০৭. দূরসম্পর্কের কাকা

।। ।।

কিংস্টনে আমার দূরসম্পর্কের কাকা থাকেন। ওখানে আইবিএম– এর একটা ল্যাবে দিনুকাকা কাজ করতেন। রিটায়ার করে সেখানেই থেকে যান। কাকিমা মারা গেছেন গত বছর। একমাত্র মেয়ে কেয়া পিএইচডি করে গুগলের একটা রিসার্চ ল্যাবে কাজ করে। সেও বাইরে। দিনুকাকা এখন একেবারে একা। বাড়িটা বিক্রির জন্যে দিয়েছেন। বিক্রি হলে দেশে ফিরে যাবেন –সেটাই প্ল্যান। কাকিমা থাকতে দিনুকাকার ওখানে প্রায়ই যেতাম। এখন আর যাওয়া হয় না। দিনুকাকা মাঝে মাঝে ফোন করে আসতে বলেন, কিন্তু ওই যাচ্ছি, যাব করি।

একেনবাবু যখন বললেন উনি কিংস্টনে যাবেন ওখানকার পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে, তখনই মনে হয়েছিল দিনুকাকার কথা। ওখানে গেলে দিনু কাকা খুশি হবেন আর আমাদের কাজটাও হবে। তবে দিনুকাকা কিংস্টনে আছেন না বাইরে কোথাও গেছেন সেটা দেখতে হবে। লাকিলি দিনুকাকাকে পেলাম। ভীষণ এক্সাইটেড আমি আসছি শুনে। কেয়াও বাড়িতে এসেছে কয়েকদিনের জন্যে। ও-ও ফোন ধরে হই হই করে উঠল। দিনুকাকাকে একেনবাবুর কথা বললাম। উনি যে একজন গোয়েন্দা সে খবরটাও দিলাম। ওরে বাবা, নিয়ে আয়, নিয়ে আয়। খুব ভালো লাগবে। ওকে বলিস, কোনো অসুবিধা নেই।

.

পরের দিন সকালে আমরা দিনুকাকার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ওঁর বাড়ি আমার বাড়ি থেকে ১০০ মাইলের মতো দূরে। প্রায় পুরোটা পথই হাইওয়ে –শেষের কয়েকটা মাইল বাদে। কিংস্টন শহর পর্যন্ত যেতেও হয় না। লিঙ্কন টানেল বা কোথাও জ্যাম না পেলে দিনুকাকার বাড়ি পৌনে দু’ঘন্টার বেশি লাগার কথা নয়।

কিংস্টন আলস্টার কাউন্টিতে। জায়গাটা ভারি সুন্দর। বিশেষ করে দিনুকাকা যেখানে থাকেন পুরো অঞ্চলটাই বিশাল বিশাল অ্যাশ গাছে ভর্তি,ফাঁকে ফাঁকে ছবির মতো বাড়ি। একেনবাবু মুগ্ধ!

“নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি এখানে হলে স্যার বেশ হত।”

প্রায় এসে পড়েছি। পাড়ার রাস্তার শেষ টানটা নিতে নিতে বললাম, “এখানে ম্যানহাটানের মতো অত রেস্টুরেন্টে পেতেন না, রান্না করে খেতে হত।”

“কী আর করা স্যার, পজিটিভ থাকলেই নেগেটিভ থাকে।” দিনুকাকা আর কেয়া সাগ্রহে আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিল।

একেনবাবুকে কেয়া বা দিনুকাকা –কেউই আগে দেখেনি। জলজ্যান্ত গোয়েন্দা দেখে দু’জনেই খুব খুশি। আমরা পেছনের কাভারড প্যাটিওতে বসলাম। কেয়া কফি বানাতে গেল। আমিও ওর সঙ্গে কিচেনে গেলাম। আরও কিছু করার প্ল্যান করছিল। কিন্তু ব্রেকফাস্ট খেয়ে এসেছি বলে কোনোমতে ওকে নিরস্ত করলাম।

“ঠিক আছে, কিন্তু লাঞ্চ খেয়ে যাবে।” কেয়া ওর দাবি জানিয়ে রাখল।

“তোর হুকুম না মেনে উপায় আছে!”

