০৭. কিরীটীর মনের মধ্যে চিন্তাস্রোত

কিরীটীর মনের মধ্যে চিন্তাস্রোত অব্যাহত থাকে।

পৌনে এগারোটা থেকে পৌনে বারোটার কিছু আগেই মনে হচ্ছে নির্বাণীতোষকে হত্যা করা হয়। খুব সম্ভবত এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টও সেই রকমই বলেছে। ঐ সময়ের মধ্যেই নাকি নির্বাণীতোষের মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের অনুমান। হত্যাকারীর পক্ষে উৎসবের রাত্রে বিশেষ যে সুবিধা দুটি ছিল তা হচ্ছে : প্রথমত সে রাত্রে বাড়িতে উৎসবের জন্য দ্বার ছিল অবারিত। কত লোক যে এসেছিল তার সঠিক বিবরণ কারও পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়। এবং সকলকে চেনাও সকলের পক্ষে সম্ভব ছিল না। সেই ভিড়ের মধ্যে হত্যাকারী চেনা হোক বা অচেনা হোক, কারও মনেই কোন সন্দেহ জাগবার হেতু ছিল না। অন্ততঃ সেদিক দিয়ে হত্যাকারী খুবই নিশ্চিত ছিল, কেউ তাকে সন্দেহ করবে না। অনায়াসেই সে কাজ হাসিল করে চোখের সামনে দিয়েই বের হয়ে যেতে পারবে সে জানত আর তাই সে সম্ভবত গিয়েছেও।

দ্বিতীয়ত, উৎসবের রাত্রে হত্যা যেখানে সংঘটিত হয়েছে সেই তিনতলায় কেউ বড় একটা যায় নি। যারার প্রয়োজনও ছিল না। সেদিক দিয়েও হত্যার স্থানটি নিরিবিলি এবং সবার চোখের আড়ালেই ছিল। কাজেই হত্যাকারীর পক্ষে নিঃশব্দে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে চলে যাওয়া আদৌ কোন কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল না।

খুব কৌশলে এবং নিশ্চিন্তে হত্যাকারী তার কাজ শেষ করেছে ঠিকই, কিন্তু তথাপি দুটি অসঙ্গতি যেন কিরীটীর প্রথম থেকেই মনের মধ্যে তাকে কেবলই কোন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রথমত শিখেন্দুর জবানবন্দি থেকেই জানা যায়, চিৎকার শুনে ওপরে গিয়ে ওঠবার পর সে নির্বাীতোষের শয়নঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়েছিল। নিশ্চয়ই দরজাটা ঐ সময় খোলা ছিল, নচেৎ সে ভিতরে প্রবেশ করতে পারত না। দ্বিতীয়ত, বাথরুমের দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। একটা অবিশ্যি এর মধ্যে কথা থাকতে পারে, প্রথমটা দ্বিতীয়টার পরিপূরক হতে পারে। কিন্তু তাও তো প্রমাণসাপেক্ষ এবং সে প্রমাণ একমাত্র দিতে পারে দীপিকাদেবী, অর্থাৎ সে ঘরে ঢোকার পর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল কিনা, যদিও সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু দীপিকা তার পূর্ণ স্মৃতি হারিয়েছে নিদারুণ মানসিক আঘাতে।

শিবতোষের ফ্যামিলি-ফিজিসিয়ান ডাঃ চৌধুরীরই অনুরোধে সিকায়াট্রিস্ট ডাঃ বর্মণকে আনা হয়েছিল। তিনি দীপিকাকে পরীক্ষা করে সেই অভিমতই নাকি প্রকাশ করেছেন। যদিও বলেছেন ডাঃ বর্মণ, দীপিকার পূর্ণ স্মৃতি আবার ফিরে আসবে, তবে কবে কখন হবে সে সম্পর্কে কোন ভবিষ্যদ্বাণীই তিনি করতে পারেননি। সেটা নাকি সম্ভবও নয়।

ডাঃ বর্ষণের কথা অবিশ্যি ঠিক, কোন নিদারুণ আকস্মিক মানসিক আঘাতের ফলেই দীপিকার ঐ মনের মানসিক বিপর্যয় ঘটেছে। কিন্তু সেটা কি তার স্বামীকে আকস্মিক মৃত আবিষ্কার করার জন্যই, না তার সঙ্গে আরও কিছু ছিল?

