহাকাশযান থেকে বিটি বাধা দিয়ে বলল, আমার মনে হয় এটা নিয়ে এখন তর্ক বিতর্ক করে লাভ নেই। সবাই নিরাপদে মহাকাশযানে ফিরে আস, তারপর দেখা যাবে। তাছাড়া রিশানকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে, তার মনে হয় বিশ্রাম নেয়া দরকার।

হ্যাঁ, ঠিকই বলেছ। লি–রয় গলা উঁচিয়ে বলল, সবাই এখন বিশ্রাম নাও। ঝড়টা কমে আসা মাত্র মহাকাশযানে ফিরে আসতে হবে। শুভরাত্রি।

টুক করে একটা শব্দ হয়ে হলোগ্রাফিক দৃশ্য দুটি অদৃশ্য হয়ে গেল। রিশান একটা নিশ্বাস ফেলে সানির দিকে তাকাল। সানি জ্বলজ্বলে চোখে রিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। রিশান নরম গলায় বলল, ঘুমাও সানি, একটু বিশ্রাম নাও।

সানি খানিকক্ষণ তীব্র চোখে রিশানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তোমরা এই গ্রহের কিছু জান না।

রিশান অবাক হয়ে বলল, কী জানি না?

কিছু জান না

কেন এই কথা বলছ?

সানি কোনো কথা না বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল। রিশান খানিকক্ষণ অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থেকে আবার জিজ্ঞেস করল, সানি, তুমি কেন এই কথা বলছ?

সানি কোনো কথা বলল না। রিশান আবার জিজ্ঞেস করল, তুমি আমাকে বলতে চাও?

সানি মাথা নাড়ল। রিশান একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, ঠিক আছে তাহলে এখন তুমি ঘুমাও

রিশান সানির পাশে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকে।

মহাকাশচারীর পোশাকে ঘুমানো খুব সহজ নয়, শুয়ে থেকে খানিকটা বিশ্রাম নেয়া হয়, তার বেশি কিছু নয়। দীর্ঘ সময় শুয়ে থেকে যখন রিশানের চোখে ঘুম নেমে আসে, হঠাৎ সে অবাক হয়ে দেখতে পায় গুহার মাঝামাঝি একটা নারীমূর্তি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে– তার দিকে তাকিয়ে আছে স্থির দৃষ্টিতে।

আতঙ্কে চিৎকার করতে গিয়ে অনেক কষ্টে সে নিজেকে সামলে নিল, সে কি সত্যি দেখছে নাকি এটি তার দৃষ্টিবিভ্রম? চোখ বন্ধ করার আগে সে বুকের কাছে তার স্বয়ংক্রিয় ছবি তোলার যন্ত্রটি স্পর্শ করে, তারপর শক্ত করে দুই চোখ বন্ধ করে ফেলল।

দীর্ঘ সময় পর সে যখন চোখ খুলে তাকাল তখন গুহায় কিছু নেই। রিশান ঘুরে সানির দিকে তাকাল–একটা পাথরে হেলান দিয়ে সে ঘুমোচ্ছ। তার মুখে এক ধরনের বিস্ময়কর প্রশান্তি, একটি শিশু এ রকম একটি গ্রহে একা একা বেঁচে থাকার পরও তার মুখে কেমন করে এ রকম একটি প্রশান্তির চিহ্ন ফুটে উঠতে পারে কে জানে। রিশান আবার ভালো করে তাকাল, শিশুটির মুখে শুধু প্রশান্তি নয় আরো একটা কিছু আছে যেটা সে প্রথমে ঠিক ধরতে পারে না। খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বুঝতে পারল, শুধু প্রশান্তি নয় শিশুটির চেহারায় এক ধরনের নিষ্পাপ সারল্য আছে যেটা সে বহুকাল দেখে নি। রিশান এক ধরনের মুগ্ধ বিস্ময় নিয়ে শিশুটির মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

রিশান দীর্ঘ সময় চুপচাপ শুয়ে রইল, ঘুরেফিরে তার শুধু নারীমূর্তিটির কথা মনে হতে থাকে। কেন সে বার বার একটি নারীমূর্তি দেখছে? এটি কি দৃষ্টিবিভ্রম নাকি সত্যি?