০৬. রিশান নিডিয়াকে নিয়ে

রিশান নিডিয়াকে নিয়ে যখন মানুষের এই বসতিটি পরীক্ষা করে দেখছিল তখন লি–রয় আর ফুন বসতির মূল তথ্যকেন্দ্রে এই গ্রহ সম্পর্কে কী কী তথ্য রয়েছে সেগুলোতে চোখ বুলাতে শুরু করল। তথ্যগুলো সুবিন্যস্ত নয়, এই বসতির মানুষেরা সত্যিকার মানুষের জীবন যাপন করে নি–গ্রহান্তরে মানুষের বসতিতে যে ধরনের নিয়মকানুন মানার কথা সে ধরনের নিয়ম। এখানে মানা হয় নি। কাজেই গ্রহ এবং প্রহের নিম্নস্তরের প্রাণ গ্রুনি সম্পর্কে তথ্যগুলো ছিল ছড়ানো ছিটানো। তথ্যগুলো সগ্রহের ব্যাপারে চার জন মানুষ খুব বেশি সাহায্য করতে পারল না। দীর্ঘদিন থেকে এক ধরনের আতঙ্কিত জীবন যাপন করে তারা খানিকটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে গেছে।

রিশান এবং নিডিয়াও বসতিটি পরীক্ষা করতে গিয়ে আবিষ্কার করল এটি দীর্ঘদিন থেকে মনুষ্য বাসের অনুপযোগী। মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে দৈনন্দিন যেসব বিষয়ের প্রয়োজন এখানে সেগুলোও নেই। সমস্ত বসতিটি অগোছালো এবং নোরা। রসদপত্র ছড়ানো ছিটানো নিরাপত্তার ব্যাপারগুলো অনিয়মিত। বসতিটিতে ঘোলাটে এক ধরনের আলো এবং সেই আলোতে সবকিছুকে কেমন জানি ভূতুড়ে দেখায়। তাপমাত্রা নিয়মিত নয় এবং থেকে–থেকেই তারা শীতে কেঁপে কেঁপে উঠছে। পুরো বসতিটিতে এক ধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, যে, কোনো স্বাভাবিক মানুষ এখানে থাকলে কিছুদিনের মাঝে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাবার কথা। রিশান এবং নিডিয়া মানুষের বসতিটি পরীক্ষা করতে করতে তৃতীয় স্তরে প্রবেশ করল, এখানে বড় বড় শীতলঘরে নানা ধরনের রসদ মজুদ থাকার কথা। রসদগুলো পরীক্ষা। করতে করতে তারা একটি ঘরে হাজির হল। ভন্টের গোপন সংখ্যা প্রবেশ করাতেই দরজাটি ঘরঘর শব্দে খুলে যায় এবং সাথে সাথে দুজনে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে। ঘরের দেয়ালে সারি সারি মানুষের মৃতদেহ। মৃতদেহগুলো সংরক্ষণের জন্যে কোনো এক বিচিত্র কারণে দেয়ালের সাথে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে এবং সেগুলো এক ধরনের শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পুরো ব্যাপারটিতে এক ধরনের বিচিত্র অস্বাভাবিকতা যেটি সহ্য করার মতো নয়। নিডিয়া রিশানের হাত জাপটে ধরে বলল, দরজাটা বন্ধ করে দাও।

দিচ্ছি, এক সেকেন্ড। আমাকে একটি জিনিস দেখে নিতে দাও।

কী দেখবে?

মানুষগুলোকে

তোমার পর্যবেক্ষণ যন্ত্রে ছবি উঠে গেছে, তুমি সেখানে দেখতে পারবে। চল যাই।

হ্যাঁ যাচ্ছি।

রিশান যাবার আগে আবার তাকাল, একসাথে সে আগে কখনো এতগুলো মৃতদেহ দেখেছে কি না মনে করতে পারে না। আর মৃতদেহগুলো রেখেছে কী বিচিত্রভাবে, দেখে মনে হয় হঠাৎ সবাই হেঁটে বের হয়ে আসবে। কিছু পুরুষ এবং কিছু মেয়ে, সেই কোন সুদূর পৃথিবী থেকে এসে এই কদর্য গ্রহটিতে জীবন দিয়েছে।

নিডিয়া তখনো রিশানের হাত ধরে রেখেছিল, কাঁপা গলায় বলল, আমার ভালো লাগছে না, চল ফিরে যাই।

ফিরে যাবে? বেশ। তুমি যাও আমি বাকিটুকু দেখে আসি।

না। নিডিয়া মাথা নেড়ে বলল, আমার একা যেতে ভয় করছে। তুমিও আস।

রিশান অবাক হয়ে নিডিয়ার দিকে তাকাল, ভয় করছে? কিসের ভয়?

