ঘরের ভিতরে একটা বড় টেবিল, তার চারপাশে বেশ কয়েকটা চেয়ার। চেয়ারে পিঠ সোজা করে দুটি রবোট বসে আছে। ঘরের দেয়ালে অসংখ্য তাক সেখানে মাইক্রো ক্রিস্টালে পৃথিবীতে হাস্যকৌতুক নিয়ে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে সব জমা করে রাখা আছে। ঝা শুকনো মুখে বলল, কী বিপদে পড়া গেল।
টুকি একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, বিপদের কী আছে? হাসি তামাশা তো ছেলেমানুষী ব্যাপার, বোঝানো কঠিন হবে না।
ঝা বিষণ্ণ মুখে মাথা নাড়ল, বলল, হাসি তামাশা করা সোজা। সেটা বোঝানো সোজা নয়।
এস, দেখি চেষ্টা করে এদের কী অবস্থা। টুকি রবোট দুটির সামনে গিয়ে বলল, তোমাদের নাম কী?
রবোট দুটি দেখতে হুঁবহুঁ এক রকম, একজন বলল, আমাদের কোন নাম নেই।
নাম নেই? এ তো মহা যন্ত্রণা হল দেখি।
এটা কী হাসির কথা? আমরা কি হাসব?
না এটা হাসির কথা নয়। কিন্তু তোমাদের নাম না থাকলে ডাকাডাকি করা নিয়ে খুব অসুবিধে হবে। প্রথমে তোমাদের একটা করে নাম দিয়ে দেওয়া যাক।
কী নাম দেবে?
যেহেতু আমাদের প্রজেক্ট তোমাদের হাসাহাসি করানো, কাজেই তোমাদের নাম দেওয়া যাক হাসা আর হাসি। টুকি একজনের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার নাম হাসা তারপর অন্যজনের দিকে তাকিয়ে বলল, আর তোমার নাম হাসি।
রবোট দুটি মাথা নেড়ে নিজেদের নাম গ্রহণ করে নিল।
টুকি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল, হাসা এবং হাসি এবার হাসাহাসি শুরু কর।
হাসা নামের রবোর্টটি বলল, এটা কী হাসির কথা? আমরা কী হাসব?
হাসি নামের রবোটটা বলল, না এটা আমার কথা না।
টুকি হেসে বলল, এটা হাসির কথা না সেজন্যে এটা হাসির কথা!
তাহলে কী আমরা হাসব?
হ্যাঁ, হাস।
রবোট দুটি কাঠ কাঠ স্বরে উচ্চারণ করল হা হা হা হা। তাদের এই শুষ্ক ধাতব স্বর শুনে হঠাৎ করে টুকি এবং ঝায়ের শরীরের লোম খাড়া হয়ে যায়। টুকি শুকনো গলায় বলল, ঝা, কাজটা সহজ হবে না।
ঝা বলল, আমি জানতাম।
টুকি একটা নিঃশ্বাস ফেলে হাসা-হাসির দিকে তাকিয়ে বলল, তোমরা এতদিন কী করছ?
আমরা একটা কৌতুক নিয়ে সেটা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছি।
কতদিন থেকে করছ?
হাসা বলল, আজকে নিয়ে সাত বছর দুই মাস এগারো দিন।
টুকি এবং ঝা একসাথে চমকে উঠলো, ঝা ভয় পাওয়া গলায় বলল, কী? কী বললে?
হাসি বলল, এটা কিছুই না। এর আগেরটা নিয়ে আমারা এগারো বছর সময় কাটিয়েছি। শেষে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে সেটা ছেড়ে দিয়েছি। সেই তুলনায় এইটা মনে হয় সহজ। গত ছয় মাস থেকে মনে হয় একটু একটু বুঝতে পারছি।
কী বুঝতে পারছ?
কৌতুকটার কোন জায়গায় হাসতে হবে।
টুকি ভুরু কুচকে বলল, কৌতুকটা কী, শুনি।
একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে বলছে, কাল আমার স্ত্রী শেষ পর্যন্ত আমার সামনে হাঁটুগেড়ে উবু হয়ে বসেছে।
তাই নাকী? হাঁটুগেড়ে বসে কী বলেছে?
