০৭. নিহনের জ্ঞান ফিরে আসে

খুব ধীরে ধীরে নিহনের জ্ঞান ফিরে আসে। তাকে একটা শক্ত টেবিলে শোয়ানো হয়েছে। তার হাত-পা এবং মাথা শক্ত করে বাঁধা, শরীরটুকু সে নাড়াতে পারছে না। তার আশপাশে কিছু মানুষ আছে, তারা নিচু গলায় কথা বলছে। নিহন চোখ না খুলে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করল। মোটা গলায় একজন বলল, তুমি নিশ্চিত এই জলমানবের শরীরে কোনো ভাইরাস নাই।

মেয়ে কণ্ঠে একজন উত্তর দিল, না, নাই। সব পরীক্ষা করা হয়েছে। কোয়াকম্প রিপোর্ট দিয়েছে।

তুমি নিজে দেখেছ সেই রিপোর্ট?

হ্যাঁ, দেখেছি।

আমি কোনো কিছু বিশ্বাস করি না। আমাদের এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগাবে কিন্তু সেজন্য আলাদা ইউনিট দেবে না এটা কেমন কথা?

মেয়ে কণ্ঠ উত্তর দিল, এটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ না। সত্যি কথা বলতে কী, ঝুঁকিটা এই জলমানবের। আমাদের এখানে এক শ দশ রকম ভাইরাস। নির্ঘাত এর অসুখ হবে। খারাপ রকমের একটা অসুখ হবে।

মোটা কণ্ঠ উত্তর দিল, কিন্তু এই জলমানব যদি আমাদের আক্রমণ করে? এর শরীরটা দেখেছ? একটুও বাড়তি মেদ নেই, পুরোটা শক্ত মাংসপেশি। এর গায়ে নিশ্চয়ই মোষের মতো জোর।

না, এই জলমানব আক্রমণ করবে না। তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। যে ড্রাগ দেওয়া। হয়েছে তার কারণে এত তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরে আসার কথা না। তা ছাড়া

তা ছাড়া কী?

তা ছাড়া জলমানব খুব নিরীহ প্রাণী। তাদের সমাজে কোনো ভায়োলেন্স নেই।

মোটা গলার মানুষটি বলল, ভায়োলেন্স নেই সেটা আবার কী রকম সমাজ?

মেয়েটি বলল, সমাজ নিয়ে কথা বলার অনেক সময় পাবে। এখন তাকে স্ক্যান করানো কু কর।

ঠিক আছে।

নিহনের খুব ইচ্ছা করছিল চোখ খুলে দেখে, কিন্তু সে চোখ বন্ধ করে রইল। সে অনুভব করে তাকে কোনো একটা যন্ত্রের ভেতর দিয়ে নেওয়া হচ্ছে, সে এক ধরনের অস্বস্তিকর উষ্ণতা এবং তীব্র কম্পন অনুভব করে।

মেয়ে কণ্ঠটি বলল, দেখ দেখ, জলমানবের ফুসফুসটা দেখ। কত বড় দেখেছ?

মোটা গলার মানুষটি বলল, আমার দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। কাজ করতে এসেছি, কাজ করে চলে যাব। যা দেখার সেটা দেখবে কোয়াকম্প, আমাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার।

সে তো দেখছেই। সে দেখতে চাইছে বলেই তো আমরা স্ক্যান করছি।

মোটা গলার মানুষটা বলল, আচ্ছা, শরীরে ভেতরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এ রকম স্পষ্ট দেখা যায় এই মেশিনটা কাজ করে কেমন করে জান?

উঁহু। আমাদের জানার কথা নয়, জানার প্রয়োজনও নাই। এই সব কোয়াকম্পের মাথাব্যথা।

নিহন সাবধানে চোখের পাতা খুলে যারা কথা বলছে তাদের দেখার চেষ্টা করল, একজন মোটাসোটা মানুষ, আরেকজন হালকা পাতলা মহিলা। স্ক্যানিং মেশিন কেমন করে কাজ করে তারা জানে না। নিহন জানে, সে পড়েছে। এই মানুষগুলোর কিছুই জানার দরকার নেই, কারণ কোয়াকম্প নামে তাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার সবকিছু জানে। জলমানবদের জানার দরকার আছে, কারণ তাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার নেই। কোনটা ভালো?