কিরীটীর অনুমান আরও কিছু ছিল। এবং সে ব্যাপারটা, ওর স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর আঘাতের মতই অনুরূপ আঘাত হেনেছিল তার মনে, যার ফলে বেচারী আর তার মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে নি। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল সে ও স্মৃতিশক্তিও লোপ পেয়েছে তার। এবং কিরীটীর আরও অনুমান, সবই বাথরুমের মধ্যে ঘটেছিল। ঐ বাথরুমের মধ্যেই হত্যারহস্যের মীমাংসার আসল সূত্রটি অন্ধকারে দৃষ্টির অগোচরে জট পাকিয়ে আছে। এবং সে জট খুলতে হলে সর্বাগ্রে জানা প্রয়োজন, কে কে সে রাত্রে তিনতলায় গিয়েছিল? কখন গিয়েছিল? শিখেন্দু, নির্বাণীর বোন স্মৃতি, আর সেই নীলবসনা নারী।

পরের দিন সকালে সারকুলার রোডে শিখেন্দুদের মেসে গিয়ে হাজির কিরীটী। সকাল সাতটার মধ্যেই গিয়েছিল কিরীটী। কারণ সে জানত দেরী করে গেলে তাদের সঙ্গে দেখা হবে না, সবাই হাসপাতালে বের হয়ে যাবে।

শিখেন্দু বরাবরই সকালে ওঠে, তার স্নান পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে ডিউটিতে যেতে হবে বলে তখন সে জামাকাপড় পরছে। সঞ্জীব সদ্য সদ্য ঘুম ভেঙ্গে একটা সিগারেট ধরিয়ে এক পেয়ালা চা নিয়ে বসেছে।

শিখেন্দুবাবু!

কিরীটীর ডাকে শিখেন্দু চোখ তুলে দরজার ওপরে দেখে বললে, কিরীটীবাবু! আসুন, আসুন। সঞ্জীব, ইনি কিরীটী রায়।

সঞ্জীবও কিরীটীর দিকে তাকাল।

নির্বাণীতোষের অন্যান্য ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে একটু পরিচিত হতে এলাম।

বসুন। শিখেন্দু বললে।

আপনি সঞ্জীববাবু?

কিরীটীর প্রশ্নে তার মুখের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে সম্মতিসূচক ঘাড় হেলাল সঞ্জীব।

আপনি তো বোধ হয় সে-রাত্রে বেলতলার বাড়িতে উৎসবে যান নি?

না।

বন্ধুর বৌভাতে গেলেন না?

আমাদের ক্লাবে সে-রাত্রে থিয়েটার ছিল।

আপনি অভিনয় করেছিলেন?

হ্যাঁ।

শিখেন্দু বললে, ও খুব ভাল অভিনয় করে কিরীটীবাবু।

তাই বুঝি? তা সে-রাত্রে আপনাদের কি নাটক অভিনয় হল?

বহ্নিশিখা। শিখেন্দু বললে।

কল্যাণীর পার্ট করেছি। সঞ্জীব বললে।

শিখেন্দু বললে, ও খুব চমৎকার ফিমেল রোল করে কিরীটীবাবু।

কিরীটী মৃদু হেসে বললে, সে ওঁর গলার স্বর ও চেহারা থেকেই বোঝা যায়। আজকাল তো ফিমেল বোল সর্বত্র মেয়েরাই করে শুনেছি।

আমাদের ক্লাবে এখনও কোন ফিমেল নিয়ে আমরা অভিনয় করিনি।

সঞ্জীবের কথা শেষ হবার আগেই বাইশ-তেইশ বছরের এক তরুণ ছোকরা ঘরে এসে ঢুকলীরোগা পাতলা চেহারা, মাথায় বড় বড় চুল, মুখের গঠনটা যেন ঠিক মেয়েদের মত।

সঞ্জীববাবু!

