তবে কত দিনে তথা আসে বেদব্যাস।
একান্তে কহেন মুনি জননীর পাশ।।
অবধানে শুন মাতা আমার বচন।
ধর্ম্মকাল গেল, হৈল পাপ-উপাসন।।
তোমার বংশেতে হবে বড় দুরাচার।
কপট হইবে সব হিংসা অহঙ্কার।।
এই সবাকার পাপে মজিবে সকল।
পৃথিবী হরিবে শস্য, মেঘে অল্প জল।।
ধন লুপ্ত হবে, লুপ্ত হবে ক্রিয়াচার।
আত্ম হিংসা সবে তবে করিবে বিস্তার।।
ধৃতরাষ্ট্র কপটে করিবে কুলক্ষয়।
ধর্ম্ম ত্যজি নর লবে অধর্ম্ম আশ্রয়।।
সে কারণে মাতা আমি কহি যে তোমায়।
কুলক্ষয় নয়নে দেখিতে না যুয়ায়।।
গৃহ ত্যজি জননী চলহ তপোবন।
সংসার ত্যাজিয়া মাতা তপ দেহ মন।।
এত বলি ব্যাস-মুনি হৈল অন্তর্দ্ধান।
শুনি সত্যবতী চিত্তে চিন্তেন বিধান।।
দুই বধূ ডাকিয়া আনিল নিজ পাশ।
কহিতে লাগিল যত কহিলেন ব্যাস।।
তোমার নন্দন বধূ করিবে দুণীতি।
কপট হিংসক হবে করিবে দুষ্কৃতি।।
কুলক্ষয় হইবেক তার কদাচারে।
এসব শুনিয়া আমি জানাই তোমারে।।
সে কারণে এবে আমি যাই তপোবনে।
করহ বিধান বধূ যেই লয় মনে।।
শুনিয়া যুগল বধূ চলিল সংহতি।
ভীষ্মে ডাকি সব কথা কহিলেন সতী।।
অন্তঃপুরে ছিল যত বৃদ্ধা নারীগণ।
সত্যবতী সহ সবে গেল তপোবন।।
ফল-মূলাহারী হৈয়া তপ আচরিল।
যোগে মন দিয়া সবে শরীর ত্যজিল।।
মহাভারতের কথা অমৃত প্রসবে।
পাঁচালী-প্রবন্ধে কহে কাশীরাম দেবে।।