বলেছে, খাটের তলা থেকে বের হয়ে আয় মিনষে।
টুকি শুনে খুবখুক করে এবং ঝা হা হা করে হেসে উঠল। হাসা এবং হাসি তাদের সবুজাভ ফটো সেলের চোখ দিয়ে টুকি এবং ঝাকে তীক্ষ্ণ চোখে লক্ষ করে তাদের হাসি থামার পরে বলল, আমাদের ধারণা এটি কেন কৌতুককর আমরা সেটাও বুঝতে পেরেছি।
কেন, শুনি।
কারণ মানুষটি তার বন্ধুকে মিথ্যা কথা বলছে।
কখন মিথ্যা কথা বলল?
মানুষ কখনো খাটের তলায় যায় না, এটি মিথ্যা কথা।
মিথ্যা কথা বললে সেটা হাস্যকর হবে কেন?
কারণ মানুষদের নীতি জ্ঞান খুব কম। তারা মিথ্যাচার করে আনন্দ পায়।
টুকি রাগে দাঁত কিড়মিড় করে বলল, সাত বছর বিশ্লেষণ করে এইটা আবিষ্কার করলে?
হাসি বলল, কেন ভুল হয়েছে?
টুকি কোন কথা না বলে মেঝেতে পা দাপিয়ে ঘরের অন্যপাশ চলে গেল।
হাসা ঝাকে জিজ্ঞেস করল, এইটা কী হাস্যকর? আমরা কী এখন হাসব?
ঝা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ইচ্ছে হলে হাস।
হাসা এবং হাসি একসাথে কাঠ কাঠ স্বরে উচ্চারণ করল, হা হা হা হা এবং সেটা শুনে আবার টুকি এবং ঝায়ের সমস্ত শরীর কাটা দিয়ে উঠে।
পরবর্তী দিনগুলো টুকি অমানুষিক পরিশ্রম করে রোট দুটিকে হাস্য কৌতুকের মর্মকথা বোঝানোর চেষ্টা করে। যখন সে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেল রবোটেরা ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে তখন সে তাদেরকে একটা কৌতুক শোনাল। কৌতুকটা এরকম:
বায়োলজি শিক্ষক একটা কাবাব চিমটা দিয়ে ধরে বলল, এই যে ব্যঙটা দেখছ এটা এখন আমরা কাটব।
ছাত্রছাত্রীরা বলল, স্যার, এটা তো ব্যঙ নয়, এটা কাবাব।
স্যার চোখ কপালে তুলে বললেন, তাহলে আমি নাস্তা করলাম কী খেয়ে
কৌতুকটা শুনে হাসা এবং হাসি হা হা করে হেসে উঠে এবং সেটা দেখে টুকি বেশ উৎসাহ অনুভব করল। জিজ্ঞেস করল, বল দেখি কোন জায়গাটা হাসির?
হাসা বলল, খুব সহজ। যখন শিক্ষক বলল, তাহলে আমি কী খেয়ে নাস্তা করলাম?
টুকির চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, বলল, ঠিক ধরেছ। হাসি তুমি এখন বল, কেন এই কথাটা হাসির।
কারণ শিক্ষক দুইটা কাবাব এনেছিল। একটা দিয়ে নাস্তা করেছে আর দু নম্বরটা চিমটা ধরে ছাত্রছাত্রীদেরকে দেখিয়েছে।
টুকির চোয়াল স্কুলে পড়ল। কোনমতে বলল, আর ব্যঙটা?
সেটা লাফ দিয়ে জানালা দিয়ে বের হয়ে গেছে। হা হা হা।
টুকি এবং ঝা খুব মন মরা হয়ে এক বেলা কাটিয়ে দিল। সময় শেষ হয়ে আসছে, যদি তারা রবোটগুলোকে হাস্য কৌতুক শেখাতে না পারে আক্ষরিক অর্থেই তাদের মাথা কাটা যাবে।
পরের তিনদিন টুকি আবার খাওয়া ঘুম ছেড়ে রবোটগুলোর পিছনে লেগে রইল। ঝা-ও সাহায্য করতে চাইছিল কিন্তু টুকি ঝাকে এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে ঠিক বিশ্বাস করতে পারল না বলে কাছে ঘেষতে দিল না। মানুষ কেন হাসে, কেন হাসা উচিত, কোথায় কোথায় হাসা যায় এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলল, উদাহরণ দিল নিজে নেচে কুদে অভিনয় করে দেখাল এবং সব শেষ করে আবার তাদেরকে একটা কৌতুক শোনাল। এবারের কৌতুকটা এরকম :
একজন এক পায়ে লাল অন্য পায়ে সবুজ মোজা পরে এসেছে। বন্ধু জিজ্ঞেস করল, কী হল দুই পায়ে দুরকম মোজা কেন?
