ঝুপঝুপ করে বিরামহীন বৃষ্টি পড়ছে।
রফিক নৌকার ভেতর চাদর গায়ে গুটিটি মেরে মেরে শুয়ে আছে। নৌকায় এর আগে রাত কাটিয়েছে বলে মনে করতে পারছে না। সামান্য বাতাস আছে। বাতাসে নৌকা দুলছে। নৌকার দুলুনিটা খারাপ লাগছে না, তবে অন্ধকার খুব চোখে লাগছে। আলো যেমন চোখে লাগে, গাঢ় অন্ধকারও চোখে লাগে। ঘুমিয়ে পড়তে পারলে ভাল হত। ঘুম আসছে না। খিদেয় শরীর অবসন্ন লাগছে। প্রায় চৌদ্দ ঘণ্টার মতো হবে সে না খেয়ে আছে। আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। তার মাঝে মাঝে ইচ্ছা করছে নৌকা থেকে বের হয়ে খাবারের সন্ধানে যেতে। কোন একটা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভাত চাইলে কি তারা দেবে না। এক থালা আগুন-গরম ভাত। ভাতের উপর একচামচ ঘি। ভাবতে ভাবতে রফিক ঘিয়ের গন্ধ পেল। গন্ধবিষয়ক হেলুসিনেশন হচ্ছে। খালের ভেতর নৌকা বাঁধা। এখানে ঘিয়ের গন্ধ পাওয়ার কোনই কারণ নেই। শুধু ঘিয়ের গন্ধ না, গরম ভাতের গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে।
শেফা তাকে বারবার বলে দিয়েছে সে এসে কিছু না বলা পর্যন্ত যেন রফিক নৌকা ছেড়ে না যায়। শেফার জন্যে অপেক্ষা করাটা বোকামি হচ্ছে না-তো? মেয়েটা হয়ত সব ভুলে গেছে। মেয়েটা তার সঙ্গে কোন রসিকতা করে নি তো? রসিকতার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ইয়াসিন সাহেব শুধু শুধু রফিককে মেরে ফেলার চেষ্টা করবেন কেন? সে অপরাধটা কি করেছে?
নৌকা প্রবলভাবে দুলে উঠল। কেউ একজন ঝাপ দিয়ে নৌকায় উঠেছে। রফিক ধড়মড় করে উঠে বসল। নৌকার ছই-এর মুখ ভারি পর্দায় ঢাকা। পর্দা সরিয়ে শেফা মাথা বের করে বলল, স্যার কেমন আছেন?
রফিক বলল, তুমি কি কোন খাবার এনেছ।
শেফা বলল, কলা এনেছি। বসে বসে কলা খান। বাটির মধ্যে মুড়ি আছে। এক গাল মুড়ি নিবেন আর কলায় কামড় দিবেন। পাটালি গুড়ও আছে।
রফিক বলল, আমি ভাবলাম তুমি বোধহয় ভুলে গেছ।
শেফা বলল, আমি শুধু পড়া ভুলে যাই। অন্য কিছু ভুলি না। আপনি কথা না বলে আগে ভালমত খেয়ে পেট ভরান।
তোমার বাবা কি সত্যি-সত্যি আমাকে মেরে ফেলতে চান?
হুঁ। আপনার খোঁজে লোক নেমে গেছে।
কি আশ্চর্য কথা।
কোন আশ্চর্য কথা না, এক দুইটা মানুষ বিলে পুঁতে ফেলা বাবার কাছে। কিছু না।
তুমি যে এখানে এসেছ কেউ জানে?
মা জানে।
উনি তোমার বাবাকে বলে দেবেন না।
না।
না কেন? উনি আমাকে খুবই ভালবাসেন।
তোমার বাবাওতো তোমাকে ভালবাসেন।
দুজনের ভালবাসা দুরকম। আমার জন্যে মার ভালবাসায় আপনি আছেন। কিন্তু বাবার ভালবাসায় আপনি নাই।
এটা কি রকম কথা।
কি রকম কথা এটা চিন্তা করতে হবে না। আপনি তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করেন। কলা কয়টা খেয়েছেন?
দুইটা।
আরেকটা খান তাহলে দানে দানে তিনদান হবে।
দানে দানে তিনদান হবে মানে কি?
উফ আপনে এত মানে খুঁজেন কেন? আচ্ছা শুনুন আপনাকে একটা কলার গল্প বলি।
কলার কি গল্প?