“কত তো বোনের কথা রাখো!”

অভিমানী এই বোনটাকে আমার সবসময়েই ভাল লাগে। ওর কাজকর্মের খবর, প্রেম টেম করছে কি না –এইসব নানান রকম বিষয় নিয়ে ঠাট্টা আলোচনা চলল কিছুক্ষণ।

কফি নিয়ে এসে দেখি, দিনুকাকা একেনবাবুর সঙ্গে দারুণ গল্প জুড়েছেন। একেনবাবু মুগ্ধ হয়ে শুনছেন। আসলে কাকিমা থাকার সময় দিনুকাকা এত কথা বলতে পারতেন না। মাঝে মাঝেই কাকিমা বলতেন, একটু চুপ কর তো। ওরা গল্প করতে এসেছে, তোমার কথা শুনতে আসেনি। এখন ওঁকে বাধা দেবার কেউ আর নেই। দিনুকাকার গল্পের এক ফাঁকে একেনবাবু চুপি চুপি চুপি বললেন, “সত্যি স্যার, আপনার কাকার নলেজের তুলনা নেই। ওশন অফ নলেজ!”

কথাটা ভুল নয়, দিনুকাকা খবর প্রচুর রাখেন –বিশেষ করে টেকনোলজির খবর। আমরা আসায় গল্পে ছেদ পড়ল। কফিতে চুমুক দিয়ে দিনুকাকা একেনবাবুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তা এদিকে আসা হল কেন ডিটেকটিভ মশাইয়ের?”

“এসেছি স্যার এক বাঙালি ভদ্রলোক মারা গেছেন, তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর করতে।”

“কে অজয় দত্ত?”

“আপনি চেনেন স্যার?” একেনবাবু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন।

“এ অঞ্চলে ক’জন বাঙালি আছে? না, সেটা ঠিক কথা নয়। এখন অনেকেই আছে। কিন্তু অজয়কে ভালো করেই চিনতাম। কী স্যাড ব্যাপার বল তো? কয়েক মাস আগেও ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দ্য পুওর ফেলো।”

“তুমি কী করে চিনলে ওকে?” আমি জিজ্ঞেস করলাম।

“আরে সে এক কাহিনি। আমার অফিসে আই টি গ্রুপে সুব্রত বলে একটি ছেলে কনট্রাক্টর হিসেবে কাজ করত। সুব্রতই নিয়ে এসেছিল একদিন আমাদের বাড়িতে ওর বন্ধুকে। দু’টি একেবারে মানিকজোড়। দেখলে মনে হয় পিঠোপিঠি ভাই। তারপর বহুদিন দেখাসাক্ষাৎ হয়নি। গত বছর, দীপা তখনও বেঁচে- ওকে নিয়ে একদিন বার্গার হাউসে খেতে গিয়ে দেখি অজয় সেখানে ম্যানেজারের কাজ করছে।”

কেয়া একেনবাবুকে বলল, “দীপা আমার মায়ের নাম।”

“ও হ্যাঁ, তুমি তো সেটা জান না।”

“আমি বুঝেছি স্যার, আপনি বলুন।”