কে–ও তপনবাবু?

আমার পুরো টাকাটা তো সে-রাত্রের এখনও পেলাম না।

কেন, হিমানীশ দিয়ে দেয়নি?

না। বললেন, আপনার সঙ্গে আগে কথা বলবেন তারপর। কিন্তু আপনার সঙ্গে আমার কথা ছিল সেই রাত্রেই টাকাটা মিটিয়ে দেবেন।

ছেলেটির গলার স্বর অবিকল মেয়েদের মত।

সঞ্জীব বললে, কত বাকি আছে?

পঞ্চাশ।

সঞ্জীব উঠে গিয়ে জামার পকেট থেকে পার্সটা বের করে দশ টাকার পাঁচখানা নোট তপনকে দিয়ে বললে, এই নিন, এখন যান, আমরা একটু ব্যস্ত আছি।

ধন্যবাদ, নমস্কার।

তপন চলে গেল। শুধু চেহারা এবং কণ্ঠস্বরই নয়, চলার ভঙ্গীও তপনের ঠিক মেয়েদের মত। কিরীটী নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে ছিল তপনের গমনপথের দিকে। তপন ঘর থেকে বের হয়ে যাবার পর কিরীটী সঞ্জীবের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলে, ভদ্রলোক কে?

তপন শিকদার। যাত্রাদলে অভিনয় করে। মৃদুকণ্ঠে বললে সঞ্জীব।

কোন্ যাত্রার দলে?

নবীন অপেরায়।

কিরীটী আবার শিখেন্দুর মুখের দিকে তাকাল, শিখেন্দুবাবু, পরেশবাবু আর নির্মলবাবু কোন্ ঘরে থাকেন?

পাশের ঘরেই, ডাকছি তাদের। শিখেন্দু গলা তুলে ডাকল, নির্মল পরেশ একবার এ ঘরে আয়। দুজনেই যেন হাসপাতালে বেরুবার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল, শিখেন্দুর ডাক শুনে ওদের ঘরে ঢুকল।

কিরীটীবাবু, এর নাম পরেশ আর ও নির্মল বলে ওদের দিকে তাকিয়ে কথা শেষ করল শিখেন্দু। পরেশ, ইনি কিরীটী রায়।

নির্মল কোন কথা বলল না। পরেশ মৃদু কণ্ঠে বললে, না বললেও ওঁকে ঘরে ঢুকেই আমি চিনতে পেরেছিলাম শিখেন্দু,কাগজে ওঁর ছবি আমি দেখেছি।

কিরীটী কথা বললে, আপনারা তো দুজনেই সে-রাত্রে আপনাদের বন্ধুর বৌভাতে গিয়েছিলেন?

হ্যাঁ। দুজনেই বললে।

দুজনেই আপনারা পাশের ঘরেতেই থাকেন?

হ্যাঁ।

সে রাত্রে দুজনে একসঙ্গেই গিয়েছিলেন, একসঙ্গেই ফিরেছিলেন কি?

না। পরেশ বললে, আমি রাত নটা নাগাদ গিয়েছিলাম। কারণ আমার এক পিসিমার বাড়িতে ভবানীপুরে যেতে হয়েছিল, সেখান থেকে যাই বেলতলায়, তারপর দশটার দু-চার মিনিট পরেই চলে এসেছি, নির্বাণী তখনও প্যাণ্ডেলে ছিল।

কি করে বুঝলেন রাত তখন দশটা বেজে দু-চার মিনিট হবে? আপনার হাতে কি ঘড়ি ছিল? ঘড়ি দেখেছিলেন?

