০৭. মানুষের বিস্মিত হবার সীমা

মানুষের বিস্মিত হবারও একটা সীমা আছে।

সীমা অতিক্রম করবার পর সে আর কোনো কিছুতেই বিস্মিত হয় না। আমার বেলায়ও তাই হয়েছে। বিস্মিত হবার ক্ষমতা অতিক্রম করেছি। চোখের সামনে যা দেখছি, তাতে আর অবাক হচ্ছি না। আমার জীবন এখন দুটো ভাগে ভাগ হয়ে আছে নিদ্রা এবং জাগরণ। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকছি, আবার জেগে উঠছি। জাগছি বিশেষ বিশেষ পরিবেশে। অকল্পনীয় সব দৃশ্য দেখছি, কিন্তু এখন আর অবাক হচ্ছি না।

এই মুহূর্তে আমার জাগরণের কাল চলছে। আমি এখন আছি একটা ছোট্ট কাঠের ঘরে। পুরনো ধরনের ঘর। পাহাড়ি অঞ্চলে অনেক আগের পৃথিবীর মানুষরা যে রকম ঘর বানাত অবিকল সে রকম লগ কেবিন। একটি জ্বলন্ত ফায়ার-প্লেস আছে। বড় বড় কাঠের গুঁড়ি ফায়ার-প্লেসে পুড়ছে। ঘরে পোড়া কাঠের ঝাঁঝালো গন্ধ। একটিমাত্র কাচের জানালা। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। বাইরের অঞ্চলটি কোনো পার্বত্য অঞ্চল নয়। সমভূমি। দিগন্তবিস্তৃত বরফ ঢাকা মাঠ। আকাশ ধোঁয়াটে। প্রচুর তুষারপাত হচ্ছে। তুষারঝড় শুরু হবার আগের অবস্থা।

ফায়ার-প্লেসের সামনে একটি রকিং চেয়ারে বসে আছে ইনে। তার মুখ হাসি-হাসি। মনে হচ্ছে তার আনন্দের সীমা নেই। ইনো আমাকে দেখে চেয়ার দোলন বন্ধ করে রহস্যময় গলায় বলল, পরিবেশটা কেমন লাগছে বলুন তো? চমৎকার না?

আমি কিছু বললাম না। ইনো হালকা গলায় বলল, আপনি মনে হচ্ছে। মোটেই অবাক হচ্ছেন না। আপনার কাছে সব কিছুই মনে হয় বেশ স্বাভাবিক লাগছে।

কথার পিঠে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। তবু বললাম, আপনি বেঁচে আছে দেখে আনন্দ লাগছে। দুর্ঘটনার পর এই প্রথম সঙ্গীদের কোনো এক জনের সঙ্গে দেখা হল।

ইনো বলল, আপনাকে দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে না আপনি আমাকে পেয়ে আনন্দে আটখানা হয়েছেন। কেমন কঠিন মুখ। বসুন আমার পাশে, গল্প করি। কে জানে এক্ষুণি হয়ত সব অদৃশ্য হয়ে যাবে। বলতে বলতে সে শব্দ করে হাসল। আমি ইনোর পাশে বেতের নিচু চেয়ারটায় বসলাম। ফায়ার-প্লেসের আগুনের আঁচ এখন একটু বেশি। সরে বসলেই হয়, কিন্তু সরে বসতে ইচ্ছে করছে না। মাঝে মাঝে নিজেকে কষ্ট দিতেই বেশি ভালো লাগে। ইনো আবার দোল খেতে শুরু করছে। মাথার দুপাশ থেকে দুটি লম্বা বেণী দুলছে। ইনোর মাথায় কখনো বেণী দেখি নি। সে এখানে চুল বেঁধে বেণী করেছে তাও মনে হয় না। তার গায়ের পোশাক, সাজসজ্জা–সবই অন্য কেউ করে দিচ্ছে। ইনো কি ব্যাপারটা লক্ষ করছে? তার ভাবভঙ্গি দেখে তা মনে হয় না। চোখ আধবেঁজা করে সে ক্রমাগত দোল খেয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থাতেই সে নরম গলায় বলল, খুব ছোটবেলায় আমি একটা বই পড়েছিলাম। বইটার নাম হলুদ আকাশ। সেই বইয়ের নায়িকা একা একা একটা বাড়িতে থাকত। ফায়ার-প্লেসের সামনে রকিং চেয়ারে বসে দোল খেত। আমি তখন থেকেই একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।

কী স্বপ্ন?

