৬৫তম অধ্যায়
পাণ্ডববলপরিজ্ঞানার্থ ধৃতরাষ্ট্রের পুনঃ প্রশ্ন
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! অনন্তর মহাপ্ৰজ্ঞ ধৃতরাষ্ট্র পুনরায় সঞ্জয়কে কহিলেন, “হে সঞ্জয়! বাসুদেব বলিলে পর অর্জ্জুন যাহা কহিয়াছিলেন তাহার অবশিষ্ট বাক্য শ্রবণ করিতে আমার কৌতুহল জন্মিয়াছে।”
সঞ্জয় কহিলেন, “মহারাজ! দুৰ্দ্ধৰ্ষ ধনঞ্জয় বাসুদেবের বাক্য শ্ৰবণ করিয়া তাঁহার সমক্ষেই আমাকে কহিলেন, “হে সঞ্জয়! পিতামহ ভীষ্ম, রাজা ধৃতরাষ্ট্র, দ্রোণ, কৃপ, কৰ্ণ, বাহ্লিক, বিকৰ্ণ, চিত্ৰসেন, জয়ৎসেন; অবন্তিদেশীয় বিন্দ ও অনুবিন্দ, দুর্মুখ, সিন্ধুরাজ, ভূরিশ্রবা, ভগদত্ত, জলসন্ধ, ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ এবং কৌরবেরা অন্য যে সকল মুমূর্ষ রাজ্যকে প্রদীপ্ত পাণ্ডবাগ্নিতে হোম করিবার নিমিত্ত আনয়ন করিয়াছেন, আমার বাক্যানুসারে তাঁহাদিগের সকলকে ন্যায়ানুগত কুশলজিজ্ঞাসা ও অভিবাদন করিয়া ভূপতিগণের সমক্ষে পাপকর্ম্মা, কোপনস্বভাব, দুর্ম্মতি, লুব্ধপ্রকৃতি দুৰ্য্যোধনকে এবং তাঁহার অমাত্যদিগকে এই সমস্ত কথা কহিবে।”
“তিনি এই কথা কহিয়া নেত্রদ্বয় লোহিতবর্ণ করিয়া বাসুদেবের প্রতি দৃষ্টিপাতপূর্ব্বক পুনরায় কহিলেন, “হে সঞ্জয়! তুমি মহাত্মা মধুসূদনের নিকট যে প্রকার শ্রবণ করিলে এবং আমি তোমাকে যে প্রকার কহিলাম, তুমি সমস্ত ভূপালগণ একত্র সমাগত হইলে অবিকল ঐ সকল কহিবে; আর এই মহাযুদ্ধে রথারূপ সমীরণে সন্ধুক্ষিত [উদ্দীপ্ত] শরন্থতাশনে শরাসনারূপ সুবদ্বারা যেন হোমক্রিয়া সম্পন্ন না হয়, তোমরা তন্নিমিত্ত যত্নশীল হও অথবা শত্রুনিপাতন যুধিষ্ঠিরের অভিলষিত অংশ প্রদান কর। যদি ইহাতে সম্মত না হও, তাহা হইলে নিশিতশর প্রহারে তোমাদিগকে অশ্বপদাতিকুঞ্জার-সমভিব্যাহারে অতি ভীষণ প্ৰেতরাজভবনেই [যমালয়ে] প্রেরণ করিব।”
“অনন্তর আমি আপনাদিগকে সেইসকল বাক্য অবগত করিবার নিমিত্ত ধনঞ্জয়কে আমন্ত্রণ ও বাসুদেবকে নমস্কারপূর্ব্বক ত্বরান্বিত হইয়া আপনাদিগের নিকটে আগমন করিয়াছি।”