সঞ্জীব বললে, ওর তো হাতঘড়িটা কিছুদিন আগে হাসপাতালে খুলে রেখে টেবিলে কাজ করছিল, চুরি গেছে। তার পর তো তুই ঘড়ি কিনিস নি পরেশ!

না, কিনিনি। কেমন যেন বোজা গলায় কথাটা উচ্চারণ করল পরেশ।

তবে? তবে সময়টা বুঝলেন কি করে? কিরীটী প্রশ্ন করল।

মানে আন্দাজ, ঐরকমই হবেভেবেছিলাম। পরেশবললে আবার পূর্ববৎ নিস্তেজ গলাতেই।

তারপর আপনি কোথায় যান? কিরীটীর প্রশ্ন।

কোথায় আর যাব, এখানেই ফিরে আসি।

আপনাদের এ ঘরে টেবিলের ওপরে তো দেখছি একটা ছোট ক্লক রয়েছে, কার ওটা?

শিখেন্দুর।

ফিরে এসে ঘড়িটা দেখেছিলেন?

দেখেছি।

রাত তখন কটা?

পৌনে বারোটা, মানে—

দশটা বাজার দু-চার মিনিট পরেই যদি বের হয়ে থাকেন তো ফিরতে আপনার প্রায় দুঘন্টার মত সময় লাগল কেন? হেঁটে নিশ্চয়ই আসেননি?

না, বাসে।

বাসে! ঐ সময় রাত্রে এই পথটুকু আসতে অত সময় লাগতে পারে না পরেশবাবু। পারে কি?

না না।

তবে? রাস্তায় জ্যাম ছিল?

জ্যাম!

হ্যাঁ। তাহলে অবিশ্যি দেরি হতে পারে কিছুটা,–তাহলেও প্রায় দুঘন্টা।

হঠাৎ পরেশ যেন একটু চটে ওঠে, বললে, আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করছেন না?

কেন করব না! কিরীটী মৃদু হাসল।

তবে?

সত্যি বললে, বিশ্বাসযোগ্য হলে নিশ্চয়ই আপনার সব কথাই বিশ্বাস করব, পরেশবাবু।

মানে?

মানে আপনি সত্যি বলছেন না!

আমি মিথ্যা বলছি? মিথ্যা বলে আমার লাভ?

লাভ যদি সত্যিই কিছু থাকে, সেটা তো আমার চাইতে আপনারই বেশী জানার কথা পরেশবাবু! কিরীটীর গলার স্বর যেমন ঠাণ্ডা তেমনিই শান্ত।

আপনার তাহলে কি ধারণা নির্বাণীকে আমিই হত্যা করেছি?

পরেশবাবু, উত্তেজিত হবেন না। নির্বাণীতোষবাবু আপনাদের সকলেরই বন্ধু ছিলেন এবং আপনাদের পাঁচজনের মধ্যে একটু বেশীই ঘনিষ্ঠতা ছিল। শুধু তাই নয়, দীপিকাও আপনাদের বান্ধবী। আপনারা সকলেই তাঁকে ভালবাসেন, তাঁর এত বড় দুর্দিনে আপনাদের প্রত্যেকেরই কি কর্তব্য নয় সেক্ষেত্রে নির্বাণীতোষের হত্যাকারীকে যাতে আমরা খুঁজে বের করতে পারি সে ব্যাপারে সাহায্য করা!

কেন করব না। নিশ্চয়ই করব। পরেশ বললে।

নির্মলবাবু আপনি? সহসা কিরীটী নির্মলের দিকে ফিরে প্রশ্ন করল, আপনি কি বলেন?

নিশ্চয়ই তো, পরেশ ঠিকই বলেছে।

আপনি কখন ফিরেছেন সে-রাত্রে নির্মলবাবু? কখন সেখান থেকে বের হয়েছিলেন?