নিহন শুনতে পায় পুরুষ মানুষ এবং মহিলাটি কথা বলতে বলতে একটু দূরে চলে যাচ্ছে, তখন সে খুব সাবধানে তার চোখ অল্প একটু খুলে দেখার চেষ্টা করল। যন্ত্রপাতি বোঝাই একটা ঘর, তার মাঝামাঝি একটা শক্ত ধাতব টেবিলে সে শুয়ে আছে। তার ওপর একটা বড় উজ্জ্বল আলো, সেদিকে তাকালে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। চারপাশের যন্ত্রগুলোর দিকে সে লোভাতুর চোখে তাকাল, সে এগুলোর কথা পড়েছে, কখনো নিজের চোখে দেখবে ভাবে নি। এখন সে দেখছে। আহা, তারা যদি এরকম কিছু যন্ত্রপাতি পেত কী মজাই না হত!

নিহন হঠাৎ এক ধরনের ক্লান্তি অনুভব করে। স্ক্যান করার জন্য শরীরের ভেতরে তেজস্ক্রিয় দ্রবণ ঢুকিয়ে দিয়েছে, সেগুলো স্তিমিত হতে একটু সময় নেবে। ততক্ষণ তার বিশ্রাম নেওয়ার কথা। হয়তো সেজন্য ঘুমের ওষুধ দিয়েছে, আবার তার চোখে ঘুম নেমে আসে।

.

নিহনের ছাড়াছাড়াভাবে ঘুম হল, সমস্ত শরীর শক্ত করে বাঁধা, এর মাঝে সত্যিকার অর্থে ঘুমানো যায় না। ক্লান্ত হয়ে ছাড়া-ছাড়াভাবে চোখ বুজে আসে, বিচিত্র সব স্বপ্ন দেখে তখন। একটা বিশাল অক্টোপাস এসে তাকে পেঁচিয়ে ধরেছে, প্রচণ্ড যন্ত্রণায় সে ছটফট করছে, তখন অক্টোপাসটি পরিষ্কার মানুষের গলায় বলল, এদের বুদ্ধিমত্তা নিম্নশ্রেণীর।

নিহনের ঘুম ভেঙে যায়, তার মাথার কাছে দুজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে, একজনের বড় বড় লাল চুল অন্যজনের চুল ছোট করে ছটা। লাল চুলের মানুষটি বলল, কেন বুদ্ধিমত্তা নিম্নশ্রেণীর হয়? এরা তো একসময় আমাদের মতো মানুষই ছিল।

বিবর্তন।

বিবর্তন?

হ্যাঁ, বিবর্তন যেরকম পজিটিভ হতে পারে, সেরকম নেগেটিভও হতে পারে। আমাদের বিবর্তন হচ্ছে পজিটিভ। যতই দিন যাচ্ছে আমরা আরো পূর্ণ মানুষ হচ্ছি, ভালো মানুষ হচ্ছি। এরা যাচ্ছে উল্টো দিকে।

লাল চুলের মানুষটি বলল, হ্যাঁ, সেটাই স্বাভাবিক। বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার না করলে সেটা কমে যায়। এদের বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করার সুযোগ নেই। জীবনের মান খুব নিচু। অনেকটা বন্য জন্তুর মতো। এদের সবকিছুই হচ্ছে সহজাত প্রবৃত্তি।

কালো চুলের মানুষটি বলল, হ্যাঁ, শরীরটা দেখলেই অনুমান করা যায়। দেখেছ এর শরীরে একটা জন্তু জন্তু ভাব আছে?

হ্যাঁ। খুব সাবধান! এরা নাকি আমাদের কথা মোটামুটি বুঝতে পারে। প্রথমেই একে বুঝিয়ে দেওয়া যাক আমরা কী করতে যাচ্ছি।

লাল চুলের মানুষটা এবার নিহনের গায়ে ছোট একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, এই ছেলে। এই।

নিহন চোখ খুলে তাকাল। লাল চুলের মানুষটা বলল, তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারছ?

নিহন মাথা নাড়ল, হ্যাঁ, পারছি।

চমৎকার! আমরা তোমার কিছু জিনিস পরীক্ষা করব। তোমাকে সহযোগিতা করতে হবে। বুঝেছ?

নিহন আবার মাথা নাড়ল, বলল, বুঝেছি।

সেটা পরীক্ষা করার জন্য তোমার হাত ও পায়ের বাধন খুলে দিতে হবে। বুঝেছ?

