সত্যিই, সারাদিনে আর কোনও খাবার দিল না।
বেচারি জোজো খিদের জ্বালায় কাহিল। উপুড় হয়ে শুয়ে আছে আর মাঝে মাঝে উঃ-উঃ করছে। কাকাবাবু বসে আছেন এক দিকের দেওয়ালে ঠেসান দিয়ে। চোখ বোজা।
সন্তু দাঁড়িয়ে আছে জানলার কাছে। গান গাইছে গুনগুন করে।
জোজো উঠে গিয়ে বাথরুমের কলে জল খেয়ে এল। এই পাঁচবার।
সন্তু মুখ ফিরিয়ে বলল, অত জল খাচ্ছিস কেন? জল খেলে খিদে যায় না!
জোজো বলল, আমি মোটেই খিদে গ্রাহ্য করি না। এত গরমে যা ঘাম হচ্ছে, জল না খেলে শরীরে জল কমে যাবে।
সন্তু বলল, সারাক্ষণ চুপচাপ থাকার কোনও মানে হয় না। আয় জোজো, কবিতা মুখস্থ বলার কম্পিটিশন দিবি?
জোজো মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, ধ্যাত! এখন কবিতা টবিতা কিচ্ছু ভাল লাগছে না।
কাকাবাবু চোখ বুজেই বললেন, খিদের রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, তাই না? পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি! চাঁদ উঠেছে নাকি রে সন্তু?
সন্তু বলল, আকাশ মেঘলা। কাকাবাবু জিজ্ঞেস করলেন, আকাশে কি টক-টক গন্ধ?
সন্তু বলল, মনে হচ্ছে এক্ষুনি বৃষ্টি নামবে। তখন সব মিষ্টি হয়ে যাবে।
বৃষ্টি নামল না। একটু পরেই মীচে একটা কুকুরের ডাক শোনা গেল। খুব জোরালো হিংস্র মতন ডাক।
কাকাবাবু নড়েচড়ে বসে বললেন, এইবার মনে হচ্ছে একটা কিছু শুরু হবে। কস্তুরী বোধ হয় মন ঠিক করে ফেলেছে।
জোজো বলল, তার মানে?
কাকাবাবু বললেন, ওই কুন্তী নামের নায়িকাটি একবার বলেছিল, কুকুর দিয়ে আমার মাংস ছিঁড়ে খাওয়াবে। তারপর বলল, আগুনে পোড়াবে। আবার বলল, না খাইয়ে মারবে। এখন বোধ হয় ঠিক করেছে, কুকুর দিয়েই খাওয়াবে।
জোজো অবাক হয়ে কাকাবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
সন্তু বলল, এই সবকিছুর জন্য ওই ভাস্কো দা গামা নামে লোকটাই দায়ী। সেই সময় আমাদের দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। এই পাঁচশো বছর পরেও ওর ভূতের জন্য আমাদের এই জ্বালাতন সহ্য করতে হচ্ছে। কাকাবাবু, তুমি ওকে নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে গেলে কেন?
কাকাবাবু বললেন, তখন কি জানি, তার ফল এই হবে? খুব বুদ্ধি খাটিয়ে এরা
আমাদের কালিকটে টেনে এনেছে!
জোজো বলল, এর চেয়ে চেরাপুঞ্জি বেড়াতে গেলে কত ভাল হত?
দড়াম করে দরজা খুলে গেল। এবারে পাঁচজন লোক। প্রসাদ রিভলভার দোলাতে-দোলাতে বলল, তোমাদের হাত বাঁধা হবে। কেউ নড়াচড়া করলেই মাথা ফাটবে!
কাকাবাবু বললেন, অনেকক্ষণ আগেই তো হাত বাঁধার কথা ছিল। ভুলে গিয়েছিলে বুঝি?
প্রসাদ বলল, শাট আপ!
কাকাবাবু বললেন, ওই এক কথা শুনতে-শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেল। শোনো, আমার হাত বাঁধার দরকার নেই। আমি পালাব না। হাত বাঁধা থাকলে আমি ক্রাচ নিয়ে হাঁটব কী করে?
