দুপুর ঠিক একটার সময় কাকাবাবুকে আবার সেই লোহার দরজার বাইরে বের করা হল।
সকালে দেওয়া হয়েছিল একমগ ভরতি কফি আর একটা কোয়ার্টার সাইজ পাঊরুটি। কাকাবাবু তাই-ই বেশ তৃপ্তি করে খেয়েছেন। কাকাবাবু যখনই কোনও বিপদের মধ্যে পড়েন, তখনই যে-কোনও খাবার পেলেই খেয়ে নেন। কারণ, পরে আবার কখন কোথায় খাবার পাওয়া যাবে, তার তো ঠিক নেই।
এখানেও তাই হল।
একটার সময় কাকাবাবুর সঙ্গে সঙ্গে অন্য কয়েদিদেরও বের করা হল, দুপুরের আহারের জন্য। বাইরে রয়েছে দুজন গার্ড, হাতে চাবুক।
আগের রাত্তিরে আর আজ সকালে কাকাবাবু কয়েকজন কয়েদির সঙ্গে বেশ ভাব জমিয়ে নিয়েছেন। এক-একজনের জীবনকাহিনি এক-একরকম। সবাই মোটেই হিংস্র, ভয়ংকর মানুষ নয়। একজন অবশ্য বেশ গর্বের সঙ্গেই বলেছিল, সে পাঁচটা খুন করেছে। কিন্তু ধরা পড়েছে এই প্রথম। খুন করার জন্য তার কোনও অনুতাপ নেই। কারণ, তার মতে, যাদের সে খুন করেছে, তারা হিংস্র পশুরও অধম।
দু-একজন অবশ্য কোনও কথাই বলতে চায়নি।
যে-কয়েকজনের যমদূতের মতো চেহারা, তাদের একজনের নাম জোসেফ এন। এখানকার অনেক আদিবাসীই খ্রিস্টান হয়, তাই এই ধরনের নাম। ওর বিশাল চেহারা, লাল ড্যাবডেবে দুটো চোখ দেখলে গা ছমছম করে, কিন্তু মানুষটা বেশ নরম। ও ট্রাক চালায়। ওর দুটো ছেলেমেয়ে, নয় আর এগারো বছরের, তাদের ফোটো ও সঙ্গে রাখে। রাস্তায় ওর ট্রাক থামিয়ে বিনা দোষে পুলিশ ঘুষ চেয়েছিল বলে ও দিতে রাজি হয়নি। তখন পুলিশ ওকে মারতে শুরু করে। জোসেফও একটা পুলিশকে ঘুসি মারে। সেইজন্যই অনেক পুলিশ ওকে ঘিরে ধরে মারতে মারতে এনে এই গারদে ভরে দেয়।
লোকটির প্রতি বেশ মায়া পড়ে গেল কাকাবাবুর। সে শুধু তার ছেলেমেয়ের গল্প করে।
তাই কাকাবাবু তাকে বলেছিলেন, শোনো জোসেফ, তুমি এখানে পুলিশের সঙ্গে আর গন্ডগোলের মধ্যে যেয়ো না। তোমাকে যে-কেসে ধরে এনেছে তা পেটিকেস, বড়জোর ছমাস কিংবা এক বছরের জেল হবে। তা মেনে নিতেই হবে। তোমার আসল কাজ, ছেলেমেয়ে দুটির লেখাপড়ার সবরকম যত্ন নেওয়া। ওরা যদি উকিল-ব্যারিস্টার কিংবা ডাক্তার হয়, তখন দেখবে, পুলিশ তোমাদের উপর আর কোনও অত্যাচার করতে সাহস করবে না।
জোসেফ তখন কাকাবাবুর সামনে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে পড়ে কাকাবাবুর একটা হাতে চুম্বন দিয়ে বলল, আপনি প্রার্থনা করবেন স্যার, আমার ছেলেমেয়ে দুটি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়!