জানি না। আমি একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না, হঠাৎ করে এতগুলো মৃতদেহ দেখে কেমন জানি সমস্ত শরীর কাঁটা দিয়ে উঠেছে। নিডিয়া আবার শিউরে ওঠে।

রিশান আর নিডিয়া ফিরে এসে দেখে তথ্যকেন্দ্রের বড় মনিটরের সামনে লি–রয় আর ষুন বসে আছে এহের চার জন অপ্রকৃতিস্থ মানুষ জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কাছে। লি রয় মানুষগুলোকে জিজ্ঞেস করল, তথ্যকেন্দ্রের অনেক তথ্য দেখি নষ্ট করা হয়েছে। কেন নষ্ট করলে?

চার জন মানুষের মাঝে যে মানুষটি তুলনামূলকভাবে বয়স্ক একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, কিছু করার নেই, তাই—

তাই মূল্যবান তথ্য নষ্ট করবে?

মূল্যবান নয়। সব তথ্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়ে গেছে—

লি–রয় চিন্তিত মুখে মনিটরটির দিকে তাকিয়ে রইল।

রিশান জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার লি–রয়?

এখানে সবকিছু কেমন জানি খাপছাড়া। তথ্যকেন্দ্রে নানা ধরনের গোলমাল রয়েছে। অনেক রকম মূল্যবান তথ্য নষ্ট করা হয়েছে।

কেন?

জানি না। তবে পৃথিবীর একটা নির্দেশ আছে এখানে।

কী নির্দেশ?

এই দেখ, আমি শোনাচ্ছি তোমাদের।

নিডিয়া আর রিশান কাছে এগিয়ে গেল। পৃথিবীর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা, গোপনীয়তার মাত্রা, প্রয়োজনীয় কোড নাম্বার সবকিছু শেষ করে নির্দেশটি শুরু হল। ছয় লাল তারার একজন বয়স্ক মানুষ হলোগ্রাফিক স্ক্রিনে জীবন্ত হয়ে আসে। একটা লম্বা নিশ্বাস ফেলে মানুষটি কথা বলতে শুরু করে, আমি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান এম সাতর। আমি আমার পদাধিকার বলে এবং আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিচ্ছি। সৌরজগৎ থেকে প্রায় এক আলোকবর্ষ দূরে এই গ্রহটি, যার অবস্থান নিষাদ স্কেলে চার চার শূন্য চার তিন এবং পাঁচ পাঁচ আট চার ছয় এবং যেখানে মানুষের অভিযান তিন তিন দুই চার সুসম্পন্ন হয়েছে, আমি সেই গ্রহের মানুষদের কিংবা যারা তাদের সাথে যোগাযোগ করতে এসেছে সেই মানুষদের এই নির্দেশ দিচ্ছি।

এই গ্রহটিতে একটি নিম্নস্তরের প্রাণ আবিষ্কৃত হয়েছে। দীর্ঘ সময় এই প্রাণীটির ওপর গবেষণা করা হয়েছে এবং দেখা গেছে এটি একটি এককোষী প্রাণী। এই প্রাণীটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আমাদের সগ্রহ করা হয়েছে এবং এই মুহূর্তে সেটি সম্পর্কে আমাদের কোনো কৌতূহল নেই। কিন্তু এই গ্রহটি সম্পর্কে আমাদের কৌতূহল রয়েছে। সৌরজগৎ থেকে বের হয়ে ছায়াপথের দিকে যাত্রা শুরু করার সময় এই গ্রহটি পৃথিবীর মানুষের জন্যে একটি সাময়িক আবাসস্থল হতে পারে। এর অবস্থান নানা কারণে আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের ধারণা হয়েছে এই গ্রহের এককোষী প্রাণীটি–যেটি একটি জীবাণু ছাড়া আর কিছু নয়, মানুষের নিরাপত্তার জন্যে একটি হুমকিস্বরূপ।

পুরো ব্যাপারটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে পৃথিবীর মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে এই গ্রহটিকে জীবাণুমুক্ত করা হবে। কাজেই এই মর্মে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই গ্রহের এককোষী প্রাণীগুলোকে ধ্বংস করার জন্যে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। দীর্ঘদিনের গবেষণার কারণে আমরা নিশ্চিতভাবে জানি কীভাবে এই জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করা সম্ভব। তার জন্যে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্যাদি প্রস্তুত করার জন্যে কিংবা নিয়ে আসার জন্যে অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য রয়েছে মহাকাশ নির্দেশমালা তিন তিন চার নয় অনুচ্ছেদের সাত সাত আট চার অংশে।