কিরীটীর প্রশ্নে সকলেরই চোখের দৃষ্টি একই সঙ্গে যেন নির্মলের মুখের উপরে গিয়ে স্থির হল। এবারও সঞ্জীবই বললে, ও ফিরেছে রাত তখন বোধ হয় সোয়া বারোটা হবে।

বেলতলার বাড়ি থেকে আপনি বের হয়েছিলেন কখন সে-রাত্রে নির্মলবাবু? কিরীটীর প্রশ্ন।

ও সেদিন বলছিল রাত দশটার পরেই নাকি বের হয়ে এসেছিল বেলতলার বাড়ি থেকে। আবার সঞ্জীব বললে।

তার মানে আপনারও প্রায় দুঘণ্টার কিছু বেশী সময়ই লেগেছিল ফিরতে সে-রাত্রে। কিরীটী বলে।

নির্মল কোন জবাব দেয় না, চুপ করে থাকে।

শিখেন্দুবাবু আপনি জানেন, উনি কখন বের হয়ে এসেছিলেন বেলতলার বাড়ি থেকে? কিরীটী আবার প্রশ্ন করল।

না, দেখিনি।

আপনি তো পৌনে এগারোটা পর্যন্ত প্যাণ্ডেলেই ছিলেন শিখেন্দুবাবু, আপনি তবু জানেন না?

শিখেন্দু ম্লান গলায় জবাব দিল, লক্ষ্য করিনি কখন নির্মল বের হয়ে এসেছে!

আর আমি যদি বলি শিখেন্দুবাবু, দশটার কিছু আগে থাকতেই, সাড়ে দশটা পর্যন্ত আপনি প্যান্ডেলে ছিলেন না বলেই ব্যাপারটা জানতে পারেননি!

না না। আমি তো তখন প্যাণ্ডেলেই ছিলাম।

না, ছিলেন না। কিরীটীর গলার স্বর ঋজু ও কঠিন শোনাল।

তবে কোথায় ছিলাম?

সেটা আপনিই ভাল জানেন। আমার পক্ষে সেটা তো জানা সম্ভব নয়।

সবাই চুপ। সবাই যেন বিব্রত কেমন।

সঞ্জীববাবু!

কিরীটীর ডাকে এবার সঞ্জীব ওর দিকে তাকাল।

আপনি তো থিয়েটার করছিলেন?

হ্যাঁ।

কখন থিয়েটার শুরু হয়েছিল?

একটু দেরী হয়েছিল, রাত পৌনে আটটায়—

কখন শেষ হল?

রাত সোয়া এগারটায়।

তারপরেই আপনি বোধ হয় চলে আসেন?

হ্যাঁ।

মাঝখানে মানে থিয়েটার চলাকালীন সময়ে আপনি কোথাও যাননি?

না।

আপনাদের ক্লাবের নাম কি?

পাইকপাড়া স্পোর্টস ইউনিয়ন।

কিরীটী অতঃপর কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। পরে শান্ত গলায় বললে, শিখেন্দুবাবু নির্মলবাবু পরেশবাবু সঞ্জীববাবু—আমার মনে হয় আপনাদের সকলেরই দুর্বলতা ছিল দীপিকার ওপরে!

কি বলছেন আপনি? সঞ্জীব প্রতিবাদ জানায়।

কথাটা যে মিথ্যা নয়, আমার অনুমান হলেও সেটা আপনারা প্রত্যেকেই জানেন। আর এও আমি বলছি, আপনাদের মধ্যে কেউ একজনও এও জানেন—নির্বাণীতোষের হত্যাকারী কে।

সঞ্জীব আবার প্রতিবাদ জানায়, আমরা জানি?

হ্যাঁ। তার প্রমাণ, কেউ আপনারা সত্যি কথা বলতে নারাজ। এবং কতকটা ইচ্ছা করেই সত্যি কথা প্রকাশ করছেন না। রাত দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত আপনারা কে কোথায় ছিলেন? আজ আমি উঠছি, আপনাদের আর ডিটেন করব না, কিন্তু আবার আমাদের দেখা হবে। নমস্কার।।