“কথায় কথায় অজয়ের কাছ থেকে জানলাম আগে যেখানে কাজ করত সেখানকার চাকরি যায়। তার ওপর সুব্রত আর ও যেখানে থাকত –কী সব ঝামেলার জন্যে সে জায়গাটা ছাড়তে হয়! সুব্রতর আই বি এম- এর কন্ট্রাক্ট তখন শেষ হবার মুখে। ও নিউ ইয়র্ক শহরে একটা কাজ পেয়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে অজয়ের চাকরি নেই, থাকার জায়গা নেই –বেশ ঝামেলার মধ্যে গেছে বেচারা। একটা ট্রান্সলেশন এজেন্সির হয়ে কিছু কাজ করত। তবে তাতে আর কতটুকু টাকা। লাকিলি এই বার্গার হাউসের মালিক ওর কলেজের এক বন্ধু। সে নতুন একটা ব্রাঞ্চ খোলায়, ও সেটা ম্যানেজ করার দায়িত্ব পায়। এর পরপরই দীপা অসুস্থ হয়ে পড়ল। অজয়ের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। দীপাকে হারালাম ৮ই ফেব্রুয়ারি। খবর পেয়ে ফিউনারেলে অজয় এসেছিল। দিন পনেরো আগে একদিন সুব্রত এল –কী একটা কাজ ছিল এদিকে, আমাকে হ্যালো বলে গেল। ওর কাছ থেকেই খবর পেলাম, অজয় ভালোই আছে। তবে মা অসুস্থ বলে দেশে গেছে। একটি বিধবা মেয়েকে বিয়ে করেছে। মেয়েটি রাশিয়ান –এক সময়ে ওদের প্রতিবেশীও ছিল।”

“মেয়েটির নাম নিশ্চয়ই নাদিয়া…”

“তুই তাকে চিনিস?”

“হ্যাঁ।”

“একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি বাপিদা!” কেয়া বলে উঠল।

“সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেন, গোয়েন্দা একেনবাবুকে কর?”

“জিজ্ঞেস করছি। কিন্তু তার আগে আপনাকে বলি,” একেনবাবুকে উদ্দেশ্য করে কেয়া বলল। “আপনার কথা কিন্তু আমি অনেক শুনেছি। বিশেষ করে মুনস্টোন মিস্ট্রির কাহিনি তো সবাই জানে। বাপিদাও তো কয়েকটা বই লিখেছে আপনাকে নিয়ে। সত্যি কী ভাল যে লাগছে!

“কী যে বলেন ম্যাডাম!”

“ওকে আবার ম্যাডাম বলছ কেন?” দিনুকাকা বললেন।

“আচ্ছা স্যার ম্যাডাম বলব না। মিস কেয়াদেবী।”

কেয়া কপট রাগ দেখিয়ে বলল, “আমি দেবি ফেবি নই। আর ‘মিস’ ও নয়। শুধু কেয়া।”

“কী মুশকিল!”

আমি বললাম, “কেয়া ছেড়ে দে, উনি স্যার বা ম্যাডাম ছাড়া আর কিছু বলতে পারেন না।”

“আপনি বউদিকে কী বলে ডাকেন? ম্যাডাম?” কেয়া প্রশ্ন করল।

“কী যে বলেন, উনি তো ফ্যামিলি!”

“আর আমি বুঝি আপনার বোন নই?”

“এরকম ভাবে বললে তো স্যার, করুণভাবে দিনুকাকার দিকে তাকালেন একেনবাবু। “..আচ্ছা, ঠিক আছে শুধু কেয়া।”

আমি কেয়াকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বললাম, “একমাত্র তুই-ই পারলি। আমি তো এখনও ‘স্যার’।

“তার কারণ তুমি মানুষকে আপন করতে জানো না! থাক ওসব কথা।” তারপর একেনবাবুকে বলল, “তুমি আমার একেনদা, বাবু-টাবু নয়। আর ‘আপনি’ ‘আপনি’ নয়, শুধু তুমি’। বোনকে কেউ ‘আপনি’ ডাকে?”

“বেশ,” একেনবাবু হাসি হাসি মুখে মাথা নাড়লেন।

“এবার রহস্যটা বল।”

“আসলে ম্যাডা… মানে কেয়া। এই নাদিয়ার সঙ্গে আমার গতকাল দেখা হয়েছে। উনি দুটো ডিস্টার্বিং ই-মেল পেয়েছেন –একই ই-মেল, কিন্তু দু’বার। বক্তব্য হল, নাদিয়াকে ছাড়ো, অথবা মৃত্যু। বাংলাটা আড়ষ্ট। মনে হচ্ছে যে লিখেছে সে বাংলা ভালো জানে না, অথবা ভান করছে না জানার। দুটোই ওঁর স্বামী এজেকে উদ্দেশ্য করে লেখা। তারপর এই মার্ডার।”

“ইন্টারেস্টিং। তোমাদের কাছে ই-মেলটা আছে?”