দুজন লোক দুদিক থেকে এসে কাকাবাবুর হাত চেপে ধরল। তাদের একজন বলল, তোমার আর ক্রাচ দরকার হবে না।
কাকাবাবু সন্তুদের দিকে তাকিয়ে বললেন, এরা দেখছি ভারী অভদ্র। সারাদিন খেতে দেয় না, খোঁড়া মানুষকে ক্রাচ নিতে দেয় না!
ওদের তিনজনকে ঠেলতে-ঠেলতে নিয়ে যাওয়া হল ঘরের বাইরে। ক্রাচ ছাড়া কাকাবাবুকে এক পায়ে লাফাতে হচ্ছে।
গেটের বাইরে একটা বড় ভ্যান গাড়ি। বাগানে একটা মস্ত বড় কুকুরের চেন ধরে দাঁড়িয়ে আছে কস্তুরী, কুকুরটা ডেকেই চলেছে।
কস্তুরী বলল, এইবার, রায়চৌধুরী? আমার কুকুরটা দুদিন না খেয়ে আছে। আমি চেন ছেড়ে দিলেই তোমার মাংস খুবলে খুবলে খাবে।
কাকাবাবু বললেন, তাই নাকি! অত সোজা? রাজা রায়চৌধুরী একটা সামান্য কুকুরের কামড় খেয়ে মরবার জন্য জন্মেছে? নাঃ, তা বোধ হয় ঠিক নয়। কুকুরটাকে ছেড়ে দাও তো, দেখি কী হয়?
বাড়ির ভেতর থেকে মোহন সিং এই সময় বেরিয়ে এসে বলল, না, না, কস্তুরী, কুকুরটা ধরে রাখো। রায়চৌধুরীকে…
কস্তুরী তবু হি-হি করে হেসে হাতের চেন খুলে দিল। কুকুরটা ধারালো দাঁত বার করে ঘাউ-ঘাউ করে ডেকে তেড়ে গেল কাকাবাবুর দিকে।
জোজো ভয়ে চোখ বুজে ফেলল।
কাকাবাবু কুকুরটার চোখের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থেকে আস্তে-আস্তে শিস দিতে লাগলেন। খুব মিষ্টি সুর।
কুকুরটা কাকাবাবুর খুব কাছে এসে থেমে গেল। এখনও জোরে-জোরে ডাকছে, কিন্তু কাকাবাবুর চোখ থেকে চোখ সরাতে পারছে না। কাকাবাবু শিস দিয়েই চলেছেন।
ক্রমে কুকুরটার লাফালাফি কমে এল, হঠাৎ ডাক বন্ধ হয়ে গেল। শুয়ে পড়ল। কাকাবাবুর পায়ের কাছে।
কাকাবাবু বললেন, কুকুর খুব ভাল প্রাণী। শুধু-শুধু মানুষকে কামড়াবে কেন? কই হে কস্তুরী, তোমার আরও কুকুর থাকে তো নিয়ে এসো!
কস্তুরী চোখ গোল গোল করে বলল, এই লোকটা জাদু জানে!
কাকাবাবু বললেন, আমি আরও অনেক কিছু জানি। এখনও আমাকে চিনতে তোমাদের ঢের বাকি আছে।
মোহন সিং কাছে এসে বলল, ওরকম ভেলকি আমি অনেক দেখেছি। যাও রায়চৌধুরী, ওই গাড়িতে গিয়ে ওঠো!
কাকাবাবু বললেন, আমার ক্রাচদুটো এনে দিতে বলো!
মোহন সিং ধমক দিয়ে বলল, ক্রাচ-ফ্রাচ পাবে না। ওঠো গাড়িতে।
কাকাবাবু আরও জোরে ধমক দিয়ে বললেন, আগে আমার ক্রাচ আনো, নইলে আমি কিছুতেই গাড়িতে উঠব না।
সন্তু-জোজোর দিকে তাকিয়ে বললেন, তোরাও উঠবি না।
মোহন সিং বলল, ছেলেমানুষি কোরো না রায়চৌধুরী, তোমার দিকে তিনটে রিভলভার তাক করা আছে। এক্ষুনি ছুঁড়ে দিতে পারি।
কাকাবাবু বললেন, চালাও গুলি!