লোহার দরজার বাইরে এনে অন্যদের নিয়ে যাওয়া হল একদিকে, শুধু কাকাবাবুকে অন্যদিকে। জোসেফ ঘুরে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিল, কাকাবাবু হাত তুলে বললেন, ঠিক আছে, ঠিক আছে, পুলিশের সঙ্গে তর্ক কোরো না। আশা করি, আবার দেখা হবে!
কাকাবাবু ভাবলেন, তাঁকে অন্য কয়েদিদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হল না, তার মানে, তাঁকে নিশ্চয়ই আলাদা জায়গায় বসিয়ে স্পেশ্যাল খাবার দেওয়া হবে।
আবার তাঁকে এনে বসাল সেই ছোট ঘরটায়। আগের পুলিশটি সেখানে নেই। না থাকলেও পুলিশের চেয়ারে বসা উচিত নয় বলে কাকাবাবু বাধ্য হয়ে টুলটায় বসলেন।
যে তাঁকে নিয়ে এসেছিল, সে কিছু না বলে বেরিয়ে গেল। আর তার দেখা নেই। কাকাবাবু বসে রইলেন তো বসেই রইলেন। খিদেয় তাঁর পেট চুইচুই করছে।
এমনিতে কাকাবাবু দু-তিনদিন না খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু যদি জানা যায়, অন্য একটি ঘরে বাকি কয়েদিরা খেতে বসে গিয়েছে, আর তাঁকে কেউ কিছু দিচ্ছে না, তাতেই খিদেটা খুব বেড়ে যায়।
একঘণ্টা, দুঘণ্টা, তিনঘণ্টা কেটে গেল। খাবারও এল না, কেউ কিছু খবরও দিল না। একেবারে অসহ্য অবস্থা।
কাকাবাবু মেজাজ খারাপ করবেন না ঠিক করে স্থির হয়ে বসে রইলেন। চিন্তা করতে লাগলেন আকাশ-পাতাল। তাঁকে এখানে কেউ চেনে না, তবু
কেন এভাবে আটকে রাখা হচ্ছে, সেটাই বুঝতে পারছেন না কিছুতে।
চারটের পর বাইরে সাড়াশব্দ শোনা গেল। এ ঘরে এসে ঢুকল একজন লোক, পুলিশের পোশাক হলেও বুকের দুদিকে নানারকম ব্যাজ ও মেডেল আটা দেখে বোঝা যায়, বেশ একজন হোমরাচোমরা কেউ হবেন।
তিনি খালি চেয়ারটায় বসে পড়ার পরেই বললেন, আরে, মি. রাজা রায়চৌধুরীকে একটা টুলে বসিয়ে রাখা হয়েছে? ছি ছি! এরা সব ইডিয়েট। অ্যাই, কে আছিস, শিগগির একটা চেয়ার নিয়ে আয় ওঁর জন্য।
চেয়ার আনবার আগেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন, মি. রায়চৌধুরী, আপনার কোনও অসুবিধে হয়নি তো?
কাকাবাবু বললেন, না না। বেশ চমৎকার আরামেই ছিলাম!
লোকটি বললেন, আপনি আমাকে চিনবেন না। আমার নাম আলফ্রেড নিন্জানে। আমি এখানকার পুলিশের হেড।
কাকাবাবু বললেন, আমি আপনাকে চিনি না ঠিকই। আপনি আমাকে চিনলেন কী করে? কিংবা আমাকে চেনেন না, শুধু আমার নামটা জেনেছেন।
নিন্জানে বললেন, হবে, সেসব কথা পরে হবে। আগে একটু চা কিংবা কফি খাওয়া যাক। আপনি খাবেন তো? কোনটা আপনার পছন্দ?
কাকাবাবু মনে মনে হাসলেন। দুপুরে কিছু খাওয়াই হল না। এখন চাকফির প্রস্তাব! তিনি বললেন, হ্যাঁ, একটু চা পেলে মন্দ হয় না!