এক দেশে ছিল একটা সারি কলা আর ছিল একটা পাতিলেবু। দুজনের খুব দোস্তি। একদিন কলা পাতিলেবুকে বলল, আচ্ছা ভাই লেবু, লোকে ভাত খাওয়ার সময় তাদের চিপা দিয়ে রস বের করে তোদের কষ্ট হয় না। তার উত্তরে পাতিলেবু বলল, কষ্ট তো হয়ই। কিন্তু ভাই কলা, লোকজন তোদর খাবার সময় যে বাকল খুলে নেংটো করে ফেলে তোদর লজ্জা লাগে না?
রফিক খাওয়া বন্ধ করে গল্প শুনছে। মেয়েটা যে এত সুন্দর করে গল্প বলতে পারে তাই সে জানত না।
গল্পটা কেমন লাগল স্যার?
ভাল।
এই গল্পটা আমি দাদিজানের কাছে শুনেছি। দাদিজানের মতো সুন্দর করে আমি বলতে পারলাম না। দাদিজানের কাছ থেকে আপনি যদি এই গল্প শুনতেন তাহলে জীবনে আর কলা খেতে পারতেন না।
কেন? নেংটো করে কলা খেতে আপনার লজ্জা লাগতো।
শেফা খিলখিল করে হাসছে। বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে হাসির শব্দ মিশে অদ্ভুত শোনাচ্ছে। বাতাসের বেগও বেড়েছে। নৌকা অনেক বেশি দুলছে। শেফা বলল, স্যার উঠুন। এখন চলে যেতে হবে।
কোথায় যাব?
ডিসট্রিক্ট বোর্ডের সড়ক ধরে সোজা দক্ষিণ দিকে যাবেন। এক মাইলের মতো যাবেন তখন দেখবেন হাতের ডান দিকে দুটা বিরাট তাল গাছ। তালগাছ দুটা তো আগেও দেখেছেন। এরার নাম মামা-ভাইগনা তালগাছ। তালগাছের নিচে দাঁড়ায়ে সোজা তাকায়ে দেখবেন কোন্ বাড়িতে বাতি জ্বলতেছে। ঐ বাড়িতে চলে যাবেন।
কার বাড়িতে যাব?
জালাল খাঁ সাহেবের বাড়ি। উনার বাড়িতে সারারাতই বাতি জ্বলে। জালাল খাঁ সাহেবের জামাই এখনো আছেন। উনি আপনেরে খুব ভাল পান। উনার সঙ্গে ঢাকায় চলে যাবেন। মামলা ডিসমিস।
মামলা ডিসমিস?
অবশ্যই মামলা ডিসমিস। বাপজান জালাল খাঁ সাহেবের এলাকায় কিছু করতে পারবে না। সবার এলাকা ভাগ করা। তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না?
অবশ্যই দেখা হবে। দেখা হবে এবং বিবাহ হবে। স্যার আমি ছাত্রী খুব খারাপ কিন্তু বউ খুব ভাল। আপনার যে মাথার অসুখ আছে। রাতে বোরায় ধরে, চিল্লাফাল্লা করেন, এই অসুখ আমি দুই দিনে সারায়ে দিব।
তুমি নিশ্চিত তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে?
অবশ্যই। মা স্বীকার পেয়েছেন। আর কোন চিন্তা নাই। মাকে দেখলে মনে হয় মা এই দুনিয়ার কিছুই বুঝে না। ভয়ে অস্থির হয়ে থাকে। আসলে সবকিছুই তাঁর হাতের মুঠার মধ্যে। মা বাপজানকে এক হাটে কিনে সেই হাটেই দশজনের কাছে বিক্রি করবেন। বাপজান টেরও পাবেন না। বাপজান মনের আনন্দে কঁচা সুপারি দিয়ে পান খাবেন, আর পানের পিক ফেলবেন। হি হি হি।
গভীর রাতে ফরহাদ রফিককে দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হল। বিস্ময়ের সঙ্গে যুক্ত হল আনন্দ। ফরহাদ সাহেবের স্ত্রী তার চাচাতো বোনের বিয়েতে মিশাখালি। গিয়েছে। খবর পাঠিয়েছে রাতে ফিরবে না। ফরহাদের কথা বলার কেউ নেই। সে এতক্ষণ একা একা বাংলাঘরে বসে বৃষ্টি দেখছিল। সে রফিককে দেখে প্রায় চেঁচিয়ে বলল, আপনার একি অবস্থা। বৃষ্টি কাদায় মাখামাখি। ঘটনা কি?