“তুইও কি গোয়েন্দাগিরি করবি নাকি!” আমি ঠাট্টা করলাম।

“কেন তুমি করতে পারলে আমি পারব না!”

“এই তো এখানে।” একেনবাবু পকেট থেকে ই-মেলের একটা কাগজ বার করলেন। কেয়া পড়ে বলল, “বাংলাটা তো মনে হচ্ছে খুব একটা শুদ্ধ নয়।”

“তুই এখনও বাংলা পড়তে পারিস?”

“বাপিদা! এখনও আমি সময় পেলে রবীন্দ্রনাথ পড়ি।”

“ঠিক আছে, ঠিক আছে। দেখ, কী দেখবি।”

“বাংলায় কিছু লিখেছে বলেই যে বাংলা জানতে হবে তার কোনো মানে নেই, বলতে বলতে কেয়া আই- ফোনটা বার করল। তারপর কোত্থেকে একটা বাংলা অ্যাপস ডাউনলোড করে লিখল ‘শেষ সতর্কবার্তা’Nadiya ত্যাগ করা আবশ্যক অথবা মৃত্যু। তারপর একটু খুটখুট করে বলল, “গুগল ট্রান্সলেটর’ ব্যবহার করলে এই বাংলাটার ইংরেজি হয় Last warning-Nadiya must leave or Death।

“গুগল ট্র্যান্সলেটর কি?”একেনবাবু জিজ্ঞেস করলেন।

আমি ট্র্যান্সলেটর সফটওয়্যার কী সেটা বললাম। “কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে অনুবাদ করা। ওদের গুগল কোম্পানি একটা অনুবাদের সফটওয়্যার করেছে সেই সাইটে ঢুকে আপনি ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় কিছু লিখে, আরেকটা ভাষায় তার অনুবাদ করে ফেলতে পারেন।”

“অ্যামেজিং স্যার, ট্রলি অ্যামেজিং। আগেও এটা শুনেছি। এখন চোখের সামনে দেখছি! কিন্তু যেমন বাংলা, তেমনই তো দেখছি ইংরেজি। দুটোই অশুদ্ধ।”

“মনে হচ্ছে যে লিখেছে, সে কোনোটাই জানে না।” আমি বললাম।

কেয়া একটু অন্যমনস্ক হয়ে বলল, “সেটা একটা সম্ভাবনা।”

“আচ্ছা এরকম ধরণের আর কোনো সফটওয়্যার কি বাজারে আছে?” একেনবাবু জিজ্ঞেস করলেন।

“হ্যাঁ, আরও দু’-একটা আছে, তবে তাতে বাংলা আছে কি না জানি না।” আর কিছু না বলে কেয়া বাড়ির ভেতরে চলে গেল।

.

একেনবাবু দিনুকাকার দিকে তাকিয়ে বললেন,”আপনার মেয়ে একজন জিনিয়াস স্যার! কী রকম চট করে বলে দিলেন, যে ই-মেল লিখেছে তার বাংলা না জানলেও চলবে!”

দিনুকাকুর মুখে কন্যাগর্বে একটা আত্মপ্রসাদের হাসি। “মেয়েটার মাথা বরাবরই খুব সাফ। শুধু বিয়েতেই আপত্তি!”

আমি বললাম, “আচ্ছা দিনুকাকা, তুমি আর মা কি এক স্কুলে পড়েছ, দু’জনের মুখেই খালি এক কথা –বিয়ে বিয়ে।”

“শুনছ একেন,” দিনুকাকা একেনবাবুকে সাক্ষী মানলেন, “ছেলেপুলেরা বিয়ে না করলে বাপ-মায়ের চিন্তা হয় না!”