যেন আমি হলুদ আকাশ বইটির নায়িকা। নির্জন প্রান্তরের একটি লগ কেবিনে আমি আছি। ফায়ার-প্লেসে গগনে আগুন। বাইরে তুষারঝড় হচ্ছে। প্রচণ্ড দুৰ্যোগ। ঝড়ের গৰ্জনে কান পাতা যাচ্ছে না। অথচ ঘরের ভেতর শান্তিময় একটা পরিবেশ। এখন যে রকম দেখছেন অবিকল সে রকম। এরা আমার স্বপ্নের কথা জানতে পেরে এ রকম চমৎকার একটা পরিবেশ তৈরি করেছে।

এরা মানে কারা?

তা তো বলতে পারব না। যারা আমাদের বাঁচিয়ে তুলেছে, তারা। খুবই উন্নত কোনো প্রাণী! মহাশক্তিধর কেউ।

তাদের সঙ্গে কি আপনার কোনো কথা হয়েছে?

না। তবে তারা আমার মনের সব কথাই জানে এবং ভালোভাবেই জানে, নয়তো এরকম চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে পারত না। আমি যা যা চেয়েছি সবই এখানে আছে।

আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনার কল্পনায় যা যা ছিল সবই এখানে পেয়েছেন।

হ্যাঁ, পেয়েছি।

আপনি কি আমাকেও চেয়েছিলেন?

তার মানে?

এই ঘর তৈরি হয়েছে আপনার কল্পনাকে ভিত্তি করে। যদি তাই হয় তাহলে আমার উপস্থিতি ব্যাখ্যা করার উপায় কী? উপায় একটিই ধরে নিতে হবে যে, আপনার কল্পনায় আমিও ছিলাম।

ইনো চেয়ার দোলানো বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল। তারপর প্রায় বরফশীতল গলায় বল, আমার কল্পনায় আপনি ছিলেন না। আমি একা একা এ রকম একটি ঘরে থাকার কথাই ভাবতাম। এটা আমার কিশোরী বয়সের কল্পনা। এক জন কিশোরীর কল্পনার সঙ্গে হয়তো আপনার পরিচয় নেই। কিশোরীর কল্পনা সাধারণত নিঃসঙ্গ হয়। একজন কিশোরী কখনো কল্পনা করে না যে, এস একজন পুরুষের সঙ্গে একটি নির্জন ঘরে রাত্রি যাপন করছে।

আমি লক্ষ করলাম ইনো বেশ রেগে গেছে। তার গলার স্বর কঠিন। মুখে রক্ত চলে এসেছে। এই মেয়ে মনে হচ্ছে খুব অল্পতেই অপমানিত বোধ করে। আমাদের এখন যে অবস্থা তাতে এত সহজে অপমানিত বোধ করার কথা নয়। আমি বললাম আপনি আমার কথা ভাবেন নি, খুব ভালো কথা। রেগে যাচ্ছেন কেন?

ইনো আগের মত ঠাণ্ডা গলায় বলল, শুরুতে আপনার কথা আমি ভাবি নি। কিন্তু পরে ভেবেছি। ভেবেছি বলেই এরা আপনাকে এখানে এনেছে।

কেন ভেবেছেন জানতে পারি?

না, জানতে পারেন না।

আমি হেসে ফেললাম। মেয়েটি কিশোরীদের মতো আচরণ করছে। অকারণে রাগছে। আমি বললাম, আপনি কি অনেক দিন ধরেই এখানে আছেন?

হ্যাঁ, অনেক দিন। তবে ঘরটা সব সময় এক রকম থাকে না। একেক সময় একেক রকম হয়। এরা আমার কল্পনা নিয়ে খেলা করে। মূল ব্যাপারটা ঠিক রেখে একেক সময় একেক রকম করে পরিবেশ তৈরি করে। চমৎকার ব্যাপার!

আপনার মনে হয় বেশ মজা লাগছে।

লাগারই তো কথা। যেখানে মরতে বসেছিলাম, সেখানে দিব্যি বেঁচে আছি। যারা আমাদের বাঁচিয়েছে, তাদের খুব খারাপ প্রাণী বলেও আমার কাছে মনে হচ্ছে না। আমাদের মোটামুটি সুখেই রেখেছে। আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতেও রাখবে।