কোন ঘটনা না। আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।
দেখা করতে এসেছেন খুবই ভাল কথা। আমি খুবই খুশি হয়েছি যে দেখা করতে এসেছেন। এমন গগ্রামে রাত দেড়টার সময় যে কেউ দেখা করতে আসতে পারে তাই জানতাম না।
আপনি চলে যাবেন আর দেখা হবে না।
আপনি এসেছেন আমি খুবই খুশি হয়েছি। আপনাকে আমি একটা প্রস্তাবও দিচ্ছি। আপনিও চলুন আমার সঙ্গে। আপনাকে নিয়ে আমার কিছু পরিকল্পনা আছে। আচ্ছা পরিকল্পনার কথা পরে বলব। এখন আপনার গোসলের ব্যবস্থা করি। শুকনা কাপড়ের ব্যবস্থা করি। আজ সারারাত গল্প করব।
বাংলাঘরেই শোবার জায়গা হল। পাশাপাশি দুটা খাট। একটায় রফিক, অন্যটায় ফরহাদ। ফরহাদের হাতে ফ্লাস্ক। সে ফ্লাস্কভর্তি চা নিয়ে সত্যি-সত্যি সারারাত গল্প করার প্রস্তুতি নিয়েছে। রফিক চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তার শরীর ভাল নেই। জ্বর আসছে। ঠাণ্ডাটা তাকে খুব কাহিল। করে ফেলেছে।
রফিক সাহেব।
জ্বি স্যার।
আমাকে স্যার বলবেন না। আমি খুবই জুনিয়ার একজন শিক্ষক। বয়সেও মনে হয় ছোট হব।
আপনি সম্মানিত মানুষ।
মানুষ মাত্রই সম্মানিত। আপনি আমার কাছে অনেক সম্মানিত। আপনার অংক করার দৃশ্য এখননা আমার চোখে ভাসে। ভাল কথা, আপনার কি শরীর খারাপ করেছে।
জ্বি না। ঠাণ্ডা লেগেছে।
চোখ বন্ধ করে থাকবেন না। চোখ বন্ধ করে থাকলে মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছেন। আমার প্ল্যান হচ্ছে আজ সারারাত গল্প করা। একটু গরম চা খান ঘুম কাটবে।
রফিকের চা খেতে ইচ্ছা করছিল না। তারপরেও হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে নিতে বলল, আপনার কাছে একটা প্রশ্ন ছিল। যদি কিছু মনে না করেন।
ফরহাদ বিস্মিত হয়ে বলল, মনে করব কেন? যে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হয় করুন। তবে জবাব দিতে পারব কি না জানি না। আমার পড়াশোনা পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেই সীমাবন্ধ। প্রশ্নটা বলুন।
ওমেগা পয়েন্ট কি?
কি পয়েন্ট?
ওমেগা পয়েন্ট।
ওমেগা পয়েন্টের কথা প্রথম শুনলাম। ওমেগা কি তা জানি। গ্রিক এলফাবেট। এর বেশি তো কিছু জানি না।
রফিক বলল, একটা মানুষ কি একই সময়ে দুটা জায়গায় থাকতে পারে?
ফরহাদ অবাক হয়ে বলল, একই সময়ে দুটা জায়গায় একজন থাকবে কি করে? আমি নেত্রকোনায় আছি আবার ঢাকাতেও বাস করছি—এটা কি সম্ভব আপনিই বলুন।
রফিক কিছু বলল না। নিঃশব্দে চায়ের কাপে চুমুক দিতে লাগল। ফরহাদ বলল, আপনার এই অদ্ভুত প্রশ্নগুলির মানে ধরতে পারছি না।
এমি জিজ্ঞেস করলাম। কিছু মনে করবেন না।
মনে করাকরির কিছু নেই। তবে প্রশ্ন শুনে অবাক হচ্ছি। আপনার শরীর ভাল তো?
এখন একটু ভাল লাগছে।
আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে না, আপনার শরীর খুব ভাল। আপনি বরং এক কাজ করুন—শুয়ে শুয়ে গল্প করুন। এর মধ্যে যদি ঘুম পেয়ে যায় ঘুমিয়ে পড়বেন।
জ্বি আচ্ছা।
রফিক চায়ের কাপ টেবিলে নামিয়ে রেখে শুয়ে পড়ল। শীতে তার শরীর কাঁপছে। গায়ে লেপ বা কম্বল জাতীয় কিছু দিতে পারলে ভাল হত। পাতলা চাদরে শীত মানছে না। কিন্তু এখন কম্বল চাইতে লজ্জা লাগছে।
রফিক সাহেব।
জ্বি।
আপনি একই সময়ে দুটা জায়গায় একটা বস্তুর অবস্থানের কথা বলছিলেন না?
জ্বি।
সাব এটমিক পার্টিকেলস এর বেলায় সম্ভব। কোয়ান্টাম মেকানিক্স এরকম বলে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স অবশ্যি আমার বিষয় না। আমি পড়াই এপ্লায়েড ফিজিক্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্স আমার কাছে সবসময়ই খানিকটা অস্পষ্ট এবং ধোঁয়াটে মনে হয়। তবে অংকে আপনার যে অসাধারণ দখল–কোয়ান্টাম মেকানিক্স হয়ত আপনার ভাল লাগবে। এই বিষয়ে কি আপনি পড়াশোনা করতে চান?