“তা তো বটেই,স্যার।”

“দেখ তো কোনো ভালো যদি কাউকে পাও। শুধু রিসার্চ নিয়ে পড়ে থাকলে তো হবে! বাপিকে বলে তো কোনো লাভ নেই। ওকে কে দেখে তারই ঠিক নেই।”

আমার বিরক্তি লাগতে শুরু করেছে –এর থেকে টেকনোলজির জ্ঞান শোনা ভাল। তবে বেশিক্ষণ এটা চলল না। কেয়া এক গাল হাসি নিয়ে ফিরল।

“যা ভেবেছিলাম তাই, বাংলা ট্রান্সলেশনটা পুরোনো কোনো একটা ভার্সন থেকে করা। ফিলকে ফোন করতেই, ও চেক করে বলে দিল।”

দিনুকাকা জিজ্ঞেস করলেন,”ফিল কে রে, তোর বন্ধু?” দিনুকাকার ইন্টারেস্ট অন্যদিকে।

“না। জাস্ট এ কলিগ বাবা –তার বেশি কিছু ভাবতে যেও না।” বিরক্ত হয়ে কেয়া বলল।

আমি বললাম, “কী বলতে চাচ্ছিলি বল?”

“হ্যাঁ, যেটা জানলাম, সেটা হল বছরদুই আগের একটা ভার্সনে এই বাংলাটাকে ইংরেজি করলে হতো,Last warning– must leave Nadiya or Death।

“সেটাকে এখন বাংলায় ট্রানস্লেট করলে কি হত?”

কেয়া আবার আই-ফোনে গিয়ে ট্রানস্লেট করল।

“এখন হবে –’শেষবার বলছি Nadiya ত্যাগ করতে হবে বা মৃত্যু’।”

“ভাস্ট ইমপ্রুভমেন্ট।”

“ভেরি ইন্টারেস্টিং!”একেনবাবু উত্তেজিত হয়ে বললেন।

কেয়া বলল, “আসলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা টুকরো টুকরো শব্দগুচ্ছ ম্যাচ করে অনুবাদগুলো করা হয়। সুতরাং সময়ের সঙ্গে এগুলো পালটাতে থাকে।”

“সত্যি স্যার।” আমার দিকে তাকিয়ে একেনবাবু বললেন। “বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু আমরা জানি! ভাগ্যিস ম্যাডাম, মানে আমাদের কেয়াদিদি ছিল।”

“তাহলে একেনদা, আমিও এখন থেকে তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট তো?”

“আরে কী আশ্চর্য, অ্যাসিস্ট্যান্ট কেন? আমরা সবাই রাজা।” কিছুক্ষণ এরকম হাসিঠাট্টা চলার পর একেনবাবু দিনুকাকাকে জিজ্ঞেস করলেন,”আচ্ছা স্যার, আপনি কি এখানকার পুলিশ চিফ, টিম হোরেকে চেনেন?”

“হ্যাঁ, আমরা দুজনেই চিনি,” বলে দিনুকাকা কেয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন।

কেয়া বলল, “টিম হোরে হচ্ছে, তিমির হোড়। আমার ছেলেবেলার বন্ধু। স্কুলে সবাই খ্যাপাত বলে হোড়টা হোরে করেছে। টিমির থেকে টিম হয়েছে।”

আমি বললাম,”তুই যখন এত চিনিস, আমাদের নিয়ে চল না।”

“বেশ চলো, আমি কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারব না, আমার একটা কনফারেন্স কল আছে।”

“বাড়িতে এসেও অফিসের কাজ করছিস?”

“বেড়াতে তো আসিনি, টেলিকমিউট করছি। বাবা এত একা হয়ে গেছে, মাঝে মাঝেই আসি। কয়েকদিন থাকি, টেলিকমিউট করি বলে ছুটি নিতে হয় না।”