কী করব বল। বাসায় আরো এক জোড়া মোজা আছে সেটাও এরকম।
কৌতুকটা শুনে রবোট দুটি অনেক জোরে জোরে হাসতে শুরু করল। টুকি একটু আশান্বিত হয়ে বলল, বল দেখি এই কৌতুকটা কেন হাসির?।
হাসা বলল, এটা বলা তো খুবই সোজা। মানুষটার বোকামী নিয়ে হাসা হচ্ছে।
টুকি হাতে কিল দিয়ে বলল, ঠিক বলেছে। এবারে বল দেখি বোকামীটা কী?
মানুষটার বুদ্ধি কম। বাজারে গিয়ে প্রত্যেকবারই দুই রংয়ের দুইটা মোজা কিনে ফেলে।
টুকি আবার তার মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। তার এতদিনের পরিশ্রম পুরোটাই বৃথা গেছে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর মাত্র একটি দিন বাকি, গত ছয়দিনে যাকে এতটুকু শেখানো যায়নি সে বাকি একদিনে পুরোটুকু শিখে নেবে এটা আশা করা ঠিক নয়। টুকি তবু আশা ছাড়ল না, খাওয়া দাওয়া ছেড়ে সে রবোট দুটির পিছনে লেগে রইল, তাদের সে হাস্য কৌতুকের মর্মকথা বুঝিয়েই ছাড়বে। একটানা আঠারো ঘণ্টা পরিশ্রম করে সে হাসা এবং হাসিকে জিজ্ঞেস করল, এখন বুঝতে পেরেছ?
রবোট দুটি মাথা নাড়ল। বলল, পেরেছি। একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
চমৎকার! টুকি আশা নিয়ে বলল, এবারে তাহলে পরীক্ষা করা যাক। একটা কৌতুক বলি : একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করল, তোমার কুকুরটা নাকি এত বুদ্ধিমান যে তোমাদের সাথে তাশ খেলে! মানুষটা উত্তর দিল, বুদ্ধিমান না কচু! হাতে টেক্কা পড়লেই খুশীতে লেজ নাড়তে থাকে আর আমরা বুঝে ফেলি কী পেয়েছে!
হাসা এবং হাসি জোরে জোরে হাসতে শুরু করল। টুকি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, এবার বল তো, কেন এটা হাসির?
খুবই সহজ। মানুষ ভাবছে কুকুরটা বুদ্ধিমান আসলে নেহায়েৎই বোকা! টেক্কা পেলেই লেজ নাড়ানো ঠিক নয়।
টুকি ফ্যাকাশে মুখে বিশাল এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, আমাদের জীবন এখানেই শেষ ঝা। এক সপ্তাহ চেষ্টা করে কোন লাভ হল না। গবেট রবোটগুলো গবেটই রয়ে গেল।
ঝা বলল, আমি একটু চেষ্টা করে দেখব?
দেখতে চাইলে দেখ, কী লাভ হবে আমি জানি না।
ঝা হাসা এবং হাসির দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, পৃথিবীতে হাসির জিনিসগুলো কী জান?
হাসা এবং হাসি দ্বিধান্বিত ভাবে বলল, জানি না।
ঝা এক গাল হেসে বলল, ঠিক বলেছ, আসলে কেউই জানে না। তাই কী করতে হয় জান?
কী?
যেটা দেখবে সেটা দেখেই হাসবে। একজন মানুষকে যদি দেখ মোটা হি হি করে হেসে বলবে মানুষটা কী মোটা! যদি দেখ শুকনো তাহলে হি হি করে হেসে বলবে, মানুষটা কী রোগা! রাগী মানুষকে দেখে হাসবে কারণ সে রাগী, হাসি খুশী মানুষকে দেখে হাসবে কারণ সে হাসিখুশী!
সত্যি?
একশভাগ সত্যি। এন্ড্রোমিডার কসম। হি হি হি করে হাসবে, হা হা হা করে হাসবে হো হো হো করে হাসবে, খিক খিক খিক করে হাসবে–খক খক খক করে হাসবে, খিল খিল খিল করে হাসবে—হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবে।
এমনিতেই? কোন কারণ ছাড়া?
হ্যাঁ। এমনিতেই। কোন কারণ ছাড়া।
সত্যি?
