মুনি বলিলেন, রাজা শুন তদন্তরে।
পুত্র সহ কুন্তীদেবী রহে অন্তঃপুরে।।
কৌরব পাণ্ডব ভাই পঞ্চোত্তর শত।
বেদ-শাস্ত্র অধ্যয়নে সবে পরাগত।।
বালকের ক্রীড়া যত আছয়ে সংসারে।
ক্রীড়ায় উত্তম সবে সদা ক্রীড়া করে।।
ক্রীড়ারসে বলে শ্রেষ্ঠ পঞ্চ সহোদর।
সবার অধিক বলে বীর বৃকোদর।।
মহা-বলবন্ত ভীম দেখি যম যেন।
তাহার সদৃশ নাহি ভাই একজন।।
ধাইতে পবন সম, সিংহ সম হাঁকে।
আস্ফালন গজ সম, মেঘ সম ডাকে।।
যেই দিক দিয়া ভীম বেগে যায় চলি।
দশ বিশ বৃক্ষে ফেলে ভুজাস্ফালে ঠেলি।।
ক্রোধে সব সহোদরে ধরি একেবারে।
অবহেলে বৃকোদর শরীর ঝাঁকারে।।
কতদূরে পড়ে সবে অচেতন হৈয়া।
পৃষ্ঠে গায় নাসিকায় রক্ত যায় বৈয়া।।
দুই হস্তে ধরে বীর সবাকার কর।
চক্রাকার করিয়া ভ্রমায় বৃকোদর।।
প্রাণ যায় বলি সবে পরিত্রাহি ডাকে।
মৃতকল্প সব দেখি তবে ভীম রাখে।।
জলমধ্যে ক্রীড়া যবে করে ভ্রাতৃগণ।
একেবারে ধরে ভীম দশ দশ জন।।
ডুবায় জলেন নীচে চাপি দুই কাঁখে।
মৃতকল্প করি ছাড়ে প্রাণমাত্র রাখে।।
ভয়েতে না যায় কেহ ভীমের নিকটে।
জলেতে দেখিলে ভীমে সবে থাকে তটে।।
ফলহেতু উঠে সবে বৃক্ষের উপরে।
তলে থাকি বৃক্ষে ভীম চরণ প্রহারে।।
চরণের ঘায় বৃক্ষ করে থর থর।
ফল সহ পড়ে তাহা ভূতল উপর।।
বালক-কালেতে ভীম মহা-পরাক্রম।
ভীমেরে বালকগণ দেখে যেন যম।।
দুর্য্যোধন দেখি হৈল পরম চিন্তিত।
বালক-কালেতে বল ধরে অপ্রমিত।।
বয়োধিক হইলে হইবে মহবল।
ইহার জীয়ন্তে নাই আমার কুশল।।
হৃদে চিন্তি দুর্য্যোধন করিল বিচার।
ভীমেরে মারিব, হেন যুক্তি করে সার।।
ভীমে মারি চারি ভায়ে রাখিব বান্ধিয়া।
তবে ত ভুঞ্জিব রাজ্য নিষ্কণ্টক হৈয়া।।