মোহন সিং নিজের নিজের রিভলভার তুলে কাকাবাবুর কপালের দিকে। তাক করল। কিন্তু সঙ্গে-সঙ্গে গুলি চালাল না। মুহূর্তের পর মুহূর্ত কেটে যেতে লাগল।
একটু পরেই সে অন্য কিছু ভেবে একজনকে বলল, এই, ওর ক্রাচদুটো নিয়ে আয়!
একজন দৌড়ে গিয়ে ক্রাচ আনার পর সবাইকে গাড়িতে তোলা হল। মোহন সিং আর কস্তুরী উঠল না।
গাড়িটা চলতে শুরু করার পর জোজো বলল, সন্তু, সত্যি করে বল তো, কুকুরটা যখন কাকাবাবুর দিকে তেড়ে এল, তুই ভয় পাসনি?
সন্তু বলল, তা একটু ভয় পেয়েছিলাম ঠিকই। তবে আমি রেডি ছিলাম। কুকুরটা কাকাবাবুকে কামড়াবার জন্য লাফ দিলেই আমি লাথি কষাতাম ওর পেটে!
জোজো জিজ্ঞেস করল, কাকাবাবু, আপনি বুঝি মন্ত্র পড়ে কুকুরটাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন?
কাকাবাবু বললেন, না, মন্ত্র-টন্ত্র তো আমি জানি না। অন্য একটা উপায় আছে। লক্ষ করোনি, কুকুরটা আমার চোখ থেকে চোখ সরাতে পারছিল না? আর ওই যে শিস দিচ্ছিলাম, ওটা শুনলেই ওদের ঘুম পায়।
জোজো বলল, আপনি মোহন সিংকে কী করে বললেন গুলি চালাতে? যদি সত্যিই গুলি চালিয়ে দিত? ওরা যেরকম নিষ্ঠুর লোক!
কাকাবাবু বললেন, আমি জানতুম, ও গুলি চালাবে না। ওর আগের কথাটা লক্ষ করোনি? ও কস্তুরীকে কুকুরটা ছাড়তে বারণ করছিল। তার মানে, আমাকে এখন মারতে চায় না, ওর অন্য মতলব আছে।
জোজো বলল, আমাদের এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছে!
দরজার ধারে দুজন বন্দুকধারী পাহারাদার বসে আছে। তাদের দিকে তাকিয়ে কাকাবাবু বললেন, এদের তো জিজ্ঞেস করলেই বলবে শাট আপ। ওরা কিছু বলতে জানে না। দেখাই যাক, কোথায় নিয়ে যায়!