নিন্জানে আর কিছু না বলে কাকাবাবুর দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন। একটু পরে একজন দুকাপ চা দিয়ে যাওয়ার পর নিন্জানে উঠে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলেন, দুটো জানলাও টেনে দিলেন। তারপর বললেন, মি. রায়চৌধুরী, আপনার খুব কষ্ট হয়েছে জানি। সাধারণ খুনে-গুন্ডাদের সঙ্গে আপনাকে রাত কাটাতে হয়েছে। ইচ্ছে করেই আপনাকে দুপুরে খাবার দেওয়া হয়নি, যাতে মনে হয়, আমরা সত্যি সত্যি আপনার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছি। আসলে কী জানেন, আমাদের পুলিশের মধ্যেও কিছু কিছু স্পাই আছে, যারা থানার ভিতরের খবর বাইরে চালান করে দেয়।
কাকাবাবু বললেন, আমি এমন কী গুরুত্বপূর্ণ লোক, যাতে আমার খবর বাইরে যাবে?
নিন্জানে বললেন, সেসব পরে বলছি। এখন শুধু এইটুকু জানাচ্ছি যে, আপনাকে আমরা ইচ্ছে করে থানায় আটকে রেখেছি। নইলে, বাইরে আপনার জীবন সংশয় ছিল। কাল রাত্তিরেই আপনি যে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন, সেখানে হামলা হত। খুব সম্ভবত আপনার এই বন্ধুর বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হত, আমরা খবর পেয়েছি।
নিন্জানে সঙ্গে একটা মোটা হাতব্যাগ এনেছেন। সেটা খুলে একপ্যাকেট বিস্কুট বের করে বললেন, নিন, কয়েকটা বিস্কিট খেয়ে নিন চায়ের সঙ্গে, তাতে আপনার খিদে কিছুটা মিটবে।
কাকাবাবু চা খেতে খেতে ব্যাগ্রভাবে চেয়ে রইলেন নিন্জানের মুখের দিকে। কারা তাঁকে মারতে চাইছে? কেন?
নিন্জানে এবার একটা পাইপ ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললেন, মি. লোহিয়ার বাড়িতে আগুন লেগেছে, আপনি পরেরদিন তা দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে যে কিছু লোক ছিল, তাদের মধ্যে আমাদের দুজন স্পাইও মিশে ছিল। আপনি নতুন লোক, তাই ওরা আপনার ফোটো তুলে নিয়েছে।
কাকাবাবু বললেন, আমি বুঝতেই পারিনি! নিন্জানে বললেন, সেটাই তো স্পাইদের কাজ। এয়ারপোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেল আপনার নাম। তারপর ইন্টারনেট ঘাঁটতেই পাওয়া গেল
আপনার সব পরিচয়।
কাকাবাবু মনে মনে বললেন, এই হয়েছে এক ইন্টারনেট! আজকাল আর কিছুই গোপন রাখার উপায় নেই!
নিন্জানে বললেন, তখনই বুঝতে পারলাম সব ব্যাপার। মি. রাজা, আপনি নাইরোবিতে এসেছেন একটা মামলায় সাক্ষী দিতে, তাই না?
কাকাবাবু বললেন, আমি বেড়াতেই এসেছি, তবে…!
নিন্জানে তাঁকে বাধা দিয়ে বললেন, আমাদের কাছে আর গোপন করে লাভ নেই। এখানে পুলিশের মধ্যে অনেক গোলমাল আছে, আমি স্বীকার করছি। কিছু কিছু পুলিশ অফিসার ঘুষ খেয়ে চোর-ডাকাতদেরই সাহায্য করে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমরা সেইসব ঘুষখোরদের ধরে ধরে শাস্তি দিচ্ছি, পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে পরিচ্ছন্ন করে তুলছি। হয়তো আরও কিছুটা সময় লাগবে। আপনার পরিচয় জানার পরই বুঝতে পারলাম, আপনার জীবন বিপন্ন। মি. লোহিয়ার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে তাকে যেমন ধরে নিয়ে গিয়েছে, ওরা আপনাকেও মারবে কিংবা ধরে নিয়ে যাবে।
কাকাবাবু বললেন, কেন? আমার উপর কার কী রাগ থাকতে পারে?