জ্বি চাই।
আমি আমার সাধ্যমত আপনার জন্যে করব। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি।
কোয়ান্টাম মেকানিক্স কি একটি বস্তুর একই সময়ে দুই জায়গায় থাকার কথা বলে?
হ্যাঁ বলে। শুধু তাই না কোয়ান্টাম মেকানিক্স আরো অদ্ভুত সব কথা বলে। যেমন ধরুন আপনি একটা বন্দুক নিয়ে গুলি করবেন। গুলিটা টার্গেটে লাগল। আগে গুলি করতে হবে তারপর গুলিটা লাগবে টার্গেটে। প্রথমে Cause তারপর effect. কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলে effect আগে হতে পারে। টার্গেটে প্রথম গুলি লাগল। তারপর গুলি ছোড়া হল। শুনতে অদ্ভুত লাগছে না?
জ্বি লাগছে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্স প্যারালাল ইউনিভার্স সম্পর্কেও বলে। আমরা ধরেই নিয়েছি আমাদের একটাই পৃথিবী। একটাই জীবন। কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলে ঘটনা তা না। একটা পৃথিবীর মধ্যেই আছে অসীম পৃথিবী। আমাদের একটা জীবনের মধ্যেই অসীম সংখ্যার জীবন। সব একই জায়গায় ঘটে যাচ্ছে। এটাই হল প্যারালাল ইউনিভার্স। সব একসঙ্গে ঘটে যাচ্ছে কিন্তু একটার সঙ্গে অন্যটার যোগ নেই। যেমন ধরুন আমরা যেখানে বাস করছি সেখানে হিটলার পরাজিত হয়েছেন। মিত্রশক্তি জয়লাভ করেছে। আবার আরেকটা ইউনিভার্স আছে যেখানে হিটলার জয়লাভ করেছেন।
একটা জগৎ থেকে আরেকটায় যাবার বুদ্ধি কি?
যাবার কোন বুদ্ধি নেই। কোন উপায় নেই। উপায় থাকলে তো সর্বনাশ হয়ে যেত। সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যেত। প্রকৃতি কঠিন নিয়মের মধ্যে চলে। লণ্ডভণ্ড বিষয়টাই প্রকৃতির অপছন্দ।
সময় ব্যাপারটি কি আপনি জানেন?
ফরহাদ ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে বলল, আমি জানি না। আমার এই বিষয়ে খুব ভাসা ভাসা জ্ঞান। শুধু এইটুকু জানি সময়কে আমরা যেভাবে দেখছি সময় আসলে সেরকম না। আমাদের কাছে সময় নদীর মতো বয়ে যাচ্ছে। আমাদের আছে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বুড়ো হচ্ছি। বিজ্ঞানের কাছে সময় বয়ে চলার ব্যাপারটা হাস্যকর। বয়ে চলা মানে হল গতি। তাহলে সময়ের গতিটা কি? বিজ্ঞান সময়কে আলাদা করে দেখে না। স্পেসএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। বিজ্ঞানীরা বলেন স্পেস-টাইম। এটা আবার মধ্যাকর্ষণের সঙ্গেও যুক্ত। মধ্যাকর্ষণের একটা পর্যায়ে সময় থেমে যাবে। যেমন ধরুন ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর। এখানে সময় থেমে আছে। এরচে ভাল আমি বলতে পারব না।
রফিক বলল, এমরান টি বলতে পারবেন।
ফরহাদ বিস্মিত হয়ে বলল, কে বলতে পারবেন?
এমরান টি।
উনি কে?
উনি একজন বিজ্ঞানী। উনার গবেষণার বিষয় ব্ল্যাক হোল।
আমি তো তাঁর নামই শুনি নি।
ফরহাদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রফিক বলল, আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
যদি কিছু মনে না করেন আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
আপনার শরীর কি বেশি খারাপ লাগছে?
জ্বি। আমাকে একটা লেপ বা কম্বল দিতে পারবেন। খুবই শীত লাগছে। শেফকে বললেই হবে। সে ব্যবস্থা করবে।
ফরহাদ বলল, শেফ কে?
রফিক বিড়বিড় করে বলল, শেফ অষ্টম ধারার রোবট। খুবই ভাল।
ও আচ্ছা।
রফিকের হাত-পা কাঁপছে। সে অতি দ্রুত নিশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। রফিক বিছানা থেকে মাথা তুলে ঘোর লাগা গলায় বলল, শেফ তুমি কোথায়?