৮০তম অধ্যায়
সহদেবের যুদ্ধবাদে সাত্যকির সমর্থন
সহদেব কহিলেন, “হে অরতিনিপাতন মধুসূদন! মহারাজ যুধিষ্ঠিরের মতে সন্ধি করা কর্ত্তব্য, ইহা স্থির হইলেও, যাহাতে যুদ্ধ হয়, আপনি তদ্রূপ কাৰ্য্য করিবেন। যদ্যপি কৌরবগণ আমাদিগের সহিত সন্ধিস্থাপনে মত প্ৰকাশ করে, তাহা হইলেও আপনি তাহাদের সহিত যুদ্ধসংঘটন করিবেন। যখন সভামধ্যে পাঞ্চালীর তাদৃশ অপমান সন্দর্শন করিয়াছি, তখন দুৰ্য্যোধনের সহিত যুদ্ধ না করিয়া কিরূপে ক্ৰোধসংবরণ করিব? যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জ্জুন ও নকুল ধর্ম্মানুরোধে যুদ্ধে পরাঙ্মুখ হইতেছেন; কিন্তু আমি ধর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া দুরাত্মা দুৰ্য্যোধনের সহিত সংগ্রাম করিতে নিতান্ত অভিলাষী হইয়াছি।”
অনন্তর সাত্যকি কহিলেন, “হে পুরুষোত্তম! মহামতি সহদেব যথার্থ কহিয়াছেন; দুরাত্মা দুৰ্য্যোধনকে সংহার করিলেই আমার ক্রোধশান্তি হইবে। আপনি কি জানেন না, পাণ্ডবগণকে চীরাজিন [ছিন্নবাস-মৃগচর্ম্ম] পরিধানপূর্ব্বক অরণ্যে বাস করিতে দেখিয়া আপনিও ক্রুদ্ধ হইয়াছিলেন? অতএব রণদুৰ্ম্মদ [সমরে উন্মত্ত—অপরিভবনীয়] মহাবীর মাদ্রীনন্দন যাহা কহিলেন, সমুদয় যোদ্ধগণ তাহাতেই সম্মত আছেন।”
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! মহামতি সাত্যকি এই কথা কহিবামাত্র চতুর্দ্দিক হইতে যোদ্ধৃগণের তুমুল সিংহনাদ সমুত্থিত হইল। যুদ্ধাভিলাষী বীরপুরুষগণ হৃষ্টচিত্তে সাত্যকির বাক্য অভিনন্দন করিয়া বারংবার তাঁহাকে সাধুবাদ প্ৰদান করিতে লাগিলেন।