বুঝেছি।

কিন্তু হাত-পা খুলে দেওয়ার পর তুমি যেন আমাদের হঠাৎ করে আক্রমণ করে না বস 

আমি তোমাদের আক্রমণ করব না।

আমরা বিষয়টা নিশ্চিত করতে চাই। সেজন্য আমরা তোমার শরীরে একটা পোব লাগাব। তুমি যদি বিপজ্জনক কিছু কর তা হলে আমরা একটা সুইচ টিপে ধরব, তখন তুমি একটা ভয়ঙ্কর ইলেকট্রিক শক খাবে।

নিহন কোনো কথা না বলে নিঃশব্দে মানুষটার দিকে তাকিয়ে রইল। মানুষটা বলল, ইলেকট্রিক শক কথাটা তুমি হয়তো শোন নাই, তাই এই কথাটার অর্থ তুমি বুঝতে পারবে না। কিন্তু আমার কথা বিশ্বাস কর, এটা ভয়ানক একটা জিনিস, একবার খেলে সারা জীবন মনে থাকবে।

কালো চুলের মানুষটা এবার এগিয়ে আসে, নিহনের হাতে হোট একটা স্ট্র্যাপ দিয়ে প্রোবটা বেঁধে দিয়ে বলল, জিনিসটা পরীক্ষা করে দেখা যাক।

হাতে ধরে রাখা একটা সুইচ টিপে ধরতেই নিহন প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আর্তচিৎকার করে উঠল। সমস্ত শরীর ভয়ঙ্কর ইলেকট্রিক শকে ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে কেঁপে ওঠে। লাল চুলের মানুষটার মুখে একটা হাসি ফুটে উঠল, সে মাথা নেড়ে বলল, বুঝেছ? এটা হচ্ছে ইলেকট্রিক শক।

নিহন মাথা নাড়ল, শুকনো গলায় বলল, বুঝেছি।

কাজেই তুমি যদি উল্টাপাল্টা কোনো কাজ কর তা হলেই ঘ্যাচ করে এই সুইচ টিপে ধরব, সঙ্গে সঙ্গে তুমি ইলেকট্রিক শক খাবে। বুঝেছ?

বুঝেছি।

তাই তুমি কোনো উল্টাপাল্টা কাজ করবে না। ঠিক আছে?

ঠিক আছে।

মানুষ দুজন তখন নিহনের বাধন খুলে দেয়, নিহন তার টেবিলে বসে চারদিকে ঘুরে তাকাল। নানারকম যন্ত্রপাতি গুঞ্জন করছে, সেগুলো দেখে নিহন মুগ্ধ হয়ে যায়। তার আবার মনে হয়, আহা! সে যদি এ রকম কয়েকটা যন্ত্র নিয়ে যেতে পারত তা হলে কী চমৎকারই না হত!

লাল চুলের মানুষটা বলল, আমরা তোমার কিছু জিনিস পরীক্ষা করব। তুমি কীভাবে চিন্তা কর তার একটা ধারণা নেব। বুঝেছ?

নিহন মাথা নাড়ল, বলল, বুঝেছি।

আমি তোমাকে কিছু প্রশ্ন কর, তুমি সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে। যদি প্রশ্ন বুঝতে না পার আমাদের জিজ্ঞেস কোরো।

করব।

খবরদার! অন্য কিছু করার চেষ্টা কোরো না।

না। করব না।

লাল চুল এবং কালো চুলের মানুষ দুটি কিছু ধাতব ব্লক, বোর্ড, নানা ধরনের জ্যামিতিক আকারের নকশা বের করে নিহনের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করল। নিহন সবিস্ময়ে আবিষ্কার। করে, তারা তাদের ডলফিনগুলোর বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করার জন্য যে পরীক্ষা করে, এই পরীক্ষাটা অনেকটা সে রকম। মানুষ দুজন ধরেই নিয়েছে নিহনের বুদ্ধিমত্তা অত্যন্ত নিম্নস্তরের, প্রায় পশুর কাছাকাছি।

নিহন তাদের নিরাশ করল না। ঠিক কী কারণ জানা নেই, নিহনের মনে হল সে যদি এই মানুষ দুটোকে ধারণা দেয় যে আসলেই তার বুদ্ধিমত্তা নিম্নস্তরের তা হলে সেটা পরে কাজে লাগতে পারে। নিহন তাই খুব চিন্তাভাবনা করে পুরোপুরি নির্বোধের মতো আচরণ করতে শুরু করল।

মানুষ দুজন গম্ভীরভাবে মাথা নেড়ে ফিসফিস করে নিজেদের ভেতর কথা বলে। নিহন শুনল, লাল চুলের মানুষটি বলল, এর মানসিক বয়স ছয় থেকে সাত বছরের কাছাকাছি।

কালো চুলের মানুষটি বলল, দশ পর্যন্ত গুনতে পারে। যোগ কী তার ধারণা আছে। কিন্তু বিয়োগ করতে পারে না।

ভাষাও খুব দুর্বল। নিজেকে খুব ভালো করে প্রকাশ করতে পারে না।

কোথাও মনোযোগ দিতে পারে না একটা জিনিস একটানা বেশি চিন্তা করতে পারে।

লাল চুলের মানুষটা বলল, দেখেছ, কোয়াকম্পর ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি মিলে গেছে।

