নৃপ হরষিত, অমাত্য সহিত,
করিলেক বিবেচনা।
আমার বৈভব, আর কত কব,
বিধি করিল ঘটনা।।
পাণ্ডুর তনয়, ভীম মহাশয়,
আসিবে আমার পুরে।
নগর শোভন, কর প্রজাগণ,
আনন্দ করি অন্তরে।।
পেয়ে নৃপাদেশ, ঘুচে সর্ব্বক্লেশ,
করে পুরী সংস্কার।
ছড়াইল জল, করি সমস্থল,
ঘটে শোভে আম্রসার।।
নগর শোভন, কৈল প্রজাগণ,
চান্দোয়া চামর দোলে।
রাগ-তাল-ধরা, নাচিছে অপ্সরা,
শত শত কুতূহলে।।
কুসুম চন্দন, লয়ে দ্বিজগণ,
দাণ্ডাইল রাজপথে।
শঙ্খ বীণা বেণী, কাঁসী বাজে সানী,
আনন্দিত নগরেতে।।
ভূষা শোভে গায়, দেখিবারে ধায়,
বৃদ্ধ শিশু আর যুবা।
ভট্ট রায়বার, পড়িছে সুধার,
অমর নগর কিবা।।
পথেতে অম্বর, পাতে নরবর,
ভীম আগমন আশে।
ঘট বহুতর, রাখিল সত্বর,
পথের উভয় পাশে।।
মূর্ত্তি যেন বিধু, যত কুলবধূ,
রহিল গবাক্ষদ্বারে।
দেখি বৃকোদর, হরিষ অন্তর,
আর বৃককেতু বীরে।।
হেথা নৃপজায়া, হর্ষে পূর্ণকায়া,
ডাকি সহচরীগণে।
সবাই সুবেশা, করি বেশভূষা,
চলে ভীম দরশনে।।
হাতে হেমথালা, নৃপতি-মহিলা,
শুভসজ্জা তদুপরি।
পুরনারী যত, চৌদিকে বেষ্টিত,
ত্যজি যায় অন্তঃপুরী।।
রহি সিংহদ্বারে, শুভসজ্জা করে,
হেথা আসে বৃকোদর।
প্রবেশি পুরেতে, আনন্দিত চিতে,
দেখি পুরী মনোহর।।
আগে দ্বিজগণ, অগুরু চন্দন,
দিল ভীম মহাবীরে।
জিনি নরপতি, ভীমের মূরতি,
চারু গতি ধীরে ধীরে।।
নগরের রামা, দেখি তিন জনা,
দূর করে যত শোক।
রাম আগমনে, হরষিত মনে,
যেন অযোধ্যার লোক।।
এল রাজদ্বারে, তিন মহাবীরে,
করয়ে পটহ-ধ্বনি।
মঙ্গলায়োজন, করি নির্ম্মঞ্ছন,
আনন্দ করিল রাণী।।
আপনি রাজন, আনি সিংহাসন,
বসাইল বৃকোদরে।
চামর ব্যজন, করে সখীগণ,
ভীমসেন-কলেবরে।।
কর্ণের নন্দনে, বসায় আসনে,
নির্মঞ্ছ করিল সুখে।
ঘটোৎকচ-সুতে, হরষিত চিতে,
বসায় ভীম সম্মুখে।।
পূজিল পাণ্ডবে, পরম গৌরবে,
যুবনাশ্ব নৃপবর।
কহে কাশীদাস, কৃষ্ণপদে আশ,
কথা হয় মনোহর।।