সত্যি। হাসি পেলেও হাসবে, হাসি না পেলেও হাসবে। হাসির মত ভাল জিনিস এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কিছু নেই। কোন কিছুকেই গুরুত্ব দিয়ে নেবে না, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে গুরুতর কিছু নেই, সব কিছু নিয়ে হাসা যায়। যে যত বেশি হাসে তার তত আনন্দ! নাও শুরু কর।
হাসা এবং হাসি হাসতে শুরু করল, প্রথমে টুকির শুকনো শরীর দেখে হাসল, তারপর তার গোমড়া মুখ দেখে হাসল, ঝাকে দেখে হাসল—তার বিশাল শরীর দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ল। ঠিক তখন দরজা খুলে গেল, বুদ্ধিজীবী রবোটগুলো হাস্য কৌতুকের কাজ কতটুকু অগ্রসর হয়েছে দেখতে এসেছে। বিশাল মাথা এবং লিকলিকে শরীর নিয়ে কোন মতে তাল সামলে দাঁড়িয়ে থাকা বুদ্ধিজীবী রবোটদের দেখে হাসা এবং হাসি অট্টহাসি দিতে শুরু করে, একে অন্যকে ধরে তারা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে থাকে। তারা একে অন্যকে দেখে হাসতে থাকে, হাসতে হাসতে তারা কাশতে থাকে, এবং কাশতে কাশতে তাদের চোখে পানি এসে যায়।
বুদ্ধিজীবী রবোট খানিকক্ষণ অবাক হয়ে হাসা এবং হাসির দিকে তাকিয়ে থেকে মাথা নেড়ে বলল, আমরা গত দুই শতাব্দী চেষ্টা করে যেটা করতে পারি নি আপনারা এক সপ্তাহে সেটা করে ফেলেছেন। আমাদের অভিনন্দন গ্রহণ করুন।
টুকি এতক্ষণে নিজেকে সামলে ফেলেছে, এক গাল হেসে বলল, এটা কোন ব্যাপারই নয়। এর থেকে হাজার গুণ কঠিন কাজ আমরা করতে পারি।
বুদ্ধিজীবী রবোট কোনমতে নিজের তাল সামলে রেখে বলল, এ ব্যাপারে আমাদের এখন বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
ঝা ইতস্তত করে বলল, আমরা কী এখন আমাদের মহাকাশযানে ফিরে যেতে পারি?
অবশ্যি। অবশ্যি ফিরে যেতে পারেন। আমরা রবোটেরা যখন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড থেকে খল, ফন্দিবাজ, অসৎ, বদমাইশ এবং ধুরন্ধর মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলব তখন কৃতজ্ঞতার সাথে আপনাদের সাথে স্মরণ করা হবে।
টুকি মুখে জোর করে হাসি ফুটয়ে বলল, শুনে খুব খুশী হলাম।
রবোটদের নেতা অনেকক্ষণ কোন কথা বলে নি এবারে এগিয়ে এসে বলল, আপনাদের পৃথিবীতে ফিরে যাওয়া যেন আরো আনন্দময় হয় সে জন্যে আমরা একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
টুকি শুকনো মুখে বলল, কী ব্যবস্থা?
আপনারা মাত্র দুজন মানুষ, তৃতীয়জন রবোট। আপনাদের নিশ্চয়ই ইচ্ছা করে আপনাদের রবোট রোবির আপনাদের মতই রাগ দুঃখ আনন্দ ঘৃণা এরকম অনুভূতি থাকুক।
টুকি বিস্ফারিত চোখে রবোটটির দিকে তাকাল। সেটি গলায় এক ধরনের আনন্দের ভাব ফুটিয়ে বলল, রোবির ভিতরে আমরা আমাদের বিভিন্ন অনুভূতির ল্যাবরেটরি থেকে অনুভূতিগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছি।
কী-কী-কী বললে?
হ্যাঁ। এখন তোমাদের দীর্ঘ ভ্রমণ হবে আনন্দময়। রোবি এখন আর শুধু যন্ত্র নয়। সে অনুভূতিপ্রবণ একটি সত্তা। শুধু একটি জিনিস খেয়াল রেখ।
কী জিনিস?
কখনো যেন রোবিকে রাগিয়ে দিও না। জানই তো রোবট রেগে গেলে কী সাংঘাতিক অবস্থা হয়।
টুকি এবং ঝা শুকনো মুখে মাথা নাড়ল। ঝা বিড় বিড় করে বলল, না, ভয় নেই। আমরা রোবিকে রাগাব না। কখনোই রাগাব না।