নিন্জানে বললেন, মি. রাজা, আপনি এখনও কিছু না জানার ভান করছেন? পুলিশের নামে যতই বদনাম থাক, আমরা কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিলিপ কিকুইউকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। তার নামে পশুহত্যা, চোরাচালান আর খুনের অভিযোগ আছে। সে একসময় একটা হোটেলের ম্যানেজার সেজে ছিল। তখন আপনাকে খুন করার চেষ্টা করেছিল। এইসব অপরাধে আমাদের দেশে ফাঁসি হয়।
কাকাবাবু বললেন, সে তো জেল থেকে পালিয়েছে শুনেছি।
নিন্জানে বললেন, মোটেই তা সত্যি নয়, এরকম গুজব রটেছে বটে। পালিয়েছে তার ভাই রবার্ট। ফিলিপকে রাখা হয়েছে কড়া পাহারায়। তার বিরুদ্ধে প্রধান দুই সাক্ষী হলেন আপনি আর মি. লোহিয়া। আগামী কাল কোর্টে ফিলিপের নামে মামলা ওঠার কথা। মি. লোহিয়া নিশ্চয়ই আপনাকে সেকথা জানিয়েছিলেন?
কাকাবাবু বললেন, লোহিয়া আমাকে বিশেষভাবে এখানে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন অনেক কাজ আছে, তার মধ্যে এই মামলাটাও একটা।
নিন্জানে বললেন, বাইরে ফিলিপের একটা দল আছে। তাদের পান্ডা এখন ফিলিপের ভাই রবার্ট। সেও অতি নিষ্ঠুর মানুষ। এর মধ্যেই দুজন লোক খুন হয়েছে, একজন সেই জঙ্গলের হোটেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, আরএকজন বিখ্যাত পরিবেশবিদ লিওপোল্ড আংগামি। এরা দুজনেই ফিলিপের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে বলে কথা ছিল। এদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি রইলেন আপনি আর লোহিয়া। লোহিয়ার কী হয়েছে জানি না। আপনাকে নিরাপদে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের পক্ষেই খুব দরকার।
কাকাবাবু বললেন, ধন্যবাদ। আমি সহজে মরি না। নিন্জানে বললেন, এখন আমাদের কী প্ল্যান তাই-ই, শুনুন। আপনাকে আর আমরা দেশের মধ্যে রাখতে সাহস করছি না। জেলের মধ্যেও আপনি নিরাপদ নন। কারণ, যেসব কয়েদি রয়েছে, তাদের মধ্যেও কেউ কেউ ফিলিপের দলের লোক হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। বাইরে থেকে নির্দেশ এলে এখানেই আপনাকে খতম করে দিতে পারে। জেলের মধ্যে এরকম খুনোখুনি আগেও হয়েছে। সুতরাং আপনাকে অন্য জায়গায় যেতে হবে।
কাকাবাবু বললেন, কিন্তু আপনি যে বললেন, কালই ফিলিপের নামে কোর্টে মামলা উঠবে?
নিন্জানে বললেন, হ্যাঁ। কিন্তু আমরা জজের কাছে আবেদন করব, মামলাটা আরও কিছুদিন পিছিয়ে দিতে। এর মধ্যে আরও সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। এরা এমনই সাংঘাতিক লোক যে, এদের বিরুদ্ধে অনেকেই সাক্ষী দিতে সাহস করে না। ফিলিপ শয়তানটা আরও কিছুদিন জেলেই থাকুক।
কাকাবাবু বললেন, অর্থাৎ আপনি বলতে চাইছেন, আমি আর এখানে থাকতে পারব না, আমাকে দেশেই ফিরে যেতে হবে? বেশ তো, আমি কালই…!