ইনো বেশ শব্দ করে হাসল। তার সঙ্গে এর আগে এক বার মাত্র আমার কথা হয়েছে। অল্প কিছু সময় কথা বলে এক জন সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। মানুষ অত্যন্ত রহস্যময় প্রাণী, তাকে বুঝতে হলে দীর্ঘদিন তার পাশাপাশি থাকতে হয়। ইনোর পাশাপাশি ধাকার মতো সুযোগ আমার হয় নি। তবু আমার মনে হল এই ইনো ঠিক আগেকার ইনো নয়। সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তন তার মধ্যে হয়েছে, যা আমি ধরতে পারছি না। তারা নানান রকম পরিবেশ তৈরি করেছে। পরিবেশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। যদি তাই হয় তাহলে মানুষ নিয়েও কি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে না? হয়তো একেক বার একেক ধরনের ইনো তৈরি করছে। নষ্ট করে ফেলছে, আবার তৈরি করছে।

আমি হালকা গলায় বললাম, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, এরা আমাদের তৈরি করেছে। আপনি নিজে এক জন জীববিজ্ঞানী। জীববিজ্ঞানী হিসেবে আপনি বলুন, তৈরি করার কাজটিতে তারা কেমন সফল?

আমি আপনার কথা বুঝতে পারছি না।

আপনাকে এরা নতুন করে তৈরি করেছে। কারণ ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর আপনি এবং আমাকে সবাই ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। তাই নয় কি?

হ্যাঁ, তাই।

যদি তাই হয়ে থাকে, তবে আমাদের আবার তৈরি করার মতো জটিল কাজটি এরা চমৎকার ভাবে করেছে। তবু আমার মনে হচ্ছে আমরা ঠিক আগের মতো নই। আপনার কি তা মনে হয় না?

ইনো হেসে ফেলে বলল, আগে হচ্ছিল না, এখন হচ্ছে। আপনার বকবকানি শুনে মনে হচ্ছে। আপনার এ রকম বকবকানি স্বভাব আগে ছিল। না।

ইনো খিলখিল করে হেসে উঠল। সেই হাসি আর থামতেই চায় না। হাসতে হাসতে তার চোখে পানি এসে গেল। সেই পানি সে মুছল না। চমৎকার ছবি। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে। আমি মুগ্ধ বিস্ময়ে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। ইনো বলল, এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

আমি বললাম, আপনাকে কি একটা প্রশ্ন করতে পারি?

অবশ্যই পারেন। তবে প্রশ্নের উত্তর দেব কি দেব না তা আমার ইচ্ছা। কী প্রশ্ন?

কিশোরী বয়সে আপনি একটি উপন্যাস পড়েছিলেন। যে উপন্যাসের নায়িকা এ রকম একটা লগ কেবিনে একা একা থাকত, তাই না?

হ্যাঁ।

সেও কি মাঝে মাঝে খুব হাসত? হাসতে হাসতে তার চোখে পানি এসে যেত কি?

হ্যাঁ। কেন জিজ্ঞেস করছেন?

আপনিও অবিকল সে রকম রেছেন। আপনার মানসিকতা ঐ মেয়েটির মতো হয়ে গেছে। অর্থাৎ এরা আপনাকে বদলে ফেলেছে।

তাতে অসুবিধা কী?

কোনো অসুবিধা নেই। তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, এরা আমাদের নিয়ে খেলছে। এক জন শিশুকে খানিকটা কাদা দিলে শিশুটি কী করে? একেক সময় একেক রকম খেলনা বানায়। কোনোটাই তার পছন্দ হয় না। ভাঙে এবং তৈরি করে।

এরা শিশু নয়।

না, তা নিশ্চয়ই নয়। এরা অতি উন্নত কোনো প্রাণী। তবে উন্নত প্রাণীর মধ্যেও শিশুসুলভ কিছু থাকে।

তাতে অসুবিধা কী? আপনি ভুলে যাচ্ছেন কেন, আমরা যে বেঁচে আছি তা সম্ভব হয়েছে এদের জন্যেই।

সত্যি কি আমরা বেঁচে আছি?

তার মানে?

আপনি এক জন জীববিজ্ঞানী, আমরা বেঁচে আছি কিনা তা একমাত্র আপনার পক্ষে বলা সম্ভব। বেঁচে থাকার একটি শর্ত হচ্ছে খাদ্য গ্রহণ। আপনি কখনো খাদ্য গ্রহণ করেছেন বলে কি আপনার মনে পড়ে?

ইনো জবাব দিল না। তার ভ্রূ কুঞ্চিত হল। আমি বললাম, আমার তো মনে হয় চারপাশে যা দেখছি সবই মায়া, এক ধরনের বিভ্রম।

এ রকম মনে হবার কারণ কী?

আপনি রকিং-চেয়ারে বসে দোল খাচ্ছেন, তাই না? আপনার গায়ে কী পোশাক?