হ্যাঁ। পুরোপুরি মিলে গেছে। জলমানবের এই প্রজাতি ধীরে ধীরে এক ধরনের জ্যুতে পরিণত হচ্ছে। এদের ভবিষ্যটুকু দেখতে খুব কৌতূহল হচ্ছে।

এদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমরা যেরকম আমাদের যে কোনো কাজের জন্য কোয়াকম্পকে ব্যবহার করতে পারি, তারা তো সেটা করতে পারে না।

নিহন একটাও কথা না বলে চুপচাপ বসে রইল। সে চোখেমুখে এক ধরনের ভাবলেশহীন ভঙ্গি ফুটিয়ে চোখের কোনা দিয়ে সবকিছু লক্ষ করে।

মানুষ দুজন কোয়াকম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের তথ্য পাঠাতে থাকে। কিছু রিপোর্ট পরীক্ষা করে এবং সবশেষে যোগাযোগ মডিউল দিয়ে কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলে।

নিহনকে কিছু খাবার দেওয়া হল। তার খিদে নেই, বিস্বাদ খাবার, তবু সে জোর করে খেয়ে নিল। তাকে একটা বাথরুম ব্যবহার করতে দেওয়া হল, সেখানে দীর্ঘসময় সে পানির। ধারার নিচে দাঁড়িয়ে রইল। তার দৈনন্দিন জীবন কাটে পানির খুব কাছাকাছি একা দীর্ঘসময় সে পানি থেকে দূরে থাকে নি। সে বুঝতে পারছিল তার পুরো শরীর পানির জন্য হাহাকার করছিল। পুরো শরীর পানিতে ভিজিয়ে সে যখন আগের ঘরটিতে ফিরে এল, মানুষ দুজন তাকে দেখে খুব অবাক হল। বলল, তোমার শরীর ভিজে।

হ্যাঁ।

শরীর মুছে নাও।

না। নিহন মাথা নাড়ল, আমি ভেজাই থাকতে চাই।

কেন?

আমার ভেজা থাকতে ভালো লাগে।

কী আশ্চর্য!

নিহন কোনো কথা বলল না। মানুষ দুজন একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকাল। লাল চুলের মানুষটা বলল, আমাদের মনে হয় বিষয়টা কোয়াকম্পকে জানানো দরকার।

হ্যাঁ। কালো চুলের মানুষটি মাথা নাড়ল, বলল, জানানো দরকার।

নিহন দেখল মানুষ দুজন ঘরের এক কোনায় গিয়ে কিছু যন্ত্রপাতির সামনে বসে কিছু একটা লিখতে থাকে। তারপর আবার নিহনের কাছে ফিরে আসে। লাল চুলের মানুষটা বলল, তোমাকে আরো কিছু পরীক্ষা করতে হবে।

নিহন কোনো কথা বলল না। লাল চুলের মানুষটা বলল, পানির ভেতরে তুমি কেমন থাক, কী কর, কোয়াকম্প সেটা জানতে চায়।

নিহন এবারো কোনো কথা বলল না। লাল চুলের মানুষটা বলল, তোমাকে একটা বড় পানির ট্যাঙ্কে রাখা হবে, তোমার শরীরে নানা রকম মনিটর লাগানো হবে, তোমার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ মাপা হবে-এটা হবে অনেক দীর্ঘ পরীক্ষা।

নিহন একটা নিঃশ্বাস ফেলল, বলল, ঠিক আছে।

ঘণ্টাখানেক পরে বড় একটা চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে নিহনকে নামিয়ে দেওয়া হল। চারপাশে কয়েকজন মানুষ তাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ করতে থাকে। যখন তাকে পানির নিচে যেতে বলে, নিহন পানির নিচে চলে যায়। যখন তাকে ভেসে উঠতে বলে, তখন সে আবার ভেসে ওঠে। মনিটরে তার শরীরের তাপ, রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ, হৃৎস্পন্দন এবং এ। রকম অসংখ্য ঘুঁটিনাটি বিষয় মাপতে থাকে। যে মানুষগুলো পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছিল, তারা কোয়াকম্পের জন্য তথ্য সগ্রহ করছিল, তথ্যের মধ্যে বিস্ময়কর কোনো বিষয় আছে কি না। সেটা আর বুঝতে পারছিল না। তথ্যগুলো যে বিস্ময়কর সেটা কোয়াকস্পের পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল, কিন্তু এই অসাধারণ ক্ষমতাশালী কম্পিউটারটি অসাধারণ জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারলেও তার অবাক হওয়ার ক্ষমতা ছিল না।