কাকাবাবুকে বাধা দিয়ে নিৰ্ম্মানে বললেন, না না। আপনাকে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলিনি। ফিলিপকে ফাঁসানোর জন্য আপনার সাক্ষী দেওয়াটা খুবই জরুরি। আমি শুধু বলছিলাম, আপনি যদি দিনকতক গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন। এ জায়গাটা আপনার পক্ষে মোটেই নিরাপদ নয়।
আপনি আমার একটা সাজেশান শুনবেন?
কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, শুনব না কেন? নিন্জানে বললেন, আপনি কিছুদিনের জন্য আমাদের পাশের দেশ তানজানিয়ায় গিয়ে থাকবেন?
কাকাবাবু বললেন, তানজানিয়া? সেখানে কাউকে চিনি না। সেখানে যদি ভাল থাকার জায়গা পাওয়া যায়…!
নিন্জানে বললেন, সেসব আপনাকে ভাবতে হবে না। আমরা সব ব্যবস্থা করে দেব। ওখানকার পুলিশের সঙ্গে আমার কথা হয়ে আছে। আপনার জন্য চমৎকার বাংলো ঠিক করে দেবে, পুলিশই আপনার সবরকম দেখাশোনা করবে।
কাকাবাবু তবু মন ঠিক করতে পারলেন না। চুপ করে রইলেন। নিন্জানে আবার বললেন, তানজানিয়াও ভারী সুন্দর দেশ। অনেক কিছু দেখার আছে। আর-একটা কারণেও তানজানিয়া আপনার কাছে ইন্টারেস্টিং মনে হতে পারে। আমরা যতদূর খবর পাচ্ছি, মি. লোহিয়া এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে তানজানিয়াতেই লুকিয়ে আছেন!
কাকাবাবু চমকে উঠে বললেন, লুকিয়ে আছেন? আপনারা পাকা খবর পেয়েছেন?
নিজানে বললেন, এখনও ঠিক কনফার্মড নই। আমরা প্রতিবেশী রাজ্য উগান্ডা, তানজানিয়াতেও পুলিশকে মি. লোহিয়ার খবর জানিয়েছি। এর মধ্যে তানজানিয়ার পুলিশই সাড়া দিয়েছে। ওখানে একজন স্পাই ডেফিনিটলি একবার মি. লোহিয়াকে স্পট করেছে। তারপর তিনি আবার কী করে যেন চোখের আড়াল হয়ে গেলেন।
কাকাবাবু বললেন, মোম্বাসাতেও একজন কেউ নাকি ওঁকে পার্কে বসে থাকতে দেখেছিল। সেটা তো একেবারে উলটো জায়গায়।
নিন্জানে বললেন, আরে ধুত। সেটা তো ছিল উড়ো খবর। কেউ টেলিফোনে মজা করেছে। আর এটা দিয়েছে তানজানিয়ার পুলিশ। তারা মোটেই একটা বাজে খবর আমাদের জানাবে না।
কাকাবাবু বললেন, ঠিক আছে, আমি তানজানিয়াতেই যাব।
নিন্জানে এবারে উৎসাহিত হয়ে বললেন, গুড, গুড, গুড। আমরাই আপনাকে পৌঁছে দেব বর্ডারে। ওদিককার পুলিশ আপনাকে রিসিভ করে নেবে। তারপর থেকে ওদের দায়িত্ব।
কাকাবাবু বললেন, আমার কিছু জামাকাপড় আর অন্য জিনিসপত্র নিয়ে নিতে হবে।
নিন্জানে বললেন, তা তো নিতেই হবে। আর আমাদের যেতে হবে গভীর রাত্রে। খুব গোপনে, যেন কেউ টের না পায়। বাইরে বৃষ্টি নেমেছে, এটাই ভাল সময়। চলুন, বেরিয়ে পড়া যাক!