বিশেষ কোনো পোশাক নয়। সাধারণ স্কার্ট।

কিন্তু আমি আপনার গায়ে কিছু দেখছি না। আমি দেখছি অত্যন্ত রূপবতী এক জন তরুণী নগ্ন গায়ে রকিং-চেয়ারে দোল খাচ্ছে।

ইনো হকচকিয়ে গেল। আমি বললাম, এরা এইসব ছবি আমাদের মস্তিষ্কে তৈরি করছে। আমার তো মনে হয় আমরা দুজন পাশাপাশি নেই। হয়ত ওদের ল্যাবরেটরির এক কোণায় আপনার মস্তিষ্ক পড়ে আছে। অন্য প্রান্তে আমারটা। ওরা আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোন নিয়ে খেলা করছে।

ইনো চাপা গলায় বলল, আপনি কি সত্যি সত্যি আমার গায়ে কোনো কাপড় দেখতে পাচ্ছেন না?

না।

আমার তো মনে হয় আপনি সত্যি কথা বলছেন না। আমাকে ধাঁধায় ফেলে দেবার জন্যে বানিয়ে বানিয়ে বলছেন।

আমি যে সত্যি কথা বলছি তা এক্ষুনি প্রমাণ করতে পারি।

প্রমাণ করুন।

আপনার শরীরের এক জায়গায় লাল রঙের এক বর্গ সেন্টিমিটার আয়তনের একটা জন্মদাগ আছে। জায়গাটা হচ্ছে।

থাক আর বলতে হবে না। প্লিজ আপনি এখন আর আমার দিকে তাকাবেন না। অন্য দিকে তাকিয়ে থাকুন।

আপনার দিকে তাকালেও কোনো ক্ষতি নেই। কারণ আমরা যা দেখছি সবই মায়া বিভ্রম। কোনোটাই সত্যি নয়।

সত্যি হোক আর না হোক, আপনি আমার দিকে তাকাবেন না।

আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম। ফায়ার-প্লেসের আগুন নিভে আসছে। কাঠের বড় বড় গুড়ি পুড়ে শেষ হয়েছে। শীত শীত লাগছে। বাইরে তুষারঝড়ের মাতামাতি। দমকা হাওয়ায় জানালা কেঁপে কেঁপে উঠছে। ইনোর রকিং-চেয়ার থেকে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ আর শোনা যাচ্ছে না। অর্থাৎ তার দুলুনি বন্ধ হয়েছে। ঘরের আলো কমে আসতে শুরু করেছে। এটা কি শুধু আমার জন্যেই, নাকি ইনোর কাছেও এ রকম মনে হচ্ছে? আমি ডাকলাম, ইনো।

বলুন শুনছি।

আমি দেখছি ঘরের আলো কমে আসছে। আপনার কাছেও কি সে রকম মনে হচ্ছে?

না।

আপনার কাছে কি আলো ঠিকই আছে?

হ্যাঁ, সবই ঠিক আছে।

তার মানে এরা আমাকে এখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। এখন হয়তো আমার বদলে অন্য কেউ আসবে।

হয়তো বা।

এত দিন মানুষ হিসেবে আপনারা অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। এখন ওরা আমাদের নিয়ে পরীক্ষা করছে। আমরা ওদের কাছে মূল্যহীন গিনিপিগ ছাড়া আর কিছু নই।

মূল্যহীন বলছেন কেন? উল্টোটাওতো হতে পারে। হয়তো আমরা খুবই মূল্যবান।

মূল্যবান হলে ওরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। তা কিন্তু করছে না। ওরা ওদের মতো কাজ করে যাচ্ছে। তাই নয় কি?

হ্যাঁ।

ইনো।

বলুন শুনছি, কিন্তু দয়া করে আমার দিকে তাকাবেন না।

আপনি কি লক্ষ করেছেন যে এরা শুধু সুখের স্মৃতিগুলি নিয়ে খেলা করছে। আপনার জীবনের অনেক দুঃখময় ব্যাপার নিশ্চয়ই আছে। সেসব নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। ওরা ইচ্ছা করলে ভয়ঙ্কর সব পরিবেশ তৈরি করতে পারত। পারত না?

হ্যাঁ, পারত।

তা কিন্তু ওরা করে নি।

ইনো ক্লান্ত গলায় বলল, এখনো করে নি। ভবিষ্যতে হয়তো করবে। ইনোর কথা শেষ হবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘর পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে গেল। তন্দ্ৰা বা ঘুমের মতো কোনো একটা জগতে আমি চলে গেলাম, যে জগৎ সম্পর্কে আমার সামান্যতম ধারণাও নেই।