গাড়িটা চলছে তো চলছেই। প্রায় ঘণ্টাচারেক বাদে থামল এক জায়গায়। সেখানে নামতে হল।
ঘুটঘুটে অন্ধকার রাত। টিপিটিপি বৃষ্টি পড়ছে। ছায়ামূর্তির মতন কয়েকজন লোক সেখানে দাঁড়িয়ে। তারা কাকাবাবুদের হাঁটিয়ে নিয়ে চলল। গাড়িটা ফিরে গেল।
অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। একটা লোক মাঝে-মাঝে টর্চ জ্বেলে পথ দেখাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, চারপাশে নিবিড় জঙ্গল। আগের লোকগুলো কাকাবাবুর ক্রাচদুটো ছুড়ে দিয়ে গেছে, কিন্তু কাকাবাবুর হাত বাঁধা বলে তা ব্যবহার করতে পারছেন না। লাফিয়ে লাফিয়ে যেতে তাঁর খুবই অসুবিধে হচ্ছে। একবার হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতেই সেই টর্চধারী কাছে এসে কাকাবাবুকে দেখল। তারপর তাঁর হাতের বাঁধন খুলে দিল।
কাকাবাবু বললেন, থ্যাঙ্ক ইউ।
প্রায় আধঘণ্টা হাঁটার পর একটা ফাঁকা জায়গায় সবাই থামল। সেখান থেকেও। খানিকটা দূরে এক জায়গায় কয়েকটা মশাল জ্বলছে, মনে হয় প্রায় কুড়ি-পঁচিশজন লোক গোল হয়ে বসে আছে।
একটা মশাল তুলে এনে কাকাবাবুদের দিকে এগিয়ে এল দুজন লোক।
কাছে আসতে দেখা গেল, তাদের একজনের চেহারা মোহন সিংয়ের মতনই লম্বা-চওড়া। কিন্তু সে মোহন সিং নয়, তার মুখোনা বাঘের মতন, মোটা জুলপি নেমে এসেছে প্রায় চিবুক পর্যন্ত, মোটা গোঁফ মিশে গেছে দুপাশের জুলপিতে। কপালে লম্বা-লম্বা তিনখানা চন্দনের দাগ। টকটকে লাল রঙের একটা আলখাল্লা পরে আছে।
লোকটি কাকাবাবুদের দিকে কয়েকবার চোখ বুলিয়ে দেখল।
কাকাবাবু ইংরিজিতে বললেন, শুভ সন্ধ্যা। আমার নাম রাজা রায়চৌধুরী। আপনার নাম জানতে পারি?
লোকটি তার কোনও উত্তর না দিয়ে পাশের একজনকে কী একটা ভাষায় যেন কিছু নির্দেশ দিল। তারপর পায়ের আওয়াজে মাটি কাঁপিয়ে ফিরে গেল আগের জায়গায়।
অন্য একজন লোক সন্তু আর জোজোর হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে তিনজনকেই নিয়ে গেল কাছাকাছি একটা কুঁড়েঘরে। ঘরের বেড়া গাছের ডালপাতা দিয়ে তৈরি, মেঝেতে খড় পাতা। একটা হ্যারিকেনও রয়েছে।
একটু পরেই আরও দুজন লোক এসে একগোছা রুটি, একটা ডেকচি ভর্তি গরম মুরগির মাংস রেখে গেল। সঙ্গে এক জাগ জল। মাংস থেকে এখনও ধোঁয়া বেরোচ্ছে।
জোজো বলল, এরা আবার কারা? এত খাতির?
সন্তু বলল, যারাই হোক, খুব খিদে পেয়েছে। আয়, আগে খেয়ে নিই।
কাকাবাবু বললেন, মনে হচ্ছে, এরা একটা অন্য দল। যে ভাষায় কথা বলল, খুব সম্ভবত সেটা তেলুগু। এরা বেশ ভদ্র বলতে হবে। দ্যাখ, হাত বাঁধেনি, ভাল খাবার দিয়েছে। দরজাটাও খোলা। খোলা মানে কী, এ ঘরের দেখছি দরজাই। নেই!
জোজো বলল, জঙ্গলের ডাকাত!
কাকাবাবু খানিকটা রুটি ছিঁড়ে নিয়ে খেতে-খেতে বললেন, কাপালিকও হতে পারে। হয়তো আমাদের নরবলি দেবে। শুনেছি কোথাও কোথাও এখনও নরবলি হয়। বলি দেওয়ার আগে আমাদের ভাল করে খাইয়ে নিচ্ছে।
জোজো বলল, কাকাবাবু, আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন? আমি কি অতই ছেলেমানুষ?