লি–রয় মনিটর স্পর্শ করে হলোগ্রাফিক ছবিটি অদৃশ্য করে দিয়ে বলল, নির্দেশটা এখানেই শেষ, এরপরে রয়েছে নানারকম ঘুঁটিনাটি।

রিশান অন্যমনস্কভাবে নিজের চুলে আঙুল প্রবেশ করিয়ে বলল, কিছু একটা গোলমাল আছে এখানে।

সবাই ঘুরে তাকাল রিশানের দিকে। ষুন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রিশানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, কী গোলমাল?

আমি জানি না কী, কিন্তু কিছু একটা গোলমাল আছে। একটা জীবন্ত প্রাণীকে এত সহজে ধ্বংস করার কথা নয়।

ষুন বলল, এটা কোনো জীবন্ত প্রাণী নয়। এটা জীবাণু। মানুষ অতীতে অনেক জীবাণু। ধ্বংস করেছে। আমি যতদূর জানি বসন্ত নামে একটা ভয়াবহ রোগ ছিল পৃথিবীতে, সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে সেটি পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।

লি–রয় বলল, এই জীবাণুটি তো পুরোপুরি ধ্বংস করা হচ্ছে না। তার নমুনা নিশ্চয়ই রাখা আছে কোথাও। যদিও আমি জানি না এই নমুনাটি কী কাজে লাগবে!

রিশান চিন্তিত মুখে বসতির চার জন অপ্রকৃতিস্থ মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকে, ঠিক বুঝতে পারছে না কী, কিন্তু কিছু একটা গোলমাল আছে কোথাও সেটা কী ধরতে পারছে না।

ষুন লি–রয়কে বলল, আমাদের কাজ তাহলে খুব সহজ হয়ে গেল। এই চার জন মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা, গ্রহটিকে জীবাণুমুক্ত করা, তারপর আবার আগের কাজে ফিরে যাওয়া।

কিছু একটা গোলমাল আছে এখানে। রিশান মাথা নেড়ে বলল, কিছু একটা গোলমাল আছে।

ষুন রিশানের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি যদি না জান গোলমালটা কোথায়, তাহলে সেটা নিয়ে চেঁচামেচি করে তো কোনো লাভ নেই।

রিশান ষুনের কথা শুনল বলে মনে হল না। সে হঠাৎ ঘুরে অপ্রকৃতিস্থ চার জন মানুষের দিকে তাকাল, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাদের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে হঠাৎ কঠোর স্বরে জিজ্ঞেস করল, এখানে সবাই মারা গিয়েছে, তোমরা চার জন কেন মারা যাও নি?

চার জন মানুষ এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে রিশানের দিকে তাকিয়ে রইল, কোনো কথা বলল না। রিশান চোখের দৃষ্টি আরো তীক্ষ্ণ করে বলল, তোমরা পৃথিবীতে ফিরে না গিয়ে এই নির্জন গ্রহে রয়ে গেলে কেন?

আমাদের মহাকাশযান নষ্ট হয়ে গেছে।

কেমন করে নষ্ট হল?

আমরা জানি না।

পৃথিবীতে খবর পাঠালে না কেন?

পাঠিয়েছি।

রিশান কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারা আরো কিছু বলবে ভেবে কিন্তু মানুষগুলো কিছু বলল না। রিশান আবার তীব্র গলায় বলল, এখানে সব মানুষ মারা গিয়েছে কিন্তু তোমরা কেন মারা যাও নি? বল

নিডিয়া রিশানের হাত স্পর্শ করে বলল, তুমি শুধু শুধু উত্তেজিত হচ্ছ রিশান, তারা মারা যায় নি সেটা তাদের অপরাধ হতে পারে না।

ষুন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বিশানের দিকে তাকিয়েছিল। এবারে ঘুরে লি–রয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, লি–রয়, আমাদের কি বিশানের উত্তেজিত কথাবার্তা শোনার প্রয়োজন আছে? আমরা কি আমাদের কাজ শুরু করতে পারি? আরো দুটি স্কাউটশিপ, প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্যাদি, যন্ত্রপাতি নামাতে পারি?

পার। তুমি কাজ শুরু করে দাও ষুন।

ষুন যোগাযোগ মডিউলটা কাছে টেনে নিয়ে কথা বলতে শুরু করছিল, হঠাৎ রিশান চিৎকার করে বলল, দাঁড়াও।

কী হয়েছে?

