০৭. ধাতু আবিষ্কার

ধাতু আবিষ্কার করিয়া আদিম মানবগণ ক্রমশঃ অনাবশ্যক আড়ম্বরের বশবর্ত্তী হইয়াছিলেন। এই সময় হইতে মানবসমাজে জীবনযাত্রানির্ব্বাহে অনাবশ্যক অলঙ্কার ও আভরণের ব্যবহার আরম্ভ হয়। তাম্রনির্ম্মিত কঙ্কণবলয়ই মানবজাতির শৈশবে ললনাগণের সর্ব্বাপেক্ষা বহুমূল্য আভরণ ছিল। ভারতে বহুবিধ তাম্রনির্ম্মিত অস্ত্র ও আভরণ আবিষ্কৃত হইয়াছে; ইহা হইতে পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে এতদ্দেশে বহুকাল যাবৎ তাম্রের ব্যবহার ছিল। ভারতে কোন্‌ সময় তাম্রের যুগ আরম্ভ হইয়াছিল, তাহা বলিতে পারা যায় না; তবে অনুমান হয় যে, আর্য্যবিজয়ের সময়ে অথবা তাহার অব্যবহিত পরে লৌহের ব্যবহার আরম্ভ হয় এবং ক্রমশঃ তাম্রের ব্যবহার উঠিয়া যায় (২৩)

—————-
(২৩) কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সহকারী অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পঞ্চানন মিত্র কলিতাতা চিত্রশালায় সে সমস্ত নব্য-প্রস্তরযুগের আয়ুধ রক্ষিত আছে তাহা পরীক্ষা করিয়া দুই তিনটি লিপিযুক্ত কুঠারফলক আবিষ্কার করিয়াছেন (Indian Antiquary Vol XLVII, 1919, pp.57-64) এই সমস্ত নব্য-প্রস্তরযুগের আয়ুধ খননে আবিষ্কৃত হয় নাই। সেইজন্য প্রেসিডেন্সি কলেজের ভূতত্ত্ব-অধ্যাপক শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র দাশগুপ্ত এই কুঠারফলকগুলির লিপি কুঠারফলকের সমসাময়িক কি না অর্থাৎ এই লিপিগুলি নব্য-প্রস্তরযুগের লিপি কি না সে বিষয়ে সন্দেহ করেন। এই সমস্ত কুঠারফলক হয়ত নব্য-প্রস্তরযুগের সহস্র সহস্র বৎসর পরে মানবকর্ত্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল এবং তৎকালে কেহ উহার উপরে কিছু লিখিয়া রাখিয়া থাকিবে।