কাকাবাবু বললেন, না, না, ভয় দেখাচ্ছি না। ওই লোকটি লাল রঙের আলখাল্লা পরে আছে কিনা, তাই কাপালিক বলে মনে হল।
সন্তু তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে নিয়ে হাত ধুয়ে ফেলল। তারপর দরজার খোলা জায়গাটার কাছে গিয়ে উঁকি মারল বাইরে।
ঘরটার দরজা বন্ধ করার ব্যবস্থা নেই। বাইরে কোনও পাহারাদারও নেই।
দূরে যেখানে মশালগুলো জ্বলছে, সেখানে এখনও বসে আছে অনেক লোক। মৃদু হল্লা শুনে মনে হয়, ওরা খাওয়াদাওয়া করছে।
জোজো সন্তুর পাশে এসে বাইরেটা দেখে নিয়ে বলল, এখান থেকে পালানো তো সোজা।
সন্তু বলল, নিশ্চয়ই কাছাকাছি কেউ আড়াল থেকে আমাদের ওপর নজর রাখছে।
জোজো বলল, আমরা যদি চট করে জঙ্গলের মধ্যে সটকে পড়ি, তা হলে আমাদের আর ধরতে পারবে?
সন্তু জিজ্ঞেস করল, একটা গন্ধ পাচ্ছিস? জোজো জিজ্ঞেস করল, কীসের গন্ধ?
সন্তু বলল, ঘোড়া-ঘোড়া গন্ধ। আমি দুএকবার ফররফ-র-র করে ঘোড়ার নিশ্বাস ফেলারও শব্দ শুনেছি। এদের ঘোড়া আছে। ঘোড়া ছুটিয়ে আমাদের
অনায়াসে ধরে ফেলবে।
জোজো বলল, আমি ঘোড়ার চেয়েও জোরে ছুটতে পারি ইচ্ছে করলে, কিন্তু মুশকিল হচ্ছে কাকাবাবু তো দৌড়োতে পারবেন না?
কাকাবাবু বললেন, যদি ঘরের দরজা খোলা থাকে, আর কাছাকাছি কোনও পাহারাদার না থাকে, তা হলে সেখান থেকে কক্ষনও পালাবার চেষ্টা করতে নেই। এরা তো বোকা নয়। নিশ্চয়ই কোনও ফাঁদ পাতা আছে। পালাতে গেলে আরও বিপদ হবে।
জোজো তবু ঘর ছেড়ে দু-একবার বাইরে গিয়ে দাঁড়াল। চারদিকে তাকিয়েও কিছু দেখতে পেল না।
সন্তুকে সে বলল, তবু তো খোলা হাওয়ায় খানিকটা নিশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে। এতক্ষণে বেশ স্বাধীন স্বাধীন মনে হচ্ছে।
কাছাকাছি কীসের একটা খসখস শব্দ হতেই সে তড়াক করে এক লাফ দিয়ে ঢুকে এল ঘরের মধ্যে।
কাকাবাবু বললেন, ওরা পাহারা না দিলেও আমাদের কিন্তু পালা করে রাত জেগে পাহারা দিতে হবে।
জোজো জিজ্ঞেস করল, কেন?
কাকাবাবু বললেন, যদি রাত্তিরবেলা ওদের কেউ এসে কিছু করতে চায়? সেজন্য সাবধান থাকা দরকার। জন্তু-জানোয়ারও আসতে পারে। সাপ আসতে পারে। এই গরমের সময় খুব সাপ বেরোয়। তোমরা এখন ঘুমিয়ে নাও, আমি জাগছি। পরে এক সময় তোমাদের একজনকে ডেকে দেব।
জোজো বলল, না, না, শেষ রাত্তিরে জাগতে আমার খুব কষ্ট হয়। আমি প্রথমে জাগছি। আপনারা শুয়ে পড়ুন।
সন্তু আর কাকাবাবু শুয়ে পড়লেন।
জোজো বলল, একখানা গল্পের বই থাকলে ভাল হত। এরা বোধ হয় বইটই পড়ে না!
কাকাবাবু বললেন, তুমিই মনে মনে গল্প বানাও না!
আধঘণ্টা ঘুমিয়েই চোখ মেললেন কাকাবাবু। জোজো এর মধ্যেই বসে বসে ঘুমে ঢুলছে। কাকাবাবু উঠে এসে আস্তে আস্তে তাকে শুইয়ে দিলেন। তারপর নিজেই জেগে কাটিয়ে দিলেন সারারাত।