ওই দেখ। রিশান আঙুল দিয়ে দেয়ালের দিকে দেখায়।

কী? লি–রয় অবাক হয়ে বলল, কী?

রিশান এগিয়ে গিয়ে নিচু হয়ে বসে দেয়ালের দিকে তাকায়। সেখানে কাঁচা হাতে লেখা, আমি রবোটকে ঘৃণা করি।

রিশান ঘুরে তাকাল মানুষ চার জনের দিকে, বিস্ফারিত চোখে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, আমি জানি তোমরা চার জন কেন মারা যাও নি। তোমরা আসলে মানুষ নও।

মানুষ চার জন কোনো কথা বলল না। কেমন জানি বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে রইল

রিশান এটমিক ব্লাস্টারটি টেনে নিয়ে চিৎকার করে বলল, তোমরা রবোট।

মানুষ চার জন কোনো কথা বলল না

নিডিয়া আর্তচিৎকার করে বলল, হায় ঈশ্বর!

রিশান এটমিক ব্লাস্টারটা টেনে গুলি করার জন্যে লক ইন করে হুঙ্কার দিয়ে বলল, কথা বল আবর্জনার দল, না হয় গুলি করে তোমাদের ফাপা কপোট্রন গুঁড়ো করে দেব। তোমরা রবোট?

হ্যাঁ।

আগে বল নি কেন?

তোমরা জিজ্ঞেস কর নি।

রিশান অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত করে জিজ্ঞেস করল, দেয়ালে এই লেখাটা কার?

সানির।

সানি?

হ্যাঁ।

কে সে?

একটা ছেলে। দশ বছর বয়স।

কোথায় সে?

রবোট চারটি কোনো কথা বলল না

রিশান চিৎকার করে বলল, কথা বল

জানি না।

জান না?

না। বসতি থেকে বের হয়ে গেছে।

দশ বছরের একটা বাচ্চা ছেলে একা একা এই বসতি থেকে বের হয়ে গেছে?

রবোট চারটি কোনো কথা বলল না। রিশান এটমিক ব্লাস্টারটা ঝাঁকুনি দিয়ে বলল, আবর্জনার বাটি, নোংরা প্লাস্টিক, সত্যি কথা বল, না হয় এক সেকেন্ডে তোমাদের কপোট্রন আমি ধুলো করে উড়িয়ে দেব! তোমাদের মহাকাশযান কেমন করে নষ্ট হয়েছে?

রবোট চারটি কোনো কথা বলল না।

কথা বল।

গ্রুনিরা ইঞ্জিন ক্যাপের সেফটি বালব খুলে নিয়ে গেছে। কন্ট্রোল প্যানেলের মূল প্রসেসর নষ্ট করেছে। ভ্যাকুয়াম সিল কেটে দিয়েছে। জ্বালানি ট্যাংক ফুটো করে–

গ্রুনিরা নিম্নশ্রেণীর প্রাণী নয়। তারা বুদ্ধিমান প্রাণী?

রবোট চারটি কোনো কথা বলল না

রিশান চিৎকার করে বলল, কথা বল। গ্রুনিরা বুদ্ধিমান প্রাণী?

আমরা জানি না।

পৃথিবীর মহাকাশকেন্দ্র জানে?

রবোটদের এক জন মাথা নাড়ল। বলল, জানে।

রিশান এটমিক ব্লাস্টারটা হাতবদল করে লি–রয়ের দিকে তাকাল, এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল, পৃথিবীর মহাকাশকেন্দ্র একটি বুদ্ধিমান প্রজাতিকে ধ্বংস করার জন্যে আমাদেরকে পাঠিয়েছে।

লি–রয় কোনো কথা বলল না। রিশান আরো এক পা এগিয়ে গিয়ে বলল, অনুমতি দাও আমি এই জঞ্জালগুলোর কপোট্রন গুঁড়ো করে দিই।

তার অনেক সময় পাবে রিশান। লি–রয় একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, এখন তোমরা তোমাদের পোশাক পরে নাও। আমরা খুব বিপদের মাঝে আছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের মহাকাশযানে ফিরে যেতে হবে।

রিশান তার এটমিক ব্লাস্টারটি কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে লি–রয়ের দিকে ঘুরে তাকাল। কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল, তোমরা যাও লি–রয়। আমি পরে আসছি।

তুমি কী করবে?

ছেলেটাকে খুঁজে বের করব। এ রকম একটা গ্রহে দশ বছরের একটা বাচ্চা ছেলে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তুমি চিন্তা করতে পার?